গল্প -- "নীতির জীবন" পর্ব-৩
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম "নীতির জীবন" গল্পটির তৃতীয় পর্ব নিয়ে। গল্পটি একজনের বাস্তব জীবন থেকে নেয়া। আসলে বানিয়ে গল্প লেখা থেকে বাস্তব জীবনের গল্প গুলো লিখতে আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। কারণ বানানো গল্পতে অনেক কিছু অবাস্তব থাকে। কিন্তু সত্যিকারের জীবন কাহিনী থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। গত পর্বে দেখেছিলাম নীতি যে ছেলেটির সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছে নীতির ভাইয়েরা সেই ছেলের বাড়ির ঠিকানা যোগাড় করে। আজ দেখা যাক যে সেখানে গিয়ে নীতিকে খুঁজে পায় কিনা। আজকের পর্বটিও আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
নীতির জীবন
ছেলের বাড়িতে লোক পাঠায়। কিন্তু ওখানেও পায় না। তাছাড়া ছেলের পরিবারের লোকজন কিছুই জানে না।এভাবে খুঁজতে খুঁজতে প্রায় ভোর হয়ে যায়। তারপরও তারা নীতির কোন খোজ খবর পায় না। নীতির ভাইয়েরা সারারাত খোঁজাখুঁজি করে ক্লান্ত হয়ে সকালের দিকে ফিরে আসে।
এখন ছেলেপক্ষকে কি খবর দেবে সেই চিন্তায় নীতির বাবা অসুস্থ হয়ে গিয়েছে।তাছাড়া তিনি ডায়াবেটিস এবং প্রেশারের রুগী। গত রাত থেকে না খেয়ে আরো এমন হয়ে গিয়েছে। যেহেতু একই গ্রামের মেয়ে রাতারাতি সবদিকে জানাজানি হয়ে গিয়েছে। ছেলেপক্ষ জেনে গিয়েছে এরকম ঘটনা ঘটেছে।
পরের দিন সকালবেলায় সবাই মিলে আলোচনা করছিল কিভাবে কি করা যায়। কেমন ছেলের সঙ্গে নীতি পালিয়ে গেল আদৌ কি নীতি সেখানে গিয়ে ভালো থাকতে পারবে কিনা? অথবা কোন অঘটন ঘটে কিনা সেই চিন্তায় পরিবারের লোকজনের অবস্থা খারাপ। তাই তারা সিদ্ধান্ত নেয় থানায় কেস করবে।
কিন্তু নীতি খুব চালাক ছিল। সে ভিতরে ভিতরে সবকিছু ঠিক করে রেখেছে। কিন্তু কাউকে কিছু জানায়নি। এত বছর ছেলের সঙ্গে প্রেম করেছে পরিবারের কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। হঠাৎ করে নীতির বোনের মনে পড়ে যে নীতির বিয়ের গয়না বানানো ছিল। সেগুলো আবার নিয়ে গিয়েছে কিনা। আলমারি খুলে দেখে যে তার ভাবি এবং তার গয়না গুলো আছে। কিন্তু নীতির গয়নাগুলো নেই। সব গয়না এক জায়গায় ছিলো। তাছাড়া নীতির ভোটার আইডি কার্ডও নেই। তখন তারা সবাই বুঝতে পারে যে নীতি অনেকদিন ধরেই এগুলো প্লান পরিকল্পনা করে পালিয়েছে। তাকে চাইলে এত সহজে পাওয়া যাবে না।
তারা থানায় কেস করার জন্য যায়। থানার যে অফিসার সে নীতির ভাইয়ের ফ্রেন্ড ছিলো। সে তাদেরকে বুদ্ধি দেয় কেস করে কোন লাভ হবে না। কারণ নীতি সাবালিক। তার ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে গিয়েছে। তারা চাইলে একটি জিডি করে রাখতে পারে। তাই কি আর করার তারা জিডি করে রাখে যাতে পরবর্তীতে কোন সমস্যা না হয়।
পরদিন দুপুরবেলায় নীতির ভাবির ফেসবুকে একটি ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসে সেই ছেলের অ্যাকাউন্ট থেকে। তখন সে সবাইকে জানায় তারা কেন এত অস্থির হচ্ছে। নীতি খুব আনন্দে আছে। ফেসবুকে সময় পার করছে। তারও কিছু কিছুক্ষণ পর নীতির ভাবীর মোবাইলে অপরিচিত নাম্বার থেকে বেশ কয়েকটি কল আসে। নীতির বাড়ির লোকজনের আর বুঝতে বাকি থাকে না যে কে ফোন করেছে।
আজ এ পর্যন্তই। সময় নিয়ে আমার গল্পটি পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে এই গল্পের পরের পর্ব নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
নীতি আসলেই খুব চালাক একটি মেয়ে। আগে থেকে প্ল্যান করে রেখেছে বিধায়,তার আইডি কার্ড এবং গহনা নিয়ে পালিয়েছে। এভাবে মান সম্মান নষ্ট করার কোনো মানেই হয় না। নীতি যদি আগে সবকিছু বাসায় খুলে বলতো এবং তার পরিবার মেনে না নিতো,তাহলে এমনটা করলেও মেনে নেওয়া যেতো। কিন্তু তার পরিবার জিজ্ঞেস করার পরও নীতি কিছু বলেনি। তবে আমি নিশ্চিত নীতির জীবনে অনেক দুঃখ আছে। কারণ নীতির পরিবার একেবারে নির্দোষ এবং তাদের মনে এভাবে কষ্ট দেওয়ার বিচার নীতি অবশ্যই পাবে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
নীতি আগে বাসায় জানালে হয়তো বাসার লোকজন রাজি হতো। কিন্তু নীতি খুবই নিচু মনের পরিচয় দিয়েছে এরকম কাজ করে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
এই গল্পের পূর্ববর্তী পর্বগুলো আমি পড়েছিলাম। আজকে এই পর্বটি পড়তে পেরেও খুব ভালো লাগলো। সে সবকিছু প্ল্যান করে রেখেছিল৷ নীতির বাসায় নীতিকে সবকিছু জিজ্ঞাসা করার পরেও সে তার পরিবারকে কিছুই বলেনি। সে বাসা থেকে পালিয়ে গিয়েছে। তার এই বাসা থেকে পালানোর কারণে তার পরিবারকে অনেক কিছুর শিকার হতে হয়েছে। যা তার পরিবারের মানুষদের মনে অনেকটাই কষ্ট দিয়েছে। আমার বিশ্বাস তার এই কাজের ফল সে ঠিকমতোই পেয়ে যাবে। পরবর্তী পর্বের আশায় রইলাম।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া নীতির আচরণে পরিবারের মানুষজন অনেক কষ্ট পেয়েছে। তার ফল তারও পাওয়া উচিত। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।