প্রকৃতির মাঝে এক কাপ চায়ের সাথে।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। দিনটা যখন প্রকৃতির মাঝে কাটানো হয় তখন আরো বেশি সুন্দর হয়ে ওঠে। আমি সব সময় প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে বেশি পছন্দ করি। আসলে আমরা যত বেশি শহরের জনবহুল পরিবেশে সময় কাটাই না কেন। এই ধরনের পরিবেশে তেমন একটা ভালো লাগে না।

1666407356054.jpg

device : Redme note 9

লোকেশন

কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে গিয়েছিলাম। এমনিতে চট্টগ্রাম শহরটাই বেশ সুন্দর এবং মনোমধ্যকার। বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকার জায়গাগুলো অনেক বেশি সুন্দর। প্রথমত আমরা গিয়েছিলাম চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতালে। আসলে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরের জায়গাগুলো এত প্রকৃতিপ্রেমী কি বলবো। আমার তো ইচ্ছে করছিল পুরো দিনটা সেখানে কাটিয়ে দিতে। প্রথমে যখন আমরা ভেতরের দিকে যাচ্ছিলাম সেখানে একটা সিএনজি করে হাসপাতালে জায়গায় গিয়েছিলাম।

হাসপাতালের এরিয়ার মধ্যে যখন প্রবেশ করি দেখলাম মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ। অনেক সুন্দর সুন্দর এমনটি বড় কিছু নারিকেল গাছ ছিল। যা দেখতে সত্যিই অসাধারণ। তার মধ্যে নিচের দিকে সবুজ ঘাসে ভরা। ঘাস হলেও সেগুলোকে একেবারে যত্নের মাঝে রেখেছে। আবার তার মধ্যে অনেক সুন্দর সুন্দর ডিজাইন করে কিছু ফুল গাছ লাগানো হয়েছে। যেহেতু সামনে শীতকাল শীতকালে ফুলের সৃজন অনেক বেশি। এইজন্য দেখতে পেলাম অনেক সুন্দর সুন্দর কিছু ফুল গাছ রোপনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

1666407355862.jpg

1666407356120.jpg

device : Redme note 9

লোকেশন

সেখানে আবার অনেক বড় একটি মাঠ রয়েছে। মাঠের মধ্যে সবুজ ঘাসে ভরা। তার মাঝে অনেকগুলো বসার জায়গা ছিল। প্রকৃতির হাওয়া যেন জায়গাটাকে আরও বেশি মনোমুগ্ধকর করে তুলেছিল। আমি তো সেখানে গিয়ে বেশ উপভোগ করছিলাম। আমরা প্রায় অনেকটা সময় মাঠের টেবিলের উপরে বসেছিলাম। এত সুন্দর হাওয়া বইছিল আর লম্বা লম্বা নারিকেল গাছগুলো দুল ছিল আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।

আমি তো আমার হাজব্যান্ড কে বলছিলাম আমার এখানে সারাদিন থেকে যেতে ইচ্ছে করছে। তখন ভাবলাম এই সময়টায় প্রকৃতির মাঝে বসে এক কাপ চা খেলে কি রকম লাগবে। সেখানে এমনিতে কোন দোকানপাট ছিল না কিন্তু হাসপাতালের ভিতরে ক্যান্টিন ছিল। তখন আমার হাজব্যান্ড কে বলাতে ও ক্যান্টিন থেকে চা নিয়ে এসেছিল। আমি তো সাধারণত মেশিনের চা গুলা পছন্দ করি না। কিন্তু দেখলাম সেখানকার চা টা কিন্তু বেশ ভালোই লেগেছিল। চায়ের মধ্যে অনেক সুন্দর একটা ফ্লেভার ছিল। যখন প্রকৃতির মাঝে বসে চায়ে চুমুক দিচ্ছিলাম মুহূর্তটা যেন আরো সুন্দর হয়ে উঠলো।

1666407355990.jpg

1666407355926.jpg

device : Redme note 9

লোকেশন

আমরা যখন প্রথমে হাসপাতালে মধ্যে তিন তলায় ছিলাম। সেখানকার বারান্দা থেকে নিচের দিকের কয়েকটা ফটোগ্রাফি করি। ফটোগ্রাফি গুলো ছিল বেশ মনোমুগ্ধকর। নারিকেল গাছ, আকাশ এবং সবুজ মাঠ সবকিছুই যেন আকর্ষণীয়। ফটোগ্রাফিটা করার পর, এটা যে আমার ফটোগ্রাফি সত্যিই বুঝতে পারছিলাম না। আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো। যেন চারদিকের সৌন্দর্য এমনকি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবকিছুই সেখানে বিরাজমান।

আমরা প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সেখানে বসে ছিলাম। সময়টা কি যে ভালো যাচ্ছিল আসলেই বোঝাতে পারবো না। আমার তো সেখান থেকে আসতে ইচ্ছে করছিল না। ভাবছিলাম যদি সেখানে একেবারে থেকে যেতে পারতাম। তাহলে মনে হয় বেশ ভালো উপভোগ করতে পারতাম। আমার কাছে শহরের জনবহুল জীবন কাটাতে একদমই ভালো লাগেনা। এরকম সবুজ প্রকৃতির সাথে সময় কাটাতে সব থেকে বেশি ভালো লাগে।

আর সব থেকে বড় কথা আমার মেয়েটা অনেক বেশি খুশি হয়েছিল। আমরা তো বসেছিলাম কিন্তু ও তো বসে থাকার মেয়ে নয়। সবুজ ঘাসের উপরে দৌড়াদৌড়ি করছিল। আর অনেক বেশি খুশি। ওর খুশি দেখে আমার নিজেরও বেশ ভালো লাগছিল। যেহেতু খোলামেলা জায়গা ছিল সেজন্য ওকে আটকায়নি। ও নিজের মত খেলাধুলা করুক এটাই চেয়েছিলাম। নিজের মতো করে পরিবেশটাকে খুব সুন্দর ভাবে উপভোগ করছিল। এ বিষয়টা আমার নিজের কাছে বেশ ভালো লাগছিল। আসলে বাচ্চারা এরকম ভাবে খেলাধুলা করলে তাদের জন্য অনেক বেশি উপকারী।

IMG-20221022-WA0029.jpg

IMG-20221022-WA0027.jpg

যখন এই লেখাগুলো লিখছিলাম সেদিনের কথাগুলো মনে পড়ছিল। আর ইচ্ছে করছিল এইরকম পরিবেশে আবারো দিন কাটাই। আসলে প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গেলে মনে হয় শেষ হবে না। কিন্তু আজকে এ পর্যন্তই। সবাই সুস্থ এবং ভালো থাকবেন। পরবর্তীতে আবারও আসবে নতুন কিছু নিয়ে।

আমার পরিচয়

1635518106012.jpg

আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের একজন ছাত্রী। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।

🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀

আসুন সবাই মন খুলে বাংলায় ব্লগিং করি

IMG-20220501-WA0005.jpg

Sort:  
 2 years ago 

আপু আপনি সাধারণত মেশিনের চা পছন্দ করেন না। কিন্তু সেখানকার চাটা ভালো লাগার কারণে খেয়েছেন। চট্টগ্রামে আমি আজও যাইনি কিন্তু আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আমার চট্টগ্রাম শহর টা দেখা হয়ে গেল। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মনমুগ্ধকর পরিবেশ শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপনি আমার পোষ্টের মাধ্যমে চট্টগ্রামের কিছুটা দেখেছেন এটা শুনে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

আর্মি তে কয়েকবার পরীক্ষা দেওয়ার সুবাদে ক্যান্টমেন্ট এ যাওয়া হয়েছিল।সেখানকার সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশই ছিল আমার অন্যতম মোটিভেশন।এত সুন্দর পরিবেশ মেইনটেইন করতে অন্যকোথাও দেখি নি।আর মেশিনের চা আমারো পছন্দ না।তবে আপনি যে চা টি খেয়েছেন, সেটাকে মাসালা চা বলে।এটা বেশ সুস্বাদু। আপনার ব্লগটি পড়ে অনেক ভাল লাগল।আর ফটোগ্রাদ গুলোও বেশ হয়েছে।ধন্যবাদ আপু আমাদের সাথে ব্লগটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন প্রাকৃতিক পরিবেশটাই সেখানকার অন্যতম মোটিভেশন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আমি সব সময় প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে বেশি পছন্দ করি।

আপনার মত আমারও ঘোরাফেরা করতে প্রকৃতির মাঝে বিশুদ্ধ অক্সিজেন নিয়ে কিছুটা সময় প্রশান্তির সাথে কাটানো সাথে যা হোক বা অন্য কিছু খাবার হোক। যদি সাথে বন্ধু বা সব আসে না তাকে তাদের সাথে গল্প আড্ডায় কিছুটা সময় অতিবাহিত করতে কি যে ভালো লাগে আসলে সেটা বলে বোঝাতে পারবো না।।

ঠিকই বলেছেন আপনি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সৌন্দর্য হচ্ছে পাহার আর পাহাড় কে ঘিরে থাকা তরুলতা।। পাহাড় প্রমাণ করতে আমার খুবই ভালো লাগে বিশেষ করে পাহাড়ের জনপদ এর জীবনযাপন এবং পাহাড়ের উপর বেয়ে ওঠা সবুজ প্রকৃতি এক কথায় অসাধারণ।।।

 2 years ago 

পাহাড়ের সৌন্দর্য গুলো সত্যি মনমুগ্ধকর। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপনার এই পোস্ট দেখেই বোঝা যাচ্ছে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতালে অনেক চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। সত্যি বলতে প্রকৃতির মাঝে সময় কাটাতে অনেক বেশি ভালো লাগে আমরা যারা প্রকৃতি প্রেমী তাদের কাছে প্রকৃতির মানেই যেন ভালোবাসা। ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে বসে চা খেয়েছেন এবং দু'ঘণ্টা সেখানে অতিবাহিত করেছেন এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। শীতকাল থাকার কারণে এখন চারিদিকে ফুলের সমরাহ, সুন্দর এই মুহূর্তটা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আসলে ঠিক বলেছেন শীতকাল আসার কারণে চারিদিকে ফুলের সমারোহ বাড়ছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

চট্টগ্রামের ক্যান্টনমেন্ট এরিয়াটা আসলেই অনেক সুন্দর। আমিও ক্যান্টনমেন্ট এরিয়ায় কিছুদিন আগে গিয়ে ঘুরে আসলাম তবে হাসপাতালের এই এরিয়া টার দিকে যাওয়া হয়নি অন্য সাইটগুলোতে গিয়ে ঘুরে আসলাম বেশ ভালই লাগে। আসলে এত চমৎকার হওয়া বাতাস গাছপালা গুলো খুবই চমৎকার সেই সাথে আসলেই থেকে যাওয়ার মত অবস্থা একটা জায়গা। বাচ্চারা এমনই হয় একটু খোলামেলা জায়গা পেলেই তাদের উচ্ছাস আনন্দে শেষ থাকে না। শুধু ছুটে বেড়ায় এদিক ওদিক ওই মুহূর্তগুলো আসলে বেশ ভালোই লাগে।

 2 years ago 

আপনি নিজেও চট্টগ্রামের ক্যান্টনমেন্ট এরিয়ায় গিয়েছেন এটা জেনে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট আমি অনেকদিন থেকেছি প্রায় দুই মাসের মতো আমি ক্যান্টনমেন্টে মধ্যে ছিলাম আপুর বাসায়। এবং ক্যান্টনমেন্টের এই সৌন্দর্য দৃশ্য গুলো আমার খুবই ভালো লাগে। যাই হোক আপনি প্রকৃতির মাঝে এক কাপ চায়ের সাথে এই সৌন্দর্যময় মুহূর্ত কাটালেন। ভালো লাগলো ফটোগ্রাফি গুলো।

 2 years ago 

আপনি দুই মাস ক্যান্টনমেন্ট থেকেছেন এটা শুনে ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটাতে কার না ভালো লাগে। চট্টগ্রাম শহরটা আসলেই খুব সুন্দর। আমিও কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম শহরে ঘুরে আসলাম। পাহাড়, সমুদ্র সবকিছুর সৌন্দর্য সেখানে আমাকে মুগ্ধ করেছে। ক্যান্টনমেন্টের পরিবেশটা আসলেই খুব সুন্দর। বাচ্চারা একটু খোলামেলা জায়গা পেলে আনন্দের আর ছুটোছুটির শেষ থাকে না। ফটোগ্রাফি খুব ভালো ছিল আপু।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন, বাচ্চারা একটু খোলামেলা জায়গা পেলে বেশ আনন্দ করে।

 2 years ago 

চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট এ অপরূপ সৌন্দর্যময় মুহূর্তের দৃশ্য গুলো দেখতে খুবই ভালো লাগলো। আসলেই সুন্দর প্রকৃতির পরিবেশ আমার অনেক ভালো লাগে।

 2 years ago 

অপরূপ সৌন্দর্যের দৃশ্যগুলো সত্যি ভীষণ ভালো লাগে।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.16
JST 0.028
BTC 67628.32
ETH 2424.36
USDT 1.00
SBD 2.35