জেনারেল রাইটিং || এই পৃথিবী থেকে যেন বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে
আমি @tanjima
from Bangladesh
আ সসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আজ আবারও নতুন ও ভিন্ন ধরনের পোস্ট নিয়ে চলে এসেছি। নতুন নতুন পোস্ট করতে যেমন ভালো লাগে তেমনি নতুন পোস্ট দেখতেও খুব ভালো লাগে। ভিন্ন পোস্ট না হলে কখনোই পোস্টের কোয়ালিটি বাড়ে না। তারজন্য প্রতি সপ্তাহে চেষ্টা করি ভিন্ন ভিন্ন পোস্ট শেয়ার করার জন্য। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার আজকের নতুন ব্লগ শুরু করছি।
আজ এমন একটি বিষয় নিয়ে কথা বলতে এসেছি যা একদম বাস্তবের সাথে মিল রয়েছে। কথা বলতে এসেছি বিশ্বাস নিয়ে, যা বর্তমানে মানুষের মধ্যে খুব কমই দেখা যায়। যেকোনো সম্পর্ক টিকে থাকে বিশ্বাসের উপর আর সেই বিশ্বাস যদি না থাকে তাহলে সেই সম্পর্কের কোনো মূল্য নেই। যখন কারো উপরে আপনার অনেক বেশি আত্নবিশ্বাস থেকে থাকে আর তা যদি দেখেন হঠাৎ করে শেষ হয়ে গিয়েছে তখন খুব কষ্ট লাগে। এই পৃথিবীতে আমরা সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করি মা-বাবা কে? অন্য কেউ আমাদের ঠকালেও এই দু'জন আমাদের কখনো ঠকাবে না।
আমরা চোখ বন্ধ করে তাদের বিশ্বাস করতে পারি। কিন্তু সেই বাবা-মা যখন তার সন্তানের বিশ্বাস ভেঙ্গে দেয় তারচেয়ে বড় কষ্ট আর কি হতে পারে। পৃথিবীর সব বাবা- মা এমন করে তা কিন্তু নয়, হাতে গুনা কিছু মানুষ রয়েছে যারা একেক সন্তানকে একেক চোখে দেখে। সন্তান তো সন্তানই তারা কেন মায়ের চোখে আলাদা হবে আমি বুঝিনা। আমার মা কে কখনো আমাদের তিন ভাইবোনের সাথে এমন করতে দেখেনি। কাউকে কম বেশি ভালোবাসতে দেখেনি। নিজের পরিবারে না দেখলেও কাছের একজন 'মা' কে এমন করতে দেখেছি।
সেই কথাই বলতে এসেছি, আমার চাচিকে নিয়ে এর আগে অনেক পোস্ট করেছিলাম। আপনারা জানেন আমার চাচি কেমন মানুষ ছিলেন। বর্তমানে আমার চাচি এই পৃথিবীতে নেই সেই পোস্টও করেছিলাম। মানুষ মারা গেলে তাকে নিয়ে নাকি আলোচনা করতে হয় না। কিন্তু সেই মানুষটি যখন অন্যায় করে যায় সবার সাথে, তখন আলোচনা না করেও থাকা যায় না। আমার চাচি এতটা খারাপ ছিল সত্যি আমরা জানতাম না। তিনি মারা যাওয়ার পর, কিছুদিন আগে তার আরও একটি অন্যায় সম্পর্কে জানতে পারি।
এমন অন্যায় কোনো বাবা-মা যেন তার কোনো সন্তানের সাথে না করে? বলছি কি হয়েছে,আমার চাচি আরও দু'বছর আগে তার ছোট ছেলের নামে সবকিছু লিখে দিয়ে যায়। কিন্তু এই খবর কেউ জানে না। যেহেতু আমার চাচি তার বাবার সব সম্পত্তি পেয়েছে তাই তার অনেক অহংকার ছিল। যখন চাচি মারা যায় তখন ছেলেমেয়ে সবাই সম্পত্তি ভাগ করতে চলে আসে। এরপর ছোট ছেলে বলে সব সম্পত্তি আমার আর কোনো ভাগ হবে না। এই কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে যায়। তখন তাকে দলিল দেখাতে বলে।
কিন্তু সে বলে আমি দলিল দেখাবো না আর মা আমাকে সব লিখে দিয়ে গেছে। এরপর এলাকার পাঁচজন ডাকা হয় আর তখন সে দলিল দেখায়। তার দলিল দেখার পর কারো কিছু বলার নেই। এরপর সবাই চলে যায়। তখন সে বলে যদি তোমরা বাড়ির জায়গা নিতে চাও তাহলে আমাকে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে। তাহলেই বরং আমি তোমাদের এখানে থাকতে দিবো। এই কথা জানার পর এলাকার মানুষ যেমন আমার চাচির নামে খারাপ বলতে শুরু করে তেমনি ছেলেমেয়েরাও তার মা কে খারাপ বলে।
তিনি তো মারা গিয়েছেন কিন্তু ছেলেমেয়েদের মধ্যে ঝামেলা লাগিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। এমনকি এক ছেলেকে সব দিয়ে বাকি চার মেয়ে ও দু'ছেলেকে সব কিছু থেকে বঞ্ছিত করে রেখে গিয়েছেন। মেয়ের জামাইরা শুনেছি তার শ্বাশুড়ির এমন কান্ডকাহিনীর জন্য অভিশাপ দিচ্ছিলো। এমন কাজ করলে অভিশাপ না দিয়ে কি করবে বলেন? এখন ছোট ছেলে তার মায়ের মতো সেই বাড়িতে রাজত্ব করছে আর তার অহংকারের শেষ নেই। একজন মারা গিয়েছে আর একজন রেখে গিয়েছে। কেউ কিছু বললেই বলছে আমাকে কিছু বললে আমি তোমাদের নামে মামলা করবো।
সে বলে আমি মা কে খাইয়েছি আর আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। তারজন্য সেই ঋণ শোধ করতে মা তার সব সম্পত্তি আমার নামে লিখে দেয়। এমন সন্তান আর মা কারো জীবনে যাতে না থাকে তাই বলবো। যদি থাকে তাহলে মা কিংবা ভাইয়ের উপর থেকে মানুষের বিশ্বাস উঠে যাবে। এরা পরিবার কে কলঙ্কিত করে। তাছাড়া বাকি সন্তানদে কিংবা ভাই-বোনের জীবনও নষ্ট হয়ে যাবে। যাই হোক অনেক কথা বলেছি আজ আর নয়। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্টের মাধ্যমে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
আপনি যেভাবে বিশ্বাস এবং পারিবারিক সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন, তা সত্যিই চিন্তা-প্রেরণামূলক। আপনার লেখনীতে আপনার অনুভূতি ও আন্তরিকতা প্রতিফলিত হয়েছে, যা পাঠকদের মনে গভীর ছাপ রেখেছে। আপনার ব্লগের মাধ্যমে আপনি যে সমাজের একটি গভীর সমস্যা তুলে ধরেছেন, তা অনেকের জন্য চোখ খুলে দেবে। ধন্যবাদ এমন সার্থক ও অর্থপূর্ণ কন্টেন্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়ে খুব ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
এখন সমাজে অনেক মানুষই তার সম্পত্তি একজন ছেলে অথবা মেয়ের নামে লিখে দিচ্ছে। তবে এটা খুবই খারাপ একটি কাজ। আপনার চাচী সব সম্পত্তি তার ছোট ছেলের নাম লিখে দিয়েছে তারপর আপনার চাচি মারা যাওয়ার পর সব ছেলেরা যখন সম্পত্তি ভাগ নিতে আসে তখন সবাই সেটা জানতে পারে। তবে আপনার চাচীর চিকিৎসার জন্য টাকা খরচ হয়েছে ঋণগ্রস্ত হয়েছে আপনার চাচাতো ভাই এতে তাকে কিছু টাকা দেওয়া যায় কিন্তু সম্পত্তি সম্পূর্ণ টা দিয়ে সত্যি অনেক খারাপ হয়েছে। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো আপু আর সত্যিই এখন বিশ্বাসটা উঠে গেছে সবকিছু হয়ে গেছে স্বার্থের উপর।
আপু বাবা-মা কে খাওয়ালে কি সন্তানের কাছে বাবা মা ঋণী হয়ে যায়? না হয় না, কিন্তু এই সমস্যার জন্যই বরং ছোট ছেলে কে সব লিখে দিয়ে গিয়েছে। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপু, আমার নিজের পরিবারেই এমন ঘটনা ঘটেছে,আমার বাবা আমাদের তিন ভাই বোনকে না জানিয়ে আমার বড় ভাইকে ১০ শতক জমি লিখে দিয়েছিল,যার মূল্য প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা। যখন আমরা এই কথা শুনেছিলাম তখন আমারা বিশ্বাস করতে পারিনি। পরবর্তীতে পৌরসভার কমিশনার নিয়ে এসে, আমরা অন্য তিন ভাই বোনেরা মিলে সেই সমস্যার সমাধান করেছিলাম। তবে আমার বাবা কেন যে এমন কাজ করেছিলেন, তা এখনো মাথায় আসে না। হয়তো আমার বাবা তার বড় ছেলের প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসায় এমনটি করে ফেলেছিল। সব পরিবারে হয়তো এমন ঘটনা ঘটে না, তবে কিছু কিছু পরিবারে অবশ্যই ঘটে আপু। আমিই তার বাস্তব প্রমাণ। যাইহোক আপু আপনার চাচি মোটেই ভালো কাজ করেনি, এক ছেলেকে সবকিছু লিখে দিয়ে। এজন্য পরকালে অবশ্যই তাকে হিসাব দিতে হবে।
ভাইয়া আপনার পরিবারেও এমন ঘটনা ঘটেছে জেনে খারাপ লাগলো। যারা এমন পরিস্থিতিতে পড়ে তারাই বুঝে সেই কষ্ট। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
মা গ্রামে যেই ছেলের সঙ্গে থাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় সেই ছেলের নামে সম্পত্তি লিখে যায়। হয়তো ছেলে তাকে এমনভাবে বোঝায় যে সে লিখে দিতে বাধ্য হয়। তারপরও এই কাজটি করা একদমই ঠিক নয়। কারো হক নষ্ট করলে তার শাস্তি পেতে হয়। আপনার চাচী এরকম একটি কাজ করে বাকি সন্তানদের কাছ থেকে অভিশাপ কুড়াচ্ছে। মৃত্যুর পরেও তার গুনাহ এর খাতা খুলে রেখে গিয়েছে এই কাজের মাধ্যমে। আল্লাহ ক্ষমা করুক আপনার চাচীকে।
ঠিক বলেছেন আপু মৃত্যুর পরেও তিনি গুনাহ এর খাতা খুলে রেখে গিয়েছেন। সবাই এখন এই ধরনের কথাই বলছে। আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
এমন ঘটনা প্রায় লক্ষ্যণীয়। কথায় আছে না মরেও যায় মরেও যায়। বর্তমান সমাজের ঠিক এইটা বাস্তবায়ন হয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়। যাইহোক সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেছেন, আশা করি এটা অনেকের জন্য জনসচেতন মূলক পোস্ট হবে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া মরেও যায় আর মেরেও যায়। যার জন্য যারা বেঁচে থাকে তাদের যত সমস্যা হয়। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
একজন মায়ের কাছে তার সব সন্তান সমান। কাউকে দুই নজরে দেখে না। কিন্তুু আপনার চাচি কেন এমন কাজ করলো বুঝতে পারলাম না। হয়তো ছোট ছেলেকে অন্যদের থেকে কিছু বেশি দিতে পারে। তাই বলে একেবারে সব কিছু দিয়ে দিবে,সেটা ঠিক করেনি। যায়হোক মৃতু মানুষকে নিয়ে আর কিছু বলার নেই। ধন্যবাদ।
আপু সবাই সেটাই বলছিল একজনকে সব লিখে দিয়ে ভালো করেনি। যাই হোক সুন্দর মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার চাচি মারা গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু তিনি সত্যিই তার ছেলেমেয়েদের ভেতর ঝামেলা লাগিয়ে দিয়ে গেছেন। তিনি কি একবারও চিন্তা করেননি যে, ছোট ছেলের নামে যদি সব সম্পত্তি লিখে দেওয়া হয়, তাহলে বড় ধরনের একটা ঝামেলা হতে পারে ভাই বোনদের মধ্যে। এরকম ঘটনা যদি আরো দুই একটা দেখা যায় আমাদের সমাজে, তাহলে তো মা এবং সন্তানের ভিতর যে বিশ্বাস, ওটা দিন দিন উঠে যাবে।
ভাইয়া এখন সবাই এই কথাটাই বলতেছে তিনি যে কাজ করে দিয়ে গেছে এতে ছেলেমেয়েদের মধ্যে এখন বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই কাজটি তিনি নিয়ে একদমই ভালো করেননি কিন্তু এখন তো আর এই কথাগুলো বলেও কোন লাভ নেই। যিনি চলে যাওয়ার জন্য তো চলে গিয়েছেন, ঝামেলা রেখে দিয়েছেন। যাই হোক আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।