হ্যালো বন্ধুরা,

আ_{^{মার বাংলা ব্লগের সকল বাংলাভাষী সদস্যগনকে জানাই আমার সালাম। সবাই কেমন আছেন? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি। সবাইকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ।}}

বর্তমানে আষাঢ় মাস চলছে আর এখন কেউ বৃষ্টি না চাইলেও বৃষ্টি হবে আর চাইলেও হবে। তবে বেশি দিনের কথা নয় আমরা একটু বৃষ্টির আশায় হাহাকার করেছি। সবাই শুধু ভাবছিলো কখন একটু বৃষ্টি হবে আর পরিবেশ ঠান্ডা হবে। হ্যাঁ এখন প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে আর চারপাশের পরিবেশ একদম শীতল রয়েছে। আমার মতো যারা বাসায় বসে থাকে তাদের জন্য এই সময়টা খুবই আনন্দের। সারাদিন শুধু একটাই চিন্তা বৃষ্টির দিনে কি খাবো আর কখন ঘুমাবো। ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমাতে খুব আরাম। আমি তো এমনেতেই ঘুম প্রিয় মানুষ তার মধ্যে আবার এমন সুন্দর ঠান্ডা ওয়েদার রয়েছে,তাহলে বুঝেনই তো আমার অবস্থা কি? এখন যেনো খাওয়া দাওয়া আর ঘুম ছাড়া জীবনে আর কিছুই নেই এমন হয়ে যাচ্ছে।

সোর্স

কিন্তু ছোটবেলায় এমনটা ছিল না। এখনও কিন্তু গাছে গাছে আম রয়েছে আর তা কাঁচা আম নয়, পাকা আম। এই সময় একদম গাছ পাকা আম খেতে দারুণ লাগে। তবে আমাদের গ্ৰামে কিছু আম গাছ ছিল যে গাছে দেরিতে আম ধরতো আর সেই আম শেষ হতো আষাঢ় মাসের শেষের দিকে। এখন তো বৃষ্টি কম হয় কিন্তু আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আষাঢ় মাসের প্রথম থেকেই বৃষ্টি শুরু হতো আর প্রচুর বৃষ্টি হতো। আমরা চাচাতো ভাইবোনেরা প্রায় সবাই ছোট ছোট ছিলাম। তারজন্য প্রতিদিন আমরা সবাই মিলে সারাদিন বৃষ্টিতে ভিজতাম।

আমরা সারাদিন বৃষ্টিতে ভিজতাম কিন্তু কখনও জ্বর কিংবা ঠান্ডার সমস্যা হতো না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সব কিছু পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। এখন একটু বৃষ্টির ফোঁটা মাথায় পড়লেই ঠান্ডা লেগে যায়। যাই হোক কাজের কথায় আসি একদিন আমরা ভাইবোনেরা সবাই সকাল থেকে বসে আছি কখন বৃষ্টি হবে আর ভিজে পাকা আম কুড়াতে যাবো। আকাশ মেঘলা ছিল কিন্তু বৃষ্টির নাম নেই আর এভাবে দুপুর হয়ে গেলো। এরপর গোসল করে খাওয়া দাওয়া করে পড়তে বসেছি আর তখন হয়তো ৩ টা বাজে। এমন সময় ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো আর তখন আমার এক বোন এসে ডাক দিলো বৃষ্টিতে ভিজতে।

তখন কার কথা কে শুনে পড়ালেখা বাদ দিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে বের হয়ে গেলাম। এদিকে মা পিছন থেকে ডাকাডাকি শুরু করে দিলো, গোসল করেছিস ঠান্ডা লাগবে,যাসনে। কিন্তু সেই কথা শুনলে তো,আমরা একসাথে ৫-৬ জন মিলে চলে গেলাম আম কুড়াতে। যার আম গাছ ছিল তাকে আমরা দাদি বলে ডাকতাম। আমরা সবাই সেই গাছের নিচে চলে যাই আর গিয়ে দেখি অনেক পাকা আম পড়ে পড়েছে। মজার বিষয় কি জানেন,আম গাছের সামনে দাদির ঘর ছিল আর তিনি ঘরে বসে বসে আম পড়ছে কিনা সেটা লক্ষ্য রাখছিলো। মাঝে মাঝে ছাতা নিয়ে এসে আম নিয়ে যেতো। কিন্তু আমরা যাওয়ার পর আর পারছিলো না।

বুঝেনই তো বুড়া মানুষ কত প্যানপ্যান করতে পারে, আমাদের দেখে তিনি রেগে যান। এরপর বারবার আমাদের বলছিলো তোরা চলে যা। কিন্তু আমরা তার কথার পাত্তা না দিয়ে মনের সুখে আম কুড়াচ্ছি। এমন সময় বজ্রপাত শুরু হলো আর তখন আমরা কোথায় গিয়ে দাড়াবো খুঁজতে লাগলাম। তখন দাদির একটা ভাঙ্গা লাকড়ি রাখার ঘর পেলাম আর সেখানে দাঁড়ালাম। তিনি তো এটা দেখে আরও বকাঝকা করা শুরু করে দিলো। আমরা তো বেশি মানুষ ছিলাম কিন্তু ঘর ছিল ছোট তাই ধাক্কাধাক্কিতে ঘর ভেঙে পড়ে যাই। তখন দাদি ছাতা ছাড়াই বৃষ্টিতে ভিজে আমাদের দৌড়ানো শুরু করে দিলো।

আমরা যখন দেখলাম ঘর ভেঙে গিয়েছে তখন তো সবাই হাসাহাসি শুরু করি আর এক দৌড়ে বাড়ি চলে আসি। পরে অবশ্য দাদি সবার বাড়িতে বিচার দিয়ে গিয়েছে আর বকাও খেতে হয়েছিল। এই ছিল বৃষ্টির দিনের ছোটবেলার মজার ঘটনা। বন্ধুরা,আপনারা কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দেবেন আমার এই গল্প পড়ে কেমন লাগলো। ধন্যবাদ সবাইকে।

আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।