ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে আমার কিছু অনুভূতি ।১০% লাজুক খ্যাঁকের জন্য
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহর রহমতে এবং আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি।
আজ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে সারা বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল বিকাল থেকে দেখলাম ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রাতের বেলা হালকা বৃষ্টির জন্য অনেক দিন পর ঘুমাতে একটু আরাম হয়েছে। এখন যে কার্তিক মাস চলে বুঝার কোনো উপায় নেই। সারাদিন অনেক গরম লাগে আর শেষ রাতে হালকা ঠান্ডা। তবে শেষ রাতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। কারণ একটু হলেও শেষ রাতে আরামে ঘুমানো যায়।
সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠে দেখি প্রচন্ড বাতাস আর বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা কিছু মানুষ হয়তো অনেক শান্তিতে আছি আর যারা উপকূলীয় অঞ্চলে আছে তাদের আজ কষ্টের শেষ নেই। তাদের সবাইকে হয়তো নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে কিন্তু একটা কথা কি নিজের ঘর ছেড়ে অন্য জায়গায় থাকলে সেই ঘরের প্রতি মায়া পড়েই থাকে। তবে যেহেতু তারা বিপদে পড়েছে তাই বাধ্য হয়ে যেতেই হবে।
আমি যখন ছোটবেলায় গ্রামে ছিলাম তখন ২০০৭ সালে যখন সিডর হয়েছিল তখন বেশি টের পাইনি। আমাদের বাড়িতে তেমন বেশি সিডরের প্রভাব পড়েনি। অনেক বৃষ্টি হয়েছিল আমি শুধু সিডরের এত টুকুই বুঝতে পেরেছি। সিডর শেষে খবরে দেখতে পেলাম দক্ষিণ অঞ্চলসহ অনেক জেলায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঐ সময় একটা মজার বিষয় কি হয়েছিল জানেন আমাদের সিডরের ১৫ দিন পরে ক্লাস সেভেন থেকে বৃত্তি পরীক্ষা ছিল। বৃত্তি পরীক্ষার সাধারণজ্ঞান প্রশ্নে আসে সিডর কত তারিখ কি বার হয়েছে। আমাদের সবার তারিখ মনে ছিল কিন্তু আমরা সবাই কি বারে হয়েছে তা ভুলে গিয়েছিলাম। পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে এটা নিয়ে সবাই অনেক হাসাহাসি করেছি। আমরা ভাবতেই পারিনি এমন একটা প্রশ্ন আসতে পারে।
যাই হোক ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর বিষয়ে আসি। টিভিতে খবর ছেড়ে দেখি চট্টগ্রাম, মংলাসহ প্রায় বিভিন্ন জায়গায় ৬নম্বর সংকেত দেখানো হয়েছে। আমার শ্বশুর বাড়ি খুলনা বাগেরহাট যার কারণে অনেক টেনশনে পড়ে গিয়েছিলাম। বাড়িতে কথা বলে জানতে পারলাম তারা সবাই নিরাপদে আছে। আমার শ্বশুর বাড়িটা ছাদ দিয়ে করা আছে বলে একটু হলেও টেনশন কম হয়। আশেপাশের মানুষজন শ্বশুর বাড়িতে এসে আশ্রয় নেয়। সিত্রাং এর প্রভাব ঢাকায়ও কোনো অংশে কম ছিল না।
রাতের বেলা যখন সিত্রাং আঘাত হানে তখন এত পরিমাণ বাতাস ছিল যা বলে বুঝানো যাবেনা। জানালা একটু খুলে দেখি বাতাসের এত বেগ যা দেখলে অনেক ভয় লাগে। আমি ২০১৯সালে যখন বুলবুল হয়েছিল তখন সরাসরি উপভোগ করেছিলাম। আমি ঐ সময় কক্সবাজার ছিলাম তারজন্য নিজের চোখে সব কিছু দেখতে পেয়েছি। আমরাও কক্সবাজার ঘুরতে গিয়েছি আর এদিকে বুলবুল শুরু হয়ছে। তখন আমাদের নিয়ে সবাই অনেক টেনশনে পড়ে গিয়েছিল কিন্তু সেখানে আমরা বুলবুলের কারণে ঘুরাঘুরি করে অনেক মজা পেয়েছি।
আমি বৃষ্টিতে ভিজতে অনেক ভালোবাসি কিন্তু এমন বাতাস আসলে অনেক ভয় পাই। বৃষ্টির সাথে বাতাস আসলে শুনেছি বাতাস অনেক ভারি হয়ে যায়। একবার বাতাস ভারি হয়ে গেলে সবকিছু একদম ভেঙে চূড়মাড় করে দেয়। যাদের এলাকায় এই সিত্রাং এর বেশি প্রভাব পড়েছে তাদের সবার জন্য দোয়া রইল যাতে ও শুভকামনা রইল। আমার এই কথাগুলো যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে সুন্দর কমেন্টের মধ্যে জানিয়ে দেবেন। আমার লেখা আজ এখানেই শেষ করলাম। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আমাদের সকলকে সৃষ্টিকর্তা হেফাজত করুক। আসলে আমাদের সবার উচিত নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র অবস্থান করা। রাত্রে বাতাসের গতিবেগ অনেক বেশি ছিলো। বাতাসের সাথে যখন গাছের ডার ফালা ভেঙ্গে ঘরের উপর পড়ছে তখন আমাদের খুবই টেনশন হচ্ছিল। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
ভাইয়া আশা করি আপনাদের পরিবারের সবাই এখন নিরাপদে আছেন এবং সুস্থ আছেন। আপনার সবার জন্য দোয়া রইল। ধন্যবাদ।
আসলে উপকূলবর্তী মানুষের অনেক কষ্ট হয় এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোতে। দুর্যোগ পরবর্তীকালীন সময়ে দুর্যোগ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন হতে দেখতে পাওয়া যায়। যাক এটা শুনে ভালো লাগলো যে আপনার শ্বশুর বাড়ির মানুষেরা সবাই ভালো আছে। আর আপনার শ্বশুরবাড়ির ছাদের নিচে এলাকার আশেপাশের মানুষেরা আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
হ্যাঁ ভাইয়া যখন ঘুমিয়েছো তখন উপকূলবর্তী মানুষদের কষ্ট অনেক বেড়ে যায় । সেই তুলনায় আমরা অনেক শান্তিতে আছি। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
২০০৭ সালের সিডরের কথা আমি শুনেছিলাম। দেখেছিও বটে তবে খুব একটা শরণ নেই। তবে ২০১৯ এর বুলবুলের কথা বেশ মনে আছে। শুধু এগুলাই নয় আমাদের বাংলাদেশে এমন অনেক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে, এতে করে আমাদের দেশের অনেক ক্ষয়ক্ষতীয় হয়। গতকালের ঘূর্ণিঝড় নিজের চোখে দেখেছি তারপর আমি গ্রামে ছিলাম তাই বেশ কাছ থেকে এটা দেখেছি। আমরা ও ছয় নাম্বার সিগন্যালের অন্তর্ভুক্তই ছিলাম। ইভেন আমাদের বাড়ির উপরে বিশাল বড় এক গাছ ভেঙ্গে পড়েছে।
যেহেতু আপনি গ্ৰামে ছিলেন তারমানে একদম কাছ থেকে মনে হচ্ছে এই ঘূর্ণিঝড় দেখতে পেয়েছেন। আশা করি আপনারা সবাই এখন সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন।আপু আপনাদের জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।