ABB Contest-57 || বিমান ঘুড়ি তৈরি।
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি অনেক সুন্দর একটি বিষয় উপস্থাপন করতে আসছি। তবে প্রথমেই আমাদের এবারে এত সুন্দর একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য আমাদের আরিফ ভাইয়াকে জানাই অনেক ধন্যবাদ। আসলে আমার বাংলা ব্লগ মানেই হচ্ছে নতুন কিছু। এমনকি আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অভিজ্ঞতাগুলো নিতে পারছি।
সত্যি বলতে এবারের প্রতিযোগিতা দেখে আমি একেবারে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কেননা আমি কখনোই ঘুড়ি তৈরি করিনি, এমন কি ঘুড়ি ওড়ানোর সুযোগ হয়নি। প্রথম থেকেই আমি অনেকটা হতাশ ছিলাম যে এবারে কি করব। যেহেতু এই কাজের একদমই অভিজ্ঞতা নেই তাই জন্য আমি বুঝতে পারছিলাম না কিভাবে কি তৈরি করব। প্রথম কয়েকদিন এইসব বিষয়গুলো ভাবতে ভাবতেই কেটে গেলো। এরপরে ভাবলাম চেষ্টা করা যাক। তখনই আমি আমাদের বাড়ির পাশের একজনের কাছ থেকে একটা বাঁশের টুকরো নিয়ে এসে বসে পড়ি তৈরি করার জন্য।
তবে আমি ঠিক করে নিলাম যে আমি বিমান ঘুড়ি তৈরি করব। আসলে বাসের অংশ কেটে কাঠি তৈরি করাটাও অনেক কঠিন একটা কাজ। যেটা এর আগে আমি কখনোই করিনি। এগুলো তৈরি করতে আমার বেশ কষ্ট হয়েছিল। এরপর যখন এই কাঠিগুলোকে একটা একটা করে সুতা দিয়ে বেঁধে জোড়া লাগানো শুরু করি, তখন তো আরো বেশি সময় এবং কষ্ট হয়েছিল। কিন্তু তখন আমি বুঝতে পারছিলাম না যে আদৌ পুরোটা কমপ্লিট করতে পারব কিনা। হয়তোবা এটা তৈরি করলে উড়াতে পারবো কিনা।
প্রথম দিন শুধুমাত্র বাঁশের কাঠিগুলো দিয়ে প্লেনের অংশটা তৈরি করতেই লেগে গিয়েছিল। এর পরের দিন মূলত প্লেনের মধ্যে কাগজ লাগিয়ে কমপ্লিট করেছি । এরপর এর মধ্যে সুতা বেঁধে নিলাম। যেহেতু আমার কাছে নাটাই ছিল না তাই জন্য আমি একটা বোতলের মধ্যে সুতা পেঁচিয়ে নিলাম। তবে ঘুড়িটা কোথায় উড়াবো সেটা নিয়েই চিন্তিত ছিলাম। এরপর বিকেলের দিকে আমি আমার হাজব্যান্ড এবং দেবরকে বলি একটু দূরে মাঠে গিয়ে এই ঘুড়িটা উড়াতে। আসলে যেহেতু আমি এখানকার বউ মানুষ এজন্য আমার যাওয়াটা ভালো দেখাবে না।
তখন ওরাই ঘুড়িটা নিয়ে বের হলো। তবে ওরা যখন মাঠে গিয়েছিল ওইখানে নাকি অনেক ছেলেরা চলে আসলো। তখন সবাই মিলে ঘুড়িটা উড়ানোর চেষ্টা করল। শুনেছি একেবারে উপরে না উঠলেও কিছুটা উড়েছিল। আসলে এরা কেউ ঘুড়ি উড়ানোতে দক্ষ নয়। তার সাথে যেহেতু প্রচন্ড বাতাস ছিল, এইজন্য ফটোগ্রাফি করতেও অসুবিধা হয়েছে। কারণ বাতাসের মধ্যে এটা অনেকটা ঘুরছিল। তবে যাই হোক আমি তো ভেবেছিলাম হয়তোবা একটুও উড়বে না। তবে সব মিলিয়ে বেশ ভালোই লেগেছে। এই অভিজ্ঞতা বেশ এনজয় করলাম। আশা করি আপনাদের ও ভালো লাগবে।
যে ভাবনা সেইভাবে কাজ শুরু করলাম। আজকের এই ডাই করতে আমার কি কি উপকরণ লাগলো এবং কিভাবে আমি এই ডাই তৈরি করলাম তার ধাপে ধাপে বর্ণনা করে আপনাদের সাথে এই সম্প্রদায়ে ভাগ করে নিলাম। আশা করি আমার আজকের ডাই পোস্ট আপনাদের ভালো লাগবে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
• বাঁশ
• দা
• রঙিন কাগজ
• কাঁচি
• গাম
• সুতা
প্রয়োজনীয় বিবরণ :
ধাপ - ১ :
প্রথমে আমার একটা বাঁশের কিছুটা অংশ নিলাম। এরপর এটাকে মাঝখান বরাবর করে কেটে নিলাম।
ধাপ - ২ :
এরপর বাঁশের টুকরোটাকে কেটে চিকন চিকন করে কতগুলো কাঠি তৈরি করে নিলাম।
ধাপ - ৩ :
এরপর আমি একটা চিকন কাঠি কে গোল করে এরপর সুতা দিয়ে বেঁধে নিলাম।
ধাপ - ৪ :
এভাবে আমি তিনটা সাইজের পাঁচটা গোল বৃত্ত তৈরি করে নিলাম বাঁশের কাঠি দিয়ে।
ধাপ - ৫ :
এরপর একটা কাঠির মধ্যে লম্বা লম্বা চারটা কাঠি সুতা দিয়ে বেঁধে নিলাম।
ধাপ - ৬ :
এরপর আমি একটা একটা করে গোল বৃত্তগুলো এই চারটা কাঠির মধ্যে সুতা দিয়ে বেঁধে জোড়া লাগিয়ে নিলাম।
ধাপ - ৭ :
এরপর আমি সামনের অংশটার মধ্যে আরও চারটা কাঠি বেঁধে কোনা করে একসাথে বেঁধে নিলাম।
ধাপ - ৮ :
এরপরে নিচের একটা অংশে তিন কোনায় তিনটা কাঠি বেঁধে জোড়া লাগে নিলাম।
ধাপ - ৯ :
এভাবে নিচের অংশে দুইটা ডানা এবং উপরের অংশে দুইটা দানার মত করে কাঠিগুলো বেঁধে নিলাম। অনেকটা প্লেনের মতো মনে হচ্ছে। আসলে আমি এটা প্লেন তৈরি করব তাই এরকম করে বাঁশের কাঠিগুলো জোড়া লাগিয়ে নিলাম।
ধাপ - ১০ :
এরপর আমিও উপরের অংশটার মধ্যে নীল রঙের বড় রঙিন কাগজ একটু একটু করে পেঁচিয়ে জোড়া লাগিয়ে নিলাম।
ধাপ - ১১ :
এরপর ডানাগুলোর মধ্যে লাল রঙের কাগজ জোড়া লাগিয়ে নিলাম।
ধাপ - ১২ :
এরপর ছোট অংশের ডানাগুলোর মধ্যে কমলা কালারের কাগজ একটু একটু করে জোড়া লাগিয়ে নিলাম।
শেষ ধাপ :
এভাবে আমি পুরো পোস্ট করা শেষ করি। আশা করি আমার আজকের ডাই পোস্ট আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আবারও দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ডাই |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy S23 Ultra |
ফটোগ্রাফার | narocky71 |
লোকেশন | ফেনী |
আমার পরিচয়
আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি গ্রেজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।
🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀 |
---|
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
আপু, আপনার তৈরি বিমান ঘুড়িটি দেখে আমি তো একেবারে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। খুব সুন্দর করে তৈরি করেছেন, যা দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সত্যিই আপু অনেকটা সময় ও অনেকটা ধৈর্য ধারণ করে আপনি এত সুন্দর একটি বিমান ঘুড়ি তৈরি করেছেন, তার প্রশংসা না করলেই নয়। আপু আপনি কিভাবে এত সুন্দর একটি বিমান ঘুড়ি তৈরি করেছেন, তার প্রতিটি ধাপ শেয়ার করেছেন, এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বিমান ঘুড়ি আসলে ধৈর্য ধরে তৈরি করেছি আর প্রচুর সময় লেগেছিল।
https://twitter.com/TASonya5/status/1785500243058180453?t=x7h05N2q3L02WWPnoCo0zg&s=19
এই প্রতিযোগিতায় তোমার অংশগ্রহণ টা দেখে সত্যি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। প্রতিযোগিতা উপলক্ষে তুমি অনেক সুন্দর একটা বিমান ঘুড়ি তৈরি করেছ। সেটা দেখতেও খুব ভালো লেগেছে। আসলে ওই দিন যখন ঘুড়ি উঠানোর জন্য গিয়েছিলাম, তখন অনেক ছেলে চলে এসেছিল। যে বিষয়টা আমার কাছে ভালোই লেগেছিল। তবে ঘুড়িটা একটু হলেও উড়ে ছিল, এটাই আমার কাছে ভালো লেগেছে। তুমি নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে এটা তৈরি করলে। এত সুন্দর একটা বিমান ঘুড়ি তৈরি করে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ।
চেষ্টা করেছি নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ঘুড়িটা তৈরি করার জন্য।
আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন দেখে ভালো লাগলো।
আপনার ঘুড়িটি দেখতে বেশ আকর্ষণীয় এবং সুন্দর হয়েছে।
ছোটদের কাছে আবেগের নাম ঘুড়ি।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে একটি সুন্দর ঘুড়ি তৈরি করে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
এই প্রতিযোগিতায় আমার অংশগ্রহণ দেখে আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম।
আমার বাংলা ব্লগ মানেই নতুন কিছু আয়োজন। ভিন্ন রকম আয়োজন গুলো সব সময়ই ভালো লাগে। বিমান ঘুড়ি তৈরি দেখতে অসাধারন লাগতেছে আপু। অনেক সময় নিয়ে পুরোটা কাজ শেষ করেছেন। আপনার ঘুড়ি তৈরির দক্ষতার প্রশংসা করতে হয়। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকবেন।
আমার ঘুড়ি তৈরীর দক্ষতার প্রশংসা করলেন দেখে ভালো লাগলো।
খুবই চমৎকার একটি ঘুরি আপনি আজ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বিমান ঘুরি এর আগে দেখেছিলাম কখুনো উড়ায়নি।অনেক ধন্যবাদ প্রতিটি ধাপ সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য। শুভ কামনা রইলো।
আমি তো এইবার প্রথম তৈরি করেছি ঘুড়ি।
প্রথমে অভিনন্দন জানাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। সত্যিই ঘুড়ি বানাতে অনেক বেশি কষ্ট বিশেষ করে বাঁশ থেকে কাঠি তৈরি করাটা বেশি কষ্ট। কারণ এটা একটি নির্দিষ্ট মাপে পড়তে হয়। অনেক কষ্টের পরও আপনি বানাতে পেরেছেন দেখে ভালো লাগলো।
কাঠিগুলো তৈরি করা আসলেই কষ্টকর। তবুও চেষ্টা করেছি সুন্দর করে তৈরি করার জন্য।
প্রথমেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু। আসলে ঘুড়ি বানানো অনেক কঠিন কাজ। তাছাড়া, যারা আগে কখনো ঘুড়ি তৈরি করেনি, তাদের কাছে বিষয়টা অনেক বেশি কঠিন মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে আপনি কিন্তু সেই হিসেবে অনেক সুন্দর ঘুড়ি বানিয়েছেন এবং ঘুড়ি বানিয়ে যে আকাশে উড়াতে পেরেছেন, এটাই অনেক। যাইহোক, আপনার ঘুড়ি তৈরির পদ্ধতিটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগলো।
হ্যাঁ ভাইয়া উড়াতে পেরেছি এটাই অনেক। সুন্দর একটা মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
চমৎকার একটি ঘুড়ি বানিয়ে এবারের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন আপু। আপনার তৈরি বিমান ঘুড়িটি দেখতে অসাধারণ লাগছে। ঘুড়িটি তৈরি করার জন্য আপনি খুবই পরিশ্রম করেছেন এটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এত সুন্দর একটি ঘুড়ি তৈরি করেছেন এবং বাচ্চারা মিলে সেটা উড়াচ্ছে সব মিলিয়ে ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপু।
আমার তৈরি করা বিমান ঘুড়ি অসাধারণ লাগতেছে শুনে ভালো লাগলো।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা দেখতে পেয়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো। আপনার ঘুড়ি বানানোর দৃশ্যগুলো দেখতে পেয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম। আপনি কখনো ঘুড়ি বানাননি কিন্তু এত সুন্দরভাবে বিমানঘুড়ি বানিয়েছেন এবং এই বিমান ঘুড়িটি আকাশে অসাধারণভাবে উড়ছে, এই দৃশ্যটি দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লাগলো। ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। ছোটবেলা আমরা এই ঘুড়ি আকাশে উড়াতাম।
ঘুড়ি উড়ার দৃশ্য দেখে আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম।