আবার কাজে ফেরার চেষ্টা
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে অনেকদিন পর লিখতে বসলাম। হাত কেন যেন চলছে না। ভেবেছিলাম এক মাস ছুটি নিব। কিন্তু দাদা বললো যে কাজের মধ্যে থাকলে কষ্ট কিছুটা কম হয়। তাই চেষ্টা করছি কাজে ফেরার। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন যে কিছুদিন আগে আমার বাবাকে হারিয়েছি। বাবা মা যে কি তা থাকতে উপলব্ধি করা যায় না। এই কথাটা অনেকবার শুনেছি। কিন্তু আজকে নিজে ঠিকই বুঝতে পারছি। এই কষ্ট কিছুতেই পূরণ হবার নয়। যার নেই সেই বুঝে। বাবা মা থাকতে আমরা তেমন গুরুত্ব দেই না। সবাইকে বলবো যাদের বাবা মা জীবিত আছে তাদের সঙ্গে বেশি বেশি সময় কাটানোর চেষ্টা করবেন। হারিয়ে গেলে আর পাবেন না।
আমার বাবা বেশ অনেকদিন থেকেই অসুস্থ ছিলেন। ওনার ব্রেইন এর ভেইন শুকিয়ে গিয়েছিলো। তাছাড়া অন্য তেমন কোনো শারীরিক সমস্যা ছিলো না। কিন্তু সেদিন হঠাৎ করে কি থেকে কি হয়ে গেল। বাচ্চা-কাচ্চার স্কুলে দিলে হুটহাট কোথাও যাওয়া যায় না। তাই সামনে কোন ছুটি দেখে ভাবছিলাম যে আব্বুকে দেখতে যাবো। কিন্তু তা আর হলো না এভাবে দেখতে আসতে হলো। প্রতিবার ঢাকায় ফেরার সময় একটা অজানা শঙ্কা নিয়ে ফিরতাম। মনের মধ্যে কেমন একটা কষ্ট থাকতো। পরের বার এসে কি আব্বুকে আর দেখতে পাবো। গতবার যখন আব্বুকে রেখে ঢাকায় ফিরছিলাম তখন কেন যেন আব্বু আমার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিল। হয়তো বুঝতে পেরেছিল যে এটাই শেষ দেখা। তখন কি বুঝতে পেরেছিলাম যে এর পরেরবার এসে এভাবে দেখতে হবে। এই কষ্ট যাদের বাবা নেই তারাই ভালো উপলব্ধি করতে পারবে। এখন শুধু মনে হয় যে যদি আরো কিছুদিন আগে আসতাম তাহলে হয়তো আরো একবার দেখতে পেতাম, আরো কিছুটা সময় আব্বুর সঙ্গে কাটাতে পারতাম। এখন খুব আফসোস হচ্ছে কেন যে আসিনি। বারবার শুধু সব স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠে। তখন কি যে কষ্ট হয় তা কাউকে বলে বোঝানো যাবে না। এই লিখা লিখতে গিয়ে চোখ বারবার ঝাপসা হয়ে আসছে। কত কিছু যে মনে হচ্ছে। কত কথা লিখতে ইচ্ছা করছে কিন্তু হাতে শক্তি পাচ্ছি না। সবাই আমার আব্বুর জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত নসিব করেন। আব্বুর জন্যও এই কথা বলতে হবে তা কখনো চিন্তাও করিনি। অসুস্থ হলেও যে এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন বুঝতেই পারি নি।
আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। বাবা মায়ের যত্ন নিবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
---|---
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
আল্লাহপাক আপনার বাবাকে বেহেশত নসিব করুন 🤲 খবরটা যখন শুনেছিলাম সত্যিই আমাদের কাছেও ভীষণ কষ্ট লেগেছে। আমার বাবা ও বেশ অসুস্থ থাকে, তাই অজানা ভয় কাজ করছিল। আমরা দোয়া করছি আপনার বাবার জন্য 🤲
কাজে ফিরেছেন দেখে ভালো লাগলো, কাজের মধ্যে থাকলে হয়তো কষ্ট কিছু সময়ের জন্য ভুলে থাকা যাবে। মনকে একটু শক্ত করুন, আর বেশি বেশি নামাজ পড়ে দোয়া করুন।
বাবা মায়ের সঙ্গে বেশি বেশি সময় কাটানোর চেষ্টা করবেন ভাইয়া। এই অমূল্য সম্পদ হারিয়ে গেলে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। তখন বোঝা যায় যে কি অমূল্য সম্পদ ছিল। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
মাতা পিতা প্রতিটা সন্তানের জন্য অনেক বড় ছায়া যে ছায়া না থাকলে জীবনে অপূর্ণতা লাগে। জীবনের অনেক বড় একটি অংশ মনে হয় হারিয়ে গিয়েছে ঠিক তেমনি আপনি অনুভব করতে পারছেন। আপনার কষ্ট ভালই বুঝতে পারছি আপু হয়তো জীবিত অবস্থায় তার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেননি। এটাই ভাগ্যে লেখা ছিল তবুও কখন কীভাবে কে মৃত্যুবরণ করবে কেউ জানে না। আপনার বাবার জন্য দোয়া করি তিনি যেন জান্নাতুল ফেরদৌস পান।
বাবা মা যে কত বড় ছায়া তা বাবা-মা না থাকলে বোঝা যায়। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আপু আপনার লেখাগুলো পড়ছিলাম আর দুচোখ বেয়ে পানি পড়ছিল। আসলে যে প্রিয়জন হারায় সে বোঝে প্রিয়জন হারানোর কষ্ট। হয়তো আপনার বাবা বুঝতে পেরেছিল এটাই তার সাথে আপনার শেষ দেখা। তাইতো তাকিয়ে ছিল। আসলে আমরা যারা বাবা মার থেকে দূরে থাকি হয়তো তাদের থেকে দূরে সরে যাওয়ার সময় অনেক অজানা ভয় ঘিরে ধরে। হয়তো মাঝে মাঝে মনে হয় তাদের সাথে আর কখনো দেখা নাও হতে পারে। জীবনের শেষ দেখার সময় যে কখন চলে আসে আমরা বুঝতেই পারি না। সত্যি আপু কাজের মধ্যে থাকলে মন ভালো হবে এবং ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ঠিকই বলেছেন আপু প্রিয়জন হারানোর ব্যাথা প্রিয়জনই বুঝতে পারে। অন্য কেউ এ কষ্ট উপলব্ধি করতে পারবে না। ধন্যবাদ আপু আপনাকে। দোয়া করবেন আমার বাবার জন্য।
আপনার বাবাকে আল্লাহ পাক যেন বেহেস্ত নসিব করে। যার মা বাবা নেই তারাই বোঝে মা বাবা না থাকার কষ্টটা। সবাইকে আপু একদিন যেতে হবে এই দুনিয়া ছেড়ে। তারপরও প্রিয়জন মানুষগুলোকে হারানোর কষ্টই অনেক বেশি লাগে। আপনার সাথে আমিও বলব যাদের মা-বাবা আছে তাদের সাথে বেশি সময় দেওয়ার জন্য। আর আপনাদের পরিবারের সবার জন্য অনেক দোয়া রইল আল্লাহ যেন সবাইকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করুন।
ঠিক বলেছেন আপু সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে। তারপরও মন মানতে চায় না। যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
হয়তো কিছু বলার ভাষা নেই আপু। তবু আমি আপনার আব্বার জন্য দোয়া করি যেন আল্লাহ উনাকে বেহেস্ত নসিব করেন। আপনি চেষ্টা করবেন সময় সুযোগ করে আঙ্কেলের জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য। মানুষের যখন চলে যাওয়ার সময় আসে সে তখনই চলে যাবে এতে বেশি মন খারাপ রাখার কোন প্রয়োজন নেই। আপনি পুনরায় আমাদের মাঝে সঠিকভাবে ফিরে আসুন এবং একসাথে কাজ শুরু করুন দেখবেন মন-মানসিকতা ভালো হবে এবং কষ্ট কমবে কারণ আপনাকেও তো সুস্থ থাকতে হবে এবং পরিবার-পরিজনদের সুস্থ রাখতে হবে। আল্লাহ যেন আপনাকে সেই ধৈর্য ধারার তৌফিক দান করেন।
এজন্যই তো কাজে ফিরে আসলাম যাতে কিছুটা হলেও দুঃখ ভুলে থাকা যায়। ধন্যবাদ ভাইয়া দোয়া করার জন্য।
খবরটা যেদিন পাই সেদিন হঠাৎ করেই যেন থমকে গেছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কি দিয়ে কথা শুরু করব। পুরো লেখাটা পড়ে প্রতিউত্তর দেওয়ার মত কোন শব্দ আমার কাছে নেই। ভেতরটা ভীষণ কাঁপছিল। আঙ্কেলের আত্মার শান্তি কামনা করছি। আমাদের সবাইকে এই সত্যের মুখোমুখি একদিন হতে হবে। এটা ভাবলেই গায়ের ভেতরে শিউরে উঠে। আমারও মনে হয় সবার সাথে কাজের মধ্য দিয়ে থাকলে অনেকটা হালকা লাগবে নিজেকে। জানি মন বসবে না। তবু একটু একটু করে হলেও আবার শুরু করুন আপু।
এই সত্যিটাই মানতে সবথেকে বেশি কষ্ট হয়। কিন্তু এইটাই পৃথিবীর সব থেকে বড় সত্য। ধন্যবাদ ভাইয়া। দোয়া করবেন।