স্মৃতির পাতা থেকে তুলে নিয়ে আসা ছোট্ট একটি গল্প//10% beneficiary @shy-fox
০৪ অগ্রহয়ন ১৪২৮ শুক্রবার,১৯ নভেম্বর ২০২১,১৩ রবিউস সানি ১৪৪৩ |
---|
আজ শুক্রবার
পবিত্র দিনটিকে উপেক্ষা করে আমার বাংলা ব্লগের সকল ভাই ও বোন কে জানাই আমার সালাম। আসসালামু আলাইকুম। এবং অন্যান্য ধর্মের ভাই ও বোনদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইল। গতকালের মতো আবারো নতুন একটি আমার জীবনের সাথে জড়িত হওয়া সুন্দর মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। তবে এটা কোনো ঘুরতে যাওয়ার গল্প নয়। এটা হল মেসের ফিক্সট মিল নিয়ে এপ্রিল মাসে ঘটে যাওয়া একটি সুন্দর মুহূর্ত।মনের ভিতর বারবার একটা বিষয়ে আমাকে প্রেশার দিচ্ছে আপনাদের কাছে এই জিনিসটা শেয়ার জন্য,আর মনে হচ্ছে শেয়ার করলে আমি একটু শান্তি পাব। তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি আমার সেই সুন্দর একটি মুহূর্ত। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
এপ্রিল মাসের 13 তারিখ। দিনাজপুরে আমি যে মেসে থাকতাম সেই মেসে প্রতিমাসে এটি করে ফিক্সট মিল হয়ে থাকে। এই ফিক্সট মিল এর কারণ হলো সম্পূর্ণ মাসের গড় হিসাব করে সবাইরে পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার পর অবশিষ্ট যে অর্থ থাকে সেগুলো দিয়ে এবং অপর পাশে নিজ পকেট থেকে কিছু অর্থ দিয়ে এই ধরনের আয়োজন করা হয়। মেসের সকল বড় ভাই, ছোট ভাই সবাই মিলে অনেক আনন্দে মেতে ওঠে এই দিনে।
আমি যে মেসটিতে থাকতাম তার নাম হলো VIP মেস। মেসটি হল 5 তলা। আমি সবার উপরে থাকতাম। এই মেসের পরিবেশ অনেক ভালো। 1 তলা থেকে পাঁচ তলা পর্যন্ত সম্পূর্ণটাই টাইল্স দ্বারা আবদ্ধ। সম্পূর্ণ মেসটি নিয়ম কানুনের ভেতর দিয়ে পরিচালনা করা হয়।1 তলা থেকে 5 তলা পর্যন্ত মোট 75 জন থাকতাম। ঐদিন হঠাৎ করে মেসের বড় ভাই ব্যাগভর্তি বাজার, আবির, গান বাজানোর জন্য সাউন্ড বক্স নিয়ে আসলো। বড় ভাইয়ের এসব দেখে আমরা ভাইকে জিজ্ঞাসা করলাম হঠাৎ এগুলো কেন। তিনি বললেন আজকে ফিক্সট মিল খাব তাই এত আয়োজন। কথাটা শুনে আমি অনেক খুশি হলাম।
আমি ভাইয়ের কথা শুনে একটু দৌড় মেরে আমার রুমমেটের কাছে গেলাম। সঙ্গে একজন বড় ভাই ছিল। আমি গিয়ে তাদেরকে বলি তারা আনন্দের সহিত রুম থেকে বের হয়ে সেই আবির গুলো নিয়ে সবার গায়ে মাখানো শুরু করলো। আমি দেখে দৌড় মারতে শুরু করলাম।আমার পেছনে তিনজন তারা করতে শুরু করেছে আমাকে আবির মাখানোর জন্য। আমার এগুলো একদম ভালো লাগেনা। কিন্তু কি করার সবাই জোর করে মাখিয়ে দিলো।
এক এক করে সকল ইউনিটের বড় ভাই ছোট ভাই রুম থেকে বের হয়ে আসছে আর আবির মাখতেছে। তারপর গান-বাজনা শুরু হয়ে গেল আমাদের। পাঁচ তলা ছাদের উপর সবাই গান বাজিয়ে নাচ নিয়ে ব্যস্ত। যে যেমন পারছে নেচে যাচ্ছে। পাশেই অনেকে ফোন দিয়ে ছবি তুলছে ভিডিও করছে স্মৃতি হিসেবে রাখার জন্য। সেই সুবাদে আমিও কয়েকটি ছবি তুলে রেখেছি। জীবনে হয়তো বা এই দিনগুলো আর ফিরে পাব না, কিন্তু ছবিগুলো দেখে সেই পুরনো দিনের কথাগুলো তো মনে করতে পারব।
এরপর ছাদের উপর সবাই এখানে হলাম। বড় ভাই সুন্দর করে কিছু কথা বলার পর আমাদের কে বলল যারা যারা নাচতে পারো এক পাশে দাঁড়াও। 75 জনের মধ্যে সাতজন একপাশে হয়েছিল নাচার জন্য। বাকি আমরা সবাই এক পাশে। এরপর পর্যায়ক্রমে গান বাজিয়ে নাচ শুরু করে দিল। পাশ থেকে আমরা হাততালি দিয়ে উৎসাহিত করছি যেন ভাল ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারে নাচের মাধ্যমে। সকাল দশটা থেকে শুরু করে বিকাল 5 টা পর্যন্ত আমরা এভাবেই নাচ গান নিয়ে ব্যস্ত।
আর পাশেই আমাদের মেসের খালা রান্না করতেছে। এই একজন খালা 75 জনের রান্না করে। রান্নার সময় বড় ভাইয়েরা সহযোগিতা করে থাকে। ঐদিন রেসিপি ছিল মুরগির রোস্ট, গরুর মাংস, ডিম, দই, সেভেন আপ, মিষ্টি, সালাত ইত্যাদি। ঐদিন আমরা কোন প্রকার খাওয়া-দাওয়া করিনি মেসে। সবাই নিজের মতো বাইরে খেয়ে নিয়েছিলাম। আর মেসের খাওয়া-দাওয়া হয়েছিল ছয়টার পর। ছাদের উপর পাটি বিছিয়ে সবাই মিলে এক বিশাল আয়োজন করে খাওয়া-দাওয়া সম্পূর্ণ করি।
জীবনে চলার পথে অনেক সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত প্রতিটি মানুষের জীবনে আসে। কেউ সেটাকে সুন্দরভাবে উপভোগ করে কেউ আবার করতে পারেনা। সুন্দর মুহূর্ত গুলো প্রতিটি মানুষ তাদের নিজেদের সৃতির ফ্রেমে রাখতে চায়।সেই স্মৃতির পাতা থেকে আমার জীবনের ছোট্ট একটি অংশ আপনাদের কাছে উপস্থাপন করলাম।
আমার এই দিনটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে অবশ্যই মতামত দিবেন এবং শব্দের ব্যবহারে কোথাও যদি কোন প্রকার ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ম্যাচ এর ফিক্সট খাওয়া এটা আমি প্রথম শুনলাম।ভাগ্রক্রমে এখনো অব্দি মেচ এ থাকা হয়নি কারণ শহর টা আমাদের বাসার কাছে হওয়াই এখানে সমস্থ পোড়াশনা করে গিয়েছি।আসলে এক জায়গাতে অনেক গুলো ছেলে ব্যাচেলার মানেই আনন্দ আমরা নিজেরাও আমাদের গ্রামে প্রতি মাসেই এমন আয়োজন করি।আপনার মুহুর্ত গুলোর চিত্র এবং গল্পট পরে যা জানলাম আপনি অনেক ইঞ্জয় করেছেন আর এইসব অনুষ্টান ইঞ্জয় এর জন্যই করা।শুভ কামনা রইলো।
আমি জানি না অন্য কোথাও ফিক্স মিল হয় কিনা,তবে আমাদের এখানে প্রতি মাসেই হয়ে থাকে ভাইয়া।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভাই আপনার মেসের ফিক্সট মিল খাওয়ার আনন্দঘন মুহূর্ত টা খুবই ভালো লেগেছে। আসলে ম্যাচের জীবন একটু অন্য রকম হয়ে থাকে তার মধ্যে যদি এরকম কিছু আনন্দ ফুর্তি হয়ে থাকে তাহলে অনেক ভালো লাগে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার আনন্দঘন মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
মেস জীবনে সবারই বিভিন্ন রকম ভালো লাগার মুহূর্ত থাকে ।আপনাদের মেস জীবনের এই আয়োজনের কথা শুনে খুবই ভালো লাগলো। আপনি পোস্টের ভিতরে বেশ কিছু ইংরেজি নিউমেরিক্যাল ক্যারেক্টার ব্যবহার করেছেন। এটা না করাই ভাল।গরুর মাংসের কথা উল্লেখ না করলে ভালো হোতো । যেহেতু বিফ এবং পর্ক আমাদের কমিউনিটিতে নিষিদ্ধ বিষয় ।সে ক্ষেত্রে এগুলো এড়িয়ে চলাই ভাল। বেশ সুন্দর করে আপনার ভালো লাগার মুহূর্ত তুলে ধরেছ। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। আমাকে ভুল গুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। পরবর্তি পোষ্ট গুলোতে এইধরনের ভুল ইনশাআল্লাহ আর হবেনা।
আপনাকে আবারো ধন্যবাদ জানাই আমাকে সঠিকভাবে নিয়মগুলো দেখিয়ে দেওয়ার জন্য। আপনার প্রতি শুভকামনা রইল।
আসলে মেসের ফিক্সট মিল খাওয়ার মজাটাই আলাদা । যারা মেসে থেকেছে তারা হয়তো এসব অনুভূতি বুঝতে পারবে। আপনার ভিআইপি ম্যাচে ৭৫ জন বর্ডার ছিলেন । ওয়াও এতজন মিলে সবাই একসাথে আনন্দ করার মজাটাই আলাদা। সেটা আপনি উপভোগ করেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার জীবনের একটি সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।