টাঁকশাল
স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের প্রথম এবং একমাত্র বাংলা কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর বাংলাভাষী সদস্য আশা করি ভালো আছেন। আজকের পোস্টে আলোচনার বিষয় টাঁকশাল।
যেখানে কাগজে ছাপানো টাকা এবং ধাতব মুদ্রা তৈরি করা হয় সেটি আমাদের কাছে টাঁকশাল নামে পরিচিত। ১২০৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলার এ অঞ্চলে মুসলিম শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পর শাসকরা প্রশাসনিক এবং বাণিজ্যিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে মুদ্রা বানানো করা শুরু করেন। পরবর্তীকালে সাম্রাজ্য বিস্তৃতির সাথে সাথে বিভিন্ন অঞ্চলে টাঁকশাল স্থাপনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
বাংলার সর্ব প্রথম টাঁকশাল স্থাপন করা হয়েছিল লখনৌ শহরে। ১২০৫ খ্রিস্টাব্দে বখতিয়ার খলজি বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার পর লখনৌ শহরটি রাজধানী হিসেবে নির্ধারিত হয় এবং সেখানে একটি টাঁকশাল স্থাপিত হয়। পরবর্তীকালে সোনারগাঁও, ফতেহাবাদ, চট্টগ্রাম, মুজাফফরাবাদ সহ অন্যান্য শহরে টাঁকশালের কার্যক্রম শুরু হয়।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কয়েক মাস যাবত দেশে পাকিস্তানী মুদ্রার প্রচলন ছিল। পাকিস্তানী সেই নোটগুলোর ওপর “বাংলাদেশ” লেখা স্ট্যাম্পের ছাপ দেয়া থাকতো। ১৯৭২ সালের ৪ঠা মার্চ থেকে পাকিস্তানী মুদ্রার পরিবর্তে বাংলাদেশি ব্যাংকনোটের প্রচলন শুরু হয়। ভারত, ইংল্যান্ড, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ব্যাংকনোট ছাপিয়ে আনা হতো। ১৯৮৯ সালে গাজীপুরে বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র টাঁকশালের কার্যক্রম শুরু হয়, যার নাম “দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড”। বর্তমানে এখান থেকে ৯টি মূল্য-মানের কাগজের নোট ছাপানো হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন উপলক্ষ্যে বিশেষ স্মারক নোটগুলোও এখান থেকে ছাপানো হয়। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (বাংলাদেশ ব্যাংক) এর চাহিদা মোতাবেক বিভিন্ন মূল্য-মানের ব্যাংকনোট এই টাঁকশাল থেকে দেশের বিভিন্ন বিভাগে সরবরাহ করা হয়। এই টাঁকশালে কোন প্রকার ধাতব মুদ্রা (কয়েন) তৈরি হয় না।
টাঁকশালে ব্যাংনোট বা কাগুজে টাকার পাশাপাশি সরকারী বিভিন্ন রকম নিরাপত্তা-সামগ্রী ছাপানো হয়ে থাকে। যেমন- সঞ্চয়পত্র, প্রাইজবন্ড, ডাকটিকিট, রাজস্ব স্ট্যাম্প, ট্যাক্স লেবেল, নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, ব্যাংকের চেকবই, শিক্ষা বোর্ডগুলোর সনদপত্র ইত্যাদি।
টেকনিক্যাল বিষয়ে পড়ার কারণে এই ইতিহাস এবং অর্থনীতি সম্পর্কে খুব একটা জ্ঞান নেই। আপনার পোস্ট টা অনেক তথ্যবহুল ছিল। আপনাকে ধন্যবাদ।
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ
আপনার পোস্ট গুলো তথ্যবহুল হয়। ধন্যবাদ পড়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছি।
আপনাকেও ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা 😊