|| বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬ তম প্রয়াণ দিবসে আমার শ্রদ্ধার্ঘ্য ||
প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন? আশাকরি সকলে ভালো আছেন। আজ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬ তম প্রয়াণ দিবস। এই দিনে আমার সামান্য রচনাটুকুর মাধ্যমে কবিকে শ্রদ্ধা জানালাম।
কিছু কিছু জিনিস মাঝে মাঝে ভালো লেগে যায়। সেদিন কলেজ থেকে ফিরছি একরকম আনমনে। বাস থেকে নেমে হেঁটে চলেছি। ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটির মস্ত হোস্টেলে আমি থাকি তখন। আমার কলেজ শেয়াল দহে। বাস থেকে নেমে পাঁচ মিনিট হাঁটা পথ। সে পথেই হাঁটছি আর পাঁচ দিনের মতো। একই রাস্তায়। হটাৎ একটা বাড়ির দেওয়ালে একেবারে নিচের দিকে একটা ক্ষুদ্র স্মৃতিফলক দেখলাম - তাতে লেখা, " বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই বাড়িতেই 'বিদ্রোহী' কবিতাটি রচনা করেছিলেন।"
আমি লেখাটি পড়ে সেখানে দাড়িয়ে পড়ি। চমকে যায়। এ পথে রোজ আসি, এটা তো কোনোদিন দেখিনি। আমরা যেখানে থাকি তার এত কাছে রচনা হয়েছিল আগুন জ্বালানো কবিতা 'বিদ্রোহী'। এবং কবি এতই কাছে ছিলেন। এটা ভেবে বেশ আনন্দ হলো।
আমি স্মৃতিফলক লক্ষ্য করে সেই বাড়ির দিকে উঁকি দেওয়ার চেষ্টা করলাম। বহু পুরনো যুগের একটা বাড়ি। সিড়ির ভেতর থেকে ওপরে দেখার চেষ্টা করলাম, তাতে বিশেষ কিছু দেখা গেলনা গভীর অন্ধকার ছাড়া। দিনের বেলাতেও এক গভীর আঁধার বাড়িটির মধ্যে। কতকাল যে ভেতরে লোক যায়নি তা সিঁড়ি দেখলে বোঝা যায় - সিঁড়ির ওপর প্রচুর ধুলোবালি ও বাইরের থাকা গাছটির যত শুকনো পাতা সেখানে হয়েছে জমা। কোনো লোক জনের যাতায়াত চলাচল নেই। একেবারে বন্ধ।
এটা দেখে আমার খানিক দুঃখ হল। কবি যখন ছিলেন তখন এই জায়গা ছিল পুরো বাঙালিদের। বহু বাঙালি মনীষীদের ওঠা বসার জায়গা ছিল এই তালতলা। তারপর বহু যুগ গেছে। এ এলাকা এখন বিহারীদের দখলে। তারা চাকরি বাকরি করেনা। মোটা মোটা টায়ার, লোহা লক্করের কারবার করে। ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলায় কথা বলে ঠিকই কিন্তু এক হরফ বাংলা পড়তে পারেনা। এক বুড়ো বিহারীর মুখে শুনেছিলাম আজ থেকে নাকি ষাট বছর আগে কোনো এক বিশেষ কারণে এরা কলকাতায় চলে আসে। তবে থেকে আঁট ঘাঁট বেঁধে রয়েছে। এরা আর স্মৃতিফলক এর কিবা বুঝবে! এই ঘরের মূল্য কিবা আছে তাদের কাছে।
আমি দেখলাম আসে পাশে নানান দোকান পাট বসে আছে, তারই একটি কোনে কবির কবিতা লেখার ঘর একলা পড়ে রয়েছে। কেউ দেখবার নেই। বুঝবার নেই।
স্মৃতিফলক টিও খুব নিচে করে বসানো। চলতি পথিকের সহজে চোখে পড়বার জো নেই! আমি এতদিন ধরে কলেজ যায় এ পথ ধরে, একেবারে পাশ দিয়ে চোখে পড়েনি। তবে বাঙালিদের এখনও এ জায়গায় পূর্ণ বাস থাকলে কবির কবিতা লেখার এই ঘরের এমন দশা হতনা। ভালোবাসায় শ্রদ্ধায় সে ঘর সেই বাড়ি কে কত যত্নে রাখতো তার ইয়াত্তা ছিলনা।
স্কুলের বেল,বাংলা ক্লাশ আর নজরুল ইসলামের কবিতা এক যোগে ভাবলেই উসকে ওঠে আমাদের একটা সুন্দর ছেলেবেলা। সে একটা সময় ছিল! তখন আমাদের পাপ বাড়েনি, মায়ের হাতে দুটো টাকা পেলে বড্ড খুশি হয়ে যেতাম, পা'য়ে হাঁটা পথে স্কুল থেকে ফিরতাম, রাস্তার ধারে ক'টা বন-ফুল দেখেলেও মন ভরে উঠতো, ঠিক এমনই সহজ সময় গুলোতেই কবি আমাদের হৃদয়ের সাথে ভীষণ রকম ভাবেই জড়িয়ে ছিলেন!
এখন আর সে দিন গুলো নেই। কবিতা মুখস্ত করতে হয়না। তবে কবিকে আমরা ভুলিনি। তাঁর বাণী আমাদের হৃদয়ে আছে। থাকবে। চিরন্তর।
কবির ৪৬ তম প্রয়াণ দিবসে জানায় গভীর শ্রদ্ধার্ঘ্য।
আজ এই অব্দি রইল। আগামীকাল আবার নতুন একটি লেখা নতুন কিছু কথা নিয়ে হাজির হব। ততক্ষন ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।
ছোটবেলার মতো এখন আর কবিতা মুখস্থ করতে হয়না। আগে ভাবতাম কে এই কবিতা গুলো আবিষ্কার করে কেন করে। সময়ের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে এখন বুজেছি কবিরাই আমাদের প্রাণ। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের ছেড়ে গেলেও তিনি তার কবিতার মাধ্যমে আমাদের মাঝে বিরাজ করছে।
কবির প্রতি আপনার সমবেদনা সাহিত্য সমাজকে শক্তিশালী করার ইঙ্গিত দেয়। ধন্যবাদ মন্তব্য রাখার জন্য।
কাজী নজরুল ইসলামের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আপনার লেখা পড়ে আমার বেশ খারাপই লাগছে। স্কুল কলেজে কত পড়েছি কাজী নজরুলের কবিতা। বিদ্রোহী কবিতা আমাদের চেতনার কবিতা। সেই কবির বাড়ির এই অবস্থা শুনলে খারাপই লাগে। তবে এটা সত্যি কোন বাংগালী এখানে থাকলে এতটা অবহেলা করত না কারন এটা কাজী নজরুল ইসলামের বাড়ি। ধন্যবাদ দাদা।
ধন্যবাদ দাদা আপনার মূল্যবান মতামত রাখার জন্য।
ছোটবেলায় কাজী নজরুল ইসলামের অনেক কবিতা পড়েছি এবং মুখস্ত করেছি। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো আর আমি ছাব্বিশে মার্চে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় পাঠ করতাম একবার আমি প্রাইজও পেয়েছিলাম। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রয়াণ দিবসে আমার শ্রদ্ধার্ঘ্য। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
কবির রচনা পাঠ করে করে আপনি প্রাইজ লাভ করেছেন শুনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মতামত প্রদানের জন্য।
ছবিটি YouTube থেকে না নিয়ে উইকিপিডিয়া থেকে নেন। সাথে সোর্স দিয়ে দিয়েন।
কপি রাইট ক্লেইম এর জন্য সে পথে এগোয়নি, এবং এটা উইংকেলস দার পরামর্শ মতেই। আপনি যখন বললেন তখন সেভাবেই করে নিচ্ছি।
উইকিপিডিয়া থেকে নিলে সমস্যা নেই।
ধন্যবাদ দাদা। এডিট করে সেটা উইকিপিডিয়া থেকে নতুন করে দিলাম। সোর্স উল্লেখ করে।
জি ভাইয়া আমরা আমাদের প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কাজও ভুলিনি, ভবিষ্যতেও ভুলবো না। আমাদের জাতীয় কবি তার বিভিন্ন সৃজনশীল মূলক গান, কবিতা ও অন্যান্য সৃষ্টিশীল কাজের জন্য সারা জীবন আমাদের মাঝে অমর হয়ে বেঁচে থাকবেন। কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রয়াণ দিবসে জানায় গভীর শ্রদ্ধার্ঘ্য।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামত প্রদানের জন্য।
শুএ আমারই গা শিউরে গেল। বিদ্রোহী কবিতা লিখেছিলেন ঐ বাড়িতে বসে অথচ আপনি জানতেন না এতোদিন। নজরুলের জীবন কেটেছে অনেক দুঃখ অনেক সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে। আমাদের দেশে থাকে দুখু মিয়া ও বলা হয়। আমার অনেক পছন্দের কবি। আপনাকে ধন্যবাদ নজরুলকে তার প্রয়ান দিবসে স্মরণ করে পোস্ট করার জন্য।।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার কবিতায় বজ্রশক্তি ছিল। এই কবিতার মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে বিদ্রোহী করে তুলেছিল কবি নজরুল ইসলাম। শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই কবির প্রয়াণ দিবসে। সাথে মনটা অনেক ভারাক্রান্ত হয়ে গেল। এই অমর কবির স্মৃতির বাড়িটি সরকারিভাবে সংরক্ষণ না করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।