"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ১০ আমার পছন্দের রেসিপি " পাঁচমিশলী নিরামিষ সবজি"
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। "আমার বাংলা ব্লগ "প্রতিযোগিতা - ১০ আমার পছন্দের শীতকালীন সবজির রেসিপি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছি।এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য আমার বাংলা ব্লগ কে ধন্যবাদ জানাই।এক আমি খুব সাধারণ নিরামিষ একটি রেসিপি নিয়ে এসেছি। আমি শীতকালীন সবজি দিয়ে " পাঁচমিশালী নিরামিষ সবজি"। আশা করি আমার এই রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে।
শীতকাল আমার মতো কম বেশি সবাই পছন্দ করে। কারন এই শীতের সময় বিভিন্ন রকমের সবজি পাওয়া যায়। শীতের সময় কৃষকের মাঠে ঘাটে বিভিন্ন ধরনের সবজি দেখা যায়। আবার হাটে ও বাজারে নানা রকমের শীতের সবজির সমারোহ হয়। আর এই শীতকালে পিঠা পুলির ধুম পড়ে যায়। শীত কালের সব রকমের সবজি আমার পছন্দের। তাই কোনটা বাদ দিয়ে কোনটা বলবো বুঝতে পারছি না। আমার সব থেকে বেশি ভালো লাগে শীতের সবজি দিয়ে " পাঁচমিশালী নিরামিষ সবজি"। শীতের সবজি বাজারে উঠলে আমি প্রায়ই এই খাবারটি রান্না করি। কারন আমার খুবই পছন্দের একটি রেসিপি। এবং এটি খুবই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। এই শাক - সবজি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এই সবজি আমাদের অতিরিক্ত ওজন কমাতে ও সাহায্য করে। শীতকালের সব রকম সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস ,আয়রন রয়েছে।এ সকল উপাদান আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। তাই আমাদের কম বেশি সকলের সবজি খাওয়া প্রয়োজন। এ সকল সবজির উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। তাই আমি আর কথা না বাড়িয়ে রেসিপিতে ফিরে যাই। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
উপকরণ:
১. কুমড়ো বড়ি - ১৫ টি
২. ফুলকপি - একটি
৩. বাঁধাকপি - একটির অর্ধেক
৪. বেগুন - ১ টি
৫. মুলা - ১ টি
৬. গাজর - ১ টি
৭.আলু - ১ টি
৮. পালং শাক - ১ আঁটি
৯. মোটর শুটি - ১০০ গ্রাম
১০. টমেটো - ১ টি
১১. ক্যাপসিকাম - ১ টি
১২. বরবটি সিম - ১০০ গ্রাম
১৩. আদা বাটা - ২ চামচ
১৪. গোটা জিরে - ২ চামচ
১৫. তেজপাতা - ২ টি
১৬. গোটা ধনিয়া - ১ চামচ
১৭. পাঁচ ফোড়ন - ১ চামচ
১৮. কাচা মরিচ - ৫ টি
১৯. শুকনো মরিচ - ২ টি
২০. লবণ -২ চামচ
২১. হলুদ - ২ চামচ
২২. জিরে গুঁড়া - হাপ্ চামচ
২৩. ধনিয়া গুঁড়া - হাপ্ চামচ
২৪. সরিষার তেল - এক কাপ
২৫. কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো - ১ চামচ
কুমড়ো বড়ি
মটরশুটি, বাঁধাকপি ও পালং শাক
ফুলকপি ,বেগুন ,মুলা ,গাজর, বরবটি সিম , ক্যাপসিকাম
ও আলু
গোটা জিরে , কাচা মরিচ ও তেজ পাতা
লবণ, হলুদ, জিরা গুঁড়া, শুকনো মরিচ গুঁড়া, ধনিয়া গুঁড়া ও সরিষার তেল
শুকনো মরিচ ও আদা বাটা
পাঁচ ফোড়ন ও গোটা ধনে
প্রস্তুত প্রণালী:
১. প্রথমে সবজি গুলো ডুমো ডুমো করে কেটে নিতে হবে। বেশি ছোটো করে কাটা যাবে না। এরপর সবজি গুলো জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে।আপনাদের বুঝার সুবিধার্তে আলাদা আলাদা করে নিয়েছি।
২. চুলার উপর একটা কড়াই বসিয়ে দিতে হবে। চুলার আঁচ বাড়িয়ে দিতে হবে। ( এবার মসলা তৈরি করে নিতে হবে)।
৩. মসলা তৈরি করার জন্য খালি কড়াই গরম হয়ে গেলে একে একে ১ চামচ পাঁচ ফোড়ন, এক চামচ জিরে ও এক চামচ ধনে দুটি শুকনো মরিচ দিয়ে এক সাথে ভেজে নিতে হবে। চুলার আঁচ মিডিয়ামে রেখে দিতে হবে।
৪. বাদামী রঙ করে ভেজে নিতে হবে। ভাজা মসলা দিয়ে হালকা হালকা ঘ্রাণ ছড়ালে একটা পাত্রে নামিয়ে নিতে হবে।
৫. এবার ভাজা মশলা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।
৬. এরপর আবার চুলার ওপর কড়াই বসিয়ে দিতে হবে। কড়াই গরম হয়ে গেলে চার চামচ সরিষার তেল দিয়ে দিতে হবে।
৭. তেল গরম হয়ে গেলে কুমড়ো বড়ি গুলো দিয়ে দিতে হবে। এবং বড়িগুলো হালকা ভেজে নিতে হবে।
৮. বড়ি নামানোর পর ওই তেলের ভিতর আর একটু বেশি তেল দিতে হবে। তেল গরম হয়ে গেলে জিরে ও তেজপাতা দিয়ে একটু ভেজে নিতে হবে। জিরে ভাজা হলে আলু দিয়ে একটু ভেজে নিতে হবে।এবার একে একে ফুলকফি ও মুলা, গাজর ও বরবটি দিয়ে একসাথে ভেজে নিতে হবে। সবজি ভাজা হয়ে গেলে ২ চামচ আদা বাটা দিয়ে আরো কিছুক্ষন ভেজে নিতে হবে।
৯. ভাজা হয়ে গেলে পরিমান মতো জল দিয়ে দিতে হবে।
১০. ঝোল ফুটতে শুরু করলে বেগুন, বাঁধাকপি, পালং শাক দিয়ে দিতে হবে। এবং পরিমান মতো লবণ, হলুদ, জিরা গুঁড়া, ধনিয়া গুঁড়া, ও কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে দিতে হবে।
১১.সব মশলা দিয়ে ৫ মিনিট রান্না করে নিতে হবে।এরপর কয়েকটি কাচা মরিচ চিরে দিতে হবে ও ওই ভাজ মসলা গুঁড়া এক চামচ ছড়িয়ে দিতে হবে। এরপর ১০ মিনিটের মতো রান্না করে নিতে হবে। এবং ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
১২.মাঝে মাঝে ঢাকনা তুলে খুন্তি দিয়ে নেড়ে চেড়ে দিতে হবে । ঝোল একটু কমে গেলে সবজি সেদ্ধ হয়ে আসলে মটরশুটি , টমেটো কুচি ও কুমড়ো বড়ি দিয়ে দিতে হবে।
১৩. এরপর আর ও কিছু ক্ষন জ্বাল দিতে হবে। এবং সবজি ঝোল কমে গাঢ় হয়ে আসলে বাকি ভাজা মসলা গুঁড়া দিয়ে দিতে হবে।
১৪. মসলা দেওয়ার পর আরো ৫ মিনিট জ্বাল দিয়ে একটা পাত্রে নামিয়ে নিতে হবে। চাইলে আপনারা ধনে পাতা দিতে পারেন। আমি ধনে পাতা পছন্দ করি না তাই দেই নি।
তৈরি হয়ে গেল আমার খুব পছন্দের পাঁচমিশালী নিরামিষ সবজি। এটি রুটি , লুচি ও গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করতে হবে। এটি খুবই টেস্টি একটি খাবার। এবং খুবই সুস্বাদু খাবার।
এই কুমড়ো বড়ি টা খাওয়ার অনেক বেশি ইচ্ছে ছিলো আমার। তবে চট্টগ্রামের কোথাও পাওয়া যায়না।
বৌদি আপনার রেসিপিটি দেখেই জাস্ট জিভে জল চলে আসলো।দেখেই তো বুঝা যাচ্ছে যে কতোটা মজার একটি রেসিপি এটি।আমার মনে হচ্ছে এই পাঁচমিশালি নিরামিষ সবজিটি একবার যদি লুচি দিয়ে খাওয়া যায় তাহলে জাস্ট জমে যাবে।
এটি একটি খুব সুস্বাদু খাবার যা আপনি তৈরি করেন।
এটা সত্যিই সুস্বাদু দেখায়.
বাহ দিদি খুব সুন্দর হয়েছে আপনার রেসিপি তৈরি ।পাঁচমিশালি রেসিপি আগে কখনো খাওয়া হয়নি ।যেটা আপনার মাধ্যমে দেখতে পেলাম বিভিন্ন ধরনের সবজির ও শীতকালীন সবজি দিয়ে খুব সুন্দর একটি রেসিপি তৈরি করলেন। যেটা আমাদের সাথে খুব সুন্দর ভাবে শেয়ার করেছেন আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে।
বৌদি শীতকাল আমার এই শাক সবজির জন্যই আরো বেশি পছন্দের। এত এত শাক সবজি পাওয়া যায় কয়েকটা মাস , মন ভরে যায় পুরো। রান্নাটা কিন্তু অসাধারণ লাগছে। এরকম সবজি বাড়িতে আমার মা রান্না করেন। গরম ভাতের সাথে জমে যায় পুরো। যে জিনিসটা সবথেকে বেশি নজর কেড়েছে সেটা হচ্ছে কুমড়ো বড়ি যোগ করা। এটার স্বাদ এই শীতকাল ছাড়া একদমই পাওয়া যায় না। মুখে জিভে সব জায়গায় জল চলে এসেছে। আজকে খাওয়া দাওয়া করার সময় আমার কথা ভেবে একটু বেশি বেশি খেয়ে নেবেন। যাতে আমারও খাওয়া হয়ে যায়। অনেক ভালোবাসা রইলো দিদি।
বাহ বাহ আপু, আপনি দেখছি শীতকালীন কোনো সবজি ই বাদ দেননি। সত্যিই এই সবজির মধ্যে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন যা আমাদের শরিরের জন্য অনেক উপকারী।
তবে আপনার সবজি রান্না দেখে আমার আর তশ সইছে না। এতো এতো মসলা দিয়েছেন দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেক মজার। অনেক ইউনিক একটা রেসিপি ছিল।
সবজি তরকারি এমনিই আমার পছন্দ এরপর যদি হয় শীতকালীন সবজি তাহলে তো কথায়ই নেই ।বউদি আপনার পাঁচ মিশালি সবজির চেহারা দেখে লোভে পাগল ।সুন্দর ধাপে ধাপে শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ বউদি এত সুন্দর রেসিপি শেয়ার করার জন্য ।
শীতকাল মানেই বিভিন্ন ধরনের সবজির সিজন। বৌদি আপনি দেখছি শীতকালের প্রায় সবগুলো সবজি ব্যবহার করে পাঁচমিশালী নিরামিষ সবজি রান্না করেছেন। এই ধরনের সবজি রুটির সাথে খেতে খুবই খুবই মজা লাগে। বৌদি আপনার রান্নাটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই পাঁচমিশালি সবজি খেতে ভীষণ সুস্বাদু হয়েছে। রান্নার প্রস্তুত প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ আপনি খুব সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য বৌদি।
বৌদি, অসাধারণ হয়েছে আপনার রেসিপিটা।সত্যিই শীতকালে কোনটা বাদ দিয়ে কোনটা করবো ভাবাটাই মুশকিল।বৌদি আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা আমি জানিনা আমিও প্রথমে ভেবেছিলাম - পাঁচমিশলী সবজি দিয়ে আমি কিছু একটা তৈরি করবো প্রতিযোগিতায়।তারপর ভাবলাম অন্য কিছু তৈরি করবো।আপনি আমার মনের কথা রেখেছেন।দারুণ হয়েছে রেসিপিটা, দেখেই খেতে মন চাইছে।তাছাড়া এটি অনেক পুষ্টিকর খাবার।ধন্যবাদ বৌদি।ভালো থাকবেন।
শীতকালে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন রকমের সবজি পাওয়া যায়। টাটকা সবজি গুলো খেতে খুবই ভালো লাগে। বৌদি আপনি দারুণভাবে পাঁচমিশালি সবজি রেসিপি তৈরি করেছেন। দেখেই বোঝা যাচ্ছে পাঁচমিশালি সবজি খেতে খুবই ভালো হয়েছে। পাঁচমিশালি সবজি খেতে আমি অনেক পছন্দ করি। আমার মনে হচ্ছে গরম গরম রুটি বা ভাতের সাথে পাঁচমিশালি সবজি খেতে বেশি ভালো লাগবে। দারুন একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি বৌদি। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
পাঁচমিশলী নিরামিষ সবজিটার কালার আহ্ বৌদি দেখতে অস্থির লাগছে। এ ধরনের রেসিপির স্বাদ খুব বেশি থাকে কারন বিভিন্ন ধরনের সবজি থাকে তাই। কালার টা দেখেই বুঝা যাচ্ছে খুব টেষ্ট হয়েছে। আপনি বরাবরই অনেক সুন্দর সুন্দর রেসিপি শেয়ার করেন। পাঁচমিশলী নিরামিষ সবজি এটারতার ব্যতিক্রম নয়। সুন্দর উপস্থাপনা ছিল যা যে কেউ সহজেই রান্না করতে পারবে। আপনার কাছে আরো সুন্দর সুন্দর রেসিপি আশা করছি বৌদি। শুভকামনা রইল বৌদি।