গল্প -"বাস্তবতা পর্ব -৩"
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম "বাস্তবতা" গল্পটি তৃতীয় পর্ব নিয়ে। আগেই বলেছি এটি গল্প বললে ভুল হবে। আমার খুব কাছের একজন মানুষের জীবনের কাহিনী। সেই কাহিনীকেই গল্প আকারে লেখার চেষ্টা করেছি। যাই হোক শশী কি সেবা ভালোবাসা দিয়ে রাজীবকে ভালো করতে পেরেছিলো তা আজকে জানতে পারবেন। তাহলে শুরু করি। আশাকরি আজকের পর্বও ভালো লাগবে আপনাদের।
বাস্তবতা
এভাবে প্রায় এক বছর শশী রাজিব কে বিভিন্ন রকম সেবা, চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলে। পুরোপুরি সুস্থ না হলে মোটামুটি সে এখন হাঁটতে চলতে পারে। আরো কিছুদিন যাওয়ার পর রাজিব অনেকটাই সুস্থ। রাজিবকে শশী এখন চাকরির জন্য বললে রাজিব চাকরিতে যেতে রাজি হয় না। রাজিবের বাবা-মাও শশীর উপর রাগ হয়। তাদের তো টাকা পয়সার কোন সমস্যা নেই তাহলে কেন চাকরি করতে হবে। শশীর কাছে বিষয়টি খুব খারাপ লাগে। এত কষ্ট করে রাজিবকে সুস্থ করে তুললো তার কি কোনোই অধিকার নেই রাজিবের উপর।এভাবে ছোট ছোট বিষয়ের জন্য তার শশুর শাশুড়ির কাছে টাকা চাইতে হয়। যা শশীর একদমই ভালো লাগে না। সব বিষয়ে কি আর তাদের কাছে বলা যায়। এতকিছুর পরেও শশী তার পড়ালেখা বন্ধ করেনি। সে তার পড়ালেখা চালিয়ে গিয়েছে এবং অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করে।
কিছুতেই যখন রাজিবকে চাকরির জন্য রাজি করাতে পারে না তখন শশী বাধ্য হয়ে নিজে একটি চাকরিতে ঢুকে। কিন্তু রাজিব কিছুতেই চাচ্ছিলো না শশী চাকরি করুক। শশী রাজিবকে শর্ত দেয় তুমি চাকরিতে ঢুকো তাহলে আমি চাকরি ছেড়ে দেবো। কিন্তু রাজিব তাতেও রাজি হয় না। এভাবে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা হতে থাকে মাঝেমধ্যে। সমস্যা হতে হতে একসময় বড় আকার ধারণ করে। রাজিব শশীর গায়ে হাত পর্যন্ত তুলে। তারপরও শশী সবকিছু মেনে নিয়ে চলছিলো।
দিন দিন রাজিব আরো বেশি এগ্রেসিভ হয়ে যাচ্ছিলো এবং তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও শশীকে জোর করছিল চাকরি ছাড়ার জন্য। একদিন অফিস থেকে আসতে দেরি হয় জন্য রাজিব শশীর সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যবহার করে। রাতেই বাসা থেকে বের করে দেয়। শশীর শাশুড়িরা বাসাতে ছিল না তখন। শশী বাধ্য হয়ে রাজিবের বাসা থেকে চলে আসে তার ফুপুর বাসায়। রাজিব ও শশীকে আর নিতে আসে না। রাজিব ভেবেছিল শশী নিজেই আবার ফেরত আসবে। এভাবে আরো কিছুদিন যাওয়ার পর শশী আর তার পরিবার থেকে সিদ্ধান্ত নেয় যে সে রাজিবকে ডিভোর্স দিবে। ডিভোর্সের কথা শুনে রাজিব শশীর উপর আরো রাগারাগি শুরু করে দেয়। শশী তখন আরো বেশি শক্ত হয়ে যায়। তখন সে পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় যে রাজিবের সঙ্গে তার আর সংসার করা সম্ভব নয়। কিছুটা দোটানায় ছিল কিন্তু রাজিবের এই ব্যবহারে সে আরো বেশি শক্ত হয়েছে।
তাছাড়া শশীর পরিবারও তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। ছেলের খোঁজ খবর ভালো মতো না নিয়েই শুধু ঘটকের কথা শুনেই বিয়ে দেওয়া তাদের ঠিক হয়নি। পরবর্তীতে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে রাজিবের সমস্যা অনেক পুরোনো। এজন্য তারাও মেয়েকে পুরোপুরি সাপোর্ট করছিলো। তারপর শশীর বাবা মা রাজিবদের বাড়িতে গিয়ে ডিভোর্সের সব কাজ শেষ করে। রাজিব তখন কোন কিছু না বলেই ডিভোর্স পেপারে সিগনেচার করে দেয়। এভাবে বেশ কিছুদিন চলে যায়।
কিছুদিন পর রাজিবের শশীর কথা মনে পড়ে। তখন রাজীব আবার চাচ্ছিলো যে শশীকে তার জীবনে ফেরত আনার জন্য। বিভিন্নভাবে শশীর কাছে মাফ চাচ্ছিলো এবং সে চাকরিতে ঢুকবে বলছিলো। কিন্তু শশী রাজিবের সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করতে চাচ্ছিল না। অফিসে গিয়ে তাকে ডিস্টার্ব শুরু করলো। শশী বিভিন্নভাবে রাজীবকে এভোয়েড করেছে। তাছাড়া অনেকদিন চাকরি করার পর শশীর মধ্যে অনেকটা স্বাবলম্বী ভাব চলে এসেছে। রাজীবের বোন শশীকে দেখেই বুঝতে পারে যে শশী আর কখনোই রাজিবের কাছে ফেরত আসবে না। সেও তার ভাইকে এ বিষয়টি বোঝায়।
রাজিব কি শেষ পর্যন্ত শশীকে আবারো রাজি করাতে পেরেছিলো? তা জানতে হলে অবশ্যই পরবর্তী পর্ব পড়তে হবে। খুব দ্রুতই হাজির হবো পরবর্তী পর্ব নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
বাস্তবতার গল্পটির প্রথম পর্ব এবং দ্বিতীয় পর্ব আমি পড়েছিলাম। আজকে আপনি এই গল্পের তৃতীয় পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুব ভালো লেগেছে পড়তে। শশী কত কষ্ট করে রাজীবকে সুস্থ করে তুলেছিল। কিন্তু রাজীব দেখছি শশীর উপর অত্যাচার করেছে। আর সে চাকরিতেও ঢুকেনি। পরবর্তীতে শশী এরকম অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তাকে ডিভোর্স দিয়ে ভালোই করেছে আমি মনে করি। এখন তো দেখছি রাজিব নিজের ভুল বুঝতে পেরে শশীর কাছে আবারো যাওয়ার চেষ্টা করতেছে, কিন্তু শশী তাকে মেনে নিচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত রাজিব শশীকে রাজি করাতে পারে কিনা এটাই দেখার অপেক্ষায় থাকলাম
শশী অনেক মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু যখন একেবারে পারেনি তখনই সে এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
রাজীবের মতো এমন অকৃতজ্ঞ মানুষ খুব কমই আছে পৃথিবীতে। শশী এতো কষ্ট করে দিনরাত সেবা যত্ন করে রাজীবকে সুস্থ করলো,আর সুস্থ হওয়ার পর শশীর সাথে এমনটা কিভাবে করতে পারলো। যেকোনো মেয়ে চায় তার হাসবেন্ড কিছু একটা করুক। শশী তো সেটাই চেয়েছিল। কিন্তু রাজীব এবং তার পরিবার আসলেই খুব খারাপ। যাইহোক এমন মানুষের সাথে শশী কেনো,কেউ সংসার করতে পারবে না। শশী রাজীবকে ডিভোর্স দিয়ে খুব ভালো কাজ করেছে। রাজীবের কাছে শশীর ফিরে যাওয়া মোটেই উচিত হবে না। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া রাজিবের মতো অকৃতজ্ঞ মানুষ পৃথিবীতে এখনো আছে। এরা জীবনে কখনো সুখী হতে পারেনা। ধন্যবাদ গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
রাজিব আবার শশীকে কাছে পাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে কিন্তু শশীর আর্থিকভাবে চাকরি করে অনেকটাই স্বাবলম্বী হয়ে গিয়েছে। যাই হোক পরবর্তী পর্বে আসল কাহিনীটা জানা যাবে আসলে রাজীব শশীকে কাছে পেয়েছিল কিনা?? অপেক্ষায় রইলাম।
আশা করি পরবর্তী পর্বেও পড়ে সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।
শশী রাজীবের এরকম অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে যায়নি। অনেক সেবা যত্ন করে রাজীবকে সুস্থ করে তুলেছে শশী। কিন্তু রাজীব এর প্রতিদান এরকম ভাবে দিবে, এটা ভাবতেই আমার কাছে খারাপ লাগতেছে। আসলে এরকম অত্যাচার মেনে নেওয়াও যায় না। তাইতো শশী রাজিবকে ডিভোর্স দিয়েছে। এখন তো দেখছি রাজিব আবারও শশীকে কাছে চাইতেছে। রাজিব এত বড় ভুল করার পরেও শশীকে কিভাবে আবারও পেতে চাচ্ছে। মনে হয় না শশী রাজিব কে মেনে নেবে বলে। এবং কি শশী রাজি হবে বলে মনে হচ্ছে না।
ঠিক বলেছেন আপু শশী অনেক অত্যাচার সহ্য করেছে। কিন্তু শেষে আর পারেনি জন্যই রাজীবকে ছেড়ে দিয়েছিল। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।