বাস্তবিক গল্প: ভালোবাসা ধনী-গরিব,গ্ৰাম-শহর বুঝে না(২য় পর্ব)
হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি।
প্রথম পর্বে বলেছিলাম সীমান্ত গ্ৰামের ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়েছে। কথায় বলে না মানুষের দুটো রূপ থাকে। আসলে কথাটা সত্যি সীমান্ত যেই ছেলেকে এত ভালো যেন সব ছেড়ে তার হাত ধরে পালিয়ে গিয়েছে সেই ছেলের দু'টো রূপ প্রেম করার সময় বুঝতে পারেনি। যখন দু-তিন পার হলো তখন দেখে তার স্বামী নেশা করে বাড়ি ফিরে। তখন সীমান্ত বলে তুমি এত খারাপ জানা ছিল না এই কথা বলায় তার গায়ে হাত তুলে। কিন্তু এই কথা সীমান্ত কাকে বলেনি চিন্তা করেছে তার ভালোবাসা দিয়ে স্বামীকে ভালো করে নেবো। কিন্তু বলেনা যে ভালো হওয়ার সে এমনেতেই ভালো হয়।
কয়েক মাস যাওয়ার পর সীমান্তর বাবা মা চিন্তা করে যত যাই হোক মেয়ে তো আমাদের তাই এভাবে আর রাগ করে থাকা সম্ভব নয়। তারপর তারা সীমান্তকে দেখতে যায় আর গিয়ে সীমান্তর অবস্থা দেখে তার বাবা মা কেঁদে দেয়। যেই মেয়ে সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্ম হয়েছে,যে কিনা কখনো গ্লাসে পানি ঢেলে খায়নি এমনকি যখন যা চেয়েছে তাই পেয়েছে সেই মেয়ের আজ এমন করুন পরিণতি। লাকড়ি চুলায় রান্না করে আর সংসারের সব কাজ একলা হাতে করতে হয়। এমনকি কাপড় চোপড়ও ধুতে হয়। যার বাসায় এত কাজের লোক ছিল সেই মেয়ে আজ অন্যের বাসায় কাজ করে।
এরপর সীমান্তর বাবা মা বুঝিয়ে শুনিয়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসে। এরপর সীমান্তর দুই বোন ,বাবা মা,নানা নানী আর মামা মামীরা অনেক বুঝিয়ে ঐ ছেলেকে ডিভোর্স দিতে রাজি করায়। যখন সীমান্তর স্বামী দেখছি পাঁচ দিন হয়েছে গিয়েছে সে আসছেনা আর কল দিলে রিসিভ করে না তখন তার মনে সন্দেহ জাগে। এরপর সীমান্তর স্বামী ঢাকায় আসে আর তাদের বাসায় যেতে চাইলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তখন সীমান্তর স্বামী তাদের বাসার আশেপাশে বাসা ভাড়া নেয় আর সীমান্তর উপর খোঁজ রাখে।
এরপর অনেক কষ্টে সে সীমান্তর সাথে যোগাযোগ করে আর সে সীমান্ত কে প্রতিদিন ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। আপনাদের আগেই বলেছিলাম সীমান্ত বাকি দুই বোন থেকে আলাদা। তখন সীমান্ত আবারও তার স্বামীর কথায় রাজি হয়ে ডিভোর্স না দিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর তার বাবা মা চিন্তা করে এই মেয়েকে আর কখনো বাড়ি যায়গা দেওয়া যাবে না। ঐদিকে কিছুদিন যাওয়ার পর সীমান্তর স্বামী আবারও নেশা করতে শুরু করে। তখন এসব সহ্য করতে না পেরে এবার সীমান্ত একলাই সিদ্ধান্ত নেয় তার এভাবে থাকা সম্ভব নয়। তাই তার বাবা মায়ের কাছে ফিরে যায়। বাবা মা তো তাই আবার মেনে নেয়।
এদিকে ঐ ছেলে আমাদের গ্ৰামে নেশা করে গিয়ে বাজারে দাড়িয়ে সীমান্তর বাবা মায়ের নামে অনেক খারাপ কথা বলে আসে। এরপর এলাকার মানুষ জন এসব দেখে ছি ছি করতে থাকে। এদিকে হঠাৎ সীমান্ত অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন ডাক্তার ডাকা হলে ডাক্তার সুখবর দিয়ে যায়। সীমান্ত মা হতে চলেছে এই কথা বলে ডাক্তার। এই কথা শুনে সবাই যেন আকাশ থেকে পড়ে। এখন কি করবে আর কি হবে এসব নিয়ে সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ে।
এরপর সীমান্তর জীবনের মোড় কোন দিকে ঘুরে তা জানতে হলে পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকতে হবে। যাই হোক আমার গল্প এখানেই শেষ করলাম। আবার দেখা হবে পরবর্তী পর্বের মাধ্যমে। সেই পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
সৃষ্টিকর্তা মানুষের মধ্যে ভালোবাসা নামক একটা যন্ত্র ঢুকিয়ে দিয়েছে। যে যন্ত্র কথা শোনে না কোন মানুষের দেখা না কোন ধনী গরিব। শুধু জানে ভালবাসতে, ভালোবাসার এই কঠিন মন্ত্র যেন মানুষকে সবসময় তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। ভালোবেসে সংসার করতে যে মানুষ কিছু ভুল করে থাকে। নেশাগ্রস্ত মানুষ নেশা করে নিজের আত্মীয়স্বজন সম্পর্কে বাজে মন্তব্যের জন্য সবাই তাকে ছি ছি তো করবে এটাই স্বাভাবিক। দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো তৃতীয় পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
গঠনমূলক মন্তব্য পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
যারা একবার নেশার জগতে হারিয়ে যায় তারা ওখান থেকে আর ফিরে আসতে পারেনা সহজে। বারবার চেষ্টা করলেও তারা আবারও নেশার জগতে তলিয়ে যায়। সীমান্তর স্বামীর ক্ষেত্রেই ঠিক তেমনি হচ্ছিল। যদিও সীমান্ত একা ছিল জন্য স্বামীকে ছেড়ে চলে আসতে পেরেছে। এখন যেহেতু তার বাচ্চা হতে যাচ্ছে সে কি আবারো স্বামীর কাছে ফেরত যাবে। যাইহোক আপু বেশ ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
হ্যাঁ আপু একবার নেশার জগতে গেলে আর কখনো ফিরে আসা সম্ভব নয়। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
সীমান্ত বুঝতেই পারেনি তার জীবনে কি হতে চলেছে। সীমান্ত গ্রামের ওই ছেলেটাকে অনেক বেশি ভালো ভালোবাসতো। তাইতো তার সাথে পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার স্বামীর এরকম একটা রূপ রয়েছে, এটা জেনে নিজের কাছেও খুব খারাপ লেগেছে। পরবর্তীতে সীমান্তর বাবা-মাতাকে নিয়ে আসলেও, সীমান্ত আবারো পালিয়ে যায় দেখছি। কিন্তু পরবর্তীতে সে নিজেই বুঝতে পেরেছে, ওই ছেলের সাথে থাকা তার সম্ভব হবে না। আর এজন্যই তো সে আবারও তার বাবা-মায়ের কাছে চলে এসেছিল। কিন্তু এখন দেখছি সেই প্রেগন্যান্ট। দেখা যাক সীমন্তের জীবনের পরবর্তী সময় গুলো কি রকম যায়। পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
ভালোবাসা কোন কিছুই মানে না এটা ঠিক। এই জন্যই তো সীমান্ত সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছিল ছেলেটার কাছে। কিছু কিছু মানুষের যে দুইটা রূপ থাকে এটা তো আর সীমান্ত বুঝতে পারেনি। তার বিয়ের কয়েক দিন পরে সে তার স্বামীর আরেকটি রূপ দেখতে পেয়েছিল। তার বাবা-মা বেশি দিন রাগ করে থাকতে পারেনি তাই তো তার কাছে গিয়েছিল। মেয়ের এরকম অবস্থা দেখলে যে কোন বাবা মায়ের কষ্ট তো হবেই। মেয়েকে নিয়ে যাবার পরেও দেখছি সে তার স্বামীর কথায় ভুলে আবার চলে এসেছে। আবারও তার উপর অত্যাচার করার কারণে সে তার সবকিছু বুঝতে পেরেছে। তবে তার প্রেগনেন্সির খবর শুনে সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েছিল দেখছি। শেষে কি হয় এখন এটাই দেখতে হবে।
ভাইয়া এর পরের পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
এসব ছেলেরা কারো ভালোবাসার যোগ্য নয়। সীমান্ত খুবই ভালো একটি মেয়ে, তাইতো এতো কিছুর পরেও আবার পালিয়ে গিয়েছিল। তবুও সেই ছেলে নেশা করে আবারও মারধর করে সীমান্তকে। আসলে নেশাখোরদের সাথে সংসার করা যায় না। তবে সীমান্ত যেহেতু গর্ভবতী, এখন কি হবে সেটাই দেখার বিষয়। পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত জানতে পারবো তাহলে।