কাজী আজিজুল হক - আঙ্গুলের ছাপের মাধ্যমে অপরাধী শনাক্তকরণ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিলেন এই বাঙ্গালি
স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের প্রথম এবং একমাত্র বাংলা কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর বাংলাভাষী সকল সদস্য আশা করি ভালো আছেন। আজকে এমন একজন বাঙ্গালি ব্যক্তি এবং তাঁর কৃতিত্বের কথা বলা হবে যা নিয়ে আমরা সবাই গর্ব করতে পারি।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://assetsds.cdnedge.bluemix.net/sites/default/files/styles/amp_metadata_content_image_min_696px_wide/public/feature/images/khan_bahadur_qazi_azizul_haque.jpg?itok=d0mzP9X-)
ফিঙ্গারপ্রিন্ট তথা আঙ্গুলের ছাপের মাধ্যমে অপরাধী শনাক্তকরণ বিশ্বের একটি বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি। এই পদ্ধতি উদ্ভাবনে সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন একজন বাঙ্গালি ব্যক্তি। তাঁর নাম কাজী আজিজুল হক। ১৮৭২ সালে খুলনা জেলার ফুলতলায় তাঁর জন্ম। পড়াশোনা করেন কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের গণিত বিভাগে। সেই সময় অবিভক্ত বাংলার পুলিশ বিভাগের আইজি ছিলেন স্যার অ্যাডওয়ার্ড হেনরি। তাঁর নেতৃত্বে চলছিল অপরাধী শনাক্তকরণ প্রকল্প। এই কাজের জন্য গণিত ও পরিসংখ্যানে দক্ষ এমন কাউকে তিনি খুঁজছিলেন। কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ প্রস্তাব করেন আজিজুল হকের নাম।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://gumlet.assettype.com/swarajya%2F2017-11%2Fea56fa04-ca03-4d84-b76f-6d4c5124f36f%2F665dec55-a617-4696-8647-d79d8dddd8c5.png)
আজিজুল হককে সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে নিয়োগ দেন স্যার অ্যাডওয়ার্ড হেনরি। তখন পর্যন্ত অ্যানথ্রোপমেট্রি (মানবদেহের আকৃতি) পদ্ধতিতে অপরাধীদের শনাক্ত করা হতো, যা ছিল দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ কাজ। আজিজুল হক নিরলস গবেষণার মাধ্যমে ১৮৯৭ সালে উদ্ভাবন করেন ফিঙ্গারপ্রিন্টের শ্রেণীবিন্যাসকরণের এক অভিনব পদ্ধতি। আর গড়ে তোলেন সাত হাজার ফিঙ্গারপ্রিন্টের বিশাল এক সংগ্রহ। তাঁর সহজ-সরল এই পদ্ধতি লাখ লাখ ফিঙ্গারপ্রিন্টের শ্রেণীবিন্যাস করার কাজটিও সহজ করে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে অ্যাডওয়ার্ড হেনরি এই উদ্ভাবনকে ‘হেনরি সিস্টেম’ বলে নিজের নামেই চালিয়ে দেয়। অবশ্য পুরস্কার হিসেবে তখন ‘খান বাহাদুর’ উপাধি, নগদ পাঁচ হাজার টাকা এবং ছোটখাটো একটা জায়গির দেওয়া হয় তাঁকে। পরে চাকরিতে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশের এসপি হয়েছিলেন তিনি।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://assetsds.cdnedge.bluemix.net/sites/default/files/styles/very_big_2/public/news/images/sons_and_grandchildren_of_qazi_azizul_haque.jpg?itok=N1Rt_5f0)
তবে ১৯২৬ সালে আজিজুল হকের কৃতিত্বের কথা স্বীকার করেন অ্যাডওয়ার্ড হেনরি। ‘হেনরি সিস্টেম’ এখন ‘হেনরি-হক-বোস সিস্টেম’ নামে পরিচিত। ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রকল্পে আরেক বাঙ্গালি পুলিশ অফিসার হেমচন্দ্র বোসও আজিজুল হকের সাথে কাজ করেন বিধায় তাঁর নামটিও এখানে যুক্ত করা হয়। কাজী আজিজুল হকের সম্মানে ব্রিটেনের ‘দ্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট সোসাইটির’ উদ্যোগে চালু হয়েছে ‘দ্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট সোসাইটি আজিজুল হক অ্যান্ড হেমচন্দ্র বোস প্রাইজ’। যাঁরা ফরেনসিক সংশ্লিষ্ট কাজে বিশেষ অবদান রাখবেন তাদেরকে দেওয়া হয় এই পুরস্কার।
সুন্দর তথ্যবহুল পোস্ট।।
এই তথ্যটি আমার কাছে অজানা ছিলো৷ খুবই তথ্যবহুল একটি পোস্ট দিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে
বিশ্বের কাছে গর্ব করার মতো এমন আরো অনেক কৃতিত্ব বাঙালিদের রয়েছে। এরকম অজানা, কালের বিবর্তনে বিস্মৃত বিষয়গুলো সবার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো আমার আগামী পোস্টগুলোতে।
অনেক তথ্যবহুল পোষ্ট। আশা করি সবার অনেক উপকারে আসবে।
অনেক সুন্দর তথ্য দিয়েছেন আর আমি মনে করি তার এই গবেষণায এখনকার সময় অনেক কাজে লাগছে ।ধন্যবাদ আপনাকে ।
আমি জানতাম স্যার ফ্রান্সিস গোল্ট আঙুলের ছাপের সাহায্যে অপরাধী শনাক্তকরণের জনক । পরে আপনার লেখাটি পড়ে ও ওয়েব সার্চ করে জানতে পারলাম সেটা ভুল । হেমচন্দ্র বোস ও আজিজুল হক-ই আসল জনক । অনেক ধন্যবাদ ।
১৮৯২ সালে স্যার ফ্রান্সিস গ্যাল্টন 'ফিঙ্গার প্রিন্টস' নামের বহুল আলোচিত একটি বইয়ে আঙ্গুলের ছাপের শ্রেণীবিন্যাস বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সেই বই পড়ে তৎকালীন বেঙ্গল পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল স্যার এডওয়ার্ড রিচার্ড হেনরি আগ্রহী হয়ে ওঠেন অপরাধ তদন্তের ক্ষেত্রে আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহারের ব্যাপারে। তাঁর তত্ত্বাবধায়নে হেমচন্দ্র বসুর সহায়তায় আঙ্গুলের ছাপের মাধ্যমে অপরাধী শনাক্তকরণ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন কাজী আজিজুল হক।
একেবারে সঠিক তথ্য :)