ভয়ংকর স্বপ্ন।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

20230209_183156_0000.jpg
ক্যানভা দিয়ে তৈরি

হ্যালো বন্ধুরা,

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। বর্তমানে লেখালেখি করতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। এজন্য ভাবলাম আজকেও একটা বিষয় নিয়ে লিখি। আমাদের কমিউনিটিতে সবাই খুব সুন্দর সুন্দর গল্প লিখে। গল্পগুলো পড়তেই যেন গল্পের কাহিনীর ভেতরে ঢুকে পড়ি। এইজন্য আমি ভাবলাম আমিও একটা গল্প লিখব। যদিও বিভিন্ন লেখালেখি করলে ও আমার কখনো গল্প লেখা হয়নি। তাই ভাবলাম আজকে একটা গল্প লিখি। আশা করি আমার গল্পটা পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।

এক ছিল মিন্টু এবং সাথী। ওরা দুজন ছিল বন্ধু। দুইজন একই স্কুল থেকে লেখাপড়া করেছে। বর্তমানে ওরা দুজনে একসাথে কলেজে লেখাপড়া করে। তাই ওদের বন্ধুত্বের সম্পর্কটা বেশ ভালো। কলেজে আসা-যাওয়া এবং পড়ালেখা, আড্ডা দেওয়া সবকিছুই ওরা একসাথেই করতো। বিশেষ করে কলেজের যেকোনো অ্যাসাইনমেন্ট একসাথে করতো। এভাবেই ওদের দুইজনের লাইফ চলছিল। একদিন হঠাৎ করে মিন্টু বলল ওর মায়ের খুব অসুখ। এইজন্য ওর মাকে হসপিটালে ভর্তি করেছে। তখন সাথী মিন্টুর কথা শুনে সাথে সাথেই মিন্টুর মাকে দেখার জন্য হসপিটালে গেল।

তখন গিয়ে দেখে মিন্টুর মায়ের খুবই খারাপ অবস্থা। এটা দেখে সাথীর ভীষণ খারাপ লাগলো। মিন্টু ছাড়া মিন্টুর মায়ের আর কেউ ছিল না। কারণ ওদের পরিবারের আর কেউ ছিল না। যেহেতু মিন্টুর মা একজন মহিলা। এইজন্য মিন্টুর মায়ের দেখাশোনা করার জন্য সাথী হসপিটালে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। কারণ যতই হোক মিন্টুর মা একজন মহিলা মানুষ। ছেলে ওর যতই দেখাশোনা করুক একটা মেয়ে থাকলে বেশি সুবিধা হবে। যদিও হসপিটালের রুমে দুইটা সিট ছিল। তখন সাথী রাতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। মিন্টু তখন সাথী কে বলল তোকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিব সত্যি আমার বলার ভাষা নেই।

তখন সাথী বলল, কি যে বলিস আমি তোর বন্ধু না। তখন মিন্টুর মা একটু ঘুমিয়ে ছিল। ওরা দুইজন বসে বসে গল্প করছিল। তখন প্রায় রাত হয়ে আসলো। যেহেতু হসপিটালের রুমে দুইটা মাত্র সিট, এইজন্য তখন মিন্টু বলল ঠিক আছে তুই এখানে ঘুমিয়ে যা আমি বাইরে যাচ্ছি। তখন সাথী বলল তুই কোথায় থাকবি। মিন্টু বলছে বাইরে একটা বেঞ্চ রয়েছে আমিও ওইখানেই শুয়ে পড়বো। সাথি বলল ঠিক আছে তাহলে যা। তখন প্রায় গভীর রাত, হসপিটালের বারান্দায় আর কেউ ছিলনা। শুধুমাত্র একা একটা বেঞ্চ ছিল। আর ওই বেঞ্চের মধ্যে মিন্টু শুয়ে ঘুমিয়ে আছে। তখন সেখান থেকে একটা কান্নার আওয়াজ আসছিল। মিন্টু হঠাৎ করে জেগে গেল।

তখন ও চার-পাশটা দেখতে লাগলো। কিন্তু কোথাও কেউ ছিল না। মিন্টু একটু ভয় পেয়ে গেল। মিন্টু খেয়াল করে দেখলো আশেপাশে কেউ নেই। কিন্তু আওয়াজটা ক্রোমশই বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তখন মিন্টু ওর মায়ের রুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। যত রুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল আওয়াজটা যেন আরও বেশি শুনতে পাচ্ছিল। রুমের দরজা টা একটু ফাঁক করতে দেখতে পেল সাথি বসে বসে কান্না করছে। এটা দেখে মিন্টু তো একেবারে অবাক হয়ে গেল। তখন মিন্টু দেখলো সাথী একেবারে নিচের দিকে তাকিয়ে কান্না করছে। পেছন দেখে মিন্টু গিয়ে সাথীর গায়ে হাত দিয়ে বলল কিরে সাথী কি হয়েছে। সাথী তাকাতেই মিন্টু যেন তিন হাত দূরে গিয়ে ছিটকে পরল। কারণ দেখলো সাথীর পুরো মুখে আগুন জ্বলছে। মিন্টু তো ভয়ে একেবারে শেষ।

তখন সাথী একটু একটু করে মিন্টুর দিকে পা বাড়াচ্ছিলাম। মিন্টু তো নিচে পড়ে গিয়েছিল। তখন সে সাথীকে ডাকতে চাইছিল কিন্তু ওর মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না। এদিকে সাথী ক্রমশ মিন্টুর দিকে এগিয়ে আসছিল। মিন্টু আরও বেশি ভয় পেয়ে গেল। মিন্টু আরো বেশি ভয় পিছনে যাচ্ছিল। মিন্টু যত বেশি পিছনে যাচ্ছিল সাথী তত বেশি এগোচ্ছিল। তখন মিন্টু পেছনে দেখলেও একটা বারান্দা। মিন্টু আস্তে আস্তে দৌড়ে বারান্দার কাছে চলে গেল। সাথী আস্তে আস্তে মিন্টুর দিকে এগোচ্ছিল। মিন্টু তাকিয়ে দেখলো পিছনে আর যাওয়ার জায়গা নেই। মিন্টু শুধু সাথীর আগুন মাখা মুখের দিকে তাকাচ্ছিল। আর বারান্দার নিচের দিকে তাকাচ্ছিল। তখন ভাবল বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিবে। যখন সাথী একেবারে কাছে চলে আসলো। মিন্টু আর কিছু না ভেবেই বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিল।

তখন চোখ মেলে তাকাতেই মিন্টু দেখলো ও বেঞ্চ থেকে নিচে পড়ে গেল। উঠে দাঁড়িয়ে ভাবল সাথী কোথায় গেল। সাথীর তো আগুন মাখা মুখ ছিল। তখন মিন্টু চিন্তা করলো আসলে এই সব কিছুই স্বপ্ন ছিল। তখন সাথে সাথে মিন্টু ওর মায়ের রুমে গিয়ে দেখল সাথী কোথায় আছে। তখন দেখল সাথী একটা সিটে ঘুম আছে আর অন্য সিটে ওর মা ঘুমাচ্ছে। এইটা দেখেই মিন্টু অনেকটা শান্তি পেল। তখন দেখল প্রায় অনেকটা ভোর হয়ে এসেছে। সকালে যখন উঠল তখন সাথীকে মিন্টু ওর স্বপ্নের কথাগুলো বলছিল। তখন ওরা দুইজনেই হাসতে হাসতে শেষ। ওদের দুজনের বন্ধুত্ব বেশ মিষ্টি সম্পর্ক। এভাবেই চলতে লাগলো।

আমার পরিচয়

1635518106012.jpg

আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের একজন ছাত্রী। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।

🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀

আসুন সবাই মন খুলে বাংলায় ব্লগিং করি

IMG-20220501-WA0005.jpg

Sort:  
 last year 

গল্পটা পড়ে তো প্রথমে বেশ ভয় পেয়ে গেছিলাম আসলে মিনটু লাফ দিয়ে মারা যাবে নাকি তাই! কিন্তু গল্পের শেষে দেখলাম আসলে এটা একটা স্বপ্ন ছিল।কিন্তু মাঝে মাঝে স্বপ্ন যে এত ভয়ঙ্কর হয় বলে বোঝাতে পারবো না।যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন খুব আফসোস লাগে এবং খারাপ লাগে।অনেক মজার একটি গল্প লিখেছেন পড়ে তো খুব ভালো লেগেছে তেমনি ভয়ও পেয়ে গেছি।আপনার গল্প লেখা অনেক সুন্দর হয়েছে অনেক ধন্যবাদ আপু।

 last year 

সত্যি ভয়ংকর স্বপ্নগুলো দেখার পর ঘুম ভাঙলে খুবই খারাপ লাগে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আপু আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগল। আসলে আমি ও প্রথমে ভেবেছিলাম সত্যি সাথীর মুখে আগুন জ্বলছে,আর এটা ভেবে অনেক ভয় পেয়ে যায়।যাইহোক স্বপ্ন তো স্বপ্ন। সাথী আর মিন্টুর বন্ধুত্ব টিকে থাকুক আজীবন।ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আসলেই স্বপ্ন স্বপ্নই হয়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

বাহ গল্পটি পড়ে আপু খুবই ভালো লেগেছে ।সাথির আগুন মুখের কথা শুনে বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ।কিন্তু পরে যখন শুনতে পেরে পেরেছি যে ওটা স্বপ্ন ছিল তখন বেশ হাসিও পেয়েছে। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর ও ভয়ংকর গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আসলেই এই গল্পটি শেষের অংশে একটু হাসার ছিল। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আমি তো গল্পটি পড়তে পড়তে ভাবছি এ কি ভয়ংকর গল্প ৷ আসলে আপু স্বপ্ন এমন একটা জিনিস যা রাতের ঘুম কেরে নেয় ৷ আপনার গল্পে মিন্টু সাথী কে এক দূস্বপ্ন দেখেছিল ৷
আসলে মাঝে মধ্যে এমন হয় ৷ যা হোক ভালো লাগলো ৷

 last year 

ঠিকই বলেছেন স্বপ্ন মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নেয়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

গল্পটা পড়তে পড়তে প্রথম থেকে বেশ ভালই লাগছিল। সাথী এবং মিন্টুর সম্পর্কটা ভীষণ ভালো লাগলো। কিন্তু প্রথমে সাথীর মুখে আগুনের কথাটা শুনে ভয় পেয়ে গেছিলাম। কি ভয়ংকর একটা কান্ড ছিল। পরবর্তীতে যখন দেখলাম আসলে এটা স্বপ্ন ছিল, তখন খুবই হাসি পেল। আসলে স্বপ্নের মধ্যে এরকম অনেক কিছুই হয়ে থাকে। আমরা অনেক সময় স্বপ্নের জগতে থাকলে সবকিছু যেন সত্যি মনে হয়। পরবর্তীতে যখন দেখি এটা স্বপ্ন ভীষণ হাসি পায়। বেশ সুন্দর লাগলো গল্পটা পড়ে।

 last year 

যাক গল্পটা পড়ে হাসতে পেরেছেন এটা জেনে ভালো লাগলো।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

স্বপ্নটা শুনে তো বেশ ভয় পেয়ে গেলাম আপু। আসলে মাঝে মাঝে এমন ভয়ংকর স্বপ্ন আমিও দেখি বেশ ভয় লাগে। আমি তো ভেবেছিলাম সত্যি সত্যি সাথী বুঝি আগুন মুখে 😲 ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। পরে অবশ্যই বুঝতে পেরেছি যে এটি আসলেই স্বপ্ন। বেশ মজার ছিল গল্পটি।।

 last year 

আসলে আমরাও কিন্তু মাঝে মাঝে এই ধরনের স্বপ্ন দেখে থাকি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

কিছু স্বপ্ন আছে মাঝেমধ্যে বাস্তব হয়ে যায়। তবে মাঝেমধ্যে কিছু স্বপ্ন দেখতে ভালো লাগে আবার তার মধ্য থেকে অনেক সময় ভয়ংকর স্বপ্ন দেখা হয়ে যায় যখন ঘুমের ঘরেই স্বপ্নের মধ্যে খুবই ভীত সঞ্চয় হয় এদিকে নিজেও হাফিয়ে যেতে হয়। যেন ঘুম ভাঙার পরে স্বস্তি পাওয়া যায়। তবে যাই হোক আপনি যে সুন্দর ওভাবে আজকের এই স্বপ্নমূলক ঘটনাটি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন তার পরে কেমন জানি একটি অন্যরকম অনুভূতি ফিল করলাম। এত সুন্দর ভাবে গল্পটি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

স্বপ্ন বাস্তব হয় কিনা এটা আমার জানা নেই। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

গল্পটা অনেক সুন্দর ছিলো তবে স্বপ্নটা আসলেই অনেক ভয়াবহ ৷ এমন স্বপ্ন হাসপাতালের বারান্দায় এক যদি দেখা যায় তো অবস্থা শেষ হয়ে যাবে ৷ যাই হোক গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷ সুন্দর লিখেছেন আপু , ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য ৷

 last year 

সত্যিই ভীষণ ভয়ংকর অবস্থা। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 61436.95
ETH 3388.33
USDT 1.00
SBD 2.49