"আমার জীবনের অজনা কিছু গল্প "পর্ব - ১

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজ মহা শিবরাত্রি। শিবরাত্রি হলো হিন্দু সম্প্রদায় নিকট গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান। শিবরাত্রি হল হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ আরাধ্য দেবাদিদেব মহাদেবের শিবের মহারাত্রি। অন্ধকার অজ্ঞতা দূর করার জন্য এই ব্রত পালিত হয়। এই ব্রত নারীরা বেশি করে থাকে। আবার অনেক অবিবাহিত মেয়েরা ও এই ব্রত পালন করে। হিন্দু মহা পুরাণ তথা শিব পুরাণ অনুসারে এই রাত্রে শিব সৃষ্টি স্থিতি ও প্রলয়ের মহা তান্ডব নৃত্য করেছিলেন। আবার এই রাত্রে শিব ও পার্বতীর বিবাহ হয়েছিল। শিব হলো হিন্দু সমাজের প্রধান এবং অধিদেবতা এজন্যই তাকে বলা হয় দেবাদিদেব মহাদেব। এই দিন সম্পর্কে আমরা কম বেশি সবাই জানি তাই আর নতুন করে বলার কিছু নেই। সকাল থেকে প্রচন্ড ব্যস্ততার মধ্যে আছি। আজ বুঝতে পারছি না আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। তারপর ভাবলাম আপনাদের সাথে একটু নিজেকে নিয়ে গল্প করি। আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছিলেন আমার আর আমার প্রিয় মানুষটির কিভাবে পরিচয় ও দেখা হয়েছিলো। সেই কথা মাথায় রেখেই ভাবলাম আজ একটু নিজের কিছু কথা বলি। আমাদের পরিচয়ের কথা বলতে গেলে প্রথমে চলে আসবে আমার জীবনের কথা।

IMG_20220219_164802.jpg
আমি খুব সাধারণ পরিবারের একটি মেয়ে। আমি খুব সাধারণ ভাবে বড় হয়েছি। আমার ছেলেবেলা থেকে আমি হাসি আনন্দে বড় হয়েছি। আমি সারাজীবন যা চেয়েছি তাই পেয়েছি। আমার মা বাবা কোনোদিন কোনো কিছুর অভাব রাখেনি। তবে হ্যা আমাকে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সবকিছু দিয়েছে। আমি ছেলেবেলা থেকে একটু জেদী এবং রাগী। তবে আমি খুব সহজে রাগী না।তবে আমি নিজের মানুষদের ওপর বেশি রাগ করি। কিন্তু আমার রাগ বেশিক্ষণ থাকে না। আমার কাছে এসে একটু ভালো কথা বলতেই আমার রাগ জল হয়ে যায়। তবে আমি খুব সহজে মানুষকে বিশ্বাস করি এবং ভালোবেসে ফেলি। তার জন্য সবাই আমাকে ঠকিয়ে যায়। তবে আমি কম কথা বলতে পছন্দ করি। আমি সারাজীবন কম কথা বলি এবং নিজের মানুষদের নিয়ে থাকতে ভালোবাসি।

আমার কোনোকিছু অতিরিক্ত পছন্দ হয় না। তবে আমার ঘুরতে যেতে খুব ভালো লাগে। আর আমি ছেলেবেলা থেকে শুধু আমার পড়াশুনা নিয়ে থাকতাম। পড়াশুনার বাইরে কিছু আছে এটা তখন আমার জানার প্রয়োজন ছিলো না। অবসর সময় কাটাতাম শুধু বই পড়ে। কারও সাথে দরকার না হলে কথা বলতাম না। কারও সাথে ফোনে বেশি কথা বলতাম না। আমি বিয়ের আগে কোনোদিন ফেসবুক, টিকটক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম কিছুই চলতাম না। শুধু পড়াশুনা নিয়ে থাকতাম। তাই আমার সাথে কেউ কখনও কথা বলতে সাহস পায়নি। কলেজ জীবনে থাকতে শুধু সময় হলে কলেজে যেতাম আর শেষ হলে। আমরা কয় বান্ধবী বাসায় চলে আসতাম। আর কোথাও যেতাম না। পড়াশুনা বিহীন আমি কিছু ভাবতে পারতাম না। আর বিয়ে করার তো কোনো ইচ্ছা ছিল না। আর আমার মা - বাবা কখন ও কোনকিছুতে জোর করিনি। তাদের ও একটাই কথা ছিলো আগে পড়াশুনা তারপর অন্য কিছু। আমি আগেই বলেছি আমি গ্রামের মেয়ে। কিন্তু আমি ক্লাস এইটে থাকতে শহরে চলে আছি। আর সেই থেকে আর গ্রামে যাওয়া হয়নি। বছরে একবার যেতাম মা - বাবার কাছে আবার ২ -৩ দিন থেকে আবার চলে যেতাম।

এই ভাবে চলতো আমার পড়াশুনার জীবন। যখন পড়াশুনার একটু চাপ আসলো তখন বাড়ীতে গেলে তখন এক রাত থাকতাম আবার চলে আসতাম। আমি পড়াশুনার পাশাপাশি টিউশনী করতাম ও ছোট বাচ্চাদের স্কুলে পড়তাম এই নিয়ে আমার সময় কেটে যেত। আমার জীবনে অনেক বড় হবার ইচ্ছা ছিল। আমি চেয়েছিলাম লেখাপড়া করে অনেক কিছু করতে।
আমি অনেক স্বপ্ন দেখতাম। একদিনের একটা ঘটনা বলি। এটা ২০১১ সালের ঘটনা তখন উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছি সবেমাত্র। কলেজে ভর্তি হওয়ার আগে গিয়েছিলাম মামাবাড়িতে। ঠিক সেই সময় আমার বড় মাসিমার ছেলে আমার দাদা সে আমার থেকে অনেক বড়। সে তখন চাকরী করতো। এবং একটা গাড়ী নিয়ে আসছে। আমি সেই গাড়ীতে উঠতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমাকে বলেছিলো তুই এখনও গাড়ীতে উঠার মতো হওনি। সেই থেকে আমার জেদ চেপে ছিল যে যত দিন আমার নিজের কোন গাড়ি হবে না ততদিন পর্যন্ত আমি গাড়িতে উঠবো না। এরকম অনেক ছোটো ছোটো ঘটনা রয়েছে।

আগেই বলে রাখি আমার বাপের বাড়ির একই গ্রামে আমার প্রিয় মানুষটির মামাবাড়ি। আর ওরা ও মামাবাড়ি থেকে মানুষ হয়েছে।কিন্তু সে ও অনেক ছোট থাকতে বাইরে চলে গিয়েছিলো পড়াশুনা করতে। তাই আমি অনেক ছেলেবেলায় আমি ওর কথা শুনেছিলাম। তবে আমি আগে কোনোদিন তাকে দেখিনি। শুধু তার কথা শুনতাম। তবে হ্যা ওর বাবা মানে আমার শ্বশুর কে কিন্তু চিনতাম। ওর বাবা আগে থেকে আমাকে খুব ভালোবাসতো। আমি গ্রামে গেলে দেখা হলেই আমার সাথে কথা হতো।

আজ এই পর্যন্তই আগামী দিন পরবর্তী ঘটনা বলবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

Sort:  

পোস্টটি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়লাম । মনে হচ্ছে ইন্টারেস্টিং কিছু হতে যাচ্ছে । আপনাকে দেখেই মনে হয় , আপনি একজন ভালো মনের মানুষ ।আর ঠিক তেমনি একজন জীবণ সঙ্গি পেয়েছেন । তবে আপনার মতো আমিও কম কথা বলতে পছন্দ করি । পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম বৌদি ।

 2 years ago 

বৌদি আপনার গল্পটি পরে অনেক ভালো লাগল। আপনি যে ছোট বেলা থেকে আমাদের দাদাকে মনে মনে পছন্দ করতেন তা আর বুঝার বাকি রইল না হিহিহি😁😁। শুভকামনা রইল বৌদি আপনার জন্য

 2 years ago 

বৌদি আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত অনেক তথ্য শেয়ার করলেন। আশা করি পরবর্তী পোষ্ট গুলোতে আপনাদের সম্পর্কে আরো অনেক কিছুই জানতে পারবো। আসলে ভালো লাগার মানুষগুলো সম্পর্কে সকলেরই জানতে ইচ্ছে করে। দাদা এবং আপনাকে আমাদের এই কমিউনিটিতে পছন্দ করেনা এমন লোকের সংখ্যা কম। গাড়িতে চড়তে দেয়নি বলে আপনি নিজের গাড়ি না হওয়া পর্যন্ত আর গাড়িতে চলেন নি এটা জেনেই বুঝতে পেরেছি আপনি কেমন জেদি ছিলেন। এই জেদ অবশ্যই ভালো। এটাকে বলে ভেতরের শক্তি। শুভকামনা রইল আপনাদের জন্য

 2 years ago 

প্রিয় বৌদি, আপনার যে কোন লেখাই আমার পড়তে ভালো লাগে। আজও তার ব্যতিক্রম হল না তাই আপনার লেখাগুলো পড়তে পড়তে গল্পের ভেতরে প্রবেশ করে ফেললাম। আর কল্পনা করছিলাম,আপনার গল্পের দৃশ্য আমি দেখতে পাচ্ছি। যাইহোক বৌদি, আপনার লেখালেখি দেখে আপনার সম্পর্কে আগেই ধারণা হয়েছে যে আপনি লেখাপড়া ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারতেন না। আপনি খুব ভালো মানুষ এটা খুব সহজেই বোঝা যায়। যাদের রাগ বেশি হয় তাদের মন খুব পরিষ্কার হয়। তারা খুব সহজেই অন্যের ভুল গুলোকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে পারে। যারা মানুষের সাথে খুব সহজে মিশতে পারে তারাই হচ্ছে প্রকৃত মানুষ যেমন আমাদের প্রিয় বৌদি। আপনার পরবর্তী গল্পের অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করি সব সময়।

খুব সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন তো বৌদি। গল্পটি রোমান্টিক লাগছে। আপনার জেদ কে সাধুবাদ জানাই এ রকম জেদ থাকা ভালো। সামনের দিকে অগ্রসর হতে সাহায্য করে। আপনি অনেক ভালো এবং বড় মনের মানুষ সঙ্গে আমাদের প্রিয় দাদাও। দুজনের প্রতি অনেক অনেক ভালোবাসা রইল। যেখানেই থাকুন সৃষ্টিকর্তা যেন আপনাদের কে সব সময় ভালো রাখেন। শুভেচ্ছা রইল বৌদি। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

তারমানে আপনার বাবার বাড়ি আর দাদার মামার বাড়ি একই গ্রামে ছিল । ব্যাপার ইন্টারেস্টিং, কেমিস্ট্রি হতে কেবল শুরু করেছে বুঝতে পারছি । অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তীর পর্বের জন্য বৌদি ।

 2 years ago 

আপনার সাথে আমার ছোটবেলার দারুন কিছু মিল রয়েছে, আমিও খুব একটা মানুষ সাথে কথা বলতাম না কিংবা ফোনেও কথা বলা পছন্দ করতাম না।

সত্যি বলতে আমারও খুব জানার ইচ্ছে ছিলো কিভাবে আপনাদের দেখা হয়েছিল। মনে হচ্ছে আপনাদের এই স্মৃতিমধুর ঘটনাটি জানার সৌভাগ্য হবে আমাদের। অপেক্ষায় থাকলাম আপনার পরবর্তী পোস্টের জন্য।

কিঞ্চিৎ কথায়,জীবনের ভগ্নাংশ মেলাতে যতেষ্ট ছিল। বড় হোন।

 2 years ago 

আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছিলেন আমার আর আমার প্রিয় মানুষটির কিভাবে পরিচয় ও দেখা হয়েছিলো।

হ্যাঁ বৌদি,, আমিও কিন্তু একটা পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম। সত্যি খুব ভালো লাগলো যে আপনি শেষমেশ আপনার সেই স্মৃতিগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছেন।

পার্ট বাই পার্ট করে কোন কিছু শেয়ার করলে আকর্ষণটা আরো বেশি থাকে। বৌদি সে বিষয়টি খুব ভালোভাবে জানে মনে হচ্ছে। আকর্ষণ বাঁধিয়ে রাখলেন বৌদি। হাহাহা।।।

পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় বসে রইলাম। তবে এই পোস্টের মধ্যে যেই ফটো ইউজ করেছেন সেটি কিন্তু খুবই ভালো ছিল। অনেকগুলো ফুলের মধ্যে থেকে উঁকি দেওয়া,, দারুন দারুন।।। তা ছবিটা কি আমাদের দাদা তুলে দিয়েছিল??

 2 years ago 

বৌদি আপনার জীবনের কিছু কাহিনী শুনে খুব ভালো লাগলো। আপনার ব্যক্তির জীবন অনেকটাই আলাদা এবং অনেক শালীনতার মাধ্যমে আপনি বড় হয়েছেন যা বুঝতে পারলাম। আপনার জন্য অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইল জীবনে অনেক বড় হন আর প্রিয় মানুষগুলোকে নিয়ে খুব সুখে থাকেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74