"শান্তির নীড় হলো শান্তি নিকেতন"সেই শান্তির নীড়ে সুন্দর সময় কাটানোর ১ম পর্ব
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজ আমি শান্তিনিকেতনের গল্প শেয়ার করবো। আমি শান্তি নিকেতনে এই কয়েকটা
দিন কি ভাবে কাটিয়েছি সবকিছু আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো শান্তি নিকেতনে পৌঁছানো থেকে শুরু করে প্রথম দিন কি ভাবে কাটিয়েছি। তাহলে চলুন শুরু করা যাক। আপনারা জানেন আমরা পরিবারের সবাই মিলে শহর থেকে দূরে বোলপুর শান্তিনিকেতন বেড়াতে গিয়েছিলাম। বেশ কয়েক বছর হলো দূরে কোথাও যাওয়া হয় না। আমার প্রিয় মানুষটির সময় হয় না। সারাবছর কাজের ভিতর মুখ গুঁজে থাকে। আর আমি ও জোর করি না। সত্যি বলতে আমার ঘুরতে খুব ভালো লাগে। কিন্তু আমার মানুষটির সময় কম এটা বুঝে তাই আমি জোর করি না। কিন্তু অনেক দিন ধরে আমার শহরের বাইরে ঘুরতে যেতে মন চাইছিলো। আর ছেলে বেলা থেকে শান্তি নিকেতন যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু কোনদিন যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তাই অনেক দিন ধরে আমার মানুষটিকে বলছি শান্তি নিকেতন যাওয়ার জন্য। কিন্তু শুধু আজ না কাল এই ভাবে সময় পার করে দিচ্ছে। তারপর একদিন আমি প্রচন্ড রেগে যাওয়াতে আমাকে বললো এবার পহেলা বৈশাখে তোমাকে শান্তি নিকেতন নিয়ে যাবো। সেই থেকে আমি দিন গুনে যাচ্ছিলাম কবে পহেলা বৈশাখ।
আর আমি এবারের পহেলা বৈশাখ একটু অন্য ভাবে পালন করার ইচ্ছা ছিলো। আসলে আমরা পহেলা বৈশাখ পালন ১৫ ই এপ্রিল। তাই ঠিক হলো আমরা ১৪ ই এপ্রিল খুব ভোরের দিকে বেরিয়ে পড়বো। কারণ আমাদের এখন থেকে শান্তি নিকেতন ২০০ কিলোমিটারের একটু বেশি। আর গাড়ীতে শান্তি নিকেতন পৌঁছাতে সময় লাগতে পারে ৪ ঘণ্টার মতো। আর রৌদ্রের প্রচন্ড তাপ তাই ঠিক হলো আমরা সকাল ৭.০০ টার দিকে বেরিয়ে পড়বো।আর আমরা যাবো নিজেদের গাড়ি নিয়ে। আমরা যে দিন যাবো তার আগের দিন আমরা যে জিনিস পত্র নিবো সব কিছু গুছিয়ে নিলাম। আমরা সেখানে ৩ দিন থাকবো। ১৪ তারিখ সকালে আমরা রেডি হয়ে রওয়ানা দিলাম ৭.২৫ এর সময় শান্তি নিকেতনের উদ্দেশ্যে। টিনটিন বাবু এত সকালে ঘুম থেকে ওঠে না। তাই ওকে ঘুমন্ত অবস্থায় কোলে করে নিয়ে গেলাম। কিছু রাস্তা আমরা ভালো চলছিলাম। বাইরে প্রচন্ড গরম ছিলো কিন্তু আমরা গাড়ির ভেতরে ছিলাম আর গাড়িতে এসি চলছিলো তাই গরম বুঝতে পারিনি। তাই আসলে গরমে কোনো কষ্ট হয়নি। এক পর্যায়ে আমরা বর্ধমান গিয়ে ল্যাংচা মহলে গিয়ে গাড়ি থামলাম। আসলে প্রচন্ড খিদে পেয়েছিলো। তাই ভাবলাম একটা দোকানে গিয়ে কিছু খেয়ে নিই। আমরা দোকানে ঢুকে ডাল পুরি ও আলুর তরকারি এবং একটি করে ল্যাংচা অর্ডার করলাম। আমরা মোট ছিলাম ৬ জন। আমি, টিনটিন বাবু, বাবুর কাকা ও বাবা, আমার শশুর শাশুড়ি ও আমাদের ড্রাইভার।
আবার ৩০ মিনিট পর গাড়িতে উঠলাম । হটাৎ করে আমাদের ড্রাইভার পথ ভুল করে অন্য পথে চলে গেল। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর আমরা বুঝতে পারলাম যে ভুল পথে চলে এসেছি। পরে ড্রাইভার পথে এক। লোকের কাছে শুনে তারপর আবার ঘুরে ঠিক পথে যেতে লাগলাম। তাই আমাদের শান্তি নিকেতনে পৌঁছাতে ৭ ঘন্টা লেগে গিয়েছিলো। শুধু মাত্র ভুল পথে চলে যাওয়ার জন্য আমাদের এতোটা দেরি হয়ে গিয়েছিলো। আমরা প্রায় ১.০০ টার দিকে শান্তি নিকেতন পৌঁছাই।আমাদের একটা ভুল হয়ে গিয়েছিলো বাড়ি থেকে হোটেল বুকিং করে যাওয়া হয়নি। তাই আমাদের হোটেল পেতে একটু অসুবিধা হয়ে গিয়েছিলো। অনেক ঘুরাঘুরির পর একটা ভালো হোটেল পেয়েছিলাম। আমরা হোটেলে গিয়ে স্নান করে দুপুরের খাবার খেয়ে একটু রেস্ট নিলাম।
কিছু সময় রেস্ট নেওয়ার পর শান্তি নিকেতন ঘুরে দেখার জন্য। গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম আবার ঘুরতে। শান্তি নিকেতনের পরিবেশ আমাকে অনেকটাই মুগ্ধ করেছে। রাস্তার দুই পাশ দিয়ে অনেক গাছ গাছালি রয়েছে। বোলপুর প্রচন্ড গরম ছিলো। বাইরে প্রায় ৪২ ডিগ্রী তাপমাত্রা চলছিলো। কিন্তু আমার কাছে সেরকম কিছু মনে হয়নি। শান্তিনিকেতনের লাল মাটি আর প্রচুর পরিমাণে শাল গাছ ও অনন্যা গাছ গুলো আমাকে পাগল করেছে। আমার মনে হয়েছিলো আমি যেনো স্বর্গে আছি। আমি শান্তি নিকেতনের অনেক জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলাম।সেগুলো আমি ধীরে ধীরে প্রতি পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আজ বেশি কোনো ছবি দিতে পারছি না। কারণ প্রথম দিন বেরিয়ে ছবি তুলতে পারিনি কারণ মুগ্ধ হয়ে শুধু পরিবেশটাকে উপভোগ করেছি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের শান্তি নিকেতন আমাকে সব কিছু ভুলিয়ে দিয়েছিলো। কিছুক্ষন ঘুরে আমরা রাত ৯.০০ টার দিকে আমরা হোটেলে চলে এলাম। এরপর রাতে খাওয়া দাওয়া করে। সবাই মিলে গল্প করলাম। আজ এই পর্যন্তই আগামী দিন ২ য় পর্ব নিয়ে আবার আসবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
লেখাগুলো পড়ছি আর ভ্রমণের পুরো বিষয়টি উপভোগ করছি। ৪ ঘন্টার জায়গায় 7 ঘণ্টা রাস্তায় ভুল হওয়ার কারণে বেশ অনেকক্ষণই ঘুরতে হয়েছে দেখছি আপনাদের।
শান্তির নীড় হল শান্তিনিকেতন কথাটা কিন্তু বেশ বলেছেন।
দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
বৌদি শান্তিনিকেতন ভ্রমণের গল্পটি পড়তে পড়তে মনে হলো আমিও যেন ভ্রমরের মধ্যে ডুবে আছি। আসলে শান্তিনিকেতন খুবই সুন্দর জায়গা আর শান্তিনিকেতন আপনি এত সুন্দর ভাবে উপভোগ করেছেন মনে হচ্ছে আপনি স্বর্গে আছেন। সত্যিই আমার খুবই ভালো লেগেছে ভ্রমণ কাহিনী এবং ফটোগ্রাফি গুলো। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
অনেক সুন্দর ভাবে শান্তিনিকেতন ভবনের মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। যখন আমি আপনাকে পোস্টটি পড়ে ছিলাম। তখন আমি মনে হচ্ছে শান্তিনিকেতন এ ভবন করতেছি। আমার খুব ভালো লেগেছে। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল
বৌদি ব্লাক্স দাদার পোস্ট থেকে জেনেছিলাম আপনারা শান্তিনিকেতন গিয়েছিলেন। আমারও বহুদিনের ইচ্ছা কবিগুরুর এই পছন্দের জায়গাটিতে একবার ঘুরে আসার। তবে রাস্তা ভুল করার কারণে আপনাদের কেমন হেনস্থা হতে হলো। লেংচা খাবার টা কি সেটা কিন্তু বুঝলাম না, একটা ছবি দিলে ভাল হত। সবশেষে ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোষ্ট এর জন্য।
বৌদি শান্তিনিকেতনে দারুণ সময় কাটিয়েছেন। যদিও ভুল রাস্তায় চলে যাওয়ার পর একটু দেরি হয়েছে। তবুও যেটুকু সময় কাটিয়েছেন আমার মনে হয় খুব আনন্দেই কাটিয়েছেন। কেননা পরিবেশের মুগ্ধতার কারণে আপনি প্রথমদিন ছবি তুলতেও ভুলে গেছেন তার মানে অনেক আনন্দে ছিলেন। যাইহোক প্রথমে একটি ব্যাপার পড়ে খুব হাসি পাচ্ছিল আপনি একদিন খুব বেশি গরম হয়ে যাওয়াতে দাদা আপনাকে নিয়ে ঘুরতে বের হওয়ার মনোস্থির করল। আসলে দাদা আপনাকে অনেক ভালোবাসে তাই আপনার রেগে যাওয়াটা উপভোগ করে নিয়েছে। যাইহোক বৌদি পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ড্রাইভারকে কী বকেছিলেন আপু? আর মনে হচ্ছে দাদা আপনাকে ভয় পায় কারন আপনি রেগে যাওয়া ঘুরতে যাওয়ার জন্য রাজি হলো। রবীন্দ্রনাথের সাথে শান্তিনিকেতন কীভাবে সম্পর্ক আমার কোন ধারনা নেই। আপু পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আমি🙂
রবীন্দ্রনাথ এর শান্তি নিকেতন কিভাবে সম্পর্ক তা কাল শেয়ার করবো আপু।
জি আপু অপেক্ষায় রইলাম আপু 🙂
আমি কখনো যদি ভারতে যেতে পারি তাহলে অবশ্যই এই স্থানটি ভ্রমণ করব। আমি অনেকবার বইতে পড়েছি এই শান্তিনিকেতনের কথা। আপনি খুব সুন্দর ভাবে স্থানের কথা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। যার জন্য আরও উৎসাহ বাড়ল এই স্থানে যাওয়ার প্রতি।
ভুল পথে চলে গিয়ে অনেক কষ্ট হয়ে গেল আপনাদের তবে কোথাও ঘুরতে গিয়ে এমন ভুল হলেও খারাপ না স্মৃতিতে জড়িয়ে থাকে প্রতিটা সময়। যাক আলহামদুলিল্লাহ দাদা যে সময় বের করে আপনাদের নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছে এটাও কিন্তু অনেক আনন্দের বিষয়। আর হ্যাঁ আমি মনে করি প্রতিটা নারী ঘুরতে খুব পছন্দ করে। অসম্ভব সুন্দর একটি জায়গায় গিয়েছেন 200 কিলোমিটার কিন্তু অনেকটাই দূরে। সব মিলিয়ে সামনে এমন আরও পোস্ট চাই আপনাদের আনন্দের মুহূর্ত গুলো নিয়ে।
বৌদি প্রতিটি জায়গার কিছু স্মৃতি থাকা প্রয়োজন। আর সেই স্মৃতি সাপেক্ষে আপনাদের পথ ভুলা। দেখেই বুঝা যাচ্ছে জায়গাটা কত সুন্দর কিন্তু রিস্কি।
তবে বৌদি সময়টা অনেক সুন্দর কাটিয়েছেন, তা আপনার পোস্ট পড়েই বুঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ বৌদি।
সত্যি কথা বলতে কোথাও যাওয়ার আগের দিন টার অনুভুতি যে কি মজার তা বলে বোঝাতে পারবো না বৌদিভাই। আপনার লেখার মধ্যে ফুটে উঠেছে সেটি। তবে পথা হারাবার বিষয়টি একটু বিভ্রান্তিকর তারপরও এই হারিয়ে যাওয়ার মাঝেও একটা ভাল অনুভূতি কাজ করে। যা হোক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন এবং পহেলা বৈশাখে শান্তিনিকেতনে সময় কাটাতে পেরেছেন জেনে ভাল লাগলো। ভাল থাকবেন বৌদিভাই। ধন্যবাদ।