চাচ্চু মামা ও বড় ভাই এর সাথে কাটানো একটি রোমাঞ্চকর মুহূর্ত //10% beneficiary @shy-fox
হ্যালো বন্ধুরা। আমার বাংলা ব্লগের সকল ভাই ও বোনদের জানাই আমার সালাম। আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর রহমতে আমিও ভাল আছি। আজ আমি আমার চাচ্চু, মামা ও বড় ভাইয়ের হঠাৎ ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেখে অনেক অবাক হয়ে গেছি। কোন বিষয়ের উপর হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক কষ্টের কিন্তু যদি আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তাহলে সেই সিদ্ধান্তের ভিতর অনেক আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় সেটা আজ বুঝতে পারলাম। আর আমি আমার চাচ্চুকে সব সময় বাবা বলে ডাকি। চলুন তাহলে শুরু করি আজকের ঘুরতে যাওয়ার অনুভূতি।
সকালবেলা হঠাৎ করেই আমার খুব তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে যায়। সকাল আটটার দিকে ঘুম থেকে উঠে দেখি ছোট ভাই রান্না করতে বসেছে। বিছানাতে বসা অবস্থায় তাকে জিজ্ঞাসা করলাম কি রান্না করতেছো। সে বলল ভাত উঠায়ে দিয়েছি তারপর ডিম রান্না করবো। আমি আর বিছানায় শুয়ে না থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিলাম। এবার আমিও তাকে রান্নার কাজে সহযোগিতা করতে লাগলাম। রান্নার কাজ শুরু করা মাত্রই উপর থেকে ইব্রাহিম আমার নিচে চলে আসলো। এসে আমাকে বলল মামা রান্না কি করতেছ। আমি বললাম হ্যাঁ একাই রান্না করতেছে তাই আমিও সহযোগিতা করতেছি দুপুরে কি রান্না করতে চাচ্ছো। মামা বলল ডিম রান্না করি। আমি আর কোন কথা না বলে বললাম ঠিক আছে আজকে তো আমাকে কলেজ যাইতে হবে তাই তাড়াতাড়ি রান্না টা শেষ করতে পারলেই অনেক ভালো হয়। এরপর তিনজন মিলে আমরা রান্না কাজটা 30 মিনিটের মধ্যেই শেষ করলাম।
এবার আমি ভাত খেয়ে কলেজ ইউনিফর্ম পড়ে কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সেখান থেকে তিনটার দিকে বাসায় আসলাম। এসে ফ্রেশ হয়ে দুপুরের ভাত খেয়ে নিলাম। একটু বিশ্রাম নিয়ে বাইরে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। ঠিক কয়েক মিনিট পর আমাকে ইব্রাহিম মামা এসএমএস দিলো।আমি মামা এসএমএস পেয়ে খুবে তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসলাম। মামা আমাকে বলল তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও বাইরে ঘুরতে যাব। আমি বললাম হঠাৎ সিদ্ধান্ত ছাড়াই। বলল হঠাৎ এর কিছু নেই রেডি হতে বলছি রেডি হয়ে নাও তাড়াতাড়ি। আমি আর কথা না বাড়িয়ে রেডি হয়ে দিলাম।
উপর থেকে সাগর বাবা, ইব্রাহিম মামা, মুন্নাভাই রেডি হয়ে নিচে নামতেছে আমিও তাদের সঙ্গে যোগ দিলাম।
এবার বাইরে গিয়ে একটি অটো ভাড়া করলাম বড়মাঠ যাওয়ার উদ্দেশ্যে। চারজন ভাড়া ছিলো 30 টাকা।চার জন্যই উঠে বসলাম এবং রওনা দিলাম দিনাজপুর বড় মাঠ এর উদ্দেশ্যে।
10 মিনিটের মধ্যে দিনাজপুর বড় মাঠ পৌছাইলাম। সেখানে নেমেই কয়েকটা ছবি তুলে সাগর বাবা বলল কি খাওয়া যায়। আমি বললাম ফুচকা দিয়ে শুরু করি। ইব্রাহিম মামা আর মুন্না ভাইয়া বলল ফুচকা এখন না খেয়ে পরে খাবো। সাগর বাবা আর আমি কারো কথা না মেনে গিয়ে বসে পড়লাম। ফুচকার 2 প্লেট দাম ছিল 160 টাকা। সেখানে ফুচকা খেয়ে বড় মাঠে হাঁটতে শুরু করলাম। সেখানে কত লোকের সমাহার। সবাই নিজের মত করে আড্ডা দিচ্ছে খেলতে এসেছে দেখে অনেকটাই মুখরিত হয়ে উঠলাম।
মাঠের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমরা একটা ক্রিকেট ক্লাব এর কাছে গেলাম। ক্লাবটির নাম ছিল প্রচেষ্টা। দিনাজপুরের সবথেকে বড় এবং নামকরা একটি ক্রিকেট ক্লাব। সেখানে গিয়ে কিছু ছেলেদের খেলা দেখলাম। আর চার জনের ভিতর হাসির গল্প সবকিছু মিলেই খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত ছিল। দিনাজপুরের বড় মাঠ টি উত্তরবঙ্গের ভিতরে সবথেকে বড় একটি মাঠ। সে মাটি কে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। একটি বড় মাঠ, একটি বিনোদন মাঠ, একটি শিশু পার্ক।
সেখানে বেশ কিছু সময় আড্ডা দিয়ে আমরা বিনোদন মাঠের দিকে রওনা দিলাম। প্রত্যেক বছর জানুয়ারির শেষের দিক বড় মাঠে বাণিজ্য মেলা হয়ে থাকে। সে দিকে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করে চোখের সামনে পড়ে গেল একটি রেস্টুরেন্ট। আমি সাগর বাবা আর ইব্রাহিম মামাকে জিজ্ঞাসা করলাম রেস্টুরেন্ট কবে তৈরি হলো। এতদিন থেকে এদিকে চলাফেরা করি কিন্তু একদিনে চোখে পড়েনি। বাবা তখনই বলে উঠলো কবে হয়েছে সেটা বড় কথা না, বড় কথা হচ্ছে কি খাওয়া যাবে সেটা আগে দেখে আসি। বাবার কথা শুনে আমি একটু হাসলাম। বাবা বলল অপেক্ষা না করে চলো ভিতরে যাই। বাবার পিছনে আমরা সবাই হাটতে লাগলাম। ভিতরে গিয়ে দেখি অনেক ধরনের রেসিপি। কি খাবো ভাবতে পারতেছিনা মনে হচ্ছে সব গুলো খেয়ে ফেলি। এরপর বাবাকে বললাম চলো গিয়ে বসি। ইব্রাহিম মামা মুন্না ভাই তারা বলল কোন খাবারটা এখানে বেশি ভালো পাওয়া যাবে। আমি বললাম একটু মেনু টা দেখে নিলে বেশি ভালো হয়। চারজন একটি টেবিলে বসে পড়লাম এবং মেনু দেখা শুরু করে দিলাম। অনেক রকমের খাবার সেখান থেকে একটা খাবারের বেছে নিয়ে অর্ডার দিলাম। রেসিপিটি হল চিকেন তন্দুরি তার সঙ্গে নান রুটি। অর্ডার দিয়ে প্রায় 45 মিনিটের মত বসে ছিলাম। হঠাৎ করে মুন্না ভাইয়া ওয়েটারকে ডেকে বলল এত সময় লাগতাছে কেন। ওয়েটার বলল সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছে তাই আমরা আপনাদের জন্য নতুন করে তৈরি করে নিয়ে আসতেছি। সেখানে আর কথা না বলে 10 মিনিটের মত অপেক্ষা করা মাত্রই আমাদের রেসিপি চলে আসলো। চারজন মিলে মন ভরে রেসিপির মজা নিলাম।
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে চারটা কফি খেয়ে ফেললাম। এরপর ইব্রাহিম মামা এবং মুন্না ভাইয়া বলল কিছু ছবি তুলে নেই। সবাই মিলে ছবি তুললাম। ছবি তোলা শেষ করে সেখানে বিল পে করে দিলাম। তারপর বাইরে এসে বড় মাঠের পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমরা রাতের বড় মাঠের অনুভূতি অনুভব করতে লাগলাম।
এভাবে আমি আমার দিনটি কাটিয়ে দিয়েছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
আসলেই মামা আমাদের মুহূর্ত গুলো অনেক সুন্দর ছিল। সেদিনকার মুহূর্ত এত সুন্দর ছিল যে কল্পনার বাইরে। আর হুটহাট করে এমন মুহূর্ত জীবনে চলে আসে এটা একটি বিস্ময়কর।
ধন্যবাদ সবার মাঝে এত সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।
জি মামা একদম ঠিক কথা বলেছো। ধন্যবাদ তোমাকে। শুভকামনা রইল তোমার জন্য।
অনেক ভালো লিখেছেন । সাগর ভাই কে প্রথমে দেখেই চিনে ফেলেছি ।
ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
মামা ভাগ্নে যেখানে বিপদ নাই সেখানে। যাইহোক দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক সুন্দর একটা সময় কাটিয়েছেন, শুভ কামনা সব সময়।
জ্বি ভাই আপনি ঠিক বলেছেন। মামা ভাগ্নে যেখানে বিপদ নাই সেখানে। আর তিনি আমার শুধু মামা না একজন ব্যক্তিগত বন্ধু। জীবনের সব আনন্দ-বেদনা আমার সঙ্গে শেয়ার করি।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো আপনার প্রতি।