গল্প - "অনাথ মেয়ে"

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।



আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।


আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের সঙ্গে একটি গল্প শেয়ার করবো। এর আগেও বলেছি আমার বানিয়ে গল্প লিখতে তেমন একটা ভালো লাগে না। মানুষের জীবনের সত্যিকারের কাহিনী গল্প আকারে লিখতে বেশি ভালো লাগে। বানিয়ে গল্প লিখলে তো অনেক অবাস্তব জিনিস লেখা যায়। কিন্তু সত্যিকারের জীবন কাহিনী থেকে গল্প লিখলে অনেক কিছু শেখার থাকে। আজকে একটি অনাথ মেয়ের গল্প আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। আশা করি গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে।


family-2610205_1280.jpg


Link


অনাথ মেয়ে


তিন ভাইয়ের এক বোন দুলালী। তিন ভাইয়ের পরে মেয়ে হওয়ার কারণে দুলালীর বাবা-মা আদর করে তার নাম রাখে দুলালী। দুলালী বড় হওয়ার পর তার বাবা-মা দুলালীকে রহিমের সঙ্গে বিয়ে দেয়। অনেক আদরের দুলালীর নামে বেশ সম্পত্তি লিখে দেয়। এভাবে বেশ ভালোই যাচ্ছিল দুলালী আর রহিমের সংসার। এখন তাদের সংসারে একটি বাচ্চা দরকার। যে এই ঘরকে আলোকিত করে রাখবে। তারা সন্তান নেয়ার চিন্তা করে।

কিন্তু বেশ কিছুদিন যাওয়ার পরেও দুলালীর কোন বাচ্চা হচ্ছিলো না। প্রথম প্রথম তারা খুব একটা চিন্তা করে না। অনেকেরই তো বাচ্চা দেরিতে হয়। অনেকদিন হওয়ার পরও যখন বাচ্চা হচ্ছিলো না তখন দুলালী খুব চিন্তিত হয়ে পড়ে। কারণ প্রতিটি সুখের সংসারের বাচ্চার খুবই প্রয়োজন। বাচ্চা ছাড়া যে কোন সংসার জন্য অপরিপূর্ণ। বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা করানোর পরও দুলালীর কোন বাচ্চা হয় না। ডাক্তারও বলে যে দুলালী কখনো মা হতে পারবেনা।

নিয়তিকে মেনে নেয় তারা। ভাবছিল যে কোন একটি বাচ্চাকে দত্তক নেবে। যেহেতু তারা গ্রামে থাকে তাই সেভাবে আইনী পদ্ধতিতে নেওয়ার কথা চিন্তায় আসে না। এমন সময় দুলালীর দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের একটি মেয়ে হয়। কিন্তু মেয়েটির মায়ের দুধ না পাওয়ার কারণে শরীরের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। তারা এমনই গরীব ছিল যে বাচ্চাটিকে দুধ কিনে খাওয়ানোর মতো অবস্থা ছিল না। বেশ কয়েকদিন বাচ্চাটি না খেয়ে প্রায় মৃত্যু শয্যায়।

গরিব বাবা মার করার কিছু ছিল না। খবর পেয়ে দুলালী সেখানে যায় এবং মেয়েটিকে নিতে চায়। মেয়েটির বাবা-মার আরো বেশ কয়েকটি সন্তান ছিল এবং এই বাচ্চাটিকেও তারা বাঁচাতে পারছিল না তাই তারা মেয়েটিকে দুলালীকে দিয়ে দেয়।

দুলালী মেয়েটিকে তার বাড়িতে নিয়ে এসে খুব যত্ন সহকারে খাইয়ে সুস্থ করে তোলে। দুলালীর সংসার যেন আনন্দের বন্যা বয়ে যেতে থাকে। এই মেয়েকে পেয়ে তারা খুব আদর যত্নের মেয়েটিকে লালন পালন করতে থাকে। দুলালীর শ্বশুরবাড়ির এলাকার লোক জন বেশ ভালো। তারা সবাই বিষয়টি জেনেও কেউ কখনো মেয়েটিকে দত্তক হিসেবে গ্রহণ করেনি। নিজেদের পরিবারের সন্তান হিসেবে গ্রহণ করেছে।



দুলালী এবং রহিমের সংসারে এসে মেয়েটি
কি ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পেরেছিল কিনা তা জানতে হলে অবশ্যই পরবর্তী পর্ব পড়তে হবে। আজ এ পর্যন্তই। সময় নিয়ে গল্পটি পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।


ধন্যবাদ

@tania

আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

IMG_20220106_113311.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png


VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 3 months ago 

বাচ্চা ছাড়া সত্যিই একটা সংসার অসম্পূর্ণ। আর সত্যি বলতে বর্তমানে এমন অনেক ফ্যামিলি আছে যাদের সন্তান নেই। এই কষ্ট টা আসলে বোঝানোর মত নয়। গল্পের প্লট টা বেশ ভালো লাগলো আপু। আমার তো মন বলছে দুলালী আর রহিম অনেক আদর যত্নে বাচ্চা টাকে বড় করে তুলবে। অবশ্য গল্পের প্লটে অনেক কিছুই এসে যেতে পারে। দেখা যাক শেষ অবধি কি হয়!

 3 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া যাদের বাচ্চা হয় না তারা এই কষ্ট বুঝতে পারে। যাইহোক গল্পের সাথে থাকবেন আশা করি। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 months ago 

আপু আপনার মতো আমিও বানিয়ে গল্প লিখতে পছন্দ করি না। তারজন্য যখনই গল্প লিখতে বসি তখন বাস্তব গল্প শেয়ার করার চেষ্টা করি। এতে নিজে যেমন শেখা যায় তেমনি অন্যের জন্য ও উপকার হতে পারে। যাই হোক আপনি আজ অনাথ মেয়ের খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন। জানিনা দুলালীর কপালে কি লেখা রয়েছে তবে আমার মনে হয় দুলালীর কপালে এত সুখ সইবে না। বাচ্চাটিকে আইনি পদ্ধতি মেনে আনলে হয়তো ভালো হতো। এরজন্য হয়তো তাদের পরবর্তীতে অনেক সমস্যা হতে পারে। দুলালীর জন্য সামনে কি অপেক্ষা করছে জানার অপেক্ষায় রইলাম।

 3 months ago 

বাস্তব জীবনের কাহিনী নিয়ে গল্প লিখলে অনেক কিছু শেখার এবং জানার থাকে। বানিয়ে লিখলে তো সবই কাল্পনিক হয়। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

 3 months ago 

আপু বানিয়ে লেখা গল্পের চেয়ে, সত্যিকারের গল্প গুলো পড়তে বেশি ভালো লাগে। যাইহোক প্রতিটি নারী মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করতে চায়। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা যদি না দেয়, তাহলে তো কিছুই করার থাকে না। আর এখন অনেক মেয়েদেরই সহজে বাচ্চা হতে চায় না। যাইহোক বাচ্চাটিকে দত্তক নিয়ে তো দুলালী এবং তার পরিবার ভীষণ খুশি। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।

 3 months ago 

যেসব নারীরা মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করতে পারে না তাদের থেকে অভাগা আর কেউ হয় না। একটা সময় খুব খারাপ লাগে সেসব মানুষের জন্য। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

 3 months ago 

দুলালী এবং রহিমের সংসারে এসে মেয়েটি আশা করি, খুব ভালোভাবেই বড় হবে আপু। যেহেতু তাদের কোন সন্তান নেই তাই তারা যথেষ্ট যত্ন সহকারে তাকে মানুষ করবে। আসলে সৃষ্টিকর্তার লীলা বোঝা বড় মুশকিল। কাউকে মন ভরে দেয় আবার কাউকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করে। দুলালীর বাচ্চা না হওয়ার কষ্ট হয়তো এই বাচ্চাকে পেয়ে পুরোপুরি গায়েব হয়ে যাবে।

 3 months ago 

তারপরও আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে। যাই হোক ভাইয়া আশা করি পরবর্তী পর্ব পড়লে আরো জানতে পারবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 months ago 

ঠিক আছে আপু, পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম তাহলে। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়, ওই অনাথ মেয়ের সাথে।

 3 months ago 

আসলে গল্প বানিয়ে লিখতে আমিও পছন্দ করি না৷
কারণ বানিয়ে লিখলে তা কাল্পনিক হয়েই থাকে৷ এই গল্পের কোন গুরুত্ব থাকেনা৷ তবে যখনই বাস্তবিক কোন গল্প লেখা হয় তখন সেটি অনেক সুন্দর হয়৷ আমরা অনেক কিছুই সেখান থেকে আমরা শিখতে পারি৷ আজকে আপনি সেরকমই একটি গল্প শেয়ার করেছেন৷ এই অনাথ মেয়ের যে গল্পটি আপনি এখানে ফুটিয়ে তুলেছেন তা দেখে অনেক ভালো লাগছে। আসলে দুলালীর কপালে কি আছে তা সৃষ্টিকর্তাই জানেন৷ আর তারা একটি মেয়ে দত্তক নিয়ে পালন করছে৷ দেখা যাক পরবর্তী পর্বগুলোতে কি হয়৷

 3 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া গল্প বানিয়ে লিখলে একেবারে কাল্পনিক হয়ে যায়। ধন্যবাদ আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 57889.17
ETH 3155.19
USDT 1.00
SBD 2.42