সন্দেশ
স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের প্রথম এবং একমাত্র বাংলা কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর বাংলাভাষী সদস্য আশা করি ভালো আছেন। আজকের পোস্টে আলোচনার বিষয় বাঙালির অন্যতম প্রিয় খাবার সন্দেশ।
মিষ্টান্ন জাতীয় খাবারের তালিকায় আমাদের অনেকেরই পছন্দের একটি খাবার হচ্ছে সন্দেশ। বাঙালির বিভিন্ন রকম উৎসব, উপলক্ষ্যের আয়োজনে পুষ্টিকর এই খাবারটি বহুলভাবে দেখা যায়। দুধ থেকে তৈরি ছানার সাথে গুড় কিংবা চিনি মিশিয়ে ছাঁচের মধ্যে রেখে নকশাদার সন্দেশ তৈরি করা হয়। ছানা আবিষ্কারের আগে মুগ ডাল, নারিকেল, চিনি এবং বেসন দিয়ে সন্দেশ বানানো হতো। তবে এখন ছানার তৈরি সন্দেশই সবার কাছে অধিক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
পর্তুগিজরা ভারতীয় উপমহাদেশে আসার পর তাদের কাছ থেকে এ অঞ্চলের মানুষ দুধ থেকে ছানা তৈরি করা শিখেছে। তবে ধর্মীয় কারণে ছানা এবং ছানা থেকে তৈরি খাবারগুলো পরিত্যাজ্য ছিল। খাঁটি দুধ এবং দুধ থেকে তৈরি হওয়া বিভিন্ন রকম খাবারের যেমন ঘি, মাখন, দধি শ্রেষ্ঠ খাবার হিসেবে বিবেচিত হলেও দুধের সাথে টক জাতীয় উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা ছানা এবং ছানার সন্দেশ অখাদ্য মনে করা হতো।
পরবর্তীতে সময়ের পরিক্রমায় সুস্বাদু এই খাবারটি সবার কাছে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। ষোড়শ শতাব্দীতে ভারতীয় উপমহাদেশে বৈষ্ণব ধর্ম প্রসারের সময় সন্দেশের প্রসার বাড়তে থাকে। কারণ বৈষ্ণবরা নিরামিষভোজী ছিলেন, আর ছানা থেকে তৈরি হওয়া সন্দেশে আমিষ উপাদান ছিল না।
বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশে বিশেষ করে বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের সন্দেশ তৈরি করা হয়। মিষ্টি তৈরির অভিজ্ঞ কারিগররা সন্দেশ তৈরিকে শৈল্পিক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের নাটোর জেলার বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা এবং প্যারা সন্দেশের সুনাম সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়াও রয়েছে বরিশাল জেলার গুটি সন্দেশ এবং যশোর জেলার খেজুরের নলেন গুড় থেকে তৈরি সন্দেশ। কিছু প্রকার সন্দেশ বানানোর সময় এতে পনির এবং দই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে উনবিংশ শতাব্দীর শেষাংশ থেকে সন্দেশ বলতে সাধারণত ছানার সন্দেশকেই বুঝানো হয়।
বাঙালীদের মিষ্টি জাতীয় জিনিষ ছাড়া একদমই চলে নাই ভাই। ধন্যবাদ তথ্যগুলো উপস্থাপন করার জন্য।
বেশ ভালো লিখেছেন। সন্দেশ আমার ভীষণ পছন্দের ।