গ্রামে অতিবাহিত হওয়া একটি শীতের সকাল//10% beneficiary @shy-fox

৯ অগ্রহায়ন ১৪২৮ বুধবার,২৪ নভেম্বর ২০২১,১৮ রবিউস সানি ১৪৪৩

হ্যালো বন্ধুরা। আমি তারেক রহমান। আমার ইউজার আইডি @tareq123।হেমন্তকালকে উপেক্ষা করে আমার বাংলা ব্লগের সকল ভাই ও বোন কে জানাই আমার সালাম। আসসালামু আলাইকুম, এবং অন্য ধর্মের ভাই ও বোনের প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি।

নিত্য নতুন জিনিসের উপর অনেকটাই আগ্রহ চলে আসছে। এর প্রধান কারণ হলো আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি। নিজেকে কখনো সৃজনশীলতা নিয়ে ভাবতে দেখি নি। সব সময় অন্যের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। আমার বাংলা ব্লগ আমাকে শিখিয়েছে অনেক কিছু। এবং আমি গর্বিত এই কমিউনিটিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।

যাই হোক, আবারো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। গ্রাম বাংলার সেই অপরূপ সৌন্দর্য, মনমুগ্ধকর পরিবেশ আপনাদের কাছে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। চলুন তাহলে এখানে আর সময় না কাটিয়ে মূল অংশে ফিরিয়ে যাই।

আমার সকালটা শুরু হয়েছে ৭:০০ থেকে। সকালবেলা হঠাৎ বাবা এসে ডাক দিল। আমি ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে বললাম কি হয়েছে বাবা এত সকাল-সকাল ডাকছো কেন। বাবা বলল অনেক সুন্দর কুয়াশা পড়েছে বাইরে এসে দেখো। আজকে ফজরের নামাজটা পড়তে পারিনি। তাই ঘুম থেকে উঠতে একটু লেট হয়েছে। এরপর বাবা বিছানা থেকে টেনে তুলল। আমি আর অবহেলা না করে শীতের সকাল টা দেখার জন্যই উঠে আসলাম।

দরজাতে পা দিতে না দিতেই বাহিরে এত পরিমান কুয়াশা দেখেই মনটা ছুয়ে গেল। তাড়াতাড়ি সোয়েটার গায়ে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম। হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল কিছু ছবি তোলার কথা।

IMG_20211124_073543.jpg

এরপর হাতে ফোন নিয়ে রুম থেকে বাইরে এলাম। বাসা থেকে বের হয়ে শীতের শীতল বাতাসের সঙ্গে নিজেকে একটি আবদ্ধ ফ্রেমের মধ্যে বন্দী করে নিলাম। এরপর চিন্তা করলাম এই শীতের সকালে হাটতে গেলে মন্দ হয় না। হাটার জন্য আমার ছোট ভাইকে ডাক দেই, কিন্তু তার ঘুম না ভাঙ্গার কারণে একাই হাটতে বের হলাম। রাস্তায় হাটতে হাটতে হঠাৎ চোখের সামনে পড়ে গেল গ্রামের ঐতিহ্যবাহী পোশাক। গ্রাম মানেই যে শুধু নতুন কিছু সৃষ্টি তা কিন্তু না। গ্রাম মানে পুরনো ঐতিহ্যের সমাহার। সব রকমের পুরনো স্মৃতি, ঐতিহ্য গ্রামের মাঝে খুঁজে পাওয়া যায়।

IMG_20211124_073724.jpg

IMG_20211124_073858.jpg

IMG_20211124_073903.jpg

ঐতিহ্যবাহী পোশাকের মধ্যে চাদর অন্যতম। কৃষকদের শীতের সময় গায়ের চাদর, মাথায় টুপি আর পরিধানের জন্য একটি লুঙ্গি হলেই যথেষ্ট। সম্পূর্ণ শীতকালকে তারা ওই চাদর দিয়ে কেটে দিতে পারে। একটু মোটা কাপড় পড়ে যদি সেই চাদরগুলো গায়ের উপর দেওয়া যায় তাহলে অনায়াসেই এবং অল্প সময়ের ভিতর শরীর তাপ উৎপন্ন করে। গ্রামে বিশেষ করে বৃদ্ধ লোকজন এই চাদরগুলো ব্যবহার করে থাকে।
সেখানে দাদুর সঙ্গে কথা বলে আমি একটু সামনে হাটতে শুরু করলাম।

IMG_20211124_073950.jpg

IMG_20211124_073948.jpg

একটু সামনে যেতেই দেখি লাঙ্গল আর গরুর হাল। প্রাচীন যুগ থেকেই এই গরুর হাল দিয়ে কৃষকরা তাদের জমি চাষ করে আসছে। গরুর হালের সঙ্গে জমি চাষের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এই লাঙ্গল গুলো দেখতে অনেকটা বাকানো। জমির মাটি গুলোকে খুব সহজেই উর্বর করতে পারে। আদি যুগ থেকেই এই গরুর হাল দিয়ে কৃষক জমি চাষ করে থাকে। কিন্তু যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে এগুলো প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে কিছু কিছু গ্রামে এখনো এই গরুর হালের প্রচলন রয়েছে।

IMG_20211124_074926.jpg

এরপর আমি হাটতে শুরু করলাম। প্রায় অনেক দূরে যাওয়ার পর দেখতে পেলাম গ্রামের ছোট ভাইরা রাস্তায় হাটতে বের হয়েছে। তারা এই শীতে সকালটাকে অনেক সুন্দর ভাবে উপভোগ করছে। তারা চতুর্পাশের ছোটাছুটি করছে,একটু হাসি ঠাট্টা করছে, তাদের মুখের হাসি দেখে আমাকে অনেক ভালো লেগেছিল। তাদেরকে সেখানে দাঁড় করিয়ে আমিও তাদের সঙ্গে একটু মজা করেছি। সবাইকে যখন বললাম এতো সকালবেলা তোমরা রাস্তায় আসছো কেন। তারা বলল,ভাইয়া ব্যায়াম করতে আসছি। এরপর তাদেরকে সেখান থেকে বাস আসতে বলি।

IMG_20211124_075204~2.jpg

IMG_20211124_075146.jpg

প্রচন্ড শীত এবং কুয়াশা আমার পুরা শরীর কাঁপিয়ে তুলছে। তারপরেও এতো সুন্দর একই প্রকৃতির মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল একটি ব্যাপার বলে আমি মনে করি।হাটতে হাটতে প্রায় বাসা থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছিলাম। এরপর সেখানে দাড়িয়ে চতুর্পাশের প্রকৃতি দেখে আবার বাড়ির পথে রওনা দিলাম।

সকলের মঙ্গল কামনা করে আমি আমার শীতের সকালের গল্পটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।

Sort:  
 3 years ago 

আপনার আর্টিকেলটি অনেকটা ডায়েরি গেম এর মতো হয়ে গিয়েছে। চেষ্টা করবেন আরো ভালো ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করার জন্য এবং প্রত্যেকটি ছবির নিচে লোকেশন ব্যবহার করতে হবে।

জি ভাই অবশ্যই। সুন্দর একটি পরামর্শ দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 3 years ago 

গ্রামে শীতের সকালের দৃশ্য গুলো দেখতে অসাধারণ লাগে। গ্রামের দৃশ্য গুলো এমনিতেই খুবই সুন্দর হয়ে থাকে কিন্তু শীতের সকালের দৃশ্য গুলো সেগুলো দেখতে আরো বেশি সুন্দর লাগে।

সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

শীতের সকালের হাটাহাটির মুহূর্ত গুলো আসলেই খুবই মজার। শীতের সকালে কুয়াশার মধ্য দিয়ে হাটাহাটি করাটা বেশ ভালোই লাগে আমার। প্রতিবার শীত আসলেই কমবেশি সকালে হাঁটতে বের হওয়া হয়। তবে আমাদের এই দিকে এবার শীত এখনও তেমন প্রবল আকার ধারণ করেনি। কুয়াশায় ঘেরা ছবিগুলো খুবই সুন্দর তুলেছেন আপনি। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

আপনি ঠিক বলেছেন। শীতের সকালে হাটে হাটি মুহূর্তগুলো মজার হয়ে থাকে। একটু সময় নিয়ে পোস্ট টি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

শীতের সকাল আসলে গ্রামেই উপভোগ করা যায়, নগরজীবন এটা কোনদিনও সম্ভব হয়ে ওঠেনা। অন্যরকম একটি প্রশান্তি অনুভব করা যায় শীতের ভোরে গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে বেড়ানোর সময়। কোন হৈচৈ নেই কোন কোলাহল নেই প্রশান্তির অন্যরকম এক স্নিগ্ধ মুহূর্ত।

এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার প্রতি ভালোবাসা রইলো।

 3 years ago 

কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালগুলো আমার কাছে অসাধারণ লাগে । আপনার ফটোতে কুয়াশায় ভরপুর একটি সকাল বেলার দৃশ্য ফুটে উঠেছে । আমার কাছে সত্যি ভাল লেগেছে।দুই ,তিন এবং সাত নম্বর ছবি সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। সাত নম্বর ছবিটি জাস্ট অসাধারণ।

আপনার জন্য পরামর্শ থাকবে ডায়েরি গেম এর মতো পোস্ট না করে একটা নির্দিষ্ট টপিকস এর উপর আলোচনা করতে পারেন।

আসলে ভাইয়া আমার বুঝতে একটু ভুল হয়েছিল। যার কারণে ডায়েরি গেমের মত পোস্ট লিখে ফেলেছি। পরবর্তীতে এই বিষয়টি অবশ্যই দেখে শুনে পোস্ট করব। ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে ভুলটুকু সঠিকভাবে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য।

আমি আবারও আপনার মঙ্গল কামনা করছি এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার প্রতি।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 58387.03
ETH 2359.14
USDT 1.00
SBD 2.37