বুক রিভিউ (হাজার বছর ধরে ) || ১০% প্রিয় লাজুক-খ্যাক🦊এর জন্য
আজ- প্রহেলা ফাল্গুন, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ সোমবার শীতকাল
আসসালামু-আলাইকুম
![images.jpeg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmdRcU1UUDkxdJWa43j8gS2UGY8X4mPua3PBk9R2aLLpcr/images.jpeg)
Source
আমি আপনাদের মাঝে এর আগে অনেকবার ডাই, রেসিপি এবং আর্ট শেয়ার করেছি তবে কখনো বুক রিভিউ দেওয়া হয়নি। আজ আমি হাজির হয়েছি আমার পছন্দের একটি বইয়ের রিভিউ নিয়ে। আমার আজকের বুক রিভিউর নাম হলো হাজার বছর ধরে উপন্যাস। এই উপন্যাস আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। এটি নিয়ে মুভিও বের হয়েছে সেটিও আমি দেখেছি। আমার মনে হয় এই উপন্যাস এবং মুভির নাম সবাই শুনেছেন। তাহলে চলুন দেখে নেই আবার সেই উপন্যাসের রিভিউ।
বইটির নামঃ হাজার বছর ধরে
লেখকঃ জহির রায়হান।
হাজার বছর ধরে নামকরণ করার কারণ
হাজার বছর ধরে নামকরণের কারণ হলো এই বাংলায় কত নবাব,জমিদার সহ কত শাসকরা শাসন করে গেছেন কিন্তু এই গ্রামীন সমাজের কোনো পরিবর্তনই হয়নি। এই উপন্যাসে গ্রামীন সমাজ শিক্ষা ও আধুনিকতা থেকে অনেক দুরে পড়ে আছে। এই সমাজে এখনো ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কার দিয়ে ভরে আছে।
প্রিয় চরিত্র
এই উপন্যাসের মূলচরিত্রের নাম হলো মন্তুু। সে খুবই সহজ সরল একজন মানুষ। মন্তুু বিয়ে করেনি তবে এই উপন্যাসের নায়িকা টুনিকে সে মনে মনে অনেক পছন্দ করে। কিন্তু টুনি মকবুলের বিবাহিত স্ত্রী বলে মন্তুু সাথে আর সামনে এগিয়ে যেতে চায় না।
উপন্যাসের সংক্ষিপ্ত বর্ননা
ছোট ছোট অনেকগুলো ঘর মিলে শিকদার বাড়ি। এই বাড়ির কর্তা মকবুল। মকবুলের তিনটি বউ আমেনা, ফাতেমা আর গল্পের নায়িকা টুনি। মকবুলের কথা হলো টাকা খরচ করে বউ এনেছি তুলে রাখার জন্য নয়। এজন্য একটু ভূল হয়ে গেলেই বউদের পিটায়। এদিকে গল্পের নায়ক মন্তু মিয়া মকবুলের চাচাতো ভাই। ছোট বেলায় বাবা- মা মারা যাওয়ার পর মকবুলের সংসারে সে বড় হয়। সেই সম্পর্কে টুনি মন্তুর ভাবি হয়। তাদের দুজনের মধ্যে একটা সম্পর্ক চলে সেটা কেউ বুঝতে পারেনা। পুরো গ্রাম যখন ঘুমিয়ে পরে পুব আকাশে যখন শুকতারা উঠে যায় তখন টুনি আর মন্তু বেড়িয়ে পড়ে। তারা দুজন মিলে কখনো বিলে শাপলা তুলে,মালা গাঁথে আবার কখনও অন্যের পুকুরে মাছ চুরি করে।
অন্যদিকে নন্তু শেখের মেয়ে আম্বিয়া সেও মন্তুকে মনে মনে পছন্দ করে। গ্রামে গুঞ্জন শুরু হয় মন্তু আর আম্বিয়ার বিয়ে নিয়ে সে কথা আবার টুনি সহ্য করতে পারেনা। এভাবেই চলতে থাকে তাদের সবার জীবন। একদিন হঠাৎ করে মকবুল অসুস্থ হয়ে মারা যায় সেসময় মন্তু টুনিকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু টুনি রাজি হয়না কারণ সে এখন বিধবা। যদি সে এখন মন্তুকে বিয়ে করে তাহলে তাদের সমাজচুত্য করা হবে। বিভিন্ন মানুষ তাদের নিয়ে বিভিন্ন কথা বলতে থাকবে এটা টুনি মেনে নিতে পারে না। সবদিক চিন্তা করে টুনি মন্তুকে বলে তাকে যেন বাপের বাড়ি দিয়ে আসে। আজও গ্রাম বাংলায় একজন নারীর অবস্থান অনেক ঠুনকো। একজন বিধবা নারীর নতুন করে সংসার করা কেউ মেনে নিতে পারে না। এই প্রথাগুলো এখনো গ্রামে দেখা যায়। এভাবেই চলে যায় দিন হাজার বছরের সেই রাত শুধু বাড়তেই থাকে।
আমার পছন্দের কিছু অংশ
আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে মন্তু ও টুনি যখন রাতের বেলা চুপি চুপি বের হয়ে শাপলা তুলতে যেতো। আবার মন্তু জাল নিয়ে মাছ ধরতে গেল যখন টুনিও পিছনে পিছনে গিয়ে হাজির হতো। সে সময় আকাশে চাঁদ ছিল কিন্তু চাঁদনী ছিল না। কালো মেঘে ঢেকে ছিল পুরো আকাশ। ঐ সময় জমির মুন্সির কাছে দুজনে প্রায় ধরাই পড়ে গিয়েছিল সেখান থেকে বেঁচে গেল। তখন তাড়াতাড়ি করে মন্তু পানিতে নেমে গেল আর টুনিয়ে দৌড়ে ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে পড়লো।
সব মিলিয়ে আমার অনুভূতি
এই উপন্যাস পড়ে অনেক কিছু জানা যায় যেমন আমরা কখনো পুঁথি পড়া দেখিনি। আবার হয়তো এখনো আগের মতো গ্রামে কুসংস্কার রয়েছে তবে মানুষের মন মানসিকতার অনেক পরিবর্তন এসেছে। এই উপন্যাসের নায়িকা টুনির বয়স অল্প অথচ স্বামী থাকা অবস্থায় অনেক কিছু চিন্তা করেছে কিন্তু যখন তার স্বামী মারা গেল তখন সে আর আগের মতো কোনো কিছু ভাবতে পারেনি। অবশেষে সে চলে যায় তার বাপের বাড়ি। কিন্তু বর্তমান যুগের মেয়েরা স্বামী মারা গেলে আর চুপচাপ বসে থাকে না নিজেকে কিভাবে এই সমাজের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে হয় সেটা তারা বুঝে গেছে। শেষ অংশটা পড়ে স্তব্ধ হয়ে যেতে হয় রাত নামছে, হাজার বছরের সেই পুরোনো রাত।
রেটিং
বইটিকে আমি দশের মধ্যে রেটিং হিসেবে ৯.৫ দিব। কারণ সব দিক থেকে এই উপন্যাস অনেক ভালো লাগে। গ্রামের প্রতিটা কুসংস্কার এই উপন্যাসে ফুটে উঠেছে। ভালোবাসা আর ভালোলাগা কেউ কাউকেই কোনো দিন আর বলতে পারেনি।
নিজের সম্পর্কে কিছু বলা
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
![C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNpz9QdwayY5Yi9CLY9MtT8LrEqRdgJNMVyDhfNXBpAU4Pibi529MgNWfUK56xyKKaicF23jVAW.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmbja4sC5ZUQ1cTzZwYPsSiJ8fyCFS8g2jAJtXkWi8s8oi/C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNpz9QdwayY5Yi9CLY9MtT8LrEqRdgJNMVyDhfNXBpAU4Pibi529MgNWfUK56xyKKaicF23jVAW.png)
Twitter Link
https://twitter.com/tanjima_akter16/status/1493145294191542285?s=20&t=LChn45zJoQOtTxw1xqrmPA
জহির রায়হানের রচিত হাজার বছর ধরে বইটি খুবই চমৎকার একটি বই এর আগেও শুনেছিলাম। আজকের আপনার পোস্ট দেখে বই পড়ার আগ্রহ টা আরো বেড়ে গেল। খুব সুন্দর করে আপনি আজকে বইটির রিভিউ শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
অনেক সুন্দর একটি উপন্যাস ভাইয়া। যদি সময় হয় এক বার পড়ে নেবেন। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
খুব সুন্দর একটি বই রিভিউ করেছেন আপু হাজার বছর ধরে এই ছবিটি আমি দেখেছি বইটা পড়তে ভালো লাগে সবথেকে ভালো লাগে ছবিটি দেখতে আপনাকে ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি বুক রিভিউ করার জন্য শুভকামনা রইল আপনার জন্য আপু
সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্যও শুভকামনা রইল।
হাজার বছর ধরে উপন্যাসটা আমার পড়িনি। কিন্তু এই উপন্যাসের উপর নির্মিত হাজার বছর ধরে মুভিটা আমি দেখেছি। সেখান থেকে উপন্যাস সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি। দারুণ রিভিউ করেছেন উপন্যাস টার। এখানে গ্রামের সহজ সরল মানুষের হাজার বছরের জীবনধারণ তুলে ধরা হয়েছে। আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল।।
অনেক সুন্দর একটি গল্পের বুক রিভিউ দিয়েছেন। হাজার বছর ধরে এই গল্পের কাহিনী আমার অনেক পছন্দের। এরপুরো কাহিনীটি আমি অনেকবার পড়েছিলাম। আপনি খুব সুন্দর ভাবে পুরো কাহিনী উপস্থাপন করেছেন। আমাদের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় একটি উপন্যাস রিভিউ নিয়ে আসার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
জহির রায়হানের হাজারে বছরই ধরে গল্প উপন্যাস এখনো পড়া হয়নি।আপনার সংক্ষিপ্ত রিভিউ পড়ে খুবই ভালো লেগেছে। আমার কাছে উপন্যাস পড়তে খুবই ভালো লাগে। আপনি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন ও বর্ণনা করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।
সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।
আপনার হাজারবছরধরে বুক রিভিউ টি সত্যিই অসাধারন এবং আপনি অনেক সুন্দর করে হাজার বছর ধরে উপন্যাসের সম্পূর্ণ কাহিনী তুলে ধরেছেন। তবে হ্যাঁ ঠিক বলেছেন কত জমিদার আসলো গেল কিন্তু গ্রামীণ চিত্র গুলো কোন পরিবর্তন হয়নি। যেমনটি ছিল তেমনি আছে। তবে বর্তমানে কিছুটা পরিবর্তন হলেও কুসংস্কার রয়েছে অনেক। আর হাজার বছর ধরে উপন্যাসের চরিত্র আছেন অনেক, তার মধ্যে ওলাবিবি, মন্ত, টুনি, মুকবুল, গনুমোল্লা। মন্ত-টুনি চরিত্রটি খুব সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছিল এবং আকর্ষণীয় কিছু কাহিনী। জহির রায়হানের গল্পটিতে সবচেয়ে বেশি ফুটে উঠেছে দারিদ্রতা বিষয়টি। দারিদ্রতা মানুষকে অনেক খারাপ পরিস্থিতিতে নিয়ে যায়। যাই হোক আমি আর বেশি কিছু বলতে চাইছি না। তবে এটা আমার খুব প্রিয় একটি গল্পের বই ছিল। আর আপনি আমাদের সাথে এত সুন্দর করে বুক রিভিউ উপস্থাপন করার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা।
সত্যি বলেছেন ভাইয়া দারিদ্রতা মানুষকে খারাপ দিকে নিয়ে যায়। উপন্যাসে আরো অনেক চরিত্র আছে কিন্তু আমি সংক্ষেপে প্রধান কয়েকটি চরিত্র উল্লেখ করেছি। সুন্দর করে গুছিয়ে কমেন্ট করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
জহির রায়হানের হাজার বছর ধরে উপন্যাসটি আমি দুইবার মুভিতে দেখেছি।খুবই ভালো কাহিনী ও গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবন সম্পর্কে ফুটে উঠেছে।কুসংস্কার ঘেরা মানুষের মনের প্রতিফলন দেখা গেছে ।আপনি খুব সুন্দর করে বুক রিভিউ দিয়েছেন ।ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি কমেন্ট করে পাশে থাকার জন্য। এই উপন্যাসটি আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।