সত্য ঘটনা- বিধির বিধান বুঝা বড় কঠিন।(শেষ পর্ব)
বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আজ সন্ধ্যায় একটা খারাপ খবর শুনে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গিয়েছে। হঠাৎ করে জানতে পারলাম আমার চাচাতো ভাই এর শালাকে সাপে কামড় দিয়েছে। কিন্তু এই বর্তমান যুগে এসেও তারা ওঝা বিশ্বাস করে। আমার ভাই বার বার বলতেছে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে কিন্তু তারা তার কথার কোনো মূল্যই দিচ্ছে না। এরপর এক জায়গায় নিয়ে গিয়েছে সেখানে একটু চিকিৎসা করে চলে এসেছে। এরপর মনে হয় আধা ঘন্টা ভালো ছিল কিন্তু এরপর আবারও ব্যথা শুরু হয়।
কিন্তু এখনও তারা ডাক্তারের কাছে না গিয়ে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছে। সবাই বলতাছে এমন করলে একসময় বিষ মাথায় উঠে মারা যেতে পারে। কিন্তু এই কথা তার বাবা মা শুনছেই না। তাদের বিশ্বাস ওঝা ভালো করতে পারবে। এমন না বুঝার জন্য আমার চাচাতো ভাই একসময় মারা গিয়েছে। আজ এই ছেলের অবস্থা এমনই হচ্ছে। বৃষ্টির জন্য সব জায়গায় পানি জমে গিয়েছে। ছেলেটি পানের ভরে পান তুলতে গিয়েছে আর সেখানে সাপ বসা ছিল। সে দেখতে পায়নি আর সাপ তার পায়ে প্যাঁচ দিয়ে ধরে কামড় দিয়ে দেয়।
যাই হোক আজকে গল্পের পরের শেষ পর্ব নিয়ে চলে আসলাম। গত পর্বে বলেছিলাম লোকটির নিজের সন্তান এসেছে আবার অন্য জায়গা থেকে সন্তানসহ বিয়ে করেছে। এখন সে কি করবে বুঝতে পারছে না। এরপর দ্বিতীয় বউ যখন দেখেছে প্রথম বউয়ের প্রতি বেশি ভালোবাসা দেখাচ্ছে তখন সে রাগ করে বাপের বাড়ি চলে যায়। এরপর সেখানে গিয়ে সে ফোন করে লোকটিকে বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখাতে লাগে।
যদি তার নামে আর সন্তানের নামে সম্পত্তি লিখে না দেয় তাহলে সে লোকটির নামে মামলা করবে। এরপর বড় বউ এর সাথে কথা বলে দ্বিতীয় বউকে অর্ধেক সম্পত্তি লিখে দেয়। তারপর দ্বিতীয় বউ সম্পত্তি পেয়ে আবার ফিরে আসে। এখন লোকটি দুই বউকে নিয়েই সংসার করছে আর অন্যের সন্তানকে নিজের সন্তান হিসেবে মেনে নিয়েছে। তবে মাঝে মাঝেই দুই বউ এর মধ্যে প্রচুর ঝগড়া হয়। কিন্তু লোকটি কাউকেই কিছু বলতে পারেনা।
আরও একটি সত্য ঘটনা বলি আবারও বলছি বিধির বিধান বুঝা বড় কঠিন। আমার মা এর আপন মামা অর্থাৎ আমার নানা হয়। ছেলের আশা করতে করতে নানার তিনটি মেয়ে হয়েছে। এরপর একটি ছেলে দত্তক নিয়ে আসে। এরপর একমাস যেতে না যেতেই নানা জানতে পারে তার ছেলে হবে। সত্যিই দেখেন উপরওয়ালা কার ভাগ্যে কি লিখে রেখেছেন। এত দিন হয় না যখন দত্তক নিয়ে এসেছে তখনই ছেলে হলো। কিন্তু আমার নানা একজন সৎ লোক ছিল বলে দত্তক আনা ছেলেকে ফেরত দিয়ে আসেনি। কারণ সেই ছেলেকে তার বাবা মায়ের কাছ থেকে লিখে নিয়ে এসেছে।
এরপর আমার পালক মামা বড় হলে নানা সে যতটুকু সম্পত্তি পাবে তা তাকে দিয়ে দেয়। এরপর ঐ মামা বিয়ে করে আলাদা হয়ে যায়। এখন তারা সবাই খুব ভালো আছে। তবে আমি গ্ৰামে আসার আগে আমার সেই নানা মারা গিয়েছে। এমন কি গত বছর আমার নানিও মারা গিয়েছে। তবে নানা নিজের সন্তান আর পরের সন্তানকে সম্পত্তি সমান ভাবে ভাগ করে দেওয়ার জন্য সবাই খুব ভালো বলেছে। বর্তমানে এমন দেখা যায় না।
অনেক কথা বলেছি আমার শেষ পর্ব এখানেই শেষ করলাম। এতক্ষণ ধরে আমার পোস্ট পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার লেখা আজ এখানেই শেষ করলাম। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
আপনার চাচাতো ভাইয়ের শালাকে সাপে কামড় দিয়েছে , শুনে খুব খারাপ লাগলো আপু। আসলেই এখনকার দিনেও যে মানুষ ওঝার উপরে বিশ্বাস করে বসে থাকে, এটাই অদ্ভুত ব্যাপার। লোকটির নিজের সন্তান তার প্রথম বউয়ের পেটে আসা সত্বেও , সে ঠিক আপনার নানার মতোই দত্তক নেওয়া সন্তানটিকেও সমানভাবে দেখেছে জেনে ভালো লাগলো।
হ্যাঁ আপু এখনও কিছু মানুষ আছে যারা ওঝা বিশ্বাস করে। আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।