বাস্তবিক গল্প: ভালোবাসা ধনী-গরিব,গ্ৰাম-শহর বুঝে না(১ম পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,


আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি।

আজ আবারও ভিন্ন পোস্ট নিয়ে চলে আসলাম। আজ আপনাদের সাথে এমন এক গল্প বলবো যা একদম সত্য ঘটনা। ভালোবাসা এমন একটি শব্দ যাকে স্পর্শ করা যায় না কিন্তু অনুভব করা যায়। ভালোবাসা যেকোনো সময় যে কারো সাথে হতে পারে। সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো সাদা কালো,ধনী-গরিব, গ্ৰাম-শহর কিংবা বয়সের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। যদি সত্যিকারের খাঁটি ভালোবাসা থাকে তাহলে দূরে গেলেও তার কথা মনে থাকে। ভালোবাসা এমন একটি জিনিস যা কারো জীবনে একবার আসলে সেই জায়গা থেকে বের হয়ে আসা কখনো সম্ভব নয়। তখন সেই ভালোবাসা আপনার জীবনকে হয়তো সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তুলতে সাহায্য করবে নয়তো আপনার জীবনকে ধ্বংস করে দিবে। যাই হোক আজকের গল্প একদম বাস্তব থেকে নেওয়া। যাকে নিয়ে লেখা এই গল্প সে আমার চাচাতো বোন। তাহলে চলুন গল্প শুরু করা যাক।


IMG_20231225_112126.jpg


Location


আমার আব্বুর চাচাতো ভাই হয় তার মানে আমার চাচা। তারা স্বামী-স্ত্রী দু'জনেই জনতা ব্যাংকে চাকরি করে। সেই সুবাদে তারা কোয়াটার পেয়েছে আর মতিঝিল থাকে‌। আমি ছোটবেলা থেকেই থেকছি তারা মতিঝিল থাকে। তাদের তিন মেয়ে আর কোনো ছেলে নেই। তারা হলেন অভি, সীমান্ত আর সমুদ্র। তাদের জন্ম ঢাকায় আর বেড়ে ওঠাও ঢাকায়। তারজন্য তারা গ্ৰাম পছন্দ করতো না। তারা খুব অহংকারী ছিল আর গরীব মানুষ একদমই সহ্য করতে পারতো না। তবে মাঝারো মেয়ে একটু অন্যরকম হয়েছে। সে বাকি দুজনের থেকে একটু কম অহংকারী।


তার নাম সীমান্ত সে গ্ৰাম খুব পছন্দ করে। সেজন্য আমার চাচা বাড়ি গেলে ওকে সাথে করে নিয়ে যেতো। সীমান্ত বাড়ি গিয়ে অনেক মজা করতো। এই নিয়ে বাকি দুই বোন তাকে অনেক কিছু বলতো। তাদের নানু বাড়ি নারায়ণগঞ্জ ছিল আর ঢাকার একদম কাছেই তাদের নানু বাড়ি ছিল বলে সেখানে যেতো। তারা বাড়ি গিয়ে বলতো আমাদের নানু বাড়ি ভালো কিন্তু এই গ্ৰাম ভালো নয়। তবে যেহেতু সীমান্ত গ্ৰাম পছন্দ করতো তাই চাচা সবসময় ওকে নিয়েই যেতো।


একদিন তার ফুফাতো ভাইয়ের বিয়েতে তারা সবাই আসে আর সেদিন থেকেই যত ঝামেলা শুরু হয়। সেই বিয়েতে সীমান্ত একটি ছেলেকে দেখে খুব পছন্দ করে। ছেলেটি কনে পক্ষের ছিল আর ছেলেটিও সীমান্ত কে পছন্দ করে। এরপর তারা মোবাইল নাম্বার আদান-প্রদান করে। সীমান্ত সেই ছেলের সাথে দিনের পর দিন কথা বলে কিন্তু আমার চাচা চাচি একদমই বুঝতে পারেনি। এভাবে কয়েক মাস কেটে যায়। সীমান্ত থাকে ঢাকায় আর ছেলে থাকে গ্ৰামে। ছেলের মা নেই বাবা আছে। তিনি বিদেশে থাকে আর একটি ছেলে বলে তার সব শখ বাবা পূরণ করে।


বিদেশ থেকে টাকা পাঠায় ছেলের ভালোর জন্য কিন্তু ছেলে তা দিয়ে কি করে সেটা তো আর জানেনা। ছেলের ফ্যামেলির অবস্থাও ততটা খারাপ নয়। তবে তারা শিক্ষিত নয় কিন্তু সীমান্তর পরিবারের সবাই শিক্ষিত। এরপর একদিন তারা দু'জন সিদ্ধান্ত নেয় পালিয়ে যাবে। তা না হলে এই সম্পর্ক সীমান্তর বাবা মা কখনো মেনে নেবে না। যদি পালিয়ে যায় তাহলে তো কিছু করতে পারবে না। তখন তাদের মেনে নেবো আর এজন্যই তারা পালিয়ে যায়। এসব কথা কখনো গোপন থাকে না।


গ্ৰামের সবাই এই কথা জেনে গিয়েছে আর সবাই বলতেছে শহরে থেকেও মেয়ে এত খারাপ হলো কিভাবে। আমরা চাচা চাচি লজ্জায় গ্ৰামে যাওয়া ছেড়েই দিয়েছিল। কিন্তু পরে তার ভাই বোনেরা অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে গ্ৰামে যেতে রাজি করায়। একটা মেয়ের জন্য তাদের এতদিনের মান সম্মান সব নষ্ট হয়ে যায়। গ্ৰামের অনেক খারাপ বলছে আবার অনেকে ভালো বলছে। ভালো এই কারণে বলছে কারণ তারা যেহেতু একটু অহংকারী ছিল আজ তা শেষ হয়ে গেলো।


আমার চাচা চাচিও যে একদম ভালো মানুষ তা কিন্তু নয়। চাচিও গ্ৰাম ও গ্ৰামের মানুষ পছন্দ করতো না। সবসময় উনার বাপের বাড়ি নিয়ে পড়ে থাকতো। এমনকি আমাদের বাড়ির কোনো মেয়ে যদি এমন কাজ করতো তাহলে তাদের বাবা মাকে বাড়িতে গিয়ে অনেক কথা শুনাতো। সে জন্য সবাই বলতে শুরু করলো আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে। তবে খারাপ বলছিল কেন জানেন কারণ মেয়েটি তার বাবা মায়ের কথা একবারও চিন্তা করলো না।


সীমান্ত গ্ৰামের ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়েছে আর এরপর তার জীবন কোন দিকে বয়ে চলেছে তা জানতে হলে পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকতে হবে। যাই হোক আমার গল্প এখানেই শেষ করলাম। আবার দেখা হবে পরবর্তী পর্বের মাধ্যমে। সেই পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।


IMG_20220215_193615.png



1693314960932.jpg

আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।

আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।



C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNpz9QdwayY5Yi9CLY9MtT8LrEqRdgJNMVyDhfNXBpAU4Pibi529MgNWfUK56xyKKaicF23jVAW.png


C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ (1).png


PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WP87ckB6VoL3UD42BtkosJzLXYjuCC4ws3sxuihZ3nhDfd815qMJiiETpWAiutfN7bjurhaBbivMFVTYEDiv.png

|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||

PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9ms6NJyqDC7SoahBpoJnjzoXmRuaVTHyxffJTSjt3HCAJgZmTWQYSXVqA6yXF9TSJcoosKhzkudZxYGzUmXmso6pY5QuuDF.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP


RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1rDaeRdtDvsXGmDbuRg1s1soomTEddbTFxfMMYzob4oRFK8fTZQyYP8LbQ4tbMTAd2enV3Wq9Ze3N8TTU2.png

|| Join Heroism Discord Server for more Details ||

Sort:  
 6 months ago 

সত্যি ভালোবাসা কোন কিছুই মানে না। ধনী গরিব কেও মানে না এবং গ্রাম শহরও মানে না। আপনার অন্য দুই চাচাতো বোন একটু বেশি অহংকারী হলেও সীমান্ত অহংকারী ছিল না দেখছি। আর সে গ্রামের একটা ছেলেকে পছন্দ করেছিল দেখছি। তাদের সম্পর্ক যেহেতু কেউই মেনে নেবে না তাই তারা পালিয়ে গিয়েছিল। যার কারনে সীমান্তর বাবা-মায়ের সম্মান একেবারে মাটিতে মিশে গিয়েছিল। তবে তারা অনেক বেশি অহংকার করত, আর এই কারণে তাদের অহংকারও কমেছে। তবে যাই হোক বিয়ের পর সীমান্তর জীবনের কিরকম পরিস্থিতি হয়েছিল এটাই জানার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

 6 months ago 

সম্পূর্ণ গল্প পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 6 months ago 

বর্তমানে এরকম ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে তবে যেহেতু সীমান্ত শহরে বাস করে আর গ্রামের একটি ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়েছে তাই কি ঘটেছিল সেটা জানার আগ্রহ রয়ে গেল। পরবর্তী ঘটনাটা জানার জন্য আপনার পরবর্তী পর্ব শেয়ার করার অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

ভাইয়া পরবর্তী পর্বে সব জানতে পারবেন। ধন্যবাদ।

 6 months ago 

আপু গল্পটি বেশ সিনেমাটিক। তবে বাস্তব জীবনেও এমন অনেক গল্প আমরা দেখি। আসলে ভালোবাসা যে কখন, কোথায় আর কার সাথে হবে সেটাই কেউ বলতে পারবে না। গল্পটি পড়ে আমি নিজেও বুঝতে পারছি না, যে পরবর্তী পর্বে কি অপেক্ষা করছে। ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

আপু কিছু কিছু জীবনের গল্প থাকে যা নাটকের থেকেও নাটকীয়। সবকিছু জানার জন্য পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকতে হবে। ধন্যবাদ।

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

 6 months ago 

আপনার চাচা,চাচি প্রতিষ্ঠিত দুজনেই তাই হয়তো বা তাদের মনে অহংকার। আসলে শহরের বাচ্চারা গ্রামের পরিবেশ খুব পছন্দ করে আপনার চাচাতো বোনেরা পছন্দ করে না হয়তো ছোটবেলা থেকে মায়ের মুখে নেগেটিভ কথা শুনে শুনে বড়ো হয়েছে তাই গ্রাম তাদের পছন্দ নয়।সীমান্ত গ্রাম ভালোবাসে আর গ্রামের ছেলেকে ভালোবেসে ফেলেছে। নিশ্চিত ওদের জিবনের অনেক বাঁধা বিপত্তি এসেছে তা জাবার অধির আগ্রহে থাকলাম।ধন্যবাদ

 6 months ago 

আপু জানি না তারা কেন গ্ৰাম পছন্দ করে না। সীমান্তর জীবনে দেখা যাক এরপর কি হয়েছিল। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।

 6 months ago 

আসলে আপু কথায় আছে অহংকার পতনের মূল। বেশি অহংকার করলে এমনই হয়। আর সীমান্তের এমন ভাবে পালিয়ে যাওয়া মোটেও উচিত হয়নি। আসলে এভাবে পালিয়ে বিয়ে করলে সত্যি ভবিষ্যতে কি হয় কে জানে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে।

 6 months ago 

এভাবে বিয়ে হলে সংসারে খুব অশান্তি হয় আর সেই সংসার টিকেও থাকে না। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

 6 months ago 

এরকম গল্প গুলো পড়তে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনি আজকে আপনার চাচাতো বোনের কথা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। গ্রামের ছেলেটাকে তার অনেক বেশি পছন্দ হয়েছিল, এবং ছেলেটাও সীমান্তকে অনেক বেশি পছন্দ করেছিল। তারা দুইজন একই অপরকে ভালোবেসে পালিয়ে গিয়েছিল। নিজের বাবা মায়ের কথা সীমান্ত চিন্তা করেনি। এমনিতে কিন্তু তাদের অহংকারটা কমেছে এটা ঠিক। এরকম অহংকার করাও একেবারে ঠিক না। যাইহোক পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

 6 months ago 

হ্যাঁ আপু মেয়ের জন্য তাদের অহংকার একটু কমেছে। ধন্যবাদ গল্প পড়ে সুন্দর মতামত দেওয়ার জন্য।

 6 months ago 

সত্যি কথা বলতে ভালোবাসে এমন একটি জিনিস ভালোবাসা যদি কারোর ভিতরে একবার গেথে যাই সেই ভালোবাসা থেকে বের হয়ে আসা খবই কঠিন কাজ। আর সত্যিকারের ভালোবাসা ধনী গরিব হয়ে নিচু গ্রাম শহর কোন কিছুই দেখে না। গল্পটি পড়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে গল্পের পরবর্তী অংশটুকু পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।

 6 months ago 

আসলেই ভালোবাসা ধনী গরীব ভেদাভেদ করে না। যাইহোক কিছু কিছু মানুষ আছে যারা ঢাকা থাকে বলে অনেক অহংকার করে, আর আপনার চাচার পরিবারের মোটামুটি সবাই এমন অহংকারী। যদিও আপনার চাচা এবং সীমান্ত একটু ভিন্ন রকম। তবে আপনার চাচী যেহেতু অনেক অহংকার করতো এবং সুযোগ পেলে মানুষদেরকে কথা শোনাতো, আমার মনে হয় সেজন্যই আল্লাহ তায়ালা তাদের পরিবারকে এভাবে শাস্তি দিলো। এবার আপনার চাচীর মুখ বন্ধ হবে। যাইহোক সীমান্ত এবং সেই ছেলে পালিয়ে যাওয়ার পর কি হলো, সেটা জানার আগ্রহ অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। আশা করি পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করবেন আমাদের সাথে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 63624.94
ETH 3481.95
USDT 1.00
SBD 2.54