ছায়াছবি "সহজ পাঠের গপ্পো" নিয়ে কিছু কথা|| ১০% বেনিফিশিয়ারি @shy-fox ও ৫% @abb-school এর জন্যে
ছবিটি ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশট করে নেওয়া হয়েছে।
আজ ছায়াছবি ' সহজ পাঠের গপ্পো ' নিয়ে আলোচনা করলাম। খুব সামান্য বাজেট নিয়েও কিভাবে ছবিটি জাতীয় পুরস্কার লাভ করে, তারই বিস্তৃত আলোচনা হল এই পোস্টে।
পরিচালক : মানস মুকুল পাল
প্রযোজক : অভিজিৎ সাহা
চিত্রনাট্যকার : মানস মুকুল পাল
উৎস : বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটগল্প 'তালনবমী' অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির নির্মাণ।
চিত্রগ্রাহক : মৃন্ময় মণ্ডল , সুপ্রতিম ভোল
সম্পাদক : সুজয় দত্ত রায় , অনির্বান মাইতি
মুক্তি : ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬
মানস মুকুল পাল পরিচালিত ছায়াছবি 'সহজ পাঠের গপ্পো' বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এক নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করেছে।ছবিটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ' তালনবমী ' গল্প অবলম্বনে নির্মিত।
ছবিটি গ্রাম বাংলার অতি সাধারণ একটি পরিবারের গল্প তুলে ধরেছে, যে পরিবারের কর্তা একজন ভ্যান চালক কিন্তু তিনি বড় অসুখে পড়ে তার কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। পরিবারের দুই শিশু গোপাল ও ছোটুর ওপর সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব পড়ে। দুটি শিশু কিভাবে সংসার সামলে উঠছে, কিভাবে বাস্তব সমাজকে চিনে ফেলছে এই ছবিতে তারই সুবিস্তৃত দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়।
আমরা দেখি সেই দুটি শিশু সমাজের সাথে লড়াই করে এগিয়ে চলার চেষ্টা করছে। এই ছবিতে দরিদ্র ও অর্থবান দুটি গোত্রের কথা উল্লেখ আছে এবং ধনী-দরিদ্র নিয়ে যে লড়াই হয় তাই এই ছবির মূল উপজীব্য।
পরিচালক মানস মুকুল পাল একটি সত্যিকারের ছবি বোধহয় বানাতে চেয়েছিলেন, যেখানে তার কোন স্বার্থ ছিল না! তিনি হয়তো চেয়েছিলেন একটি ঘটনা ছবিতে ফুটিয়ে তুলতে, যা বাস্তব জীবনের দলিল হয়ে থেকে যায়। দরিদ্রের লড়াইয়ের অস্ত্র হিসেবে রয়ে যায়। জীবনপ্রাণ দিয়ে ছবিটি
বানিয়েছিলেন বলেই হয়তো ছবিটি এত সাফল্য অর্জন করে।
ছবিটি ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশট করে নেওয়া হয়েছে।
ছবিতে দেখা যায়, গোপাল ও ছোটু নামের দুই ভাই সংসারের চাপে পড়াশুনো বাদ দিয়ে লোকের বাড়ি কাজ করতে যায়, তার মা দুই ভাইকে পড়াশোনা থেকে সরিয়ে নিয়ে এসে এসকল কাজে যুক্ত করে। তা নাহলে তারা অনাহারে মরবে। গোপাল সংসার সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হলেও ছয় বছর বয়সী ছোট শিশু ছোটু কিন্তু মোটেই তা বুঝতে পারেনা। তাই সে গ্রামের বড় বাড়ির নেমন্তন্ন খাবার জন্য খুব কান্নাকাটি করে, সে চেষ্টা করে যাতে তাকে নেমন্তন্ন করা হয়। ছবিতে দেখা যায়, সে নেমন্তন্নের জন্য ভোর-ভোর তাল কুড়িয়ে বড় বাড়িতে দিয়ে আসে।
কিন্তু এত কিছু করার পরেও ছোটু ও তাদের পরিবারকে নেমন্তন্ন করা হয় না। গোপাল এসব বোঝে, তাই সে ছোটুকে খুব বকে এমনকি হাত তোলে। কারণ তার অল্প বয়সে এই বোধটুকু হয়ে গেছে যে গরিবের আসলে কেউ নেই এবং সে তালগুলো সেই বাড়িতে না দিয়ে যদি বিক্রি করতো তাহলে অন্তত পঞ্চাশ টাকা হতো।
গোপাল ছোট ভাইকে মারলেও তাকে পুনরায় আদর করে, এবং কঠিন সমাজের দিকে তাকিয়ে তারা নতুনভাবে চলার শপথ গ্রহণ করে। এই হল ছবির মূল গল্প।
ছবিটি বেশ কয়েকটি জাতীয় পুরস্কার ভাব করলে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির চোখের সামনে আসে।
পরিচালক অত্যন্ত কষ্ট করে ছবিটি বানিয়েছেন তা ছবিটি দেখলেই বোঝা যায়। এই ছবিতে দেখা যায় বসিরহাট অঞ্চলের ডায়ালেক্ট ব্যবহার করতে এমনকি ছবিতে পরিচিত কোন মুখ নেই!
কোন পেশাদার অভিনেতা নেই এই ছবিতে। বসিরহাটের কয়েকটি স্কুল থেকে খোঁজাখুঁজি করে ছবি দুটির প্রধান ক্যারেক্টার গোপাল ও ছোটু উদ্ধার করা হয়।
ছবিটি ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশট করে নেওয়া হয়েছে।
পরবর্তী সময়ে ছবিটি ভীষণভাবে প্রশংসিত হয়। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বড় বড় পরিচালকরা প্রথমে ছবিটি সেভাবে দেখেনি বা নজর দেয়নি। ছবিটি যখন জাতীয় পুরস্কার লাভ করে তখন ছবিটি তাদের চোখের সামনে আসে ও তারা দেখে যে ছবিতে সত্যিই অসাধারণ অভিনয় হয়েছে এবং ছবির প্রত্যেকটা শট অত্যন্ত নিখুঁতভাবে নেওয়া এবং যতটা সম্ভব অর্গানিক ফর্মে নিয়ে আসা।
বলা যেতে পারে ছবির পরিচালক মানস মুকুল পাল অভিনয় করিয়ে নিয়েছে। তিনি অভিনয় কিভাবে করে নিতে হয় সেটা জানেন। এ থেকে ছবির পরিচালকের কর্মদক্ষতাও আন্দাজ করতে পারি আমরা।
সবমিলিয়ে ছবিটি অসাধারণ একটা বাংলা সমাজ চিত্রের জীবন্ত দলিল।
আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে। আগামীকাল নতুন একটি বিষয় নিয়ে আবার হাজির হবো। আপনাদের সুস্থতা কামনা করে আজকের পোস্টে ইতি টানলাম। ধন্যবাদ।
@tarique52
সহজ পাঠের গল্পো মুভিটা আমি হইচই দেখে দেখেছি। দারুণ একটি কাহিনী। এখানে বতর্মান সমাজের একটি ঘৃর্ণিত দিক তুলে ধরা হয়েছে। অনেক সুন্দর লিখেছেন মুভিটা নিয়ে।
তবে আমার বাংলা ব্লগের মুভি রিভিউ করার কিছু নিয়ম আছে। আপনি সেগুলো অনুসরণ করেননি। এবং এভাবে গুগল থেকে ছবি নিয়েছেন সেটা তো কপিরাইট ফ্রী না।
ধন্যবাদ। সিনেমার রিভিউ এর ক্ষেত্রে গুগল ও ইউটিউব ছাড়া গতি থাকেনা। তবুও সংশোধন করলাম। গুগল থেকে নেওয়া ছবি গুলো সরিয়ে ইউটিউব থেকে স্ক্রীনশট করে পুনরায় দিলাম।
ধন্যবাদ
সহজপাঠের গল্প মুভিটার ট্রেলার দেখেছিলাম পুরো মুভি দেখা হয়নি।
আর ভাই নাটক সিনেমা রিভিউ এর ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম আছে সেগুলো আপনাকে পালন করা উচিত।
ধন্যবাদ। সংশোধন করা গেছে।