গল্প: মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়া যেন পাপ
হ্যালো বন্ধুরা,আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি।
আজ আবারও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে চলে এসেছি। সবসময় নতুন পোস্ট শেয়ার করতে খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে যখন আমি জেনারেল রাইটিং ও গল্প শেয়ার করি তখন বাস্তবের কথাই শেয়ার করতে চাই। তেমনি আজ একদম বাস্তবের ঘটনা শেয়ার করতে চলে এসেছি। আশা করি আমার এই গল্প আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। এই পৃথিবীতে কত ধরনের মানুষ রয়েছে তা হিসেব করা যাবে না। সাধারণত আশেপাশের মানুষজন কেমন তা ই তো আপনি কিংবা আমি এখনও বুঝতে পারিনা। তাই তো প্রতিনিয়ত কিছু মানুষ আমাদের ক্ষতি করে যাচ্ছে। অনেক সময় কাছের মানুষের দ্বারা বিপদ হবে জেনেও কিছু বলা যায় না । কিছু কিছু মানুষের মন মানসিকতা সত্যি খুবই নিচু প্রকৃতির। তাদের দেখলে অনেক সময় করুণা হয়।
ব্যানার PixeILab দিয়ে বানানো
আজ এমন একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি যা শুনলে আপনাদের কাছেও অনেক ভালো লাগবে। মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়া কি অপরাধ এটাই বুঝলাম না? যেদিকে তাকাই শুধু শুনি মেয়ে হয়েছে কেন,ছেলে হলো না কেন? এই তো কিছুদিন আগে আমার চাচার মেয়ে হয়েছে তাই তিনি মুখ পর্যন্ত দেখেনি। উনার এর আগে একটি মেয়ে ছিল আর চেয়েছিলো এবার যাতে ছেলে হয়। অনেক বার টেস্ট করেছে আর প্রতিবার ডাক্তার বলেছে ছেলে হবে। কিন্তু হওয়ার পর যখন দেখে মেয়ে হয়েছে তখন তিনি খুব বিরক্ত হয়ে পড়ে।
তেমনি একটি মেয়ের গল্প বলতে এসেছি। নাম তার তৃণা আর তারা দুই ভাই একবোন। যখন তৃণার জন্ম হয় তখন তার বাবা চেয়েছিলো যাতে প্রথম সন্তান ছেলে হয়। সব রিপোর্ট ঠিক ছিল ছেলে হবে বলেছে। সিজার করতে গিয়েছে আর হয়েছে মেয়ে। তখন তৃণার বাবা মেয়ের মুখ দেখতেও চায়নি আর ডাক্তারদের বারবার বলছে তারা বাচ্চা পাল্টিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমি একটা জিনিস বিশ্বাস করি তা হলো অন্ধকার ঘরে কি আছে কি হবে কেউ বলতে পারে না। হতে পারে বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। তারপরও উপরওয়ালার উপর বিশ্বাস রাখা উচিত।
সন্তান যা হয় তাই মেনে নেওয়া উচিত কিন্তু মানুষ কেন এমন করে বুঝি না। এরপর থেকে তৃণার মায়ের উপর যেমন অত্যাচার শুরু হয় তেমনি তৃণাকে পরিবারের কেউ সহ্য করতে পারে না। এভাবে অবহেলায় তৃণা বড় হতে থাকে। এরপর তৃণার আরও দুই ভাই হয়। তাদের সবাই খুব ভালোবাসে আর তৃণার বাবাও। তৃণার উপর এমন অবিচার দেখে সে খুব কষ্ট পায়। এরপর সে সিদ্ধান্ত নেয় পড়ালেখা করে অনেক বড় হবে আর সে দুনিয়ার সবাইকে দেখিয়ে দেবে মেয়ে হয়েও বাবা মায়ের মুখ উজ্জ্বল করা যায়।
তৃণা দেখতে খুব সুন্দর ছিল। সবার অবহেলায় সে বড় হতে থাকে। এক সময় তৃণা এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে আর সে মেডিকেলে চান্স পায়। এরপর সে সেখান থেকেও প্রথম স্থান অধিকার করে ডাক্তার হয়ে বের হয়। তৃণার ডাকনাম চারোদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তৃণার বাবা বুঝতে পারে মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়া অন্যায় নয়। একটি মেয়ে চাইলে অনেক কিছু করতে পারে।
তখন তৃণার বাবা তৃণাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আর কান্না করে বলে মা তুমি আমায় ক্ষমা করে দাও। আমি বুঝতে পারিনি একটি ঘরে মেয়ে থাকা কতটা প্রয়োজন। বাবা মায়ের সব কষ্ট ছেলেদের থেকে মেয়েরা বেশি বুঝে। তখন তৃণা তার বাবাকে ক্ষমা করে দেয় আর তারা সুখে শান্তিতে দিন কাটাতে লাগে। এই ছিল আমার আজকের গল্প। আমার গল্প এখানেই শেষ করলাম। আশা করি আমার গল্প পড়ে আপনাদের কাছে খুব ভালো লেগেছে। আজ এই পর্যন্তই আবার দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টের মাধ্যমে। সেই পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
![C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNpz9QdwayY5Yi9CLY9MtT8LrEqRdgJNMVyDhfNXBpAU4Pibi529MgNWfUK56xyKKaicF23jVAW.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmbja4sC5ZUQ1cTzZwYPsSiJ8fyCFS8g2jAJtXkWi8s8oi/C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNpz9QdwayY5Yi9CLY9MtT8LrEqRdgJNMVyDhfNXBpAU4Pibi529MgNWfUK56xyKKaicF23jVAW.png)
![PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmR2mawKEaaBp8XoGwrwWJn88s1nvkJG8YiBrtepRVPpVF/PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png)
![2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WP87ckB6VoL3UD42BtkosJzLXYjuCC4ws3sxuihZ3nhDfd815qMJiiETpWAiutfN7bjurhaBbivMFVTYEDiv.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmdkckySfU4dLA17wixLyomDfqmijASCbrGn3ceCYuhgNM/2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WP87ckB6VoL3UD42BtkosJzLXYjuCC4ws3sxuihZ3nhDfd815qMJiiETpWAiutfN7bjurhaBbivMFVTYEDiv.png)
![PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmR2mawKEaaBp8XoGwrwWJn88s1nvkJG8YiBrtepRVPpVF/PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png)
![2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9ms6NJyqDC7SoahBpoJnjzoXmRuaVTHyxffJTSjt3HCAJgZmTWQYSXVqA6yXF9TSJcoosKhzkudZxYGzUmXmso6pY5QuuDF.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9ms6NJyqDC7SoahBpoJnjzoXmRuaVTHyxffJTSjt3HCAJgZmTWQYSXVqA6yXF9TSJcoosKhzkudZxYGzUmXmso6pY5QuuDF.gif)
![PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmR2mawKEaaBp8XoGwrwWJn88s1nvkJG8YiBrtepRVPpVF/PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
![RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1rDaeRdtDvsXGmDbuRg1s1soomTEddbTFxfMMYzob4oRFK8fTZQyYP8LbQ4tbMTAd2enV3Wq9Ze3N8TTU2.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZQ7F9Zp7jdu2Dym9AU62Tj5fHdsZoC1pamo6EkKJXC7K/RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1rDaeRdtDvsXGmDbuRg1s1soomTEddbTFxfMMYzob4oRFK8fTZQyYP8LbQ4tbMTAd2enV3Wq9Ze3N8TTU2.png)
বর্তমান যুগে আমাদের সমাজে এখনো কুসংস্কার শরীয়তে রয়েছে মানুষের মনে। বেশ কিছু ঘুরে ধরা সমাজের মানুষ মেয়েদেরকে অভিশাপ মনে করে। কিন্তু আমি তো এর মধ্যে কোন কারণ খুঁজে পাই না কেন মানুষের মধ্যে এত পার্থক্য আর অবহেলার দৃষ্টি। যাইহোক একটি যোগ্য বা মেয়ের গল্পকে কেন্দ্র করে সুন্দর এই পোস্ট সাজিয়েছেন পড়ে ভালো লাগলো তবে প্রত্যেকটা বাবা বা আত্মীয় স্বজনের বোঝা উচিত একজন কানা মানুষের মূল্য আছে যদি মূল্যায়ন করতে পারা যায়। শুধু মেয়েটার ডাক্তার হওয়ার বিষয়ে যে মূল্যায়ন করতে হবে আর যে ডাক্তার হয়নি তার মূল্যায়ন করা যাবে এটা কিন্তু কখনোই ঠিক নয়। মাত্রই মহান সৃষ্টিকর্তার সেরা জীব।
ভাইয়া বর্তমানের মানুষ সাফল্যের উপরেই মূল্যায়ন করে। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
আপনি ঠিক বলছেন আপু আমাদের সমাজে আসলে মেয়ে সন্তানদের চেয়ে ছেলে সন্তানের গুরুত্ব বেশি। তবে পৃথিবীটা তো পাল্টে গেছে এবং সাথে সমাজ ও পাল্টে গেছে। পাল্টে গেলেও তবু ভিতরে ভিতরে সেই প্রথা থেকে গেছে। তবে আলট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্টে অনেক সময় ভুল রিপোর্ট আসতে পারে। যা ছেলেকে মেয়ে এবং মেয়েকে ছেলে বলে ভুলে। অবশেষে ভালো লাগলো তৃনা লেখাপড়া করে বড় হয়ে বাবাকে দেখিয়ে দিল।
আপনার কাছে তৃণার গল্প পড়ে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
আমাদের সমাজে এখন অনেক মানুষ আছে তারা মনে করে মেয়ে সন্তান ঘরে জন্ম নিতে পারে সেই ঘরের উপর আল্লাহর গজব নেমে আসে। আসলে বিষয়টা এমন না মেয়ে সন্তান হল আল্লাহর নেয়ামত স্বরূপ। যার ঘরে একটি কন্যা সন্তান থাকবে সে একটি জান্নাতের মালিক। শুধু তাই না যার প্রথম সন্তান মেয়ে তার মা অবশ্যই ভাগ্যবতী।
কিন্তু ভাইয়া এখনও সমাজের অনেক মানুষ আছে মেয়ে হলে একদমই মানতে চায় না। যাই হোক আপনার সুন্দর মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
বর্তমান সময়ে অনেকে এরকম করে। ছেলে হলে অনেক খুশি হয় আবার মেয়ে হলে অনেক নারাজ হয়ে যায়। তবে এটা মেনে নেওয়া উচিত ছেলে মেয়ে দুটোই আল্লাহর দান। এখানে কারো হাত নেই।তৃণা দেখিয়ে দিয়েছে মেয়ে হয়েও মা বাবার মুখ উজ্জ্বল করতে পারে। হয়তো দেরিতে হলেও তৃণার বাবা বুঝতে পারল মেয়ে হয়ে জন্মালে পাপ নয়। খুব সুন্দর বাস্তব একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া মানুষ জেনে বুঝে তারপরও কুসংস্কারে ডুবে রয়েছে। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
আসলেই কিছু কিছু মানুষ এই আধুনিক যুগেও, ছেলে সন্তান এবং মেয়ে সন্তান নিয়ে ভেদাভেদ করে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণরূপে অন্যায়। এসব নিয়ে ভেদাভেদ করলে আল্লাহ তায়ালা আমাদের উপর নারাজ হয়ে যায়। তিনি আমাদেরকে যা দিবেন সেটা হাসিমুখে মেনে নিতে হবে। বর্তমান যুগে মেয়েরা ছেলেদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে এবং তারা কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। তাছাড়া একটি মেয়ে, বাবা মায়ের কষ্ট যতটুকু বোঝে, সেটা কখনোই একটি ছেলে বোঝে না। দোয়া করি তৃণার মতো মেয়ে যেন ঘরে ঘরে জন্মায়। যাইহোক আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আসলেই পরিবর্তন করা উচিত। পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া আমাদের এদিকে এখনও ছেলে মেয়ে নিয়ে ঝামেলা হয়। মেয়ে হলেই যেন মেনে নিতে পারে না। যাই হোক আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।