বাঙালি রেসিপি " লাউ এর পাতায় ছোটো চিংড়ির পাতুরী"
বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। অনেক দিন হলো রান্নার কোনো রেসিপি দিতে পারি নি। কারণ আমার মা আসার পর থেকে আমাকে রান্না করতে হয় না। সব কিছু আমার মা রান্না করে। আমি কোনো কাজ করতে গেলে মা বলে আমি করবো তোমার করতে হবে না। আমি যে কয় দিন আসি সেই কয়টা দিন তোমার কিছু করতে হবে না। তাই আমি কোনো রান্না আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারি না। অনেক দিন পর আবার মায়ের হাতের রান্না খেতে পারছি। সেই সুযোগ কি ছাড়া যায়। আজ যে রান্না টি শেয়ার করবো এটি আমি রান্না করেছি কিন্তু সব কিছু মা করে দিয়েছে। আমি পাশে দাঁড়িয়ে থেকেছি। সেই ছেলেবেলার মতো। আগে যখন মা রান্না করতো আর আমি পাশে দাঁড়িয়ে থাকতাম। তাই আমার মা আসলে মনে হয় আমি যেনো সেই ছেলেবেলার মতো মায়ের কাছে বিভিন্ন ধরনের আবদার , পাশে দাঁড়িয়ে থাকা, সেই সাথে মায়ের বকা দেওয়া। তাই মা আসলে আমি তাড়াতাড়ি যেতে দেই না বাড়ীতে। মা হলো আমার সকল ভালো লাগার জায়গা। মায়ের কথা বললে শেষ হবে না। তাই আর কথা না বাড়িয়ে মূল কাজে ফিরে যাই। তাই আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো লাউ এর পাতায় ছোটো চিংড়ির পাতুরী। এটি খেতে খুবই টেস্টি একটি খাবার। এটি ছোট কাচকি মাছ দিয়ে ও করা যায়। আমার কাছে ছোটো কাচকি মাছ ছিলো না। তাই আমি ছোটো চিংড়ি দিয়ে করেছি। আমি গ্রামে থাকতে প্রায়ই এটি খেতাম। এবং এটি খুব সহজে তৈরি করা যায়। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
উপকরণ:
১. লাউ পাতা - ১৫ টি
২. ছোটো চিংড়ি - ২০০ গ্রাম
৩. পেঁয়াজ কুচি - ২ কাপ
৪. কাচা মরিচ কুচি - ২ চামচ
৫. চালের গুঁড়া - হাপ্ কাপ
৬. ময়দা - হাপ্ কাপ
৭. শুকনো মরিচ গুঁড়া - ২ চামচ
৮. লবণ - ২ চামচ
৯. হলুদ - ২ চামচ
১০. জিরা গুঁড়া - ১ চামচ
১১. সাদা তেল - ১ কাপ
১২. কালো সরিষা বাটা - ৩ চামচ
লাউ পাতা
ছোটো চিংড়ি
চালের গুঁড়া ও ময়দা
পেঁয়াজ কুচি
লবণ, হলুদ, জিরা গুঁড়া ও কাচা মরিচ কুচি
শুকনো মরিচ গুঁড়া ও সাদা তেল
কালো সরিষা বাটা
প্রস্তুত প্রণালী:
১. প্রথমে লাউ পাতা গুলো জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। সেই সাথে ছোটো চিংড়ি মাছ গুলো জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে।
২. এরপর একটা পাত্রে পেঁয়াজ কুচি , কাচা মরিচ কুচি , পরিমাণ মতো লবণ, হলুদ, জিরা গুঁড়া ও শুকনো মরিচ গুঁড়া দিয়ে ভালো করে এক সাথে মিশিয়ে হাত দিয়ে মেখে নিতে হবে। এরপর ওই পেঁয়াজ মাখার ভিতর ছোট চিংড়ি মাছ গুলো দিয়ে দিতে হবে।
৩. এবার চিংড়ি মাছের ভিতর সরিষা বাটা দিয়ে ভালো করে মেখে দিতে হবে।
৪. এবার চালের গুঁড়া ও ময়দা দিয়ে একটা গাঢ় বেটার তৈরি করে নিতে হবে । এই বেটার লাউ এর পাতায় মেখে দিলে অন্য রকম একটা স্বাদ আসবে। তাই একটা পাত্রে চালের গুঁড়া ও ময়দা নিতে হবে। এর ভিতর পরিমান মতো লবণ, হলুদ ও শুকনো মরিচ গুঁড়া দিয়ে অল্প অল্প জল দিয়ে গুলে নিতে হবে। একটা গাঢ় বেটার তৈরি করে নিতে হবে।
৫. এবার লাউ এর পাতা তিন টি করে সাজিয়ে দিতে হবে।
৬. সাজানো লাউ এর পাতার উপর মেখে রাখা চিংড়ি মাছ থেকে একটু নিয়ে মাঝ বরাবর দিতে হবে।
৭. এবার লাউ এর পাতার এক পাশ ভাজ করে দিতে হবে। সেই ভাজের উপর একটু বেটার নিয়ে মেখে দিতে হবে। এই ভাবে প্রতি পাশ ভাজ করতে হবে আর তার উপর একটু একটু করে বেটার মাখিয়ে দিতে হবে।
৮. পাতা ভাজ করে একটা প্যাকেটের মতো করে নিতে হবে। এবার তার উপরে ও নিচের পাশে বেটার মাখিয়ে দিতে হবে। ঠিক একই ভাবে সব গুলো পাতা ভাজ করে বেটার মাখিয়ে দিতে হবে।
৯. এবার চুলার উপর একটা ফ্রাই প্যান বসিয়ে দিতে হবে। ফ্রাই প্যান গরম হয়ে গেলে একটু বেশি করে তেল দিয়ে দিতে হবে।
১০. তেল গরম হয়ে গেলে ভাজ করে রাখা লাউ পাতা গুলো দিয়ে দিতে হবে। চুলার আঁচ মিডিয়ামে রেখে দিতে হবে।
১১. এবার একটা ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এভাবে প্রায় পাঁচ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর ঢাকনা তুলে খুন্তি দিয়ে উল্টায় দিতে হবে।
১২. এভাবে প্রায় দশ মিনিট ধরে ভেজে নেওয়ার পর বাদামী রং ধারণ করলে একটা পাত্রে নামিয়ে নিতে হবে।আমি নামিয়ে নেওয়ার পর একটা ছুরি দিয়ে কেটে নিলাম। দেখুন ভিতরে কি সুন্দর একটা কালার হয়েছে।
আমার তৈরি হয়ে গেল লাউ পাতায় ছোটো চিংড়ির পাতুরী। এটি খেতে খুবই টেস্টি এবং চালের গুঁড়া দেওয়ার কারণে অনেকটা ক্রিসপি হয়েছে। এটি গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করতে হবে। আশা করি, আপনাদের ভালো লাগবে।
লাউয়ের এর পাতায় ছোট চিংড়ির পাতুরি আপনি দারুন ভাবে তৈরি করেছেন বৌদি। আমার খুবই ভালো লাগলো। এটি কখনো খাওয়া হয় নাই কিন্তু দেখে মন বলছে খেতে। আপনার রান্না বরাবরই অনেক ভালো লাগে। প্রতিটা রান্না ইউনিক মনে হয় এবং আজকের টাও অনেক ইউনিক এবং খুব সুন্দর ছিল পরিবেশনা
লোভনীয় , এবার হিরাকে বলে এইটা বাসায় বানিয়ে নেব । ধন্যবাদ বৌদি শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
লাউপাতায় চিংড়ির পাতুরি এটা আমার কখনো খাওয়া হয়নি ।কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুব মজাদার হয়েছিল।দেখে মনে হচ্ছে গরম ভাতের সঙ্গে খেতে ভীষণ মজা লাগবে ।আপনার কাছ থেকে একদম ইউনিক একটা রেসিপি জানতে পারলাম। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি নতুন রেসিপি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল।
উফ! কি লিখবো বৌদি, আগে ঢোক গিলে নেই, জল চলে আসছে মুখে, হি হি হি হি।
খুবই চমৎকার একটি রেসিপি দেখলাম। দেশী ছোট চিংড়ি দিয়ে যা কিছু তৈরী করা হোক না কেন খেতে বেশ লাগে এটা আমি জানি। আর আজকের রেসিপিটি তো সেই হয়েছে, চমৎকার বানিয়েছেন। ধন্যবাদ
লাউ এর পাতায় দিয়ে ছোটো চিংড়ির পাতুরী ওয়াও!!
লাউ পাতা ও চিংড়ির ঘন্ট খেয়ে ছি।পাতুড়ি খাওয়া হয়নি। আপনার পাতুড়ি তৈরি দেখতে খুব লোভনীয় দেখাচ্ছে। মনে হচ্ছে খেতে ও অনেক সুস্বাদু হবে। সাথে প্রস্তুত প্রণালী দারুণ ভাবে উপস্থাপন করেছে।
হ্যা ঠিকই খুবই সুস্বাদু ছিল। আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।
লাউয়ের পাতায় ছোট চিংড়ি মাছের পাতুরি রেসিপি অসাধারণ ছিল। এই ধরনের রেসিপি আগে কখনো খাওয়া হয়নি। আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো নতুন যেকোনো ধরনের খাবার দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে ।আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি।😍
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
লাউয়ের পাতা দিয়ে ছোট চিংড়ির পাতুরি সত্যিই আমার কাছে খুব অসাধারণ লেগেছে। এর আগে আমি এই রেসিপিটা দেখিনি এটি আমার কাছে একটি ইউনিক রেসিপি লেগেছে। রেসিপি টা দেখেই বোঝা যাচ্ছে কি সুন্দর সুস্বাদু খেতে হবে।
ঠিকই বলেছেন এটি খুবই সুস্বাদু ছিল। গরম ভাতের সঙ্গে খেতে আর ও টেস্টি লাগে।
লাউপাতায় চিংড়ি মাছের পাতুরী রেসিপি দেখে জিভে জল চলে আসলো বৌদি। দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। আপনি দারুন একটি রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার রেসিপিটি খুবই লোভনীয়। আজ এই রেসিপিটি দেখে মনে হচ্ছে এখনই তৈরি করে খাই। অনেক মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি বৌদি। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া।একদিন বাড়ীতে তৈরি করে খেয়ে দেখুন খুব মজার ছিল।
বাহ আপু অনেক সুন্দর একটা রেসিপি শেয়ার করেছেন আপনি। লাউ পাতা দিয়ে ইলিশ মাছের পাতুরি। সত্যি আপু অনেক সুন্দর হয়েছে। আমিও একবার কলাপাতা দিয়ে পাতুরি বানিয়েছিলাম ইলিশ মাছের। সত্যিই এগুলো অনেক টেস্ট হয় খেতে। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
চিংড়ি মাছের পাতুরি ও খেতে অনেক মজার হয়। আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া।
বাহ বৌদি চিংড়ি মাছের পাতুরি গুলোকে কিন্তু বেশ চমৎকার আর লোভনীয় লাগছে দেখতে। আমি লাওয়ের পাতায় চিংড়ির পাতুরি একবার খেয়েছিলাম আমার কাছে খুব মজা লেগেছিল। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মত করে এই রেসিপিটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য বৌদি।