থ্রিলার গল্প : ক্ষিদে
প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সকলে ভালোই আছেন। আজ একটি থ্রিলার গল্প নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। গল্পটি পড়তে পারেন। এবং কেমন লাগলো সেটা মন্তব্যের মাধ্যমে জানালে আরো ভালো লাগবে।
ক্ষিদে
তাকে নাকি গর্ত করে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। লোকজন চলে যাবার পর বহুৎ ফিকির করে সে ওই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসে। না নেওয়ার সংশয়ে সমাজে আর ফেরেনি। ইত্যাদি তাল-জোড় যুক্তি-তক্কোর রফা করে নিরুপম এটাই কষে বলে, "নীলাঞ্জন আমি মরিনি, অন্তত তুই বোঝ!"
আমি প্রথমে চিনতে পারিনি। দাড়ি গোঁফের প্রাচুর্যে মানুষটার মুখটা অব্দি দেখা দায় হয়েছে। জামা কাপড় পরিচ্ছন্ন নয়। আমি সেভাবে আমল দিয়ে কথা বলিনি গোড়াতে। এমন কত লোক ঘুরে বেড়ায় রাস্তা-ঘাটে।
তবে আমার নামটা হুবহু বলাতে চমকে উঠি। দাড়ি-গোঁফ, চুলের ভেতরে দৃষ্টি চালিয়ে দুটি গম্ভীর চোখের সাথে আমার চোখ পড়তেই রীতিমতো ঘাবড়ে যায় আমি। নিজের চোখকে অব্দি বিশ্বাস আর করতে পারিনা। এ যে নিরুপম। কিন্তু সেতো ক'মাস আগে হটাৎ জ্বরে...
আমি কি তবে ভুল দেখছি। কিন্তু যে চোখদুটোর মুখোমুখি আমি দাঁড়িয়ে সে চোখ আমার স্কুল ও কলেজের বন্ধু নিরূপমের। ছেলেবেলায় আমাদের কত একসাথে স্কুলে যাওয়া। কলেজেও একসাথে বহুবসময় কাটিয়েছি। তাছাড়া সে একটা যুক্তির কথাও বলছে। নিজে দাড়িয়ে নিজের ভয়াবহ অবস্থার কথা বলছে।
মায়া হল। নিরু আমার ছেলেবেলার বন্ধু। তাছাড়া আমি বিজ্ঞান নির্ভর লোক। পৃথিবীতে এমন ঘটনার নজির একাধিক জানি। মেনে নিলাম।
আমি কৃষি বিজ্ঞানকেন্দ্রে চাকরি টা পাওয়ার পর থেকে আমি রোজ বাড়ি যেতে পারিনা। সরকারের তরফ থেকে পাওয়া ছোট্ট সাজানো কোয়াটার টাই থেকে যায়। বাড়ি থেকে আমার অফিস ভালোই দূর। তাছাড়া কোয়াটার থাকতে মন্দ লাগে না। হাজার রকম গাছপালায় ভরা অফিসের বাগান বহুজায়গা জুড়ে পাঁচিল দিয়ে ঘেরা।
কোন গাছটি নেই ভেতরে অথবা কোন ফুলটি নেই? সব গাছ আর ফুলে ভরা অফিসের এই বাগান। আমাদের এসব নিয়েই কারবার। মানুষ এলে কত কিছু বোঝাতে হয়, ফুল নিয়ে গাছ নিয়ে। কোন সারটা দিতে হয়। কতটুকু দিলে গাছ মরে যাবার সম্ভবনা নেই, তারই সমস্ত হিসেব আমাদের করে দিতে হয়। বড় এই ঘেরার মাঝে একটা পুকুরও রয়েছে। পুকুরটা বেশ বড়।
সন্ধ্যে হয়েছে। আজও বাড়ি ফেরার কথা আমার নেই। কিন্তু নিরুপমকে বাড়ি নিয়ে যেতে হবে। কত দিন ধরে এভাবে সে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
-"আচ্ছা নিরু চল তোকে বাড়ি দিয়ে আসি!"
নিরু খ্যাক খ্যাক করে উঠলো, - "না না, হরগিজ নয়, আমি পণ করেছি বাড়ি আর যাব না! তোকে দেখবার সাধ হল তাই এলাম। বনে-বাদাড়ে ঘুরি ভাই আজাড় গাজার খায় এইতো আমার জীবন এখন!"
আর কি বলার! সবুজ ঘাসের উপর পা চালিয়ে দুজন মিলে এগোলাম সামনের দিকে, যেখানে বাঁশের ফরাস টা বড় পুকুরটার বুক অবধি নেমে নিশ্চিহ্ন হয়েছে।
নিরুপমের গল্প যেন শেষ হতে চায়না। কত কি যে বলে যায়।
তার এই অন্যরকম জীবনের গল্প। তার ঘোরা ফেরা। কিভাবে এই জায়গায় এলো সমস্ত কিছু।
শেষে আমাকে তদারক করতে হলো, "চল নিরু, সন্ধ্যে হয়ে এসেছে এবার ফেরা যাক। আজ রাত টার মত তোর একটা থাকার বন্দোবস্ত করতে হবে। তোর তো বোধহয় খিদেও পেয়েছে?"
-"খাচ্ছি তো!"
-"খাচ্ছিস মানে!"
হঠাৎ চোখ পরল আমার নিজের পায়ের দিকে! সাদা পাজামা রক্তে ভেসে যাচ্ছে! আরে এত রক্ত কোত্থেকে আসছে? ওমা একি! আমার দু'হাতের আঙুলগুলো কই? এ যে দু'তিনটে ঝুলছে মোটে!
আজ এই অব্দি রইল। আগামীকাল আবার নতুন একটি লেখা, নতুন একটি কথা নিয়ে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।
ভাইয়া কি গল্প দিলেন। পড়ে তো শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল। শেষে অংশটা বেশি ভয়ানক। ধন্যবাদ কন্টিনিউ করেন।
ধন্যবাদ দাদা গল্পটির ওপর মন্তব্য রাখার জন্য। এই গল্পটা এই অব্দি, এখানেই শেষ। 😍
ভাইয়া গল্পটা পড়ে তো ভয় পেয়ে গেছি।রাতে মনে হয় ঘুম আর হবে না🙄।ভূতের গল্প 😥😥! পড়ে বেশ মজা পেয়েছি, নেক্সটের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।আপনার জন্য শুভকামনা আরো সুন্দর গল্প যেনো আমাদের মাঝে প্রতিনিয়ত শেয়ার করতে পারেন।
কথক তার হাতের আঙ্গুল যখন দেখতে পায়না, তখনই প্রমাণ হয়ে যায় এতক্ষণ আলাপচারিতা করা সেই নিরুপম আসলে একজন হিংস্র অশরীরী এবং গল্পের সমাপ্তি হয়েছে।
ধন্যবাদ দিদি মন্তব্য রাখার জন্যে।
শেষের অংশটুকু বেশ অবাক করলো অবশ্য। থ্রীলার আমার বেশ পছন্দ। বেশ দারুণ আপনার গল্প লেখার হাত। পরের অংশের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম ভাই।।
আইডল বানাবো কাউকে খুঁজছিলাম। নিরুপম কেই বানিয়ে ফেললাম আজ । 🤭 তোরও আঙ্গুলগুলো লেডি ড্র্যাকুলা এসে খেয়ে যেতে পারে, সাবধানে থাকিস 😎😎😎😎।
আর গল্পটা সেরা লিখেছিস। বড় অদ্ভুতভাবে প্রথম থেকে শুরু করিস। স্রোতের বেগে কিভাবে যে শেষ অব্দি পৌঁছে যায় ,বুঝতেও পারিনা । কিন্তু ভীষণ ভালো লাগে পড়ে।
আরও এমন গল্প নিয়ে আসবো, যদি তোদের ভালো লাগে।