ঈদের প্রথম দিন আমার যেভাবে কেটেছে ।
আসসালামু-আলাইকুম। "আমার বাংলা ব্লগের" এপার বাংলা আর ওপার বাংলার সকল সদস্যদের জানাই ঈদ মোবারক। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি।
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল ফিতর আজ সারা বাংলাদেশে একসাথে পালন করা হয়েছে। প্রতি বছর আমরা এই দুটি দিনের অপেক্ষায় বসে থাকি। ঈদুল ফিতর আর ঈদুল আজহা আমাদের সবচেয়ে বড় দুটি উৎসব। এই দিনে সকল মুসলমান একসাথে মিলিত হয়ে কৌশল বিনিময় করে। আমরা সবাই এই দুটি দিন অনেক আনন্দে সময় কাটাই। আমরা ব্যস্তার জন্য সবসময় একসাথে হতে পারিনা। কিন্তু এই দুটি দিন আমরা সবাই সবার পরিবারের সাথে সারাদিন কাটানোর পরিকল্পনা করি।
আমি এবার বিয়ের পর প্রথম আমার নিজের গ্রামের বাড়িতে এসেছি ঈদ করার জন্য। আমার কাছে এত দিন সবমিলিয়ে ভালো লেগেছে কিন্তু আজ কেন জানিনা ভালো খারাপ মিলিয়ে সময় কেটেছে। সকাল সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে ওঠে ফজরের নামাজ পড়লাম। এরপর সকালের নাস্তা বানাতে আমার ভাবিদের সাহায্য করতে চলে গেলাম। অবশ্য তারাই সব করে কিন্তু ঈদের দিন রান্নাবান্নার ঝামেলা থাকে বলে একটু কিছু করে দিতে হয়।
আমি সেমাই আর নুডুলস রান্না করে চলে আসলাম। কারণ আমার ছেলে তখন ঘুম থেকে ওঠে পড়েছে। তখন সকাল সাড়ে সাতটা বাজে আর আমাদের এখানে এবার ঈদের জামায়াত ১০ টায় শুরু হবে বললো। যেহেতু সময় আছে তারজন্য ছেলেকে নিয়ে একটু সময় শুয়ে ছিলাম। এরপর আবারও ছেলে ঘুমিয়ে পড়লো আর আমি ওঠে হাসবেন্ডের জামা কাপড় গুছিয়ে দিলাম। ঘরের টুকটাক কাজ করতে করতে সাড়ে আটটা বেজে গিয়েছে।
আমার আবার ভাইদের অভাব নেই। তারজন্য সিরিয়ালে সবার কাছ থেকে ঈদের সালামি নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে রইলাম। এখন কি আর সেই সময় আছে আমার মানেই আমার ছেলে। এক এক করে সবার কাছ থেকে সালামি পেয়ে গেলাম। সবাই নামাজে চলে গেলে হিসাব করে দেখি আমার প্রায় ১৫০০ টাকার মতো হয়েছে। সবার কাছ থেকে এভাবে সালামি পেয়ে আমার অনেক ভালো লেগেছে। অনেক দিন পর মনে হলো আমি এত আনন্দ পেয়েছি।
বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে মনে হয় এক বার শ্বশুরের কাছ থেকে পেয়ে ছিলাম। এরপর আরও দু-তিনটে ঈদ পালন করেছি কিন্তু কেউ দেয়নি। তবে আমি ছোটবেলা থেকে বিয়ের আগ পর্যন্ত সবার কাছ থেকে অনেক সালামি পেতাম। যখন শ্বশুর বাড়িতে ঈদ করি তখন এই দিনগুলো খুব মিস করি। যাই হোক সকাল থেকে সালামি নেওয়া পর্যন্ত ভালো সময় কেটেছে। এরপর থেকে ছেলে এত বিরক্ত শুরু করলো আর কিছুই ভালো লাগেনি।
তার বাবা ঈদগাহ মাঠে থাকা অবস্থায় খবর পেয়েছে ছেলে কান্না করে। তারজন্য আসার সময় ছেলের জন্য বড় দেখে খেলনা নিয়ে আসে। এরপর সেই খেলনা পেয়ে একটু কান্না থামে আর কিছুক্ষণ খেলাধুলা করে। এরপর সে দরজা লাগাতে গিয়ে হাতে ব্যাথা পায় আর আবার কান্না শুরু করে। কোনো কোল কিনারা না পেয়ে ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। দুপুর দুইটায় ঘুমিয়েছি আর বিকাল সাড়ে চারটায় ঘুম থেকে উঠেছি।
এরপর চিন্তা করলাম সারাদিন এভাবে বাড়িতে থাকতে একদম বিরক্ত হয়ে পড়েছি। তাই আমরা সবাই মিলে একটু ঘুরাঘুরির জন্য চলে গেলাম। আমরা কোথায় ঘুরতে গিয়েছি সেই গল্প অন্য একদিন শেয়ার করবো। আমরা ঘুরাঘুরি করে সন্ধ্যার পর বাড়িতে আসলাম। এভাবেই আমার ঈদের প্রথম দিন কেটেছে। আমার লেখা আজ এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আপনাদের সবার কাছে ভালো লাগবে। আপনাদের সাথে আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্টের মাধ্যমে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
সবাই মনে হয় এই গরমের প্রকোপ দেখে ঘুমিয়েছে প্রচুর পরিমাণে আপনার মত আমিও দিনের অর্ধেকটা সময় ঘুমিয়ে পার করে দিয়েছি। তারপরেও আপু ঈদের শুভেচ্ছা রইল ঈদ মোবারক।
ঠিক বলেছেন গরম আর রৌদের জন্য সবাই সারাদিন ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
ঈদের সালামি পেতে সবাইর ভাল লাগে। আমি বড় হয়ে গেছি তো এখন আর সালামি পায় না। সালামি দিতে হয়। আপনি ১৫০০ টাকা পেয়েছেন। ভালই পেয়েছেন। কোথায় ঘুরতে গিয়েছিলেন সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ আপু।
ভাইয়া ছেলেদের এমনি হয় সালামি দিতে হয় আর মেয়েরা শুধু পায়। আমার পরবর্তী পোস্ট শেয়ার করেছি দেখবেন আশা করি ভালো লাগবে।ধন্যবাদ
আপনি যেহেতু এই প্রথম গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদযাপন করেছেন সেহেতু আমার কাছে মনে হচ্ছে এই ঈদটা আপনার কাছে অন্যরকম এক অনুভূতি বহন করে। আসলে সবখানেই কিছু সুবিধা অসুবিধা থাকে। তারপর ও আমার কাছে মনে হয় আপনার ঈদটা ভালোই কেটেছে। ধন্যবাদ আপু।
সত্যি ভাইয়া বিয়ের পর প্রথম আমার গ্রামের বাড়িতে অন্যরকম ঈদের অনুভূতি হচ্ছে। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
বিয়ের পর প্রথম বারের মত বাবার বাড়িতে ঈদ করেছেন জেনে খুব ভালো লাগলো আপু। আসলে মাঝে মধ্যে ইচ্ছে করে একেবারে নিজস্ব মানুষদের সাথে বিশেষ দিন গুলো কাটাতে। বিয়ের পর শশুর বাড়িতে শুধু একবার শশুরের কাছ থেকে ঈদের সালামি পেয়েছিলেন। এবার তো বাবার বাড়িতে ভালোই সালামি পেয়েছেন তাহলে। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া সত্যি নিজের পরিবারের সাথে ঈদ কাটানোর মজাই আলাদা। হ্যাঁ ভাইয়া এবার অনেক সালামি পেয়েছি। আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।