কিছু মানুষের ব্যবহার সবসময় কষ্ট দেয়।১০% লাজুক-খ্যাঁককে
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে জানাই আমার সালাম। আসসালামু-আলাইকুম। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি।
আজ আপনাদের সাথে নতুন আরেকটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য চলে আসলাম। সবসময় এক রকম পোস্ট করতে ভালো লাগেনা। তারজন্য চেষ্টা করি পোস্টের মধ্যে একটু ভিন্নতা আনার জন্য। এমন কিছু সময় আসে যখন কাছের মানুষের ব্যবহার অনেক কষ্ট দেয়। আমার কাছে মানুষের হঠাৎ পরিবর্তন একদম ভালো লাগে না। আমার জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়ে একজন কাছের মানুষের কাছ থেকে অনেক কষ্ট পেয়েছি। যা আমি কোনো দিন ভুলতে পারবো না। সেই কষ্ট যদি কোনো খাবার খাওয়া নিয়ে হয় তাহলে এর চেয়ে কষ্ট আর কিছু নেই।
আমি আপনাদের সাথে এই তো সেই দিন বউয়া ভাতের রেসিপি শেয়ার করেছিলাম। এই বউয়া ভাত খাওয়া নিয়েই একজনের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমার বিয়ের আগে আমরা যেই বাসায় ছিলাম সেই বাসায় এক আন্টির সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে। আমরা একপাশের ফ্লাটে ছিলাম আর আন্টিরা আরেক পাশের ফ্লাটে ছিল। তারা কিছু রান্না করলে আমাদের দিত আর আমরা কিছু রান্না করলে তাদের দিতাম।
তাদের বাড়ি বিক্রমপুর ছিল। আন্টির দুই মেয়ে আর দুই ছেলে ছিল। আমরা একসাথে এক বিল্ডিং এ ছয় বছর ছিলাম। তারপর আমরা বাসা ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যাই। এরপর মাঝে মাঝে তাদের বাসায় যাওয়া হতো। এরপর আমার বিয়ে হয়ে যায় আর আমি গাজীপুর গিয়ে বাসা নেই। কারণ আমার হাসবেন্ড সেখানে জব নিয়েছিল। এরপর আমরা সেখানে দুই বছর ছিলাম। যখন মায়ের বাসায় আসতাম তখন তাদের বাসায় যাওয়া হতো।
যখন আমার ছেলে পেটে ছিল আর আমার সাত মাস চলে তখন সাত মাসের সময় আমার ভাবি ফোন দিয়ে বলে বেড়াতে এসো। এরপর আমি আসি আর সেই দিন ভাবি ভালো কিছু রান্না করে আর আমাকে একটা লাল শাড়ি গিফ্ট করেছিল। সেই আন্টির বড় মেয়ের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। আমাদের বাসায় এসে মা কে বলেছিল আমি আসলে তাদের খবর দেওয়ার জন্য। তার নাম ছিল সেতু। এরপর মা সেতুকে ফোন দিয়ে আমার কথা বলে। মা তাকে আসতে বলাতে সে বললো বাসায় মেহমান আছে আর সবাই বউয়া ভাত খাবে বলে এসেছে।
বউয়া ভাতের নাম শুনে সেই সময় আমার খুব খেতে ইচ্ছে করছিল। আমি শুনেছি বাচ্চা পেটে থাকা অবস্থায় যা খেতে ইচ্ছে হয় তা খাওয়াতে হয়। তখন সেতু আপু বললো তাহলে কালকে এসো। আমি কয়েক পদের ভর্তা বানাবো খেয়ে যেয়ো। তুমি এই সময় খেতে চেয়েছো খাওয়াতে তো হবেই। এরপর আমি আর মা পরের দিন দুপুর বেলা যাই তাদের বাসায়। কিন্তু আমরা খালি হাতে গিয়েছি।এর কারণ তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল আবার চিন্তা করলাম এটা তো দাওয়াতে যাচ্ছি না। এই খালি হাতে যাওয়াই তাদের সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে।
আমরা সরল মনে অনেক গল্প করলাম আর সেই সময় বেশি খাওয়া যায় না আপনারা সবাই জানেন। আমরা অল্প খেয়ে কিছুক্ষণ গল্প করে চলে আসি আর আসার সময় তারা ভাবির জন কিছু খাবার দিয়ে দেয়। এরপর থেকে তাদের ফোন দিলে আর রিসিভ করে না। তাদের কিছু বাটি আর প্লেট ছিল তাও নিতে আসেনা। এরপর আরেকজন পরিচিত ভাবি ছিল আপু তাদেরও চিনতো। সেখানে গিয়ে বলে এসেছে আমরা খালি হাতে তাদের বাসা থেকে খেয়ে এসেছি।
আমার মা সেই ভাবির বাসায় গেলে মা কে ভাবি সব বলে দেয়। এই কথা শুনে খুব রাগ হয় আর মা কিছু দিন পর তাদের দাওয়াত দেয়। কিন্তু তারা আসেনি। এরপর আমার ছেলের বয়স যখন ছয় মাস তখন সেই আপু এসেছে বাটি নিতে। এরপর তাকে বললাম আপু এমন জানলে আমি কখনো আপনাদের বাসায় বউয়া ভাত খেতে যেতাম না। আমরা ভর্তা ভাত সবাই রান্না করতে পারি। আপনি এই ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে রাগ করবেন ভাবতে পারিনি। এরপর সে কোনো কথা বলেনি। আমার মা সেই দিন তাকে অনেক ধরনের খাবার আর পিঠা দিয়ে দেয়।
এরপর থেকে তাদের সাথে আমাদের আর তেমন যোগাযোগ হয়না। রাস্তায় দেখা হলে কথা হয় আর যেতে বলে। কিন্তু সেই দিনের পর থেকে আর যাওয়ার ইচ্ছে হয়না। কিছু কিছু মানুষ এভাবেই ভালো সম্পর্ক নষ্ট করে দূরে সরে যায়। যাই হোক আমার লেখা আজ এখানে শেষ করলাম। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন এই দোয়া কামনা করি।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
আসলে সত্যি কিছু মানুষের ব্যবহার হৃদয়ের মাঝে সব সময় যন্ত্রণা দেয়। কিছু মানুষের কটু কথা কখনো ভুলা যায় না। এ ধরনের ঘটনা ঘটতে আসলে মনে কষ্ট আসে। বুঝতে পারছি আপনি অনেক মনে কষ্ট নিয়েছেন তাদের উপর। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া এই কষ্ট কখনো ভুলার নয়। খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
সত্যিই যাদেরকে আপন ভাবা হয় তারা ছোট্ট একটা বিষয় এর কারণে দূরে সরে যায় যা ভাবতেও খুবই কষ্ট লাগে। কিছু না নিয়ে যাওয়ার জন্য বুঝি এভাবে রাগ করতে হয়। এটা আমি আজকে প্রথম শুনলাম। আপনারা মনে হয় খুবই কষ্ট পেয়েছিলেন তাদের এই ব্যবহারের জন্য। আমার কাছেও শুনে খুবই খারাপ লাগলো এই বিষয়টি। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনার পোস্ট পড়েই বুঝতে পারলাম অনেক কষ্ট পেয়েছেন ওনাদের ব্যবহারের জন্য। আসলে কিছু কিছু মানুষ হঠাৎ করে এমন ব্যবহার করে যার কারণে অনেক কষ্ট পাই। ছোট্ট একটি বিষয় নিয়ে যদি এভাবে ব্যবহার করে তাহলে কষ্ট পাওয়ারই কথা। সত্যিই এই কষ্ট কখনো ভুলার নয়। চাইলেও মন থেকে এই কষ্টটা দূর করা যাবে না।