স্বরচিত কবিতা: দুর্গা বলছি|| ১০% বেনিফিশিয়ারি @shy-fox ও ৫% abb-school এর জন্যে
এ কবিতা লিখেছিলাম গেল বছর লকডাউনের বেলায়। নিছক শখে নয়, এ লেখা ভেতর থেকে কেউ ঠেলে লিখতে বাধ্য করেছিল। যে তাড়াটা এসেছিল তাতে, আমার লেখায় কার কার কি কি এসে যাচ্ছে - মূলত এই কবিতায় সেসব হিসেব করবার সুযোগ পায়নি। বুঝতে পারছিলাম মনের ভেতরে যে শব্দগুলো প্রতিবাদ মিছিল শুরু করেছে, তাদের বের করে না আনলে আজ আমার রেহাই নেই। তাই ভেতর থেকে সে সকল শব্দকে বের করে কাগজে জড়ো করি, সেগুলোকে হাতে করে কিছু না থাকার এই বেকার জীবনে কিছু থাকার তৃপ্তি অনুভব করি। এবার বলি, সেদিন হটাৎ করেই চোখে পড়েছিল ঘটনাটা, ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে দেখলাম একটা ছবি ও সাথে তারই সামান্য একটু বর্ণনা। একটা মেয়ে ধর্ষণ হয়েছে। নীল আকাশের নিচে কাশবনের মধ্যে মেয়েটা পড়ে। ব্যাস। একটা ছোট্ট চ্যানেল এই রিপোর্টটা পোস্ট করে। কেউ কেউ একটু স্যাড রিয়্যাক্ট দিয়েছে - এই যা, যেন কোনো ঘটনা নয়। আমার কাছেও হয়তো সামান্য ঘটনায় মনে হতো, কিন্তু হটাৎ করে সেই পড়ে থাকা মেয়েটির মায়ের কথা মনে পড়লো। হটাৎ ভাবলাম, মেয়েটি পড়ে আছে। তার মা সেটা জানেনা। সংসারের কিনা কাজ করছে। বাবাটা হয়তো কোথায় গেছে। মেয়েটা হয়তো তার মাকে বলে গেছিল মা আজ তোমার জন্যে আজ চুরমুর নিয়ে আসবো। মেয়েটা এখন পড়ে। তার মা কি সেটা জানে! আমার তখনও সেই ছবিতে চোখ। একটু আনমনা হয়েগেছি। হটাৎ মনে হলো ঘটনাটা আমার মধ্যে বাড়ছে। বাড়ছে। ক্রমশ ফুলে ফুলে উঠছে। তখন এই কবিতাখানি আমাকে লিখতে হয়। নিজের কাছে নিজেকে বাঁচানোর জন্যে এ কবিতা না লিখে উপায় ছিলনা। নিম্নে পূর্ণ কবিতাটি প্রদত্ত হলো-
Image source : Pexel
দূর্গা বলছি
একটা। দুটা। তিনটা। চারটা...
মদের ভাঙ্গা বোতল তখনও গেঁথে আছে
বুকের অনেক গভীরে...
পৃথিবীর মুখ দেখিয়েছিল আমায়।
মনে পড়ল তুলসী মঞ্চ। মনে পড়ল
গন্ধরাজের সুবাসে মেতে ওঠা সন্ধ্যের উঠোন।
মনে পড়ল আমার ছেলেবেলা....
হয়ে এল!
মিলিয়ে গেল আজীবনের মতন!
তোমাদের রক্তের দুর্গা!
খড়, চুন, মাটি, রং, সাড়ির সাথে আমিও
তলিয়ে গেলাম ক্রমশ!
মা গঙ্গার বুকে...
তোমাদের রক্তের দুর্গা!
আজ এই কবিতা দিয়েই আজকের পোস্টের পরিসমাপ্তি করলাম। সুস্থ থাকুন। শুভেচ্ছা।
@tarique52
আপনার স্বরচিত দুর্গা কবিতাটি খুবই ভালো লাগলো।। এভাবেই এগিয়ে যান আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আপনার কবিতাটি পড়ে আমার অনেক অনেক ভালো লেগেছে, আপনার কবিতার মধ্যে আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে এই লাইনগুলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আপনার স্বরচিত কবিতা দূর্গা আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। খুব সুন্দর ভাবে দুর্গা কবিতা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন কবিতার প্রতিটি লাইন ছিল মনমুগ্ধকর। এত সুন্দর একটি কবিতা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ একরকম আহত হয়েই লেখা গেছিল কবিতাখানি। ধন্যবাদ আপনাকে। এভাবেই পাশে থাকুন। শুভেচ্ছা।
যদিও কবিতা আমি খুব ভালো একটা বুঝি না। তবে এখন কবিতাটি পড়ে যা বুঝলাম নিজের মনের ভাব প্রকাশ করেছেন আপনি কবিতার মাধ্যমে। আসলে কবিতা বুঝতে অনেক ধরনের জ্ঞান লাগে। যদিও আমি কবিতা এভাবে লিখতে পারিনা। প্রথমে আপনি বলেছেন যে কবিতা লেখার জন্য একটা মনের তাড়না কাজ করে।যাই হোক ভাল লাগল ভাই আপনার কবিতাটি।ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি কবিতা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
কিছু কিছু এমন, সত্যই না লেখা অব্দি কেমন ভুক্তভোগীর কাছে নিজেকে ঋণী লাগে। তাই লিখতেই হয়। ধন্যবাদ আপনাকে দাদা।
বেশ অসাধারণ একটি কবিতা লিখেছেন আপনি। কবিতার প্রত্যেকটি লাইন খুবই চমৎকার লেগেছে আমার। আপনি এত সুন্দর কবিতা লিখেন তা আমার জানা ছিল না। এভাবে এগিয়ে যান আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। তার সাথে ঈদের শুভেচ্ছা রইল।
আমি মূলত গদ্য লিখি। কবিতা খুব কম। তবে কিছু কিছু কবিতা লিখতে হয়। কবিতা লিখতে হয় কারণ কবিতার মধ্যে একটা ক্ষমতা আছে, যেটা গদ্য দিয়ে হয়না। কবিতা অস্ত্র। দীর্ঘমেয়াদী অস্ত্র।
আপনার লেখা কবিতাটি আমার অনেক ভালো লাগলো ৷ যদিও আমি কবিতার মাঝে ততটা নাই ৷ না কবিতা লিখতে পারি , না অন্যর কবিতার মানে বুঝতে পাড়ি ৷ তবুও আপনার এই কবিতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷ এভাবেই এগিয়ে জান ৷ আপনার জন্য শুভকামনা রইল ৷
আপনার মধ্যে কবিতা নিয়ে একটা নিরব আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, যেটা দরকারও বটে। বড় কবিগণ যারা আছেন বা সাধারণ ক্ষেত্রেও দেখবেন, কোনো প্রতিবাদ-মিছিলে তারা মূলত কবিতাকে বড় আশ্রয় করে, কারণ কবিতা দ্রুত বিস্তার লাভ করে, এটা কবিতার বড় একটা ধর্ম, আর এর ধার বহুদিন যাবত তীক্ষ্ণ থাকে।
অসাধারণ ভাই খুবই দুর্দান্ত কবিতা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন সত্যি দেখে খুবই মুগ্ধ হলাম বিশেষ করে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।
এত অসাধারণ কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
আপনি চমৎকার একটা কবিতা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। কবিতাটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের কবিতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
চারিপাশের জগতে এত এত কিছু ঘটে চলেছে। মানুষ এখন অমানবিক হয়ে গেছে। কোনো কিছুই গায়ে লাগেনা। যে যার ধান্দায় প্রতিদিন চলাফেরা করছে। পাশে একটা বিড়াল মরে থাকলেও আজ আর কারোর কষ্ট হয়না।
আমি তাই বলে একটা বিড়াল মরার সাথে একটা মেয়ের ধর্ষণ হওয়ার তুলনা করছিনা। এটা বলতে চাইছি যে , এই ঘটনা গুলো ফিল করতে হলে মানবিকতা লাগে। কেও তোয়াক্কা করে, কেও করে না।
তোর ভেতরে ওই ঘটনা যে কি প্রবল ছাপ ফেলেছে, তার প্রমাণ এই কবিতা। প্রতিদিন কিভাবে এই ঘটনা গুলো একেরপর এক ঘটে চলেছে, তার খবরও রাখা এখন সবাই বন্ধ করে দিয়েছে।
কবিতা পড়ে এক কথায় আমারও মা এর কথাই মনে পড়লো। বাকিটা তুই জানিস।কি বলে তোর কবিতার ব্যাখ্যা দেব। বুঝতে পারছিনা। এসব ঘটনা সহ্যের বাইরে।
যাইহোক, এভাবেই এগিয়ে যেতে থাক।