গল্প- "বিশ্বাসঘাতকতা" পর্ব -১
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের সঙ্গে একটি গল্প শেয়ার করবো। আসলে এটিকে গল্প বললে ভুল হবে একজন মানুষের জীবনের সত্যিকারের কাহিনী। আমার খুবই কাছের একজন মানুষের কাহিনী আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো কিন্তু গল্প আকারে। তাছাড়া প্রতিটি চরিত্রের নামও আমি পাল্টে দিয়েছি। পৃথিবীতে কেউ কাউকে ঠকিয়ে কোনদিন সুখী হতে পারে না। বিশ্বাসঘাতকতা করলে তার শাস্তি তাকে একদিন পেতেই হয় আমি এটা বিশ্বাস করি। তাই ভাবলাম গল্পটা আপনাদের সঙ্গেও শেয়ার করি। আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে।
বিশ্বাসঘাতকতা
রুবি আর প্রীতি দুই বান্ধবী। একইসঙ্গে স্কুল-কলেজে পড়ালেখা করেছে। রুবির একটা বন্ধু ছিল জুয়েল। ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ার সময় রুবি এবং জুয়েলের খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়। রুবি ও তার বোন মিলে জুয়েলের সংগে অনেক আড্ডা দেয়। জুয়েল মাঝে মাঝে রুবিদের বাসায় যায় বিকালে। বেশ ভালো সময় কাটছিলো তাদের। জুয়েল মনে মনে রুবিকে পছন্দ করতে শুরু করে। কিন্তু রুবিকে বলা হয়নি।
রুবি একদিন হঠাৎ করে জুয়েলকে জানায় তাকে তার এক ফ্রেন্ড (ফেন্ড কিন্তু রুবির থেকে বয়সে বড়) প্রপোজ করেছে। সেও মনে মনে ওই ছেলেকে পছন্দ করে। এ কথা শোনার পর জুয়েল খুবই কষ্ট পায়। কিন্তু সামনাসামনি কিছু বলে না। তারপর আস্তে আস্তে জুয়েল রুবির সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেয়। ফোন করলে ফোন ধরে না। রুবি কিছুতেই বিষয়টা বুঝতে পারে না। অনেক চেষ্টা করে জুয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করার। কিন্তু জুয়েল রুবিকে দেখলেই পালিয়ে যায়। অন্য লোককে দিয়ে বলায় সে এখানে আর আসে না। যাতে তার সঙ্গে দেখা করতে না হয়। রুবিরও বুঝতে বাকি থাকে না যে জুয়েল তাকে পছন্দ করত। জুয়েলের এমন আচরণের রুবিও জুয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
রুবিদের ইন্টার পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। এখন অনার্সে ভর্তি হওয়ার জন্য তারা কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়। প্রীতি পড়ালেখায় একটু ভালো ছিল জন্য ঢাকায় কোচিং করার জন্য চলে যায়। জুয়েলও ঢাকায় অন্য একটা কোচিং এ ভর্তি হয়। ঢাকায় গিয়ে জুয়েলের সঙ্গে প্রীতির আবার আলাপ হয়। আগে থেকেই চেনা জানা ছিল। জুয়েল প্রীতিকে বিভিন্ন নোট দিয়ে সাহায্য করত। এভাবে আস্তে আস্তে জুয়েল এবং প্রীতির মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। এভাবে তাদের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ট হতে থাকে। ভর্তি পরীক্ষায় প্রীতি ভালো কোন ইউনিভার্সিটি তে চান্স পায়না। এদিক জুয়েলের ও একই অবস্থা। প্রীতি পরে ইডেন কলেজে ভর্তি হয়। আর জুয়েল তার শহরে এসে ডিগ্রিতে ভর্তি হয়।
এরই মাঝে জুয়েল এবং প্রীতির পরিবার থেকে তাদের সম্পর্কের কথা জেনে যায়। জুয়েলের পরিবারিক অবস্হা ভালো ছিল। এজন্য প্রীতির পরিবার থেকে চাচ্ছিলো যে এদের দুজনকে বিয়ে করিয়ে দিতে। তা না হলে ছেলে মেয়ে বাইরে ঘোরাঘুরি করবে বিষয়টা খারাপ দেখাবে। জুয়েলের পরিবার প্রথমে রাজি না হলেও পরে বিয়েতে রাজি হয়। তারপর মোটামুটি ঘরোয়া ভাবে জুয়েল এবং প্রীতির বিয়ে হয়ে যায়।
আজ এ পর্যন্তই। পরবর্তীতে নতুন পর্ব নিয়ে হাজির হবো। গল্পের নাম কেন বিশ্বাসঘাতক রেখেছি তা জানার জন্য অবশ্যই পরবর্তী পর্ব পড়বেন। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। সময় নিয়ে পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
ঠিক বলেছেন আপু, কাউকে ঠকিয়ে কেউ কখনো সুখী হতে পারে না। আজ না হয় কাল ঠকানোর বিচার অবশ্যই পায়। আসলে অনেক সময় বন্ধুত্বের মধ্যেও একে অপরকে পছন্দ করতে শুরু করে। অনেক সময় সেটা প্রেমের সম্পর্কে গড়ায় এবং অনেক সময় একেবারে বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে যায়। যাইহোক জুয়েল রুবিকে না পেলেও, প্রীতিকে পেয়েছে এবং পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর কি হলো সেটা জানার আগ্রহ বেড়ে গিয়েছে। আশা করি পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।
ধন্যবাদ ভাইয়া আমার গল্পটি পড়ে সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য। আশা করি খুব দ্রুতই পরবর্তী পর্ব শেয়ার করতে পারব।
ওদের পরিবার কিন্তু এটা ভালো একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ,বাইরে ঘোরাঘুরি করার থেকে দুজনের বিয়ে দিয়ে দিয়েছে এটাই ভালো একটা কাজ হয়েছে । ভালো লাগলো আপু গল্পটা পড়ে । সত্যিকারের কাহিনী হলেও গল্পটা কিন্তু ভালো লাগছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ।
ঠিক বলেছেন আপু বিয়ে না দিলেও তো তারা বাইরে ঘোরাফেরা ঠিকই করত। এই সিদ্ধান্তটা ভালো ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।
কবিতার পর এখন গল্পও লিখছেন তাহলে আপু 👌👌বেশ বেশ। গল্পের নামটা দেখে পড়ার আগ্রহ টা বেশি বেড়ে গিয়েছিল। আসলে বিশ্বাস ঘাতকদের কত রূপ হয় এটাই জানার ইচ্ছা আমার। যদিও এখন অবধি গল্পটা ঠিকঠাকই চলছে। হয়তো ধীরে ধীরে টুইস্ট চলে আসবে। দেখা যাক কি অপেক্ষা করছে পরের পর্ব গুলোতে। ভালো থাকবেন আপু।
গল্প কিন্তু আগেও একটা লিখেছিলাম। দেখেন নি হয়তো। সেটা মন থেকে বানিয়ে লিখেছিলাম। আর আজকের টা গল্প না আমার এক কাছের মানুষের সত্যিকারের জীবন কাহিনী। আপনি অবশ্যই পুরো গল্পটা পড়বেন। তাহলে মনে হবে আপনার সাথে কিছুই ঘটেনি।
আপু খুব সুন্দর গল্প লিখেছেন। আপনার গল্প পড়তে গিয়ে মনে হলো আমি কোনো সিনেমা দেখছি আর হঠাৎ করে এড চলে এসেছে হা হা হা। তবে প্রীতি আর জুয়েলের পরিবার কিন্তু খুব ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেটা না হলে কিন্তু তাদের খারাপ পথে চলে যেতে পারতো। যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
তারা যেন খারাপ পথে যেতে না পারে সেজন্যই তাদেরকে অল্প বয়সে বিয়ে দেয়া হয়েছিল। ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য।
যে অন্যকে ঠকাবে সেও একদিন ঠকবে এটাই প্রকৃতির নিয়ম। বন্ধুত্বের মাঝে যখন প্রেমের সম্পর্ক চলে আসে তখন বন্ধুত্বটা নষ্ট হতে থাকে না। বন্ধুত্বের ভিতর প্রেমের বিষয়টি না আসাই ভালো। আপনার গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। অপেক্ষায় রইলাম ২য় পর্বের জন্য। ধন্যবাদ আপু।
আমারও তাই মনে হয়। অন্যকে ঠকালে নিজেকেও ঠকতে হয়। ধন্যবাদ ভাইয়া।
জুয়ালের একটা কাজ খুবইভালো লেগেছে। সেটা হচ্ছে যে রুবি যেহেতু অন্য ছেলেকে পছন্দ করেন তাই জুয়েল রুবিকে এভোয়েড করল। পরবর্তীতে রুবিও বুঝতে পেরে তাকে আর কল করলো না। কিন্তু শেষমেষ প্রীতির সাথে সম্পর্ক তৈরি হলো। এবং তাদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথাটা শুনে বেশ ভালো লাগলো। আশা করি পরবর্তী পর্বে আরো বিস্তারিত জানতে পারবো।
দেখা যাক কি হয়। ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য।
দ্বিতীয় পর্ব পড়ার জন্য একটু টুইষ্ট রেখে দিলেন। জুয়েল এবং প্রীতির মধ্যে কে যেন বিশ্বাসঘাতক হয়। না কি রুবি এসে এন্ট্রি মারে সেটাই দেখার বিষয়। ধন্যবাদ।
একটু টুইস্ট না রাখলে তো দ্বিতীয় পর্ব কেউ পড়বে না। যাই হোক ভাইয়া ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ঠিকই বলেছেন আপু৷ কাউকে ঠকিয়ে জীবনে বড় হওয়া যায়না।বরং তার থেকেও খারাপ অবস্থায় পড়তে হয়।পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।গল্পটি থেকে বোঝা যাচ্ছে যে কখনো কখনো বাস্তবতা গল্পের থেকেও বেশি অদ্ভূত হয়।
আমিও চাই বিশ্বাসঘাতক গুলোর পরিণতি যেন খুব খারাপ হয়। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মন্তব্যের জন্য।