ডাই : পুরাতন সোয়েটার এবং জিন্স প্যান্ট দিয়ে তৈরি বাচ্চাদের জুতা।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

হ্যালো বন্ধুরা,

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি অনেক সুন্দর একটি ডাই প্রজেক্ট নিয়ে আসলাম। আমি পুরাতন সোয়েটার এবং জিন্স প্যান্ট দিয়ে বাচ্চাদের জুতা তৈরি করলাম।

এই ধরনের কাজগুলো করতে আমি বরাবরই পছন্দ করি। কিন্তু এই কাজগুলো করা অনেক বেশি সময় এবং ধৈর্যের প্রয়োজন। প্রায় অনেকদিন হলো এরকম কঠিন কাজ গুলো করি না। এইজন্য আবারো ইচ্ছে করছিল এই ধরনের কাজগুলো করি। বিশেষ করে একটা সোয়েটার দেখে মনে হল এটা দিয়ে যদি কিছু তৈরি করি তাহলে ভালই লাগবে। সাথে সাথে চিন্তা করলাম আমার মেয়ের জন্য এক জোড়া জুতা তৈরি করব। আসলে ওর জন্য যদি হাতে কিছু তৈরি করি ও ভীষণ খুশি হয়। প্রথমে ভেবেছিলাম পার্ফেক্ট ভাবে তৈরি করতে পারব কিনা। যদি আবার এলোমেলো করে ফেলি তাহলে তো সর্বনাশ। কিন্তু পুরোপুরি তৈরি করার পর দেখলাম যে ভালোই লাগছে।

যাইহোক, যে ভাবনা সেইভাবে কাজ শুরু করলাম। আজকের এই ডাই করতে আমার কি কি উপকরণ লাগলো এবং কিভাবে আমি এই ডাই তৈরি করলাম তার ধাপে ধাপে বর্ণনা করে আপনাদের সাথে এই সম্প্রদায়ে ভাগ করে নিলাম। আশা করি আমার আজকের ডাই পোস্ট আপনাদের ভালো লাগবে।

1667105930802.jpg

প্রয়োজনীয় উপকরণ

• পুরাতন সোয়েটার
• কাঁচি
• জিন্স প্যান্ট
• পেন্সিল
• শক্ত বোর্ড
• সুঁই
• সুতা
• সেলাই মেশিন

IMG_20221028_170308.jpg

প্রয়োজনীয় বিবরণ :

ধাপ - ১ :

প্রথমে আমি একটি পুরাতন সোয়েটার নিলাম। এরপর একটা ছোট জুতার মাপ নিয়ে দাগ দিলাম।

1667100351391.jpg

ধাপ - ২ :

এরপরে একটু একটু করে দাগ অনুসারে কেটে নিলাম। এভাবে আমি দুই টুকরো কেটে নিলাম।

1667100393578.jpg

ধাপ - ৩ :

একই রকম ভাবে একটা জিন্স প্যান্ট থেকে জুতার মাপ নিয়ে দুই টুকরা করে কেটে নিলাম।এরপর চিকন করেন দুইটা টুকরো কেটে নিলাম। এরপর মাঝখানের জন্য দুইটা টুকরো কেটে নিলাম। এরপর একটা শক্ত বোর্ড থেকে দুই টুকরো কেটে নিলাম।

IMG_20221028_171407.jpg

IMG_20221028_172212.jpg

IMG_20221028_183217.jpg

ধাপ - ৪ :

এরপর আমি সেলাই মেশিন দিয়ে গোল করে সমানভাবে সেলাই করে নিলাম।

1667100519643.jpg

ধাপ - ৫ :

এরপরে দুই টুকরো সেলাই করে এরপর মাঝখান থেকে কেটে উল্টো করে নিলাম। এরপরে ভেতরের দিকে শক্ত বোর্ডটাকে দিয়ে দিলাম।

1667100600429.jpg

ধাপ - ৬ :

এরপরে চিকন করে কেটে নেওয়া অংশ দুইটাকে দুইটা ভাজ করে সেলাই করে নিলাম। তারপর অংশগুলোকে উল্টো করে নিলাম।

1667100615848.jpg

ধাপ - ৭ :

এরপর এই অংশটা কে সুই সুতা দিয়ে এক পাশে থেকে একটু একটু করে সেলাই করে পিছনের অংশে জোড়া লাগিয়ে নিলাম।

1667100628143.jpg

ধাপ - ৮ :

এরপর উপরের অংশটাকে দুইপাশ থেকে সেলাই করে জোড়া লাগিয়ে নিলাম।

1667100651210.jpg

ধাপ - ৯ :

এভাবে আমি দুইটা জুতা তৈরি করে নিলাম।

IMG_20221028_194801.jpg

ধাপ - ১০ :

এরপরে আমি ছোট ছোট করে কয়েকটা কাপড়ের টুকরো কোনা করে কেটে নিলাম। এরপর টুকরো গুলোকে জুতার উপরে দুইটা কানের মত দুই পাশে লাগিয়ে নিলাম।

IMG_20221028_195558.jpg

IMG_20221028_201946.jpg

ধাপ - ১১ :

এরপরে কালো দুইটা পুথি চোখের মত লাগিয়ে নিলাম।

IMG_20221028_202903.jpg

শেষ ধাপ :

এভাবে আমি পুরো ডাই করা শেষ করি। আশা করি আমার আজকের ডাই আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আবারও দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন।

1667103681718.jpg

1667103681626.jpg

1667103681842.jpg

1667103681674.jpg

1667103681569.jpg

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীডাই
ডিভাইসRedmi note 9
ফটোগ্রাফার@tasonya
লোকেশনফেনী

আমার পরিচয়

1635518106012.jpg

আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের একজন ছাত্রী। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।

🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

আসুন সবাই মন খুলে বাংলায় ব্লগিং করি

IMG-20220501-WA0005.jpg

Sort:  
 2 years ago 

সত্যি আপনার বুদ্ধি আছে বলতে হবে। সাধারণ একটি সোয়েটার দিয়ে আপনি অসম্ভব সুন্দর এক জোড়া জুতা তৈরি করে ফেলেছেন। আপনার এই জুতা তৈরি ব্যাপারটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে যদি ও এ কাজটা অনেক সময় সাপেক্ষ এবং পরিশ্রমের ব্যাপার।

 2 years ago 

আপনি যে এই কাজটা পছন্দ করেছেন সত্যি খুবই ভালো লাগলো। আর সত্যিই এই কাজটা করতে আমার অনেক বেশি সময় এবং পরিশ্রম লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ওয়াও আপু আপনার বুদ্ধি প্রশংসা করতেই হবে ৷ আপনি পুরাতন সোইটার দিয়ে আপনার মেয়ের জন্য জুতা বানিয়েছেন ৷ আসলে বর্তমান তো শীত কাল ৷ তাই এই সময়ে ছোট বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগা যাবে না ৷ ভালো করেছেন আপু জুতা বানিয়ে ৷ আর দেখতে একদম নতুন এর মতো আর মডেলও ছিল ৷
নিশ্চই মামুনি পরে মজা পাবে ৷

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন এই জুতাটা বাচ্চাদের ঠান্ডা লেগে যাবে না। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন আপু এ ধরনের দোস্তগুলা প্রস্তুত করতে অনেক সময় এবং ধৈর্যের প্রয়োজন হয় আপনার এমন পোস্ট বরাবরই দেখে আসছি আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।।।

জিন্সের প্যান্ট এবং পুরাতন সোয়েটার দিয়ে দারুন ভাবে আপনার বাচ্চার জন্য এক জোড়া জুতা প্রস্তুত করে ফেলেছেন দেখতে খুবই সুন্দর দেখাচ্ছে মনে হচ্ছে আপনার বাচ্চা অনেক খুশি হবে।।

 2 years ago 

জ্বী ভাইয়া অনেক বেশি খুশি হয়েছে আমার মেয়ে।

 2 years ago 

পুরাতন সোয়েটার এবং জিন্স প্যান্ট দিয়ে তৈরি বাচ্চাদের জুতা দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। প্রশংসনীয় কাজ করেছেন আপনার প্রশংসা করতে হয়। আমিও শিখে নিলাম আমার ভাগ্নিকে বানিয়ে দিবো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

 2 years ago 

আপনার প্রশংসা পেয়ে ভীষণ ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপু পুরাতন সোয়েটার ও জিন্স প্যান্ট দিয়ে খুব সুন্দর একটি জুতা আপনি আপনার মেয়ের জন্য বানিয়েছেন। প্রতিটি ধাপ অনেক সুন্দর করে দেখিয়েছেন। আপু শেষ ধাপে আপনি ভুলবশত পেইন্টিং লিখেছেন কাইন্ডলি ঠিক করে নিয়েন। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আমি ভুল করে লিখে ফেলেছিলাম ঠিক করে নিয়েছি আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 
আপনি ত দেখি মারাত্মক ক্রিয়েটিভ একজন মানুষ। বাসার পুরাতন সোয়েটার আর জিন্স প্যান্ট দিয়ে মেয়ের জন্য জুতা বানিয়ে নিয়েছেন। অনেক কঠিন কিন্তু সুন্দর একটি ডাই এর কাজ আপনি সম্পন্ন করেছেন। আপনি ত দেখি সেলাই কাজও জানেন। জুতা দেখে মনে হচ্ছে এইমাত্র শপ থেকে কিনে এনেছে। আপনি কষ্ট করে বানিয়েছেন আপনার মেয়ে ত খুশি হবেই। আপু শেষ ধাপে মনে হয় ভুলে পেইন্টিং লিখেছেন। ধন্যবাদ আপু।
 2 years ago 

আপনাদের এত প্রশংসাতে সত্যি আমার কাজের সার্থকতা হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপু আপনি খুব ভালো ভালো কাজ জানেন।আসলেই ছোট বাচ্চাদের জন্য কিছু বানালে তারা খুব খুশি হয়।পুরাতন জিনিস দিয়ে আমি দেখিছি অনেক জিনিস তৈরি করা যায়,কিন্তু আমি কখনো চেষ্টা করিনি।আপু খুব সুন্দর করে পুরাতন সোয়েটার আর জিন্স দিয়ে মেয়ের জন্য সুন্দর জুতা বানিয়েছেন। শীতের জন্য ভালো হবে।ভালো ছিলো।ধন্যবাদ

 2 years ago 

সব সময় চেষ্টা করি ভালো কাজ করার। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

পুরাতন সোয়েটার এবং জিন্স প্যান্ট দিয়েও যে এত সুন্দর বাচ্চাদের জুতা তৈরি সম্ভব আপনার পোস্ট না দেখলে অনেক মিস করে যেতাম আপু।ইউনিক একটি ডাই দেখতে পেলাম একদিন।আমার অনেক ভালো লেগেছে।আপনার এরকম আরো সৃজনশীলতা দেখার অপেক্ষায় থাকবো আপু।আপনার মেয়েতো সুন্দর জুতাটি পেয়ে অনেক খুশি হয়েছে নিশ্চয় ।ধন্যবাদ সুন্দর ইউনিক পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

জি অনেক বেশি খুশি হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আপু আপনার তো দেখছি দারুন বুদ্ধি ।পুরনো জিনিস দিয়ে কিভাবে নতুন বানাতে হয় তা আপনার কাছ থেকেই শিখতে পেরেছি। ফেলে দেওয়া সোয়েটার ও প্যান্ট দিয়ে আপনি দারুন জুতা বানিয়েছেন। শীতের মধ্যে এই জুতাগুলো আপনার বাচ্চা পরলে তার ঠান্ডা লাগবে না। এগুলো পরে বাইরে হাঁটলে পায়ে গরম লাগবে। বানানোর পদ্ধতি দেখে আমিও শিখে নিতে পারলাম এবার আমিও এরকম বাচ্চাদের জন্য তৈরি করার চেষ্টা করব।

 2 years ago (edited)

আপনি নিজেই তৈরি করবেন এটা শুনে খুবই খুশি হলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

অও,আইডিয়াটি অসাধারণ ছিল আপু।সত্যিই আপনার কাজের তুলনা হয় না।এই ধরনের diy তৈরি অনেক সময়ের ব্যাপার ও কষ্টের।জুতার জোড়া বেশ কিউট দেখতে হয়েছে।আশা করি আপনার বাচ্চা এটি পড়ে বেশ আরাম পাবে ও খুশি হয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আসলে ঠিক বলেছেন এটা অনেক সময়ের ব্যাপার। পছন্দ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 61039.43
ETH 2460.28
USDT 1.00
SBD 2.66