মনের ভিতরে অজানা ভয় কাজ করা।১০% লাজুক-খ্যাঁককে
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে জানাই আমার সালাম। আসসালামু-আলাইকুম। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি।
সময় কত তাড়াতাড়ি চলে যায়। দুই দিন আগেও আমরা নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার জন্য কত আয়োজন করেছি। কিন্তু নতুন বছর এসে আজ তিন দিন পার হয়ে যাচ্ছে। সময়ের সাথে সাথে আমার ছোট্ট সোনা কখন যে এত বড় হয়ে গিয়েছে টেরই পেলাম। মায়ের কাছে সন্তান বড় হলেও নাকি ছোট মনে হয়। আমারও ঠিক তাই মনে হচ্ছে এখনো মনে হয় আমার ছেলে সেই ছোটই রয়ে গিয়েছে।
যখন সন্তান খেলাধুলা করে আনন্দ করে তখন বুঝা যায়না কতটা ভালোবাসি। কিন্তু যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে অথবা বিপদে পড়ে তখন বুঝতে পারি কতটা ভালোবাসি। একজন সন্তান তার বাবা মায়ের কাছে কতটা আপন সেটা শুধু বাবা মা ই বলতে পারে। কয়েক মাস আগে ঢাকা সহ অনেক জায়গায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। আমরা জানি না এভাবে বিদ্যুৎ চলে যাবে।
আমরা পানি জমা করে রাখিনি তারজন্য অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। এভাবে সারাদিন চলে যায় যখন রাত ১১টা বাজে তখন একেক এলাকায় বিদ্যুৎ আসতে শুরু করে। যেই জায়গায় বিদ্যুৎ আসে সেখানের মানুষেরা অনেক হইচই শুরু করে। আমি আমার হাসবেন্ড আর বাবু মিলে মজা করছিলাম। যখন আমাদের এদিকে বিদ্যুৎ আসে তখন সবাই হইচই শুরু করে দেখে আমরাও একটু জোরে শব্দ করি। কিন্তু এই শব্দ আমার ছেলের উপর খারাপ প্রভাব ফেলবে বুঝতে পারিনি।
হঠাৎ করে তাকিয়ে দেখি বাবু চোখ বন্ধ করে রেখেছে। এটা দেখে আমি আর আমার হাসবেন্ড ভয় পেয়ে যাই। অনেক ডাকাডাকি করেও চোখ খুলতে পারছিনা। অল্প সময়ের জন্য ওর নিঃশ্বাস বন্ধ করেও রেখে ছিল। আমি আর ওর বাবা কি করবো বুঝতে পারছি না। দু'জনেই ছেলের এই অবস্থা দেখে কান্না শুরু করলাম। তারপর হঠাৎ করে মাথায় বুদ্ধি আসলো বাবু আমার মোবাইলে বিমান দেখতে পছন্দ করে। তারজন্য আমরা একবার এয়ারপোর্ট গিয়েছিলাম বিমান দেখানোর জন্য।
সেই দিন একটা ভিডিও করা হয়। আমার হাসবেন্ড সেই ভিডিও ছাড়ার সাথে সাথে ছেলে আমার চোখ মেলে তাকিয়েছে। এই দৃশ্য দেখে মনে হয়েছিল কলিজার পানি শুকিয়ে গিয়েছিল। যখন ছেলে তাকিয়েছে তখন মনে হলো এই পৃথিবীর সব সুখ ফিরে পেয়েছি। এরপর থেকে আর ছেলের সামনে তেমন জোরে চিৎকার চেঁচামেচি করা হয়না। আমার পাশের বাসার ভাবির কাছ থেকে একটা ঘটনা শুনেছিলাম। ঐ সময় আমার হঠাৎ করে সেই ঘটনা মনে পড়ে গেল আর আমার অনেক ভয় করেছিল। কারণ আমার ছেলের কিছু হলে আমি বাঁচবো না।
ভাবির হাসবেন্ড যেই অফিসে চাকরি করে সেখানের কলিগের দুটো মেয়ে। তারা অনেক ভালোবাসে মেয়ে দুটোকে। তারা কখনো মেয়েদের
সামনে ঝগড়া করেনা। কিন্তু একদিন হঠাৎ মনের অজান্তে সেই ঘটনা ঘটে যায়। তাদের ঝগড়া দেখে ছোট মেয়ে ভয় পেয়ে যায়। ঐ দিন রাত ১২টা বাজে মেয়েরা ঘুমাচ্ছে না দেখে তার মা ধমক দিয়ে বলে ঘুমাতে যা। এই কথাই ছোট মেয়ের জীবনে সমস্যা নিয়ে আসে। হঠাৎ মেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়।
তারপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে আর একটু পর নিয়ে আসলে মারা যেতো। এরপর বাবা-মা দু'জনে অনেক কান্না করেছিল। এরপর থেকে তারা দু'জন আর কখনো বাচ্চাদের সামনে ঝগড়া আর চিৎকার চেঁচামেচি করে না। বাচ্চাদের সামনে আমাদের এমন ঝগড়া করা উচিত নয়। এতে করে ওরা মানসিক ভাবে অসুস্থ হতে পারে। কিন্তু আমরা সেটা বুঝেও অনেক সময় অবুঝের মতো কাজ করি। যাই হোক আমার লেখা আজ এখানে শেষ করলাম। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন এই দোয়া কামনা করি।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
বাচ্চাদের শরীর এবং মন দুটোই ভীষণ নরম থাকে।তাই ওদের সামনে কোন ভায়োলেন্স বা অতিরিক্ত উত্তেজনা না করাই ভালো। আপনার ছেলে যে অন্তত প্লেনের আওয়াজ শুনে তাকিয়েছে, সেটাই ঈশ্বরের কাছে অনেক ধন্যবাদ।সুস্থ থাকুক ও।
আপু আমি ঐ সময় অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি এখন অনেক সতর্ক থাকি। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
আপনার বাবু এবং আপনি যে দুটি বাচ্চা মেয়ের কথা বলেছেন তাদের কথা শুনে সত্যি আমি ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এখন তারা সুস্থ আছে এটা জেনে ভালো লাগলো। আপনি ঠিকই বলেছেন বাচ্চাদের সামনে কখনো ঝগড়া বা চিৎকার চেঁচামেচি করা উচিত নয়। কারণ তাদের মন খুবই নরম হয়ে থাকে। আমরা সবাই চেষ্টা করব বাচ্চাদের সামনে এভাবে চিৎকার চেঁচামেচি না করার। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পরামর্শ সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপু সংসারে একটু ঝামেলা থাকবে এটা স্বাভাবিক কিন্তু বাচ্চাদের সামনে তা প্রকাশ না করাই ভালো। এতে তারা মানসিক আঘাত পায়। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
বাচ্চারা অনেক সেন্সিটিভ হয়। খুব সহজেই ওরা প্রভাবিত হয়।তাই খুবই যত্নের সাথে ওদের রাখতে হয়।অনেক বাবা মা ই এই বিষয়টা বোঝে না।ছোট বেলায় ভাল প্যারেন্টিং যে কতটা প্রভাব ফেলে বাচ্চাএ ভবিষ্যতের উপর তা নিয়ে সচেতন নয় অনেকেই। আপনারা বেশ সচেতন দেখে ভাল লাগল।ধন্যবাদ আপু সচেতনতামূলক পোস্টটির জন্য।
ভাইয়া আমরা অনেক সময় বাচ্চাদের মন বুঝতে পারিনা বলে তারা ছোট থেকেই একটা মানসিক চাপে থাকে। আমি চেষ্টা করি আমার ছেলেকে সবসময় আনন্দে রাখতে।ধন্যবাদ।
আসলেই বাচ্চারা উৎসব তো খুবই ভয় পায় এইতো কয়দিন আগে থার্টিফার্স্ট নাইটে আমার মামাতো বোন পেয়ে খুব ভয় পাচ্ছিলো৷ গতবার তো এই শব্দের কারনে একটা বাচ্চা মারাও গিয়েছিলো। যাক আপনার বাবু ভালো আছে এটা শুনে ভালো লাগলো খুব। দোয়া করি যেনো সুস্থ থাকে।
ভাইয়া আমার ছেলে জোরে শব্দ একদম সহ্য করতে পারেনা। সে এই শব্দে অনেক ভয় পায়। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
বাচ্চাদের মন অনেক বেশি নরম হয় তাদের মনটা একদম কোমল নই। অনেক বড় ধরনের বাজনা ফুটানো সেই সাথে মা বাবার চিৎকার চেঁচামেচি এটা তারা একদমই সইতে পারে না সইতে পারলেও তারা তাদের মন থেকে এটা কখনোই নিতে পারেনা। যার কারনে হয়ত বাচ্চারা খুব ছোটবেলা থেকেই অন্যরকম হয়ে যায় কিন্তু বাবা-মারা এটা কখনোই বুঝতে পারে না। আমি মনে করি সকল পিতা-মাতার উচিত বাচ্চাদের সামনে আপাতত কোনরকম হট্টগোল বা ঝামেলায় না জড়ানো এতে করে তাদের বাছরা তাদের কাছ থেকে শৃঙ্খলা শিখতে পারবে। যাইহোক আপনার বাচ্চা অবশেষে ভালো আছে এটা জেনে খুবই খুশি হলাম। ধন্যবাদ এত চমৎকার একটি ব্লগ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া এরপর থেকে আমি অনেক সাবধানে থাকি। আমার ছেলেই এখন আমার পৃথিবী। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
বাচ্চাদের সামনে কোন ঝগড়া বা চেচামেচি করা ঠিক নয় । এটা আমরা বড়রা অনেক সময় ভুলে যাই । ফলে শিশু মনে খারাপ প্রভাব পরে। ফলে বিভিন্ন খারাপ ঘটনা ঘটে। ঠিক সময়ে আপনার মনে আসাতে যে আপনার বাবু প্লেন দেখতে পছন্দ করে তাই কোন অঘটন ঘটেনি। এধরনের ঘটনার কারনে অনেক শিশুর অনেক খারাপ কিছু গটে যায়। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার ও আপনার বাবুর জন্য।