আমার বাংলা ব্লগ কনটেস্ট-৯ || শীতেরপিঠা ভাপা রোল পুলিসহ আরো কয়েক ডিজাইনের ভাপা পুলি। ১০% @shy-fox
ভাপা রোল পুলি সহ ভাপা পুলিপিঠা
হ্যালো বন্ধুরা, আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। এই প্রথম আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাপ্তাহিক কনটেস্ট জয়েন করতে যাচ্ছি। আমার খুবই ভালো লাগছে। এটা একটা শীতকালীন পিঠার কনটেস্ট।আজকে আমি আপনাদের সামনে নিয়ে এসেছি ভাপা রোল পুলি পিঠা। এছাড়াও আমি তার সাথে আরও দুই ডিজাইনের ভাপা পুলি পিঠা তৈরি করলাম।পুলি পিঠা আমাদের দেশে শীতকালীন পিঠার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী পিঠা। আর যদি পুলি পিঠা ভাপে তৈরি করা হয় তাহলে তা আরও বেশি স্পেশাল হয়ে উঠে। আমরা যদি পুলি পিঠা তেলে ভাজি তাহলে তেলের খাবার আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।ভাপে তৈরি করলে তা আমাদের জন্য স্বাস্থ্যকর হয়।তাই আমি আজকে ভাপে তৈরি করলাম। ভাপা পুলি পিঠা আমাদের দেশে অনেক জনপ্রিয়। এই পিঠা অনেক অঞ্চলে বিভিন্ন নামে পরিচিত।যেমন, খুলনা অঞ্চলে কুলিপিঠা নামে পরিচিত। এই পিঠা আমারও খুব প্রিয় একটি পিঠা। বিশেষ করে এই পিঠা ভাপে তৈরি করা হয় বলে আমার অনেক পছন্দের। আশা করি আমার পিঠা রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে। আমার আজকের পিঠা তৈরিতে কি কি উপকরণ লাগে তা নিচে দেওয়া হল।
ভাপা রোল পুলিপিঠা
উপকরণ :
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
চালের গুড়া | ১ কেজি |
খেজুরের গুড় | ৫০০গ্রাম |
নারিকেল | ২টা কোড়ানো |
লবন | পরিমাণমতো |
তেজপাতা | ৪ টা |
দারুচিনি | ৪ টুকরা |
এলাচি | ৪ টা |
পানি | পরিমাণমতো |
পুর তৈরি করার প্রণালী
ধাপ ১ :
প্রথমে আমি দুইটা নারিকেল ভালোভাবে চামড়া ছাড়িয়ে নিলাম। এরপর নারিকেল গুলোকে কেটে দুই ভাগ করে নিলাম। ভিতরে পানি গুলো আলাদা করে নিলাম। এভাবে আমি নারিকেল দুইটা সুন্দরভাবে কেটে নিলাম।
ধাপ ২ :
এরপরে আমি খেজুরের গুড় নিলাম। আমি একটা কাটার এর সাহায্যে খেজুরের গুড় টাকে কুচি করে নিলাম। এরপর নারিকেল গুলোকে কুড়িয়ে নিলাম। আমি এখানে চার টুকরো নারিকেল কোরানো নিয়েছি।
ধাপ ৩ :
এরপর আমি চুলায় একটি ফ্রাইপেন বসালাম। এরপর এর মধ্যে নারিকেল কোড়ানো গুলো দিয়ে দিলাম। নারকেলের উপরে কুচি করে রাখা খেজুরের গুড় দিয়ে দিলাম। এরপর একসাথে দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে দিলাম। এখানে আমি কোন তেল বাটার ব্যবহার করিনি।
ধাপ ৪ :
এরপরে এর মধ্যে দারুচিনি, এলাচি, তেজপাতা এই উপকরণ গুলো দিয়ে দিলাম। এরপর পরিমাণমতো একটু লবণ দিয়ে দিলাম। এই সবগুলো উপকরণ দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে চেড়ে দিলাম। দেখব নারিকেল থেকে পানি বেরিয়ে গেছে।
ধাপ ৫ :
এরপর ঘন ঘন নাড়তে থাকবো। না হলে তলায় লেগে যাবে। এভাবে নাড়তে নাড়তে পানি গুলো যখন শুকিয়ে আসবে তখন এগুলা থেকে দারুচিনি তেজপাতা গুলো একটু একটু করে উঠিয়ে নিলাম। এরপর নাড়তে নাড়তে একেবারে শুকিয়ে নিলাম।
ধাপ ৬ :
পুরটা শুকিয়ে আসলে এরপর চুলা থেকে নামিয়ে নিলাম। চুলা থেকে নামিয়ে একটি প্লেটে ঢেলে নিলাম। এখানে আমি পুরটাকে একবারে শুকনো রাখলাম।
কাই করার প্রণালী :
ধাপ ১ :
এরপর আমি চুলায় একটি পাত্রে পানি বসালাম। এরপর আমি পানি গুলা ফুটন্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করব। কিছুক্ষণ পর পানি খুব ভালোভাবে ফুটে উঠল।
ধাপ ২ :
পানি গুলা ফুটে উঠলে এরপর এর মধ্যে চালের গুড়া দিয়ে দিলাম। চালের গুড়া গুলো দিয়ে আমি সাথে সাথে নাড়বো না। কিছুক্ষণ আরো ভালোভাবে ফুটে উঠার পর একটু একটু করে নেটে ছেড়ে দিলাম। এভাবে আমি নেড়ে নেড়ে কাইটা তৈরী করে নিলাম।এরপর আমি চুলা থেকে নামিয়ে নিলাম।
ধাপ ৩ :
এরপর একটা ভোলের মধ্যে ঢেলে নিলাম। আমি কিছুক্ষণ হালকা ঠান্ডা হলে এর পরে হাত দিয়ে একটু একটু করে মেখে নিলাম। মাথার সাথে সাথে আমি একটু একটু ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করলাম।এভাবে আমি মেখে একটি গো তৈরি করলাম।
পিঠা তৈরি করার প্রণালী :
ধাপ ১ :
এরপর আমি একটু বেশি করে আটা নিয়ে একটা গোল ডো তৈরী করে নিলাম। এরপর এরমধ্যে চালের গুড়া দিয়ে একটু একটু করে বেলে নিলাম। এভাবে আমি একটু বড় করে রুটিটা বেলে নিলাম।
ধাপ ২ :
এরপরে বড় রুটির মধ্যে তৈরি করে রাখা পুর একটু একটু করে নিলাম। এরপরে হাত দিয়ে পুরো রুটির মধ্যে পুর দিয়ে নিলাম। এখানে আমি পুরো রুটির মধ্যে দিলাম।
ধাপ ৩ :
পুর গুলো দেওয়া হয়ে গেলে এরপর হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে রোল তৈরী করে নিলাম। এরপর আমি একটু পানি লাগে পুরের মুখ জোড়া লাগিয়ে নিলাম। এবং দুই সাইট ভালোভাবে বন্ধ করে নিলাম। এভাবে আমি বড় বড় দুইটা রোল তৈরি করে নিলাম।
ধাপ ৪ :
এরপরে একটা ছোট রুটি তৈরি করে এর মধ্যে পুরে দিয়ে অপর পাশ থেকে ঢেকে এর সাইট গুলোকে একটু বাকা বাকা করে চেপে চেপে মুখ বন্ধ করে দিলাম। এই ডিজাইনের কয়েকটা তৈরি করলাম।
ধাপ ৫ :
এছাড়াও গোল ফুলের মত কয়েকটা পিঠা তৈরী করে নিলাম। এভাবে আমি সবগুলো পিঠা তৈরী করে নিলাম। আমি সবগুলো পিঠা একটি ট্রেতে নিলাম।
পিঠা ভাপে দেওয়ার প্রণালী
ধাপ ১ :
প্রথমে আমি একটি বড় পাতিলে কিছু পরিমাণ পানি নিলাম। এরপর একটা নেট ভালোভাবে ধুয়ে পাতিল এর উপরে লাগিয়ে বেঁধে নিলাম। এরপর চুলায় বসিয়ে পানি ফুঁটানো পর্যন্ত অপেক্ষা করব।
ধাপ ২ :
এরপর নেট দিয়ে যখন ভাপ বের হবে তখন নেটের উপরে একটা একটা করে পিঠা দিয়ে দিলাম। সবগুলো পিঠা দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম। এরপর প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষা করবো।
ধাপ ৩ :
এরপর ৩০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে দেখব পিঠা গুলো কিরকম হলো। আমার পিঠাগুলো হয়ে গেছে। পিঠা গুলো হয়ে গেলে আমি চুলা অপ করে দিলাম।
ধাপ ৪ :
এরপর পিঠা গুলো একটা একটা করে উঠিয়ে নিলাম। এরপর একটা ট্রেতে নিয়ে রোল গুলোকে ছুরি দিয়ে কেটে নিলাম। সবগুলো পিঠা কেটে নিলাম।
শেষ ধাপ :
এরপর আমি সবগুলো পিঠা সাজিয়ে পিঠা গুলোর কিছু ফটোগ্রাফি করলাম। আশা করি আমার আজকের ভাপে রোল পিঠা তৈরীর রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে।
পিঠাসহ আমার ছবি
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | রেসিপি |
---|---|
ডিভাইস | Redmi note 9 |
ফটোগ্রাফার | @tasonya |
লোকেশন | ফেনী |
আমার পরিচয়
আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের একজন ছাত্রী। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।
আপু অনেক সুন্দর একটা রেসিপি তৈরি করেছেন আপনি।শীতেরপিঠা ভাপা রোল পুলিসহ আরো কয়েক ডিজাইনের ভাপা পুলি। যা দেখে সত্যি অনেক ভালো লেগেছে আমার। আর অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে পুরো রেসিপি তৈরি করেছেন। যা দেখে মনে হচ্ছে কত না টেস্টি হয়েছে। আপনার জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইল।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার পোস্টটা দেখার জন্য এবং এত সুন্দর ভাবে মন্তব্য করার জন্য।
শীতেরপিঠা ভাপা রোল পুলিসহ আরো কয়েক ডিজাইনের ভাপা পুলি আপনার প্রশংসা করতে হয় আপু আপনার রেসিপি দেখে তো খেতে ইচ্ছা করছে অনেক সুন্দর করে উপস্থাপনা করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে আপু আপনার জন্য শুভকামনা রইলো
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে মন্তব্য করার জন্য।
আপু এগুলো কি রেসিপি শেয়ার করলেন লোভ সামলানো মুশকিল বহয়ে যাচ্ছে। এত সুন্দর সুন্দর পিঠা আপনি বানিয়েছেন যে খুবই খেতে ইচ্ছা করছে দেখে। আপনার এই রেসিপি দেখে বাসায় একবার চেষ্টা করতেই হবে । না হলে হচ্ছে না। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য বাসায় অবশ্যই বানিয়ে দেখবেন খুব ভালো হবে।
শীত চলে আসছে আর চারদিকে পিঠাপুলির ধুম পড়ে গেছে। সেই সুবাদে আপনিও আমাদের মাঝে নতুন নতুন মজার মজার পিঠা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছেন। ভাপা রোল পিঠা রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে মন্তব্য করার জন্য।
শীত মানেই পিঠার উৎসব বাহারি রকমের পিঠা খাওয়ার ধুম।ভাপা পিঠা আমার খুবই পছন্দের একটি পিঠা।আর রোল ভাপা খেতে খুবই দারুজ লাগে আমি গত শীতে এটা খেয়েছিলাম
ধন্যবাদ আপু রেসিপিটি সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টটা দেখার জন্য এবং এত সুন্দর ভাবে মন্তব্য করার জন্য।
ভাপা রোল পুলিপিঠা টা প্রথম দেখলাম। দেখতে এক ধরনের মিষ্টির মতন লাগছে। খুবই সুন্দর ভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি দেখিয়েছেন আপু। উপস্থাপনা টাও করেছেন দারুণভাবে আপনি। সব মিলিয়ে বলা যায় একটা কমপ্লিট প্যাকেজ। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আমার পোস্ট এত ভালোভাবে দেখার জন্য এবং এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
পিঠা গুলো দারুন হয়েছে দেখেই, খেতে ইচ্ছে করছে খুব। একই উপকরণ এবং প্রসেসে তিনটা পিঠা তৈরি করেছেন। তিনটা পিঠায় দেখতে অনেক সুন্দর হয়েছে । যদিও পুলি পিঠে সাথে পরিচিত হলেও ওই দুইটা পিঠার সাথে পরিচিত নয়।
পারলে আপনার জন্য পাঠিয়ে দিতাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার মন্তব্য পেয়ে খুবই ভালো লাগলো।
পুলি পিঠা অনেক ভালো লাগে। আমি শীত কাল এলেই বিভিন্ন ধরনের পুলি পিঠা তৈরি করি। আমি আপনার পুলি পিঠা দেখে লোভ সামলাতে পারছি না। আপনার রোল করা পুলি পিঠা অনেক সুন্দর হয়েছে।আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
অনেক অনেক ধন্যবাদ বৌদি। আপনার মন্তব্য পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। মনে হচ্ছে রেসিপি টা খুব একটা খারাপ তৈরি করিনি।
আপনার পিঠে পুলি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে দেখে মনমুগ্ধকর হয়ে গেলাম। এত সুন্দর করে আপনি পিঠাগুলোর উপস্থাপনা করেছেন। দেখে খুবই ভালো লাগলো। তাই আপনাকে আমার পক্ষ থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই ধন্যবাদ আপনাকে।
অসাধারণ হয়েছে আপু আপনার পিঠা রেসিপি। পুলি পিঠা আগে খেয়ে ছিলাম। তবে ওই দুই ধরনের পিঠা আগে দেখিনি। আসলে লোভনীয় লাগছে পিঠা গুলো দেখতে। দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। খুব সুন্দর রেসিপি শেয়ার করেছেন আপু। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু আমার পোস্ট দেখার জন্য এবং এত সুন্দর ভাবে মন্তব্য করার জন্য।