মানুষের মন মানসিকতা খুবই নিচু প্রকৃতির
আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমি মোটামুটি ভালো আছি। আজ মাথা খুব ব্যথা করছে তেমনি কোমড়ের ব্যথায় খুবই খারাপ লাগছে। এত ব্যথা থাকলে ঘুম আসে না। প্রতিদিন দুপুরে খাবার পর একটু ঘুমাতে হয় কিন্তু আজ ঘুমাতে না পেরে আরও বেশি খারাপ লাগছে। আজ আমার সব কাজ এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। সকাল সকাল পোস্ট করলে বাকি কাজ করার সময় পাওয়া যায়। যেহেতু ঘুমাতে পারছি না তাই ভাবলাম পোস্ট লিখে ফেলি।
আজ এমন কিছু মা কিংবা মেয়ে অথবা মহিলাদের নিয়ে কথা বলবো যাদের জন্য এই সমাজে হাজারো নিয়ম চলে এসেছে। এই সমাজে যত কুসংস্কার,যত নিয়ম রয়েছে সব মহিলারাই তৈরি করে। আমি মেয়ে বলে যে মেয়েদের দোষ বলবো না তা কিন্তু নয়। এই সমাজে প্রচলিত একটা প্রথা হয়েছে ছেলেকে বিয়ে করালে সন্তান হলে যেন ছেলে হয় এই আশায় পরিবারের সবাই বসে থাকে। কেন মেয়ে হলে সমস্যাটা কোথায়? মেয়েরা পরের বাড়ি চলে যাবে তারজন্য মেয়ের দরকার নেই। ছেলে সারাজীবন বাবা মা কে দেখে আর মেয়েরা দেখতে পারে না বলে।
কিন্তু মেয়েরা কেন দেখতে পারে না,সেই বিষয় নিয়ে তো কোনো কথা হয় না। এসব নিয়ম তো মহিলারাই তৈরি করে। একটি মেয়ে যখন বউ হয়ে শ্বশুর বাড়িতে যায় আর তখন যদি শ্বাশুড়ি তাকে বলতো বউমা তুমি এই বাড়িতে এসেছো বলে কিন্তু তোমার বাবা-মায়ের উপর থেকে দায়িত্ব শেষ করে দিও না। একটি ছেলে বাবা মায়ের প্রতি যেমন দায়িত্ব পালন করে তেমনি তুমিও করবে। এমন কথা যদি বলতো তাহলে হয়তো এই সমাজ থেকে ছেলে হয়েছে নাকি মেয়ে হয়েছে এই প্রথা উঠে যেতো। কিন্তু এই কথা কি কেউ কখনও বলবে?
এমনও অনেক মেয়ে রয়েছে যাদের কোনো ভাই নেই। তাদের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর বাবা মা অসহায় হয়ে পড়ে। যদি সেই মেয়ের হাত পা বাঁধা না থাকতো তাহলে হয়তো বিয়ের পর স্বামী সংসার সামলিয়ে নিজের বাবা মা কে ও খুশি রাখতে পারতো। কিছু কিছু ঘর ছাড়া আমি মনে করি প্রতিটা ঘরেই এই সমস্যা রয়েছে। এগুলো হয়তো কখনো পরিবর্তন হওয়ার নয়। কারণ আদি যুগ থেকে এই ধারা চলে এসেছে আর এখন হঠাৎ করে এসে হয়তো কেউ পরিবর্তন করতেও পারবে না।
যখন একটি মেয়ে দশ মাস দশ দিন তার সন্তানকে গর্ভধারণ করে দুনিয়ার আলো দেখায় আর তা যদি হয় মেয়ে সন্তান, তখন তার উপর দিয়ে পরিবারের যে অত্যাচার চলে তা সত্যি মেনে নেওয়া যায় না। অন্যদিকে যখন ছেলে হয় তখন তার আদরের কোনো শেষ থাকে না। নিচের চোখে এমন অনেক ঘটনা দেখেছি। মানুষের মন মানসিকতা এতটা নিচু এটাই তার প্রমাণ। পরিচিত একটি মেয়ের কথা বলি,সে যখন প্রেগন্যান্ট ছিল তখন যতবার পরীক্ষা করেছে ততবারই বলছে মেয়ে হবে আর এই কথা শুনে শ্বশুর বাড়ির লোকের কাছ থেকে হাজারো কথা শুনতে হয়েছিল।
কিন্তু আল্লাহর কি লিলাখেলা যখন সন্তান হয়েছে তখন দেখে ছেলে হয়েছে। এটা দেখে তো সবাই খুশি আর মেয়েটি তখন প্রেগন্যান্ট অবস্থায় থাকা অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে থাকে। যখন তারা শুনেছিলো মেয়ে হবে তখন ঠিক মতো খেতেও দেয়নি আর এখন যত্নের শেষ নেই। মেয়েটি সারাদিন ছেলে নিয়ে খাটের উপর বসে থাকে আর সবাই কে একটু পর পর হুকুম করে। তখন আশেপাশের মানুষ জন বলাবলি শুরু করে এবারই ঠিক আছে। এসব মানুষদের এভাবেই শাস্তি দিতে হয়। যেমন কর্ম তেমন ফল। এই নিয়ম গুলো তো মহিলারাই তৈরি করেছে। একটি ছেলের যেমন তার বাবা মায়ের প্রতি দায়িত্ব থাকে তেমনি একটি মেয়েরও থাকে।
কিন্তু বিয়ের পর মেয়েরা এমন ভাবে কাটকে যায় তখন নিজেকে দেখার মতোই সময় হয় না,বাবা মা কে দেখবে কিভাবে? এভাবে হাজারো মেয়ে তার ভিতরে চাপা কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছে কিছু মানুষের নিচু মন মানসিকতার জন্য। যাই হোক অনেক কথা বলেছি আজ আর নয়। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।






Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power




.png)
এটা সমাজের একটা নিকৃষ্ট দিক আপু। এই ব্যাপারটা সমাজে অনেক দেখা যায়। এই মন মানসিকতা আসলেই ভালো না আমাদের সমাজের জন্য। এই মন মানসিকতার উপরে সবাইকে উঠে আসা উচিত। অনেক গুছিয়ে আপনি এই কথাগুলো লিখেছেন আপু। লেখাগুলোর মাধ্যমে আসলেই সমাজের বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তুলেছেন আপনি।
আপু আপনি অনেক সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে পোস্ট শেয়ার করছেন।আসলে এইরকম অনেক সমাজে দেখা যায় তাদের মন-মানসিকতা বলতে কিছু নেই।একটা ছেলের যেমন বাবা মায়ের ওপর দায়িত্ব ঠিক তেমনি একটা মেয়েরও দায়িত্ব থাকে।আমিও এই বিষয়টা বুঝিনা যে ছেলে হলে সবাই কেন খুশি হয় আর মেয়ে হলে কেনো খুশি হয় না।তবে ওই মহিলাটির ঘটনা আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো।আল্লাহ তায়ালা চাইলে সবকিছু করতে পারে।ধন্যবাদ আপু খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন।
আপনি আজ যে বিষয়টি নিয়ে পোস্ট শেয়ার করেছেন সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এই সমাজের সকল মানুষ ই ভালো নয়।আবার সকল মানুষ ই কিন্তু খারাপ নয়।তবে চিরাচরিত ভাবে কিছু নিয়ম দেখলে সত্যি ই কষ্ট লাগে।মেয়েরা ই মেয়েদের শত্রু এটা বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ই আমরা দেখে থাকি।মেয়েরা ইচ্ছে থাকলেও মা-বাবার জন্য কিছু করতে পারে না এটা বাস্তব সত্য।
অনেক সুন্দর কিছু কথা তুলে ধরেছেন আপু।আসলে আমরা মেয়েরাই মেয়েদের শত্রু।শ্বশুড়ি খারাপ তো বউ ভালো বউ খারাপ তো শ্বশুড়ি ভালো এমন একটা অবস্থা। ছেলের মতো মেয়েরাও বাবা,মায়ের পাশে দারাতে পারতো তবে কতোই না ভালো হতো।ঠিক বলেছেন আপু বিয়ের পর কিছু কিছু মেয়ের এমন অবস্থা হয় যে নিজেকে দেখার মতোই সময় হয় না বাবা,মাকে দেখবে কি করে।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।