গতকাল ঘূর্ণিঝড় রেমাল যেনো আমার বাসায় উঠেছে🥹
আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। কিন্তু আমি ভালো নেই। গতকাল থেকে খুব বিপদে রয়েছি। ভেবেছিলাম এতদিনের গরমের পর ঝড় বৃষ্টি হবে আর একটু শান্তিতে থাকতে পারবো। রাতে ভালো ঘুম হবে। কিন্তু কথায় বলে না,বিপদ যখন আসে সব দিক দিয়েই আসে। আমার অবস্থাও ঠিক তেমনি হয়েছে। গতকাল ৩ টার পর হঠাৎ করে কারেন্ট চলে যায়। কারেন্ট যাওয়া স্বাভাবিক কিছু নয় আর এমন মাঝে মাঝেই হয়। ঝড় বৃষ্টি হলে গ্ৰামে কারেন্ট নিয়ে সমস্যা হলেও ঢাকা শহরে কখনও হয়নি। সেজন্য চিন্তা না করে বসে ছিলাম।
কারেন্ট চলে যাওয়ার পাঁচ মিনিট পর আবার চলেও আসে। এরপর হঠাৎ করে ট্রান্সমিটার ব্লাস্ট হওয়ার জোরে শব্দ হয়। এমন শব্দ হয়ে এর আগেও অনেক বার কারেন্ট গিয়েছে আবার কিছুক্ষণ পর চলেও এসেছে। গতকাল কে ও তাই হলো, কিছুক্ষণ পর আবার চলে আসে কিন্তু আমাদের বিল্ডিং এর সবার আসলেও আমার ফ্ল্যাটে আসেনি। এরপর হঠাৎ খুলে বাহিরে সিঁড়িতে লাইট জ্বালিয়ে রাখা দেখে অবাক হলাম। তারপর থেকে টেনশনে পড়ে গেলাম আমাদের ফ্ল্যাটে কারেন্ট নাই বলে।
বাড়িওয়ালার কাছে গেলে উনার ছেলে আসে আমাদের রুমের মেইন সুইচ চেক করার জন্য। এরপর দেখতে পেলাম সেখানে একটি সুইচ পড়ে রয়েছে কিন্তু কোনো ভাবেই উঠানো যাচ্ছে না। গতকাল তো সবাই জানেন ঘূর্ণিঝড় তান্ডব চালিয়েছিল আর বিকাল থেকে ঢাকা শহরেও বেশ বৃষ্টি আর বাতাস ছিল। এখন এই ঝড়ের মধ্যে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। কোনো মিস্ত্রী তো আর খুঁজে পাওয়া যাবে না আর গেলেও তারা আসবে কি করে। কারেন্ট ছাড়া কি থাকা যায়। এভাবেই বসে রইলাম কি আর করবো, এরমধ্যে সন্ধ্যা থেকে পানি নেই।
বাড়িওয়ালাকে দেখেছি মটার ছেড়ে রেখেছে কিন্তু তাদের যে সমস্যা তারা একবারও বলেনি। হয়তো জানলে বিকাল বেলা সবকিছু ভরে রাখতে পারতাম। এরপর রাত ১০ টা বাজে আবার পানির জন্য ফোন দিলে তারা বলে তাদের মটার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আজ রাতে কোনো ভাবে ঠিক করা সম্ভব নয়। এখন বলেন কেমন লাগে, এমনেতেই কারেন্ট নেই তার উপর পানির সমস্যা। এই দু'টো নিয়ে যেনো পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলাম। এই ঝড়ের মধ্যে মায়ের বাসায় চলে যাবো তারও কোনো উপায় নেই, রাস্তায় প্রচুর পানি জমে গিয়েছে। এরমধ্যে ছেলে ছোট তাকে তো আর এই ঝড় বৃষ্টি নিয়ে এত রাতে যাওয়া সম্ভব নয়।
এদিকে বাসায় এক বালতি পানিও নেই। ফিল্টারে অল্প একটু খাওয়ার পানি ছিল আর একটি বালতির মধ্যে বাথরুমে যাওয়ার অল্প পানি ছিল। টেনশনে থাকলে মনে হয় গরম বেশি লাগে। সারারাত শুধু অস্থিরতার মধ্যে পার করতে হয়েছে। এরপর সকাল বেলা নিজেরাই মিস্ত্রী নিয়ে আসি আর দেখে বলে মিটারের কাটাউট পুড়ে গিয়েছে। এখন বাড়িওয়ালা আমার হাজবেন্ড কে তুমি বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে লোক নিয়ে এসো। আমাদের ঘরে তো তেমন কেউ নেই তাই এই কাজ তোমাকেই করতে হবে। কি আর করার,বিপদে তো আমরা পড়েছি? এরপর আমার ছোট ভাইয়াকে নিয়ে আমার হাজবেন্ড অফিসে যায়। কিন্তু সরকারি লোক কি এত সহজে আসতে চায়। তাদের অনেক কষ্ট করে নিয়ে আসে।
এরপর দুপুর ২ টার দিকে কারেন্ট আসে আর এদিকে মটার ঠিক করা হয়। দুপুরের পর কারেন্ট পান দু'টোই আসে। একদিনে মনে হলো ঘরের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছে। এরপর এগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে অনেক সময় লেগে যায়। গতকাল থেকে এমন পরিস্থিতির মধ্য পড়ে মনে হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় রেমাল যেনো আমার বাসায় উঠেছে। ঢাকা শহরে পানি, গ্যাস আর কারেন্ট না থাকলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে একদম অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। অবশেষে এখন একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারলাম। তাই আমার এমন খারাপ পরিস্থিতির করা শেয়ার করতে চলে আসলাম।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর প্রভাব কিভাবে আমার উপর পড়েছে আপনারা তো জানতে পারলেন। এবার আপনারা কেমন পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটিয়েছেন সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে জানিয়ে দেবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
আপু আপনার পোস্ট দেখে বুঝতে পারলাম যে খুবই অশান্তিকর একটা সময় আপনি পার করেছেন। কি আর বলব আপু আজ দুই দিন হল কারেন্ট নাই। মন মেজাজ খুব একটা ভালো নেই। সেই সাথে গরমও পড়ছে আজ অনেক বেশি। তবে এই রেমাঋ ঘূর্ণিঝড় সবারই অনেক দুর্ঘটনা ঘটে এনেছে। এমনকি ট্রান্সমিটা্য বাস্ট হয়ে গেল। তাতে ফ্লাটে সবার বাসায় কারেন্ট থাকলেও আপনার বাসায় ছিল না বিষয়টা খুবই দুঃখজনক। তবে কি আর করার কিছু কিছু সময় সবকিছু মেনে নিতে হয়। ধন্যবাদ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ভাইয়া খুবই অশান্তির মধ্য দিয়ে পার করতে হয়েছে। এই রেমাল অনেক ক্ষতি করে দিয়ে গেছে। ধন্যবাদ।
সত্যি বলতে আমাদের এদিকে পানির সমস্যা না থাকলেও বিদ্যুৎ প্রায় দুইদিন ধরে ছিল না। যাইহোক আজকে বিদ্যুৎ আসলো এজন্য একটু অ্যাক্টিভিটিস করতে পারছি। ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে আমাদের এদিকে ও বেশ খারাপ একটা অবস্থা হয়ে গেছিল যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার অনুভূতি এবং মুহুর্তে শেয়ার করার জন্য।
আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
আসলে গতদিনের ঝড়ে অনেক মানুষের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এখনো কারেন্ট আসেনি। এই ঝড়ের সময় মানুষের যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে মানুষের অনেক দিন সময় লাগবে। যাই হোক আপনাদের এই ঝড়ের দিনের কষ্টের অনুভূতিটা পড়ে আমার খুব কষ্ট লাগছে।
ভাইয়া ঢাকা শহরে থেকে যদি এমন কষ্ট করতে হয় তাহলে সত্যিই এর চেয়ে কষ্ট আর কিছু হতে পারে না। ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য।
একদিনের ঘূর্ণিঝড় মানুষকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে্। সব জায়গা একই অবস্থা দেখছি। এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আমিও পোস্ট করেছি আরো অনেকে পোস্ট করেছে তাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরেছে। প্রত্যেকে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত আর প্রধান সমস্যা হলো লোডশেডিং যেটা হওয়াটাই স্বাভাবিক। পানির সমস্যা হলে খুবই খারাপ অবস্থা তাহলে তো অনেক খারাপ মুহূর্ত পার করতে হয়েছে আপনাকে।
হ্যাঁ ভাইয়া লোডশেডিং মানা যায়, এরমধ্যে যদি পানিরও সমস্যা থাকে তাহলে মানা যায়। খুব কষ্টে কেটেছে দিন। ধন্যবাদ।
আসলে কালকের দিনটা আমাদের জন্য বেশ ভয়ানক ও ভয়াবহ ছিল। আমাদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে আপু। যেখানে গাছপালা ভেঙে গেছে অনেক ফল ঝরে গেছে পুকুর পাড়ের সবজি গাছগুলো সব নষ্ট হয়ে গেছে কলা গাছ ভেঙে গেছে। আর এভাবে গ্রামের অনেক দৃশ্য লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। যাই হোক আপনাদের ওখানকার বিষয়টা জানতে পারলাম পোষ্টের মধ্য দিয়ে।
আপু আপনাদের এত কিছু ক্ষতি হয়েছে জেনে খারাপ লাগলো। ধন্যবাদ।
ঝড়ের কারণে খুবই কষ্টকর দিন কাটিয়েছেন আপু।কারেন্ট এবং পানি দুইটাই দরকারী আমাদের জন্য। এগুলোর একটি যখন থাকে না তখন খুবই খারাপ লাগে।খুবই কষ্টের মধ্যে দিন পার করেছেন আপু। আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই খারাপ লাগলো। ধন্যবাদ আপু পোস্ট টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।