চাকা
স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের প্রথম এবং একমাত্র বাংলা কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর বাংলাভাষী সদস্য আশা করি ভালো আছেন। আজকের পোস্টে আলোচনার বিষয় চাকা।
মানবসভ্যতা এগিয়ে যাওয়ার পিছনে চাকার অবদান অস্বীকার করা যাবে না। এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায়, আগুন আবিষ্কারের মতোই চাকা আবিষ্কার ছিল এক যুগান্তকারী গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। চাকা কবে এবং কোথায় আবিষ্কৃত হয়েছিল সেটি নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও অধিকাংশ গবেষকদের মতে, ৫০০০ খ্রিস্ট-পূর্বাব্দে প্রাচীন মেসোপটেমিয়া (ইরাক অঞ্চলে) সভ্যতায় চাকা আবিষ্কার এবং ব্যবহার শুরু হয়েছিল।
মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপে আবিষ্কৃত বিভিন্ন প্রাচীন নিদর্শনের গায়ে চাকাযুক্ত যানবাহনের ছবি দেখা যায়। অনুমান করা হয়, গাছের গোলাকার কান্ড বা গুঁড়ি গড়িয়ে যাওয়া দেখে আদিম মানুষ চাকা তৈরির ধারণা পেয়েছিল। তারা গাছের গুঁড়ি কেটে এর মাঝ বরাবর লাঠি প্রবেশ করিয়ে চাকা তথা আদিম যানবাহন তৈরি করেছিল।
প্রথমদিকে কেবলমাত্র কাঠের তৈরি চাকার ব্যবহার দেখা গেলেও পরবর্তীতে বিভিন্নভাবে চাকার বিবর্তন ঘটেছে। গাছের গুঁড়ি বা কাঠ দ্বারা নির্মিত চাকা অল্পদিনে ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়া এবং ভেঙে যাওয়ার কারণে এর বহিরাংশে ধাতব পাত যুক্ত করা হয়। পরবর্তীকালে ধাতব পাতের বদলে রাবার ব্যবহার করা শুরু হয়।
স্পোকযুক্ত চাকা উদ্ভাবনের ফলে যানবাহন নির্মাণের ক্ষেত্রেও অভাবনীয় পরিবর্তন আসে। এ ধরনের চাকাযুক্ত যানবাহনের ওজন হালকা হয় এবং এতে যানবাহনের গতি বৃদ্ধি পায়। ২০০০ খ্রিস্ট-পূর্বাব্দে আন্দ্রোনভ সভ্যতায় স্পোকযুক্ত চাকার ব্যবহার দেখা গিয়েছিলো। এরপর ককেশীয় অঞ্চলের মানুষ যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত রথের ঘোড়ার গাড়িতে স্পোকযুক্ত চাকা ব্যবহার করে। ১৮৭০ সাল চাকার বহিরাংশে নিউম্যাটিক টায়ারের ব্যবহার শুরু হয়েছিলো।
চাকার ব্যবহার শুধুমাত্র যানবাহনেই নয়, বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রে চাকার ব্যবহার রয়েছে। উইন্ডমিল, গিয়ার, মেকানিকাল ক্লক (কাঁটাওয়ালা ঘড়ি), কপিকল (ভারী বস্তু উপরে তোলার যন্ত্র), সুতাকাটার চরকা ইত্যাদি চাকার বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তিত রূপের উদাহরণ।
অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই। তথ্যগুলো প্রদানের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
যদিও এ ধরনের বিষয় আমার অনেক আগে থেকেই জানা তবে নতুন করে পড়ে ভালই লাগলো