" শান্তির নীড় হলো, শান্তি নিকেতন" সেই শান্তি নীড়ে সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত কাটানোর ২ য় পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজ আমি শান্তি নিকেতনের ২ য় পর্ব শেয়ার করবো।২ য় দিন মানে নববর্ষের দিন। নববর্ষের দিন আমরা অনেক সকালে বেরিয়ে ছিলাম ঘুরতে। প্রথমে গেলাম একজন গাইড খুঁজতে। শান্তি নিকেতনের পণ্ঠশালার কাছে অনেক গাইড পাওয়া যায়। আমরা সেখানে গিয়ে একজন গাইড ঠিক করলাম। গাইড বললো আপনাদের রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত সকল স্থান দেখাতে পারবো। শুধু একটা সমস্যা সেগুলো দূর থেকে দেখতে হবে। বর্তমান করোনার কারণে সেখানে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরও আমি আমরা গিয়েছিলাম । এই শান্তি নিকেতন বসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জীবনের বাকি সময় কাটিয়েছেন। এবং সকল গান, কবিতা, নাটক ইত্যাদি এই শান্তি নিকেতনে বসে রচনা করেছেন। এমনকি ছোটদের সেই "তালগাছ " কবিতাটি এই শান্তি নিকেতনে এসে তালগাছ দেখে এই কবিতাটি লিখেছিলেন।

তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে
সব গাছ ছাড়িয়ে
উঁকি মারে আকাশে।
মনে সাধ কালো মেঘ ফুঁড়ে যায়
একেবারে উড়ে যায়
কোথা পাবে পাখা সে?
তাই তো সে ঠিক তার মাথাতে
গোল গোল পাতাতে
ইচ্ছাটি মেলে তার,......

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর নিভৃতে ঈশ্বরচিন্তা ধর্মালোচনার উদ্দেশ্যে বোলপুর শহরের উত্তর-পশ্চিম শহরে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এরই নাম করণ করা হয় শান্তিনিকেতন। শান্তিনিকেতন পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের নিকট অবস্থিত একটি আশ্রম বা শিক্ষা কেন্দ্র। এই শান্তিনিকেতন হলো মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্থাপিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত একটি শহর।

১৮৬৩ সালের দিকে একবার মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বোলপুর থেকে রায়পুর যাচ্ছিলেন। পথে ভুবনডাঙ্গা নামক স্থানে ছাতিম গাছের তলায় বসে তিনি বিশ্রাম নেন। জায়গাটি ছিল চারিদিকে সবুজ ভীষণ নির্জন মাঝে মাঝে শোনা যেত পাখির ডাক। বিশ্রাম নিতে নিতে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জায়গাটি ভীষণ ভালো লেগে যায়। তার মনে হলো ঈশ্বরের ধ্যান ও উপাসনা করার জন্য এর মতো ভালো জায়গা আর হয় না। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন জায়গাটি কিনে নেবেন। পরে রায়পুর জমিদারের সাথে যোগাযোগ করে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছাতিম গাছ সহ ২০ বিঘা তুমি কিনে নিলেন। জমি কিনে জায়গাটি পেলে রাখলেন না। সেখানে নির্মাণ করেন কাঠের বাড়ি। বাড়ির চারপাশে লাগানো হলো আম ,জাম ,কাঁঠাল ,লিচু ও নারকেল সহ অনেক গাছ। তিনি এইবার এটি মূলত উপাসনা ও প্রতীক্ষালয় হিসেবে গড়ে তোলেন।

পরে লোকেরা এই বাড়িটিকে শান্তি নিকেতন নামে ডাকতে থাকেন। পরেই নামটি প্রচলিত হয়ে যায়। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বাড়িটির সাথে একটি উপাসনালয় নির্মাণ কাজ শুরু করেন। তখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনেক ছোট ছিলেন। তার বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে রবীন্দ্রনাথ প্রায়ই এই শান্তিনিকেতন বেড়াতে আসতেন। তার ও এই জায়গাটি ভালো লেগে যায়। ১৯০৫ সালে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর মারা যান। শান্তিনিকেতনের উপাসনালয় নির্মাণ কাজ তখনো শেষ হয়নি। বাবার মৃত্যুর পর জমিদারের দায়িত্ব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপর এসে পড়ে। তিনি প্রায় শান্তিনিকেতন বেড়াতে আসতেন। উপাসনালয় নির্মাণ কাজ তিনি শেষ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতন কে ঘিরে তার স্বপ্নের সূচনা করলেন। এবং তিনি ধীরে ধীরে ৩৬০০ বিঘা জমি নিজে কিনে নিলেন।১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে বর্ম বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। যা ধীরে ধীরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। যা কালক্রমে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেয়।১৯১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিশ্ব ভারতের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতিতে আশ্চর্য বজেন্দ্র নাথ শীল বিশ্বভারতীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এখানে। দশ বছর পর বিশ্বভারতী ভারত সরকারের একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হয় এবং সহকার এর সম্পূর্ণ অর্থ যোগান দেয়।১৯০১ সালের শুরুর সময় থেকে প্রতিষ্ঠানিক আয়তন বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও দুটি মৌলিক পরিবর্তন ঘটেছিল। সে সময় রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন থেকে কোন ডিগ্রী দেওয়া হতো না। বর্তমানে বিশ্বভারতী প্রতিটি পর্যায়ে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমমানের ডিগ্রি প্রদান করেন। অন্য পরিবর্তনটি এসেছে আর্থিক ক্ষেত্রে।

রবীন্দ্রনাথ তাঁর নিজের সীমিত সংগতি দিয়ে মাত্র পাঁচ জন ছেলেমেয়ে বিদ্যালয়টি শুরু করেছিলেন। শান্তিনিকেতনের স্কুলে শুরুতে এর ব্যয় নির্বাহের জন্য তার স্ত্রী মৃণালিনী দেবী নিজের সমস্ত গয়না বিক্রি করেছিলেন। পুরীতে অবস্থিত রবীন্দ্রনাথের বাংলো বিক্রি করে দিয়েছিলেন। পিতা শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট থেকে আসা বছরে আঠারোশো টাকার উপরই তিনি প্রধানত নির্ভর করতেন। পরে তিনি নোবেল পুরস্কারের সমুদয় অর্থ স্কুলে দান করেন।

১৯২২ সালে তিনি তার বাংলা গ্রন্থাবলীর গ্রন্থস্বত্ব বিশ্বভারতী কে দান করেন। প্রাথমিক অবস্থায় অতি অল্প বেতনের শিক্ষকদের কাছ থেকে ও সাহায্য এসেছিলো। শান্তিনিকেতনের উন্নয়নের জন্য নিয়মিত আয়ের উৎস রূপে দার্টিং টন হলো ট্রাস্ট থেকে বিশাল অংকের অর্থ দান করেছিলেন। ত্রিপুরা, বরোদা, জয়পুর, লিমডি, আওয়াগর ও হায়দ্রাবাদের রাজপরিবার গুলি স্যার রতন টাটা শান্তিনিকেতনের প্রচুর অর্থ দান করেছিলেন। শান্তিনিকেতন বর্তমান যেভাবে দেখা যায় তা হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন উত্তরাধিকারী। শান্তিনিকেতনের স্কুলটি তখনকার দিনের জীবনকে কিছুটা স্মরণ করিয়ে দেয়। খোলা মাঠে ক্লাস, মৌসুমী উৎসব, মন্দিরে প্রার্থনা সভা এবং তার সংগীতঃ আশ্রমের অতীত জীবনের আবাস দেয়। আদি পরিকল্পনা সম্পূর্ণতা অনেকটা হারিয়ে গেলেও এর কৃষি ও গ্রাম সম্প্রসারণের কর্মকাণ্ডে প্রশিক্ষণসহ শান্তিনিকেতন এর মত কেন্দ্র এবং গ্রামের শিশুদের জন্য শিক্ষাসত্র স্কুল শিক্ষার প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

সেই শান্তি নিকেতন ঘুরতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমরা শান্তি নিকেতনের সকল জায়গা দূর থেকে দেখতে হয়েছে তারপর ও আমার খুব ভালো লেগেছে। আমরা প্রায় বেলা ১২.৩০ টা পর্যন্ত ঘুরেছিলাম। অবশেষে একটু ক্লান্ত লাগছিলো তাই ভাবলাম সবাই মিলে ডাবের জল খেয়ে নিই। এরপর আমরা সবাই মিলে ডাবের জল খেলাম। তারপর সামান্য কিছু খাওয়া দাওয়া আবার কিছুক্ষন ঘুরে হোটেলে চলে এলাম। এরপর প্রোগ্রাম ছিলো কোপাই নদী ও শাল বন এবং আদিবাসী এলাকায় ঘুরতে যাওয়ার।আর আদিবাসীদের সাথে নাচ গান করার। সেগুলো আগামী দিন আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আজ এই পর্যন্তই আগামী দিন নতুন কোন বিষয় নিয়ে আবার আসবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। আশা করি আজকের পর্বটি আপনাদের ভালো লাগবে।

Sort:  
 2 years ago 

যদিও বড় দাদা ও ছোট দাদার পোস্টের মাধ্যমে হালকা আভাস পেয়েছিলাম শান্তিনিকেতন সম্পর্কে ,তবে এবার বেশ ভালোই লাগলো জেনে শান্তিনিকেতনের শুরুর লগ্ন থেকে বর্তমান অবস্থা পর্যন্ত। বেশ ভালই লিখেছেন এবং আপনাদের অনুভূতি জেনে ভালোই লাগলো । ধন্যবাদ তথ্য গুলো শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

বৌদি আপনি একটি সুন্দর ও আনন্দময় একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন তার কিছু কথা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সত্যি বলছি আপনার পোষ্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শহরটি সম্পর্কে ভালোই লিখছেন। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। বেশ সুন্দরময় একটি জায়গা। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বৌদি। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

বৌদি শান্তিনিকেতনে কাটানো সময় আপনার কতটা ভালো ছিলো তা তো আপনার গত পোস্ট পড়ে বুঝতে পেরেছি। এ পর্বে জানতে পারলাম রবীন্দ্রনাথ এত চমৎকার একটি কবিতায় এই জায়গায় বসেই লিখেছেন কবিতাটি একসময় আমরা পড়তাম। সেখানে নদী,শালবন, সব জায়গায় ঘুরেছেন।এর মাধ্যমে আমরা অনেক তথ্য পেলাম।

 2 years ago 

এক কথায় অসাধারণ বৌদি।আসলে অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে। শান্তিনিকেতন সম্পর্কে আমার ওই রকম আইডিয়া ছিলো না। তবে আপনার এই পর্বের মাধ্যমে অনেক তথ্য জানতে পারলাম। খুব সুন্দর করে গুছিয়ে আপনি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। মাঝে মাঝে সুন্দর সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। আসলে আমি অবাক হয়ে গেলাম আপনার বর্ণনা দেখে। শান্তিনিকেতনের কথা অনেক শুনেছি। ধন্যবাদ বৌদি এরকম রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন এর বিস্তারিত বর্ণনা আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

রবীন্দ্রনাথ তাঁর নিজের সীমিত সংগতি দিয়ে মাত্র পাঁচ জন ছেলেমেয়ে বিদ্যালয়টি শুরু করেছিলেন। শান্তিনিকেতনের স্কুলে শুরুতে এর ব্যয় নির্বাহের জন্য তার স্ত্রী মৃণালিনী দেবী নিজের সমস্ত গয়না বিক্রি করেছিলেন।

বৌদি আপনি খুবই সুন্দর ভাবে শান্তিনিকেতন সকল তথ্য আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। আসলে শান্তিনিকেতন সম্পর্কে এরকম তথ্য জানতে পেরে আমার খুবই ভালো লাগছে। আসলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে বিদ্যালয়টি করার জন্যে অনেক কষ্ট করেছে। সে তার একটি বাংলো বিক্রি করেছে ও তার স্ত্রী মৃণালিনী দেবী নিজের সমস্ত গয়না বিক্রি করেছিলেন।আজ এই মহান ব্যক্তি তার কাজ কার্যক্রমের মাধ্যমে পৃথিবীকে স্মরণীয় হয়ে আছেন। খুবই ভালো লাগলো এবং সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

বৌদি আপনি শান্তিনিকেতনের প্রত্যেকটি জায়গা সুন্দরভাবে পরিদর্শন করেছেন। যদিও একটু দূর থেকে আপনি জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন তার পরেও ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। এই গরমের মধ্যে ডাবের জল আমাদের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া কোপাই নদী ও শাল বন এবং আদিবাসী এলাকায় ঘুরতে যাওয়ার যে প্রোগ্রাম ছিল সেটাও দেখে অনেক ভাল লেগেছে কারণ ঘুরলে সকলের মন মানসিকতা সতেজ থাকে ।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

এই শান্তি নিকেতন বসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জীবনের বাকি সময় কাটিয়েছেন। এবং সকল গান, কবিতা, নাটক ইত্যাদি এই শান্তি নিকেতনে বসে রচনা করেছেন।

আসলেই বৌদি শান্তি নিকেতনের ব্যাপারে সেই ছোট বেলা হতেই শুনে আসছি, শান্তি নিকেতন দেখার একটা ইচ্ছা ভেতরে লালন করে রেখেছি বহু দিন ধরে। আশা করছি আপনার ফটোগ্রাফির দৃশ্যগুলো কোন একদিন বাস্তবে দেখার সুযোগ পাবো। ধন্যবাদ

 2 years ago 

আহা কত শান্ত এবং নিবিড় একটি জায়গা হয়তো এই জন্যই নাম দিয়েছে শান্তিনিকেতন। খুবই ভালো ছিল বৌদি আপনার উপস্থাপনা টি, অনেক তথ্যবহুল ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।

 2 years ago 

বৌদি আজকের পোস্ট পড়ে শান্তিনিকেতন সম্পর্কে
সবকিছু জেনে নিলাম। তবে বৌদি আমার কাছে এটা অজানা ছিল যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই জায়গাতে বসেই কবিতাটি লিখেছিলেন।
আজকের পোস্টটি আমাদের সবার জন্য অনেক শিক্ষণীয় ছিল ধন্যবাদ বৌদি।

 2 years ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে শান্তিনিকেতনের ইতিহাস জেনে নিলাম। আমার এগুলো জানা ছিলোনা। পড়ে বেশ ভালো লাগলো আপু। আর আপনাদের দিনগুলোও অনেক ভালো কেটেছে। আপনার পরবর্তী পর্ব এর জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74