"বাড়ীতে তৈরি করা ত্বক ফর্সা কারী ক্রিম"
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজ আমি নতুন একটি বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। বর্তমান আমরা সবাই সৌন্দর্য্যের পিছনে ছুটি। সবাই কম বেশি ফর্সা ও মসৃণ ত্বক চাই। তাই আমরা শুধু পার্লারে যাই। যে যত তাড়াতাড়ি ফর্সা হতে পারে সেই প্রতিযোগিতা চলে। তাই আমরা কত নামিদামি ব্র্যান্ডের ক্রিম ব্যবহার করি। কিন্তু আমরা বুঝে ও না বুঝার ভান করে সে গুলো ব্যবহার করে যাই। এতে যে আমরা নিজেরাই নিজেদের ত্বক নষ্ট করে ফেলেছি। ক্যামিকেল যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করে যত দ্রুত ফর্সা হওয়া যায় তত দ্রুতই ত্বক নষ্ট করে ফেলেছি। এই এই কেমিক্যালযুক্ত ক্রিম একবার ব্যবহার করার পর
ছেড়ে দিলে মুখে ব্রণ, নানা ধরনের ফুসকুড়ি দেখা দেবে ও মুখের চামড়া পাতলা হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের সবার কি সারাজীবন একই নিয়মে নামিদামি ব্র্যান্ডের ক্রিম মাখা সম্বব হবে। যেমন :ধরুন আমরা যখন স্কুল ও কলেজ জীবনে যে ভাবে চলতে পারবো বিয়ের পর কি আমরা ঠিক সেই ভাবে চলতে পারি। একটা মেয়ের পর হাজারো মানুষের দায়িত্ব এসে ভর করবে। এটাই তো মেয়েদের জীবন।
আমরা নামিদামি ব্র্যান্ডের ক্রিম ব্যবহার করি। কিন্তু জাপান ও কোরিয়ান মেয়েরা কিন্তু প্রাকৃতিক উপায়ে তারা রূপ চর্চা করে। যেমন; ভাতের মাড় ও চাল ধোয়া জল, চালের গুঁড়া, কাচা হলুদ, নিমপাতা, শশা ও আলু এই সব দিয়ে তারা রূপচর্চা করে। এজন্য তাদের ত্বক সারাজীবন একই রকম থাকে। কারণ এই পরিস্থিতির ভুক্তভোগী আমি নিজেই। তাহলে শুনুন আমার জীবনে একটা স্বপ্ন ছিলো আর সেটি হলো আমি একজন বিউটিশিয়ান হবো। আমার নিজের একটা পার্লার থাকবে। তাই আমি প্রচুর ম্যাগাজিন, পত্রিকা পড়তাম ও রূপচর্চার বই পড়তাম। আর সে গুলো নিজে নিজের ত্বকে এপ্লাই করতাম। তারপর পড়াশুনার পাশাপাশি পার্লারে কাজ শিখেছি। সেই থেকে আমি নিজেই নিজের নাইট ক্রিম নিজে তৈরি করি। আর আমরা কম বেশি সবাই রাতে নাইট ক্রিম ব্যবহার করি। আর আমি সব সময় চেষ্টা করি প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বক পরিষ্কার করতে। আর প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বক ধীরে ধীরে ফর্সা হয় আর ক্যামিকেল যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করলে দ্রুত ফর্সা হবে কিন্তু একবার ছেড়ে দিলে মুখের বারোটা বেজে যাবে । হা হা হা। আমি সেই অনেক বছর ধরে এই চালের তৈরি ক্রিম ব্যবহার করে আসছি। তবে আমার বিয়ের সময় সবার অনুরোধে ক্যামিকেল যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করেছি ও পার্লারে যেতে হয়ে ছিলো। তারপর কিছুদিন পর আমি ওই ক্রিম ব্যবহার করা ছেড়ে দিতেই আমার মুখের দিকে তাকানো যেত না এত ব্রণ উঠেছিলো। সেই থেকে আমি আর আমার মুখে ক্যামিকেল যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করি না। আমি নিজের নাইট ক্রিম নিজে তৈরি করি। আর আমি প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বক পরিষ্কার করি। গতকাল আমার সেই ক্রিম টি শেষ হয়ে যায়। তাই তৈরির সময় ভাবলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করি। এবং আমি কয়েক জন কে তৈরি করে দিয়েছি। তারা মেখে ও খুবই উপকৃত হয়েছে।আর তারা এখন এই বাড়ীতে তৈরি করা ক্রিম ব্যবহার করে। আর আমি তো কয়েক বছর ধরে ব্যবহার করে আসছি। এই ক্রিম একবার বানালে ১৫ - ২০ দিন ব্যবহার করা যায়। এবং ঘরে থাকা জিনিস দিয়ে তৈরি করা যায়। এবং বানানোর খরচ ও কম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
উপকরণ:
১. পোলাও চাল ও আতপ চাল - ২ চামচ
২. ভিটামিন ই ক্যাপসুল - ১ টি
৩. গ্লিসারিন - হাপ্ চামচ
৪. একটা কৌটা
আতপ চাল, গ্লিসারিন , ভিটামিন ই ক্যাপসুল ও কৌটা
প্রস্তুতকারক:
১. প্রথমে দুই চামচ আতপ চাল নিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে ২০ মিনিট।
২. চাল ভিজে গেলে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।এবং এক কাপ জল দিতে হবে।
৩. চাল গুঁড়ো করা হয়ে গেলে একটা চাকনি দিয়ে ছেকে নিতে হবে। শুধু জল নিতে হবে আর চালের গুঁড়ো আলাদা করে নিতে হবে। এই গুড়ো আপনারা পেলে না দিয়ে স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আমি তো স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করি । এটি ও খুব উপকারী।
৪. এবার চুলার উপর একটা কড়াই বসিয়ে দিয়ে এতে চালের গুঁড়ার জল দিয়ে দিতে হবে। চুলার আঁচ কমিয়ে দিয়ে এটি অনবরত নাড়তে থাকতে হবে। নাড়তে নাড়তে গারো হয়ে এলে একটা বাটিতে নামিয়ে নিতে হবে। এবার ঠান্ডা করে নিতে হবে।
৫. ঠান্ডা হয়ে গেলে একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে দিতে হবে। এবং হাফ চামচ গ্লিসারিন দিয়ে একটা চামচ দিয়ে ভালো করে নেড়ে দিতে হবে। প্রায় 5 মিনিট ধরে ভালো করে মিশাতে হবে।
৬. ভালো করে মেশান হয়ে গেলে একটা কৌটার ভিতরে রেখে দিতে হবে। এবং ভালো করে কৌটার মুখ আটকিয়ে রাখতে হবে।
৭. এবার আমি হাতে এপ্লাই করে দেখাছি।আমি মুখে দেখাতে পারছি না তাই হাতের উপর করে দেখাচ্ছি। দয়া করে ভুল বুঝবেন না। প্রথমে হাত ভালো করে ফেসওয়াস দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর পাতলা কাপড় দিয়ে মুছে নিয়ে একটু খানি নিয়ে ভালো করে মেসেজ করে নিতে হবে। তারপর ৩০ মিনিট পর ঘুমিয়ে পড়তে হবে। তারপর সকালে উঠে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। রেজাল্ট টি আপনারা হাতে নাতে পাবেন। এটা শুধুমাত্র রাতে ইউজ করতে হবে। এর কোন সাইড এফেক্ট নেই।মাত্র তিন দিনে আপনারা এর রেজাল্ট পাবেন। তবে কি মাখতে মাখতে বন্ধ করে দিলেও কোন সমস্যা হবে না
ফেসওয়াশ দিয়ে ধোয়ার পর।
হাতে ক্রিম নিয়ে।
ক্রিম মেসেজ করার পর।
সকালে হাত ফেসওয়াশ দিয়ে ধোয়ার পর।
তৈরি হয়ে গেল আমার ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম। আশা করি, আপনাদের ভালো লাগবে। আপনাদের ভালো লাগলে সামনে এ রকম আরও অনেক নিজের তৈরি করা প্রডাক্ট শেয়ার করবো।
বৌদি ,আপনার কি অসাধারণ বুদ্ধি ও গুন।কত সহজেই সুন্দর একটি ক্রিম তৈরি করে দেখালেন।আমিও শুনেছি ভাতের মাড় আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।কিন্তু কখনো ব্যাবহার করা হয় নি।আমার স্কিন খুব ওয়েলি।অনেক ধন্যবাদ বৌদি সুন্দর ক্রিম তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ দিদি, এত সুন্দর একটি ক্রিম এর পদ্ধতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আমি তেমন কোনো ক্রিম ইউজ করি না,এখন তো কোনোমতেই ব্যবহার করি না। তবে এটি দেখে মনে হলো যে খুব উপকারী হবে। চেষ্টা করব এই পদ্ধতিতে তৈরি করার। অনেক ধন্যবাদ দিদি।
আপনি ঠিকই বলেছেন দিদি। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কেমিক্যাল যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করার পর হঠাৎ করে বন্ধ করে দিলে ত্বকে অনেক প্রবলেম হয়। আমিও এই সমস্যায় পড়েছিলাম। আমিও প্রাকৃতিক জিনিস নিম পাতা, অ্যালোভেরা এগুলো ব্যবহার করি। তবে চাল দিয়ে ফেস ক্রিম তৈরি করা যায় এটা জানা ছিল না। আমিও ট্রাই করে দেখবো আপনার এই ফেসপ্যাকটি। এই ফেসপ্যাকটি সুবিধা দুটি ক্রিম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে আবার স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু। একবার ট্রাই করে দেখতে পারেন আশা করি ভালো রেজাল্ট পাবেন। আমি নিজে ট্রাই করি।
যাহ! আজ তাহলে বৌদির কাছে ভালো কিছু শিখলাম
তয় আগে শিখতে পারলে ভালো হতো, তাইলে কেউ আর কালো বলতে পারতো না আমিও ফর্সাদের দলে চলে যেতে পারতাম, হা হা হা হ
এখন আইডিয়াটা পেলাম, তারপর কার্যকর ব্যবহারের দিকে এগিয়ে যাবো। খুব ভালো লাগলো পুরো পক্রিয়াটি দেখে এবং বেশ সহজ মনে হয়েছে আমার নিকট। ধন্যবাদ
এটা শুধু মেয়েদের জন্য ভাইয়া। এটি ভাবির জন্য আপনার না। হা হা হা। তবে চাইলে আপনি ও ব্যবহার করতে পারেন।
এইডা কিছু হলো! যা আমিতো শুরুতে খুব খুশি হয়েছিলাম, খুশিটা তাহলে ফিরিয়ে নিলাম, হে হে হে
বাহ্ দিদি নতুন চিন্তা চেতনার বর্হিপ্রকাশ ঘটিয়েছেন যেটাকে বলে সৃজনশীলতা। আপনি ত্বকের উজ্জ্বলতা নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বললেন। যেটা অনেকের জীবনে কাজে দিবে। আপনার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তৈরি ক্রিম সত্যি ভালো লেগেছে উপকারে আসবে আশাকরি। ❤️❤️
ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনার মতামত শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন দিদি,আমরা মেয়েরা ত্বক ফর্সা করার জন্য বিভিন্ন পার্লারে গিয়ে থাকি। এর পরিণাম খুবই খারাপ হয় পরবর্তীতে। আপনার এই ক্রিমটি সত্যিই একটি উপকারী ক্রিম মনে হচ্ছে।আমি আজকেই ঘরে তৈরি করে ব্যবহার করা শুরু করব।দিদি, আপনি খুবই একটি উপকারী পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।ধন্যবাদ দিদি💐🥰
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু।আপনার মতামত শেয়ার করার জন্য।
অসাধারণ একটি হোমমেড ক্রিম বানানোর পদ্ধতি শেয়ার করেছেন আপু। আসলে ঠিকই বলেছেন আমরা বাহির থেকে যে ক্রিম গুলো কিনে আমরা ব্যবহার করি সেগুলো আসলে অনেক কেমিক্যাল থাকে। কিন্তু যদি আমরা কেমিক্যালমুক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে চাই তাহলে অবশ্যই হোমমেড ভাবে তৈরি করতে হবে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এরকম একটি কৃত্রিম আমাদের মাঝে বানানোর পদ্ধতি শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া।
মেয়েদের জন্য অনেক সাহায্য গুলো পোস্ট করেছেন দিদি। সত্যিই আমরা নামিদামি কোম্পানির বিভিন্ন ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহার করি যেগুলো ব্যবহার করার ফলে আমাদের ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তবে সে সকল সমস্যার থেকে সমাধান পেতে হলে এবং ত্বকের সৌন্দর্য ঠিক রাখতে হলে আমাদের অবশ্যই উচিত প্রাকৃতিক থেকে কিছু নেওয়া।
আপনার ফর্সা হওয়ার প্রাকৃতিক ক্রিমটি কিন্তু আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে মাত্র চারটি উপাদান এর সংমিশ্রণে তৈরি করেছেন অসাধারণ ফর্সা হওয়ার ক্রিম।
বৌদি আপনি খুবই সুন্দরভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার ক্রিম তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করার উপস্থাপন দেখে আমি এটি শিখতে পেরেছি। এটি আমাদের এই গ্রুপের মেয়েদের জন্য খুবই কাজে লাগবে। বাইরে ক্রিমগুলো ত্বকের ক্ষতি করে কিন্তু ঘরোয়া পদ্ধতিতে এই ক্রিম ত্বকের ক্ষতি করবে না। তাই এটি আপনি খুবই সুন্দর একটি পদ্ধতি আমাদের দেখিয়ে দিয়েছেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
বৌদি আপনি একদম সত্যি কথা বলেছেন যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ক্রিম আমরা বুঝে না বুঝে ব্যবহার করি কিন্তু উন্নত দেশের মেয়েরা ন্যাচারাল জিনিসপত্র দিয়ে রূপচর্চা করে কিন্তু আমরা ন্যাচারাল জিনিস ব্যবহার করতে নিজেকে খবু ছোট মনে করি। আপনার আইডিয়াটা আমার অনেক ভালো লেগেছে বৌদি। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো চিরন্তন।
আপনাকে ধন্যবাদ আপু।আপনার মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।