||ফেলুদার গোয়েন্দাগিরির 'দার্জিলিং জমজমাট' সিরিজটির রিভিউ||
প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজ ফেলুদা গোয়েন্দাগিরি 'দার্জিলিং জমজমাট' সিরিজটি নিয়ে রিভিউ করতে চলেছি। গল্প, কাহিনী, অভিনয় সমস্ত কিছু নিয়ে আলোচনা হবে। চলুন, শুরু করা যাক...
স্ক্রীনশট : ইউটিউব
আজ দেখে ফেললাম ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি দার্জিলিং জমজমাট। এটি সত্যজিৎ রায়ের লেখা একটি ডিটেকটিভ উপন্যাস। ফেলুদা নিয়ে অনেক লেখায় আমরা পড়েছি। বাংলার সাহিত্যের একটি বিশেষ গোয়েন্দা চরিত্র হলো ফেলুদা। ফেলুদা পড়লে সত্যজিৎ রায়ের গোয়েন্দা ভাবনা সম্বন্ধে আমরা অবগত হই। তিনি অসামান্য প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। কেননা ফেলুদার মাধ্যমে যেভাবে জটিল জটলা পাকিয়েছেন তিনি, সাথে তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে সে জটলা কে নিজেই উন্মোচন করেছেন, যার ফলে পাঠক কুল অবাক হয়ে দেখেছেন ডিটেকটিভ ফেলুদার কীর্তি, তা সত্যিই প্রশংনীয়। ফেলুদা একজন বাঙালি যুবক। তার একমাত্র সঙ্গী তথা ভাই তপেশ অর্থাৎ তোপসে। সে খুব চালাক একটি ছেলে। এই দুজন একসাথে হয়ে গেলে সকল রহস্য উম্মোচন হবেই। সত্যজিৎ রায়ের প্রতিভার প্রশংসা না করে পারা যায় না। তিনি খুব ভালো পরিচালক ছিলেন সে কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু তিনি একজন বড় মাপের লেখকও। বিশেষত তিনি একজন বড় মাপের ডিটেকটিভ রচয়িতা। দার্জিলিং জমজমাট সিরিজটির পরিচালনা করেছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। তিনি বাংলার একজন বেশ বড় মাপের পরিচালক সে কথা আমরা সকলেই জানি। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি বিভাগের দার্জিলিং জমজমাট সিরিজটি সত্যিই জমজমাট হয়েছে। একেবারে লোমহর্ষক একটি ডিটেকটিভ ছবি। এই ছবির প্রধান চরিত্র তথা ফেলুদা চরিত্রটি করেছেন টোটা রয় চৌধুরী। একজন সুদক্ষ অভিনেতা। তার অভিনয়ে ছবিটি খুবই প্রফেশনাল ঘরনার হয়ে উঠেছে আরো। আমরা এবার সরাসরি ছবির গল্পে চলে যাব।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের দার্জিলিং জমজমাট গোয়েন্দা সিরিজটির ৬ টি এপিসোডে বিভক্ত। শুরুতে দেখা যায় প্রাইভেট ডিটেকটিভ ফেলুদা তার একমাত্র ছায়া সঙ্গী তপেশ অর্থাৎ তোপসেকে সাথে করে দার্জিলিং বেড়াতে যান। তিনি দার্জিলিং শখেই গেছিলেন কিন্তু সেখানে এক ভয়ানক রহস্যের দানা বাঁধে। এক্ষেত্রে তাদের সাথে গিয়েছিলেন বিখ্যাত গোয়েন্দা লেখক লালমোহন বাবু। এই তিনজন মিলেই দার্জিলিং বেড়াতে যান। সেখানে তারা একজন বিখ্যাত চা স্টেট এর মালিক মিস্টার বিরুবাক্য মজুমদারের বাংলোই ওঠেন এবং এখানে গল্পের মূল রহস্য আমরা দেখতে পাই। এবং এই মজুমদার বাবুকে নিয়ে রহস্য দানা বাঁধে। মজুমদার বাবুর একজন ছেলে তার নাম সমিরন মজুমদার। সমিরনের বয়স ৪০ এর কাছাকাছি। তিনি বিয়ে করেননি। আমরা ছবির গল্পে দেখতে পাই এত বড় একজন বিজনেস ম্যান এর পুত্র হলেও কখনোই তার মধ্যে শান্তি ছিল না। কেননা তিনি শেয়ারবাজারের বিভিন্ন চক্করে পড়ে সকল অর্থ হারিয়ে ফেলেন। বড় এক লোকসানের মুখোমুখি হন। যার ফলে তাকে হুমকির মুখে পড়তে হয়। পাওনাদাররা তার গলায় ছুরি বসিয়ে তাকে জুলুম করতে থাকে।
এদিকে তার দূরবুদ্ধিতার মাসুল দিতে তার কোনভাবেই রাজি ছিলনা। অতএব সমিরনের পিতার প্রতি একটা ক্ষোভ ছিলই। অন্যদিকে মিস্টার মজুমদারের এক বিশেষ বন্ধুর মজুমদার সাহেবকে সুনজরে দেখতেন না। তাছাড়া বহু ধনসম্পত্তি ও চা এস্টেটের মালিক হওয়ায় তার আশেপাশে বহু শত্রু ছড়িয়ে ছিটিয়েছিল।
এভাবেই ঘরে ও বাইরে শত্রু নিয়ে বসবাসকারী মিস্টার মজুমদার একদিন বাড়ির মধ্যেই চাকু বিদ্ধ হয়ে মার্ডার হয়ে যান।
কে করতে পারে এই খুন? সন্দেহের তালিকায় অনেকজন, এমন কি তার নিজের ছেলে সমীরনও! এমতাবস্থায় এই কঠিন রহস্য উম্মোচন করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েন প্রাইভেট ডিটেকটিভ ফেলুদা।
( পরবর্তী অংশ পরের পোস্ট-এ দেওয়া হবে।)
সিরিজটি নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
সিরিজ : ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি 'দার্জিলিং জমজমাট'
পরিচালক : সৃজিত মুখোপাধ্যায়
প্লাটফর্ম : হইচই
সিজন : ১
এপিসোড : ৬
কাস্ট : টোটা রয় চৌধুরী, অনির্বাণ চক্রবর্তী, কল্পন মিত্র
বরুণ চন্দ সহ আরো অনেক শিল্পী।
বন্ধুরা আজ এই অব্দি রইল। পরবর্তী পোস্ট এ বাকি রিভিউ টুকু সম্পূর্ণ হবে। ততক্ষণ আপনারা ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।
আপনি অনেক সুন্দর একটি সিরিজের রিভিউ দিয়েছেন। এই ধরনের সিরিজ দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। যদিও এটা আমার এখনো দেখা হয়নি। আপনি রিভিউ দিয়েছেন বলে ভাবছি দেখে নিব। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ দেখতে পারেন, দিদি, খুবই রহস্যপূর্ণ ও ইন্টারেস্টিং একটা গোয়েন্দা কাহিনী। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
পড়তে পড়তে ভাবছি গোয়েন্দা হয়ে যাব। যদিও এই ভাবনাটা ফেলুদা পড়ার সময়ও এসেছিল। ভালই রিভিউ দিয়েছিস। আমিও একটা ফিল্ম বানাচ্ছি, সেটার রিভিউ টাও দিয়ে দিস। 😎