স্কুলের দপ্তরির ভুলের জন্য আমাদের শাস্তি পাওয়া ।১০% লাজুক খ্যাঁকের জন্য
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সদস্যরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহর রহমতে এবং আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি।
আজ আমি আপনাদের সাথে স্কুলের দপ্তরির ভুলের জন্য আমাদের শাস্তি পাওয়া কিছু ঘটনা বলবো। আমাদের বাড়ি থেকে স্কুল অনেক দূরে। আমরা তখন ক্লাস সেভেনে পড়ি। স্কুল জীবন আমাদের ভালোই যাচ্ছিল। আমার তিনজন বান্ধবী ছিল। আমরা সবাই ছাত্রী হিসেবে অনেক ভালো ছিলাম। তারজন্য আমাদের সব স্যার আর ম্যাডাম আমাদের অনেক ভালোবাসত। তখন ছিল গ্রীষ্মকাল প্রচন্ড গরমে টিকা যাচ্ছিলো না। আমাদের এদিকে তখন একটি মেলা বসেছিল।
আমরা অনেক দিন ধরে ভাবছিলাম সেই মেলায় যাব কিন্তু বাড়িতে গেলে আসতে দেয় না। আবার স্কুল থেকেও যাওয়া সম্ভব ছিল না। হঠাৎ করে সেই মেলায় যাওয়ার জন্য সুবর্ণসুযোগ এসে গিয়েছিল। একদিন আমাদের স্কুলের দপ্তরি চাচা টিফিনের ঘন্টার পরিবর্তে ছুটির ঘন্টা দিয়ে দিয়ে দিয়েছে। তারপর স্যার ম্যাডাম মাঠে চলে এসেছে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের আটকানোর জন্য। তখন কয়েকজনকে বুঝাতে পেরেছে আর কয়েকজন পালিয়েছে।
আমরা ভালো স্টুডেন্টের মতো ক্লাসে এসে বসলাম। কিন্তু তারপরও আমাদের মাথায় শুধু ছুটির ঘন্টাই ভেজে যাচ্ছিল। কারণ মেলায় যাওয়ার মতো খুব সুন্দর একটি সুযোগ পেয়েছি তা কি হাত ছাড়া করা যায়। টিফিন শেষে আমরা একটি ক্লাস করে আবারও সবাই পালিয়েছি। তখন স্কুলে দু'একজন ছাড়া আর কেউ ছিল না। আমরা এতটাও সাহস পেতাম না যদি না উপরে ক্লাসের বড় আপুরা না পালাতো।
আমরা পালিয়েছি ঠিকই কিন্তু রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি আর মনে হচ্ছে পিছন দিয়ে কেউ আমাদের ধরতে আসছে। আমাদের স্কুল থেকে একটু দূরে বড় রাস্তা আছে।আমরা বান্ধবীর গিয়ে সেই রাস্তার মাথায় আম গাছের নিচে দাঁড়ালাম। ওখানে দাঁড়ানোর জন্য একটা মজার ঘটনা ঘটে যার জন্য আমি একটুও প্রস্তুত ছিলাম। আমার ক্লাসের একটি ছেলে আমাকে পছন্দ করে। তা আমি বুঝতে পেরেছিলাম কিন্তু সেই ছেলে প্রপোজ করার সাহস পেত না। সেই ছেলে আবার আমার এক বান্ধবীর পাশের বাড়ির চাচা হয় এবং আমাদের স্কুলের স্যারের ছেলে হয়।
আমরা যখন আম গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলাম তখন সে নিজে না এসে তার এক বন্ধুকে পাঠিয়েছে আমাকে দেখার জন্য। তার বন্ধু আমাদের কাছে এসে আমার বান্ধবীকে ডেকে আমার কথা জিজ্ঞেস করে এবং আমাকে সেখানে দেখে চলে যায়। ছেলেটি যাওয়ার পর আমার বান্ধবীরা এই কথাগুলো বলে অনেক হাসাহাসি করছিল। এরপর আমরা সেখান থেকে মেলায় চলে যাই। এরপর মেলা থেকে আমরা অনেক কিছু কেনাকাটি করে বাড়িতে যাই। মেলায় যাওয়ার জন্য মায়ের কাছে অনেক বকা খেয়েছি।
আমরা পরের দিন যখন স্কুলে আসলাম তখন দেখি সবকিছু কেমন জানি থমথমে হয়ে আছে। যারা আগের দিন স্কুলে থেকে গিয়েছিল তাদের কাছে শুনতে পেলাম পালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক তারজন্য নাকি সবাইকে শাস্তি দিবে। এরপর আমরা ক্লাস করতে চলে গেলাম কিন্তু আমরা ছোট বলে কিছু করা হয়নি তবে বড় আপুদের নাকি অনেক শাস্তি দিয়েছিল। এরপর থেকে যতদিন ছিলাম স্কুল পালানোর কথা ভুলেই গিয়েছি। আশা করি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে।যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে সুন্দর কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দেবেন। আমার লেখা আজ এখানেই শেষ করলাম। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন।
আমি তানজিমা। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার মাতৃভাষা বাংলা বলে আমি নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ববোধ করি। আমি ফিন্যান্স বিভাগ থেকে বিবিএ শেষ করেছি।
আমি ছবি আঁকতে, পড়তে, লিখতে ফটোগ্রাফি, রেসিপি এবং ডাই বানাতে খুব পছন্দ করি। আবার আমি ভ্রমণ বা ঘুরাঘুরি করতে খুব পছন্দ করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে খুব পছন্দ করি। আমি চেষ্টা করি সব সময় যেন নতুন কোনো কিছু করা যায়।
স্কুল জীবনের স্মৃতিগুলো মনে করলে খুব ভাল লাগে। কত মধুর বা তিক্ত স্মৃতি জড়িয়ে আছে প্রতিটি মানুষের স্কুল জীবনে। আপনার স্কুল পালানোর ঘটনাটি পড়ে বেশ মজা পেয়েছি। আপনি ত বেশ সাহসী ছিলেন। অবশ্য কয়েকজন বন্ধু বান্ধবী একসাথে থাকলে সাহস এমনিতেই বেড়ে যায়। তবে ছোটবেলায় মেলায় গিয়ে কেনাকাটার পর কিন্তু ভাল লাগে যেমনটি হয়ত আপনারও লেগেছিল। ছোটবেলার সেই মেলায় যাওয়াও মিস করি। সেই ছেলে যে আপনাকে পছন্দ করত তার কি অবস্থা এখন? আমি ভেবেছিলাম আপনারাও শাস্তি পেয়েছেন। ধন্যবাদ আপু।
আসলে আমাদের ছোটবেলার কাহিনী সবাই আমরা খুব মিস করি। যাইহোক আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
আপু স্কুল লাইফটা এমনই দুরন্তপনা। মন এক জাগায় থাকে না। ভবিষ্যতে কি হবে সেটা মাথায় থাকে না। মেলায় যাওয়ার নেশা আপনাদেরকে স্কুল পালাতে সাহস যুগিয়েছে। স্কুলের দপ্তরি ভুল করলেও স্কুলের স্যার ম্যাডাম তো আপনাদের আটকাতে চেয়েছে। কিন্তুু আপনারা পালিয়ে গেছেন। যায় হোক আপনি তো আর শাস্তি পেলেন না বড় আপুরা শাস্তি পেল। স্কুল লাইফর স্মৃতি সেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
আপনিও ঠিক বলেছেন লেখাগুলো দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল