গ্যাংটোক এ প্রথম রাত

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।



আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।


আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। অবশেষে আমরা সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে পৌঁছাতে পেরেছি। পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমাদের সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিলো। আমাদের হোটেল বুকিং করা ছিল এজন্য খুব একটা ঝামেলা হয়নি। সরাসরি আমরা হোটেলে উঠতে পেরেছি। শুরুতেই হোটেলে ঢুকে আমরা সবাই গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। প্রায় দীর্ঘ একদিন এক রাতের জার্নি করে এসেছি ফ্রেশ না হলে কেমন যেন লাগছিল। যদিও ঠান্ডায় বাচ্চারা গোসল করার খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। তারপরও জোর করে গোসল করিয়ে দিলাম।
গ্যাংটকের এমজি মার্গের গল্প অনেক শুনেছি। এজন্য হোটেল রুমে বসে থাকতে ইচ্ছা করছিল না। মনে হচ্ছিল যে গিয়ে দেখে আসি কেমন। তাই অল্প কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে আমরা নিচে নেমে গেলাম এমজি মার্গ ঘুরে দেখার জন্য। কিন্তু নিচে নেমে আমাদের মনটাই খারাপ হয়ে গেল। সেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি যেন থামতেই চাচ্ছে না। আমরা খুবই টেনশন করছিলাম এই বৃষ্টি যদি না থামে তাহলে তো আমাদের ট্যুর টাই মাটি হয়ে যাবে।


IMG_5298.jpeg


ভালোই বৃষ্টি হচ্ছিল। একে তো হঠাৎ করে গরম থেকে শীতের জায়গায় এসেছি তার উপরে যদি বাচ্চাদেরকে নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজি বাচ্চাদের ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। এজন্য খুব একটা রিস্ক নিলাম না। যেহেতু আরো কয়েকদিন থাকবো। তাই হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে কিছু ফটোগ্রাফি করলাম। সব থেকে ভালো যে বিষয়টি হল বাচ্চারা এত জার্নি করার পরও খুব বেশি বিরক্ত হয়নি। যদিও আসার সময় রাস্তায় ছোট ছেলে একবার বমি করেছিল। কারণ এত উঁচু পাহাড়ে এর আগে কখনো ওঠেনি। পরে জানালা দিয়ে বাইরে মাথা বের করে বাতাস খেতে খেতে এসেছে। তারপরে আর বমি হয়নি।


IMG_5296.jpeg


IMG_5294.jpeg


যেকোনো হোটেলের নিচের রেস্টুরেন্টগুলোতে খাবারের দাম অনেক বেশি থাকে। এজন্য আমরা চেয়েছিলাম বাইরের কোন রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে। কিন্তু বৃষ্টির জন্য তাও সম্ভব হচ্ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে হোটেলের নিচের রেস্টুরেন্টে খেতে বসে গেলাম। হোটেলের রেস্টুরেন্টে খুব সুন্দর গোছানো। ছোট্ট হলেও কিছু গাছগাছালি দিয়ে সুন্দর ডেকোরেশন করেছে।


IMG_5293.jpeg


IMG_5291.jpeg


সব থেকে বড় সমস্যায় পড়তে হয়েছে খাবার অর্ডার দিতে গিয়ে। বাচ্চারা তো শুরুতে চিকেন খাবে বলে বায়না ধরেছে। কিন্তু ভাবছিলাম যে এখানকার চিকেন আমাদের জন্য হালাল হবে কিনা? ওরা তো বলছিল যে হালাল। ওদের পদ্ধতির হালাল আর আমাদের পদ্ধতি হালালের মধ্যে বেশ পার্থক্য রয়েছে। তাই আর চিকেন খাওয়ার রিস্ক নিলাম না। বাচ্চাদেরকে বুঝিয়ে বললাম কিছুটা মন খারাপ করেছে কিন্তু তারপরও রাজি হয়েছে।


IMG20230922203733.jpg


এদের খাবার মেন্যু দেখে মনে হলো যে এদের প্রধান খাবার হল পনির। সবকিছুতেই পনির। পরে অনেক ভেবেচিন্তে দুটি ভেজ বিরিয়ানি একটা মটর পনির অর্ডার দিলাম। খাবার আসার পর তো মাথায় হাত এখানে প্রায় চার জনের খাবার রয়েছে। এত খাবার তো খাওয়া সম্ভব নয়।


IMG20230922203724.jpg


IMG20230922203721.jpg


এরা খাবারের সঙ্গে রায়তা এবং আরেকটি কি যেন দিয়েছিল। কিন্তু ওই খাবার দুটি আমরা হাত দেয়নি। একটু টেস্ট করেছিলাম একটুও ভালো লাগেনি খেতে। কিন্তু ভেজ বিরিয়ানিটা আসলেই বেশ মজাদার ছিল। মটরপনিরও মোটামুটি ভালই লেগেছিল। কিন্তু প্রথম দিনে খাবার খেতে গিয়ে বেশ দাম দিতে হয়েছে। সব খাবারের দামই এখানে বেশ এক্সপেন্সিভ ছিল।


IMG20230922203715.jpg


IMG_5295.jpeg


অবশেষে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বৃষ্টি কিছুটা কমলে হোটেলের সামনে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম। খুব সুন্দর এই এমজি মার্গ। পরবর্তী পর্বে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।


IMG_5290.jpeg


আজ এ পর্যন্তই। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।



ধন্যবাদ

@tania

Photographer@tania
Phonei phone11
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

IMG_20220106_113311.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png


VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 10 months ago 

দীর্ঘ জার্নি করার পর আপনারা সিমকির রাজধানী গ্যাংটক এ পৌঁছাতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো। আর হ্যাঁ বাচ্চারা এত সহজে ক্লান্ত হয় না আর কোথাও ঘুরতে গেলে তো কথাই নেই। যাইহোক একটা জিনিস ভালো লাগলো যে আপনারা চিকেন খাওয়ার সময় হালাল হবে কিনা সেটা চিন্তা করলে। আসলেই এইসব চিন্তাধারা আমাদের মধ্যে সবসময় থাকা উচিত। যাইহোক যেহেতু আপনারা গরমের এলাকা থেকে শীত এলাকায় গিয়েছেন তাই একটু সাবধানে থাকেন যেন অসুস্থ না হয়ে যান আবার সাথে যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছে তাই আরো বেশি সাবধানতা অবলম্বন করবেন ধন্যবাদ।

 10 months ago 

দীর্ঘ জার্নির পর আপনারা সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে পৌঁছাতে পেরেছেন এটা জেনে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। যদিও বৃষ্টির কারণে বাহিরে বের হতে পারেননি তবে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করে নিয়েছেন দেখে ভালো লেগেছে। বৃষ্টির কারণে বাহিরের রেস্টুরেন্টে যাওয়া হয়নি, তাই হোটেলের রেস্টুরেন্ট থেকে খাওয়া দাওয়া করেছিলেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার পোস্টটা বেশ ভালোই উপভোগ করলাম।

 10 months ago 

সেদিন পৌঁছে আসলেই খুব মন খারাপ হয়েছিল। ভাবছিলাম এমন বৃষ্টি হলে কিভাবে ঘুরব। যাই হোক পরবর্তী দিনে আর বৃষ্টি পেয়েছিলাম না। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।

 10 months ago 

লং জার্নিতে বড়রাই অসুস্থ হয়ে পরে আর বাচ্চারাতো একটু হলেও অসুস্থ হবে।নতুন আবহাওয়া বলে কথা। আর বেড়াতে গিয়ে যদি বৃষ্টির মধ্যে পরতে হয়,তবে মনটাই খারাপ হয়ে যায়।আর বাইরে বেড়াতে গেলে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পরতে হয় খাবারের হালালের বিষয়টি।তবে আপনারা ভেজ বিরিয়ানি বেশ তৃপ্তি নিয়ে ই খেয়েছেন সেটাই বড় পাওনা।ধন্যবাদ আপু।

 10 months ago 

আপু এত দীর্ঘ জার্নি হলেও বাচ্চারা খুব একটা বিরক্ত হয়নি। আল্লাহর রহমতে সুস্থই ছিল সবাই। ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 10 months ago 

আসলে বাচ্চারা লং জার্নি বেশিরভাগ সময় সহ্য করতে পারে না, এ কারণে তারা অনেক সময় অসুস্থ হয়ে যায়। আসলে ভিন্ন জায়গায় গেলে এরকম খাবার গুলো কি রকম এটা যাচাই করা উচিত। যদিও বাচ্চারা বলেছিল চিকেন খাবে, তবে তা হালাল নাকি হারাম, সেই জন্য চিকেন আর অর্ডার করেননি এটা ভালো লাগলো দেখে। বাচ্চাদেরকে বুঝানোর পরে তারাও বুঝতে পেরেছে এটা দেখেও ভালো লেগেছে।

 10 months ago 

ছোট জন পাহাড়ের ওঠাটা প্রথমে নিতে পারেনি। পরে অবশ্য এডজাস্ট হয়ে গিয়েছিল। হালাল হারাম বোঝা সম্ভব ছিল না জন্যই চিকেন আর খাওয়া হয়নি। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 10 months ago 

একদিন এক রাতের জার্নি করা বেশ কঠিন ছিল বুঝতে পারছি আপু। বিশেষ করে বাচ্চাদের আরও বেশি কষ্ট হয়েছে। আর ছোটটা বমি করে দিয়েছে জেনে সত্যি খারাপ লাগলো। আসলে পাহাড়ি রাস্তাগুলোতে যখন গাড়ি চলে তখন মনে হয় যেন এর ধাক্কায় গাড়ি উপরের দিকে চলে যাচ্ছে আবার নিচের দিকে চলে গেছে। আর ঘুরতে গিয়ে যদি দেখা যায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে তখন সত্যিই খারাপ লাগে। খাবারগুলো এক্সপেন্সিভ বুঝতেই পারছি আপু। আসলে অনেক সময় হালাল হারাম দেখে খেতে গিয়ে অনেক চিন্তায় পড়তে হয়। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।

 10 months ago 

আসলেই আপু পাহাড়ের জার্নিগুলো বড়রাই সহ্য করতে পারেনা আর বাচ্চারা তো আরো। তারপরও একবার মাত্র বমি করেছিল ছোট জন। যাইহোক আপু ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

 10 months ago 

বাচ্চারা অনেক বেশি এক্সাইটেড থাকে কোথায় ঘুরতে গেলে। যদিও এতদূ্র জার্নি করার পর তার পরেও অনেক বেশি এনার্জি ছিল বাচ্চাদের। আপনার শেয়ার করা খাবারের মেনু গুলো দেখে বুঝা যাচ্ছে খাবার গুলো খুবই লোভনীয় ছিল। তবে আপনার খেতে ভালো লাগেনি শুনে মনটা খারাপ হলো। হ্যাঁ আপু আসলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গেলে দামটা স্বাভাবিক ভাবে একটু বেশি মনে হয়। যেহেতু আপনি একটি ট্যুরিস্ট এলাকায় গেছেন। তাই অবশ্যই খাবারের দাম বেশি হবে। অনেক ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করলেন।

 10 months ago 

ভেজ বিরিয়ানিটা মজা ছিল আপু অন্য খাবারগুলো বেশি মজাদার ছিল না। ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 10 months ago 

অনেক লং জার্নি করে সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে ভালোভাবে পৌঁছাতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো । লং জার্নি করার পরে একটু ফ্রেশ না হলে ভালো লাগে না। কোথাও বেড়াতে গেলে যদি বৃষ্টিতে পড়া যায় তাহলে মনটাই নষ্ট হয়ে যায়। বৃষ্টির জন্য বাইরে যেতে পারেননি তারপরও কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি অতুলনীয় ছিল। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

ঠিক বলেছেন আপু এত দূরে ঘুরতে যাওয়ার পরে যদি বৃষ্টি হয় আসলেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। যাই হোক পরবর্তীতে বৃষ্টি খুব একটা ছিল না। ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।

 10 months ago 

লং জার্নি করে কোথাও যাওয়ার পর গোসল না করলে ফ্রেশ লাগে না। গোসল করার সাথে সাথে ক্লান্তি দূর হয়ে যায় এবং শরীরের মধ্যে অন্যরকম এনার্জি চলে আসে। এটা ঠিক যে হোটেলের রেস্টুরেন্টে খাবারের দাম তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি। যাইহোক বাহিরে বৃষ্টি ছিলো বিধায় হোটেলের রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে হয়েছে আপনাদের। ভেজ বিরিয়ানি এবং মটর পনির দেখতে বেশ লোভনীয় লাগছে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে দারুণ কিছু আইডিয়া পেলাম আপু। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 10 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া এত দূরের জার্নি করার পর গোসল না করলে খুবই খারাপ লাগে। এজন্যই তো গিয়ে সবার আগে ফ্রেশ হয়ে নিয়েছি। ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59452.12
ETH 2603.11
USDT 1.00
SBD 2.39