বাড়ি থেকে ফেরা || ১০% বেনিফিট @shy -fox ও ৫% @abb-school এর জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

প্রায় কুড়ি দিন পরে কলকাতায় ফিরলাম। কাল রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম ওই সন্ধে সাতটা নাগাদ হবে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে আমি সামসি আসি। কারণ সামসি থেকে আমার ট্রেন। আমার দাদা থাকে ওখানেই স্টেশনের কাছে। ওর কাছে কিছুক্ষণ রেস্ট করে তারপরে বেরোনোর ইচ্ছা ছিল।

বাড়ি থেকে বেরোনোর পরেই টোটোতে বসতেই হঠাৎ ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। বৃষ্টি হওয়াতে কেন জানিনা আমার যাত্রা আরও অ্যাডভেঞ্চারাস হয়ে গেল। টোটো তে বসে আটিশুটি মেরে যখন ফোন টিপছি। ভাবতেই পারিনি কখন আমার ব্যাগ থেকে শুরু করে ট্রাউজারটাও ভিজে গেছে। তারপর দাদার কাছে এসে সমস্ত কিছু চেঞ্জ করে রাতের খাওয়া-দাওয়া আর চপট ঘুম কাটিয়ে স্টেশনের দিকে রওনা দিলাম।

IMG-20220517-WA0012.jpg

বেশ কিছুদিন বাড়িতে থাকায় বাড়ির জন্য মন খারাপ করছিল ।পরিচিতিমূলক পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পেরেছেন আমার বাড়ি মালদাতে। কলকাতা থেকে মালদা যেতে গেলে যেহেতু অনেক সময় লাগে, তাই সেভাবে প্রত্যেক মাসে মাসে বাড়ি যাওয়া হয়ে ওঠে না। যখনই বাড়ি যাই, তার মাঝে একটা বড় গ্যাপ থাকে। আর বাড়ি গেলেই আদরে আদরে চেহারা স্বাস্থ্য এবং মনটাও জানো খুব ভালো হয়ে যায়।

তবুও পড়াশোনার উদ্দেশ্যে নিজের স্বপ্ন গুলোকে পূরণ করতে কলকাতায় ফিরতে হবে। সবকিছুর মধ্যেই যেন একটা মজার ব্যাপার রয়েছে ।যেখানে খারাপ লাগা সেখানেও যেন কোনভাবে আমরা মজা পেয়ে যাই। যাইহোক ট্রেনের টাইম ছিল বারোটার সময় ।ট্রেন আসতে যদিও একটু লেট করছিল। ট্রেন আসার সাথে সাথে ট্রেনের মধ্যে উঠে একটু-আধটু ফোন ঘেঁটে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুমোতে কেন জানিনা বেশি দেরী হলো না ।এক ঘুমে হাওড়া পৌঁছে গিয়েছি।

যখন আটটা বাজে হাওড়া থেকে আবার বাসে চেপে ধর্মতলা আসলাম। তারপর ধর্মতলা থেকে মেট্রোতে করে দমদম আগের দিন বন্ধুরা মিলে আমার আসার রাস্তা ঠিক করছিল। আসলে এভাবে এই ট্রেনে আমি কখনো আসিনি ।তাই রাস্তা খুব একটা চেনা-পরিচিত ছিলনা। কিভাবে কোন দিক দিয়ে যাব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ঘুমটা যখন হাওড়াতে এসেই ভাঙলো ,তাই যে রাস্তাটা সামনে পড়ল সেই রাস্তা ধরেই বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। চেনা রাস্তায় নিজেকে ফিরে পেয়ে মনের মধ্যে কোথাও যেন একটা অন্যরকম শান্তি কাজ করছিল ।

IMG-20220421-WA0001.jpg

ঘরের মধ্যে ঢুকে ফ্রেশ না হয়েই বিছানায় এলিয়ে পড়লাম। আমার রুমমেট আমার ভাই কিছুদিন আগেই বাড়ি থেকে ফিরেছে ।অতএব এবার ফেরার দিন একাকিত্বের কষ্ট আর হলো না ।ঘরে ঢুকেই ওর হাসিমাখা মুখটা দেখে আমার আনন্দ আর ধরে না! সব ক্লান্তি যেন ওর হাসিতে মিশে গেল। আমি টায়ার্ড দেখে ও আর আমাকে কোন কাজ করতে দিলো না।

আমরা যেহেতু রান্না করে খাই তাই সে তড়িঘড়ি অল্প কিছু রান্নার ব্যবস্থা করল আমার জন্য। আমি স্নান সেরে খাবার খেয়ে দিব্যি একটা ঘুম দিলাম ।ভাই আমার সেবা-যত্ন করে সেও একটা ঘুম দিল ।তারপর আমরা ঘুম থেকে উঠে বেশ কিছুক্ষন গল্প করলাম ।এই তো আমার ফেরা।

যেহেতু বাড়ি থেকে ফিরতে দেরি হচ্ছিল আমার রুমমেট একা একা কিছুদিন বেশ কষ্ট পেয়েছে। আসলে এই এত বড় শহরে একা থাকতে বড়ই ব্যথা লাগে ।আমরা সবাই যে যার বাড়ি ছেড়ে এই অচেনা শহরের এতগুলো মানুষের ভিড়ে কোথাও যেন নিজের মতো করে আত্মিক কোন চরিত্রকে খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করি ।আমার রুমমেট বলা যেতে পারে যবে থেকে কলকাতায় এসেছি ওর সাথে একটা আলাদা আমার সম্পর্ক। নিজের ভাইয়ের মত ওকে দেখি।

আজ সকালে রুমের মধ্যে ফিরে যেন মনে হলো নিজেরই ঘরে ঢুকলাম । মালদায় আমার বাড়িতে নিজের যে রুমটা রয়েছে, এখানেও যেন এই রুমটা আমার একান্তই নিজের। এখানেও যেন ঠিক একই রকম শান্তি। সব মিলিয়ে বহুদিন পর ফেরার অনুভূতিগুলো দারুন ছিল।

সকলে ভাল থাকুন ।সুস্থ থাকুন। আজকের মত এখানেই পোস্ট শেষ করলাম।
@tarique52

Sort:  
 2 years ago 

আশা করি ভাল আছেন ভাই? আপনার পোষ্ট আমি প্রথম দেখলাম। পোস্টটি দেখে খুব ভালো লাগলো। আসলে আপনি খুব সুন্দর ভাবে বাড়ি থেকে ফেরার অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন, ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

বহুদিন পর ফেরার অভিজ্ঞতা ভাগ করলাম আপনাদের সাথে। আপনিও খুব ভাল থাকবেন। শুভকামনা আপনাকেও।

 2 years ago 

একটা না অনেক দিন বাড়ি থাকলে বাড়ির জন্য একটি মায়া জমে যায়। এমনিতেই পরিবারের সাথে থাকতে তো অনেক ভালো লাগে। তো আপনি অনেকদিন পর বাড়ি থেকে আপনার গন্তব্য স্থানে গিয়েছেন সেই মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন করেছেন অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন দাদা বহুদিন বাড়িতে থাকলে বাড়ির প্রতি একটা মায়া জন্মে যায়। কিন্তু কর্মসূত্রে তো ফিরতেই হবে। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 54960.01
ETH 2314.51
USDT 1.00
SBD 2.32