ফুলহর যখন হৃদয় বোঝে|| ১০% বেনিফশিয়ারি @shy-fox ও ৫% @abb-school এর জন্যে
ফুলহর নদী ঘিরে আমার অনেক স্মৃতি। বহু কথা, বহু গল্প, কত ত্যাগ এই নদীকে সাথে করে হয়েছে। আজ আমার প্রিয় নদীকে নিয়েই কিছু কথা বলে গেলাম।
ফুলহর বয়ে যায় নিজের মতন। বর্ষার সময় তার হৃদয় ভরাট থাকে, শীত কালে হয়ে যায় ক্ষীণ। বরফ শীতল জলে সে বয়ে যায়। যতই ক্ষীণ হোক, কুল-কুল করে তার এই গান গাওয়াটুকু থেকে কখনো সে বঞ্চিত হয়না। ফুল হরের দু'কুলে মিঠে বাতাস বইতে থাকে। আমাদের মন খারাপ হলে ফুলহরের বুকের কাছে যায়। যতই মন খারাপ থাক, ফুলহরের কুলে বসলে মুহূর্তেই হালকা হওয়া যায়। ফুলহর তার কুলকুল শব্দের আলো নিয়ে অন্ধকার-নরম-ভাঙ্গা হৃদয়ে দ্রুত পৌঁছতে পারে। দ্রুত ঘোরে নিয়ে যায়। নিয়ে যায় আচ্ছন্নতায়। মনের মধ্যে কতরকম কথার-গল্পের আয়োজন করে বসে। তখন ভার-মন হালকা হয়ে যায়।
ফুলহর নদীর একটি ক্ষুদ্র শাখা।
(স্থান - দেবীপুর, মালদা)
এই ছবিতে যে ক্ষুদ্র তটিনীতে দেখতে পাচ্ছেন তা কিন্তু ফুলহর নয়, ফুলহরের একটি ক্ষুদ্র অংশ বলা যেতে পারে, বর্ষাকালে ফুলহরের বুক ভরাট হয়ে গেলে এর আবির্ভাব ঘটে, নচেৎ গোটা বছরই এই ক্ষুদ্র নদীটি ফাঁকা থাকে। তবে বর্ষাকালে এর বড় দাপট। জেলেরা এর বুকে নৌকো নিয়ে মাছ ধরে বেড়ায়। গাঁয়ের বধূরা এখানেই স্নান সারে। ছোট ছেলে পিলেরা সাঁতার দেয়। বড় নৌকার ঘাট তখন এখানেই বাঁধা হয়।
ফুলহরের জলে যখন সূর্যাস্তের রং পড়ে।
(স্থান - দেবীপুর, মালদা)
মাঝিদেরকে এর ওপর ভর করে দু'চার পয়সা কামিয়েও নিতে দেখা যায় তখন। যদিও এখন নৌকার চল অনেকটা কমেছে। ফুলহরের বুকের ওপর ডানা মেলেছে সুদীর্ঘ ব্রিজ। বর্ষার সময় ব্রিজের পায়া গুলো অনেক খানি করে ঢেকে যায় জলে স্রোতে। তবে আমি যেখানে বসি, সে জায়গা থেকে ব্রিজ অনেকটা দূরে অবশ্য। দুর থেকে তা লম্বা সাদা সুতোর মত মনে হয়, যেন নদীর বুকে আড়াআড়ি ভাবে সাদা দাগ কেটে চলে গেছে। আমরা ব্রিজের ওপর গিয়েও বসি। বিকেলবেলা তো অনেক লোক আসে। শিশুরা মায়ের হাতের আঙ্গুল ধরে হাটে, বয়স্করাও একটু জিরোতে চলে আসে। কমবয়সীরা বুকে অগাধ প্রেম নিয়ে ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে ফুলহর দূরে কোথায় হারিয়ে গেলো, তা দেখে।
কোনো এক সন্ধেবেলায় ফুলহর।
(স্থান - দেবীপুর, মালদা)
আমি কোলকাতায় থাকি। দিন যায়, মাস যায়, একদিন শহর একঘেয়ে ওঠে। তখন বাড়ির দিকে রওনা দিতে হয়। মনে পড়ে দিদি-মা-বাবা সবাইকে। আমার ছোট বোন অধিক অপেক্ষা করে থাকে। তার হরেক আবদার মেটাতে আমাকে যেতেই হয়। আর তখন নিয়ম করে সাক্ষাৎ করে আসি আমার পুরনো বন্ধু ফুলহরের সাথে।
নবনির্মিত ব্রিজ থেকে ফুলহর।
(স্থান - দেবীপুর)
এই আমার এক বিশেষ বন্ধুকে নিয়ে আজ আলোচনা করতে পেরে আমার বেশ ভালো লাগছে। সে আমার কতকাল ধরে হৃদয় জুড়িয়ে আসে, তাই আজকের লেখাটুকু তার নামেই নিবেদন হোক। এই সামান্য প্রাপ্য ট
সে-তো ডিসর্ভ করেই!
আজ এই অব্দি। আপনারা সুস্থ থাকুন। আগামী কাল আবার আসবো একটি নতুন লেখা নিয়ে।
@tarique52
ফুল হর নদীর নামটা তো দারুণ। এবং এই ফুল হরের সাথে যে আপনার গভীর একটা বন্ধুত্ব আছে গভীর একটা সম্পর্ক আছে সেটা আপনার লেখা প্রতিটা লাইনে বোঝা যাচ্ছে। নদীটার রুপ দেখে সত্যি আমি নিজেই এর প্রেমে পড়ে গেছি। কী মায়াবি এক রুপ। অনেক সুন্দর ছিল আপনার ফটোগ্রাফি এবং লেখা গুলো।
ভাইয়া আপনার পোস্ট খুবই সুন্দর হয়েছে। আপনার লিখা গুলো আমার পড়তে অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে আপনার পোস্টে যেই ছবি ব্যবহার করেছেন সেই ছবি তোলার জায়গার লোকেশন অবশ্যই দিতে হবে।
এখনি এডিট করে সঠিক করুন।
ছবির লোকেশনগুলো ছবির নিচে সংযোজন করলাম। অনেক ধন্যবাদ দিদি আপনাকে। এই যে শিখিয়ে দেওয়া বুঝিয়ে দেওয়াগুলো, পরবর্তীতে আমার পোস্টকে আরো মার্জিত করে তুলবে, এসকল সহযোগিতায় পোস্টকে আরো মানসম্পন্ন করে তুলবে।
ভালো থাকুন দিদি। অনেক শুভেচ্ছা!
বিষয়টি এতো সুন্দরভাবে গ্রহণ করার জন্য আপনাকে ও অনেক ধন্যবাদ।