দার্জিলিংয়ে সূর্যোদয় দেখার সুন্দর কিছু মুহূর্ত(আই ❤️ দার্জিলিং)
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। প্রথমে সবাইকে সকালে উষ্ণ ঠান্ডার মিষ্টি শুভেচ্ছা। আপনারা জানেন আমরা কিছুদিনের জন্য ফ্যামিলি ট্যুরে পাহাড়ে আসছি। এখন আমরা সব থেকে প্রিয় জায়গা দার্জিলিং আসছি। আমার অনেক দিনের স্বপ্ন আজ পূরণ হলো। আমার প্রিয় মানুষটি প্রতি বছর বিবাহ বার্ষিকীতে অনেক অনেক দামী গিফট করে। আপনারা জানেন কি না জানি না সামনে আমাদের বিবাহ বার্ষিকী। অনেক দিন আগে আমাকে বলছিলো এবার আমাদের ৫ম বিবাহ বার্ষিকীতে তোমার পছন্দের জায়গায় যাবো। তখন দেখলাম ওই সময়টায় আমার দেবোরের পরীক্ষা, আবার ঠান্ডা ও অনেক পড়বে। তাই সবকিছু মাথায় রেখে কিছুদিন আগে আসলাম। প্রিয় মানুষ সাথে থাকলে সবসময় সবদিন সমান হয়।
আমরা দুদিন এখানকার প্রচুর জায়গা ঘুরেছি। তবে গতকাল আমাদের প্রোগ্রাম ছিলো দার্জিলিং এর টার্নিং
পয়েন্ট "টাইগার হিল " ঘুরতে যাওয়ার। এখানে যেতে ভোর ৪.০০ টার বেরিয়ে যেতে হয়। এই " টাইগার হিল" থেকে সূর্যোদয় , কাঞ্চন জঙ্গা ও মাউন্ট এভারেস্টের চূড়া দেখা যায়।আমার সবাই রেডি হয়ে ভোর ৪.০০ টায় রওয়ানা দিলাম।
উচ্চতর দিক থেকে মাউন্ট এভারেস্ট এর পরে যে পর্বত শৃঙ্গটি রয়েছে সেটি হচ্ছে অনুপম সৌন্দর্য্যের গিরিস্তুপ "কাঞ্চনজঙ্ঘা"।এটি পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ। ভারতের সিকিম রাজ্যের সঙ্গে নেপালের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত অবস্থিত কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য। টাইগার হিলের চিত্তাকর্ষক সূর্যোদয় দেখার জন্য প্রতি বছর হাজারো পর্যটক এখানে আসেন। এছাড়া বরফে ঢাকা মোহনীয় কাঞ্চনজঙ্ঘা রয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বরফের মজুদ আছে উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরুতে আর এর থেকে সবচেয়ে বেশি বরফ ধারণ করে রেখেছে হিমালয় পর্বতমালা। এই হিমালয়ের সবচেয়ে বড় পর্বত শৃঙ্গ হচ্ছে মাউন্ট এভারেস্ট। আর "মাউন্ট এভারেস্টের" পরেই যে শৃঙ্গটির নাম আছে সেটি হচ্ছে "কাঞ্চনজঙ্ঘা"। এটিও হিমালয় পর্বতমালার একটি পর্বত শৃঙ্গ ও পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা।এর উচ্চতা প্রায় ২৮ হাজার ১৬৯ ফুট বা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার। এটি ভারতের সিকিম রাজ্যের সঙ্গে নেপালের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে অবস্থিত। হিমালয় পর্বতের এই অংশটিকে কাঞ্চনজঙ্ঘা হিমল বলা হয়। এরপর পশ্চিমে তামূর নদী,উত্তরে লহনাক
চু নদী ও জং সং লা শৃঙ্গ এবং পূর্ব দিকে তিস্তা নদী অবস্থিত
কাঞ্চনজঙ্ঘা মাউন্ট এভারেস্টের ১২৫ কি:মি: পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত। এর পাঁচটি শৃঙ্গ রয়েছে।
Kanchenjunga main
Kanchenjunga West
Kanchenjunga Central
Kanchenjunga south
Kang ba Chan
এর মধ্য কাঞ্চনজঙ্ঘা মেইন ,সেন্ট্রাল ও সাউথ শৃঙ্গগুলো অবস্থিত ভারতের সিকিম জেলা ও নেপালে অবস্থিত।আর বাকি দুটি শৃঙ্গ নেপালে তাপ্লেজুং জেলায় অবস্থিত। এর মধ্যে kanchenjunga main হচ্ছে ভারতের সবচেয়ে বড় শৃঙ্গ। পাঁচটি পর্বত চূড়া হওয়ার জন্য একে " তুষারের পাঁচটি ঐশ্বর্য" বলা হয়।কাঞ্চনজঙ্ঘা নামটি এসেছে স্থানীয় শব্দ "কাং চেং জেং গা" থেকে। এর অর্থ তুষারের পাঁচ ধনদৌলত। ১৮৫২ সালের আগে কাঞ্চনজঙ্ঘা কে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বলা হতো। কিন্তু পরবর্তীতে রাধানাথ শিকদার বৃহৎ ত্রিকোণমিত্তিক গননার মাধ্যমে বহু পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা গেছে মাউন্ট এভারেস্টই হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ। এর উচ্চতা প্রায় ২৯ হাজার ৩১ফুট।জয়ী ব্রাউন এবং জর্জ ব্যান্ড নামে দুই জন ব্রিটিশ পর্বত আরোহী সর্ব প্রথম ১৯৬৫ সালে ২৫ মে কাঞ্চনজঙ্ঘা সামিট করেন। ১৮৫৬ সালে ঘোষণা করা হয় কাঞ্চনজঙ্ঘা পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ। কাঞ্চনজঙ্ঘার মোহনীয় রূপ যে কাউকে। মোহিত করতে বাধ্য। ছবির মাধ্যমে যতটা না সুন্দর লাগবে কাছ থেকে আরও বেশি সুন্দর লাগবে। কারণ সূর্যের আলো বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষণে ক্ষণে এর রূপ পাল্টাতে থাকে। প্রথমে টুকটুকে লাল, হটাৎ সেই রূপ পাল্টে হয়ে যায় কমলা রঙ, তারপর হলুদ ও সবশেষে সাদা।এভাবেই চলতে থাকে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য । তবে এর সৌন্দর্য উপভোগ করা ভাগ্যের ব্যাপার সবসময় আবার সৌন্দর্য দেখা যায় না কুয়াশায় চাদরে ঢাকা থাকে। এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে হলে যেতে হবে দার্জিলিং এর টাইগার হিল এখান কার উচ্চতা প্রায় ৮ হাজার ৪৮২ ফুট বা ২ হাজার ৫৯০ মিটার।আমাদের ভাগ্য ভালো থাকার কারণে সম্পূর্ন ভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরেছিলাম। এটি না দেখলে বোঝা যাবে না এর সৌন্দর্য। আমরা প্রায় সারাটা দিন এর রূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরেছিলাম।
পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা।
কাঞ্চনজঙ্ঘার সাথে আমার একটি ছবি।
প্রকৃতির মাঝে কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা সাদা হয়ে যায়। অনেক দূর থেকে অনেক ছোট লাগছে কাঞ্চনজঙ্ঘা।
বৌদির অনেক দিনের স্বপ্ন দাদা পূরণ করে দিল অবশেষে । ঠিকই বলেছেন বৌদি ভালোবাসার মানুষ পাশে থাকলে সব দিনই সমান। ভোর চারটায় সূর্যোদয় দেখার জন্য যাওয়াটা বেশ কষ্টকর। কিন্তু আমার মনে হয় যে যত কষ্ট করেই যাওয়া হোক না কেন এত সুন্দর দৃশ্য দেখলে সব কষ্ট নিমিষেই দূর হয়ে যায়। আমিও বেশ কয়েক বছর আগে গিয়েছিলাম কিন্তু সেবার বৃষ্টির কারণে সূর্যোদয় দেখতে পেরেছিলাম না। আজকে আপনার ছবির মাধ্যমে দেখে নিলাম। খুব চমৎকার ফটোগ্রাফিও করেছেন এবং কাঞ্চনজঙ্ঘার বিস্তারিত খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। আপনার ট্যুর আরও আনন্দ ঘন হোক।
দিদি পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা সম্পর্কে আগে অল্প কিছু শুনেছিলাম। আজকে আপনার পোষ্ট পড়ে বিস্তারিত জানতে পারলাম। কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। কাঞ্চনজঙ্ঘাকে সরসারি কখনো দেখতে পারবো কিনা জানি না,তবে আপনার ছবির মাধ্যেমে দেখে অনেক ভাল লাগলো। ধন্যবাদ দিদি।
আহা বৌদি এটারই তো অপেক্ষায় ছিলাম। এত পরিস্কার আমরা দেখতেই পাই নি সবই কুয়াশায় ঢাকা ছিলো। দারুন লাগছে প্রতিটা ছবি। আপনাদের পুরো ট্যুর স্বার্থক হল।
পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা অনেক দেখেছি তবে ফেসবুকে মিডিয়াতে। আপনার মত এভাবে সরাসরি দেখার সৌভাগ্য এখনো হয়নি। ঠিক বলেছেন প্রিয় মানুষ সাথে থাকলে বছরের সবগুলো দিন একই কাটে। আপনার পঞ্চম বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে অগ্রিম গিফট পেয়ে গেলেন দার্জিলিং ঘোরার। আসলে বেশ চমৎকার দৃশ্য। আমার তো খুব ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করছে আপু।
বৌদি আপনাদেরকে ও সকালে উষ্ণ ঠান্ডার মিষ্টি শুভেচ্ছা।আশা করি খুব ভালো ভালো সময় কাটাচ্ছেন।বিবাহ বার্ষিকি উপলক্ষে আগে আগে দাদা আপনাকে খুব সুন্দর গিফট দিয়েছে। মাউন্ট এভারেস্ট এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা মাউন্ট সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম।কাঞ্চনজঙ্ঘা মাউন্ট
এর উচ্চতা প্রায় ২৮ হাজার ১৬৯ ফুট বা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার।তৃতীয় পর্বত শৃঙ্গ পড়েছিলাম, তবে উচ্চতা ভুলে গিয়েছিলাম।সব মিলিয়ে বেশ ভালো সমশ কাটাচ্ছেন। ধন্যবাদ
বৌদি আপনাদের ফ্যামিলি ট্যুরের চার দিনের মাথায় আজকে দার্জিলিং 'টাইগার হিলে'অর্থাৎ সূর্যোদয় উপভোগ করার জন্য ভোর চারটায় বেরিয়ে পড়লেন। আসলে কমবেশি যাই জানি, আপনার বিবাহ বার্ষিকীতে দাদা কত দামী উপহার দেয় সেটা অন্তত অনুমান করতে পারি। আপনাদের ভালোবাসা আমার বাংলা ব্লগের মাঝে অনন্য নিদর্শন। আপনার আজকের পোস্টে ফটোগ্রাফি এবং আপনার অনুভূতি মিলিয়ে মাউন্ট এভারেস্ট সম্পর্কে অনেক কিছুই জানলাম। আপনার অনুভূতির সাথে এত সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম বৌদি।
প্রিয় মানুষটার সাথে যদি প্রকৃতির এমন সৌন্দর্যের সান্নিধ্যে যাওয়া যায় তাহলে আর দ্বিতীয় কোন গিফট প্রয়োজন হয় না। ওই দূর থেকে শুধু উপরে জমে থাকা বরফের সৌন্দর্য টা দেখা যাচ্ছে। আপনার এই পর্বের মাধ্যমে পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা খুব কাছ থেকে দেখতে পেলাম দিদি।
বৌদি আপনাদের একটা ব্যাপার আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। কোথাও ঘুরতে গেলে সবাই একসাথে যান। আজকাল তো এ বিষয়টা প্রায় দেখাই যায়না। মেয়েরা স্বামী আর নিজের বাচ্চাদের ছাড়া আর কাওকে নিজের পরিবার বলতেই ভুলে গেছে। আপনাদের এই পারিবারিক বন্ধন অটুট থাকুক সবসময় এটাই কামনা। আর এত সুন্দর জায়গা কবে যে নিজ চোখে দেখতে পারব....
দিদি আপনি ঠিকই বলেছেন টাইগার হিল" থেকে সূর্যোদয় , কাঞ্চন জঙ্গা ও মাউন্ট এভারেস্টের চূড়া দেখা যায়।আমারা ও তের জনের একটা টিম সেই ভোর ৪.০০ টায় সেখানে রওনা দিয়েছিলাম। আপনি ঠিক যে জায়গাটিতে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন আমারও সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছবি তোলা আছে।আমরাও এরকম দলবেঁধে গিয়ে সূর্যোদয় দেখেছিলাম।কিন্তু হাঁটতে অনেক কষ্ট হয়েছিল।অনেক অনেক শুভকামনা আপনাদের জন্য♥♥
দেখতে দেখতে আপনার প্রিয় মানুষটির সাথে পাঁচটি বছর কেটে গেল বৌদি। সত্যি বৌদি আপনাদের ভালোবাসার বন্ধন এভাবেই সারা জীবন অটুট থাকুক এই দোয়াই করি। যাই হোক বৌদি দাদা আপনার পছন্দের জায়গায় আপনাকে ঘুরতে নিয়ে গেছেন জেনে ভালো লাগলো। আর পরিবারের সবাই যেহেতু আপনাদের সাথে গিয়েছে তাই আনন্দটা আরো বেড়ে গেছে। সত্যিই বৌদি কাঞ্চনজঙ্ঘার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। মন চাচ্ছে সেখানে ছুটে চলে যেতে। বৌদি আপনার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা ও শুভকামনা রইল। ♥️♥️♥️