গল্প- "অনাথ মেয়ে" শেষ পর্ব
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আপনাদের সঙ্গে "অনাথ মেয়ে" গল্পটির শেষ পর্ব শেয়ার করবো। গত পর্বে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম আশার বাবা মারা যাওয়া পর্যন্ত। আশার বাবা মারা যাওয়ার পরে আশা কি ভালো হয়েছিল কিনা দেখা যাক। আশা করি আজকের পর্বটিও আপনাদের ভালো লাগবে।
অনাথ মেয়ে
এখন তো আশার বাবা নেই। বাবা থাকলেও কিছুটা সংযত ছিলো। তাছাড়া টাকা পয়সা তার বাবার কাছ থেকেই চেয়ে নিতে হত। বাবা মারা যাওয়ার পর আশা আরো বেশি খারাপ হয়ে যায়। এখন তার নিজেরই অনেক টাকা। কারো কাছে চাইতে হয় না। দুলালী স্বামী হারিয়ে অসহায় হয়ে পরে। সংসারের সব কিছু তাকে সামলাতে হয়। পাশাপাশি আশার ছেলেকেও। আগে তো সংসারের সব দায়িত্ব আশার বাবাই সামলাতো। এত সম্পত্তি দেখে রাখাও তো মুশকিল। তাছাড়া যে সম্পটগুলো আশার বাবার নামে সেগুলো তো সব তারা পাবে না। কখন আত্মীয় স্বজনরা এসে ভাগ বসায় সেই চিন্তা।
আশার চাচা তাদের পাশের বাড়িতেই থাকে। সম্পত্তির বড় একটা অংশ সে পাবে। তাছাড়া আশার ফুপুদেরও ভাগ আছে। কিন্তু তারা ভালো মানুষ জন্য শুরুতেই কিছু বলে না। দুলালী বুদ্ধি করে রহিমের নামের সম্পত্তিতে যে গাছ বাগান ছিলো সেগুলো রহিম মারা যাওয়ার পর পরই বিক্রি করে দেয় ঘর ঠিক করার বাহানা করে। কারণ তারা দুই মা মেয়ে একা বাড়িতে থাকে। তাই কেউ আর কিছু বলেও না এই বিষয়ে।
কিন্তু আশার সঙ্গেও পেরে ওঠে না দুলালী। কোনভাবে সংসারটাকে গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। আশার ইচ্ছা ছিল তার বাবার বাকি সম্পত্তিগুলোও তার নামে লিখে নেয়ার। কিন্তু তার আগেই তার বাবা মারা যায়। তাই তার মায়ের সম্পত্তি গুলো লিখে নেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু তার মা এবার আর ভুল করে না। সম্পত্তিগুলো আশাকে লিখে দেয় না। কারণ আশার কোনো ভরসা নেই।
তারপর আরো বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর আশা নিজে নিজে একটি ছেলেকে বিয়ে করে। ছেলেটি নাকি তার সঙ্গে পড়ে। যদিও সে নামে মাত্র পড়ালেখা করে। সে বাড়িতে এসে পাশের বাসার ভাবিকে ধরে যেন তার বিয়ে বাড়ি থেকে মেনে নেয়। আশার মায়ের আর করার কিছু থাকে না। তাই বাড়ির লোকজন মিলে আবারো আশাকে ওই ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেয়। কারণ এই মেয়েকে দিয়ে ভরসা নেই। এই ছেলেকে আদৌ বিয়ে করেছে কিনা তার কোন ঠিক নেই। তাই ছেলের সঙ্গে বাড়িতে আবারো আশাকে বিয়ে দেওয়া হয়। এই ছেলেও আশার সম্পত্তি দেখে বিয়ে করে। এখন দেখা যাক আশা এই ছেলের সঙ্গে সংসার করতে পারে নাকি? নাকি কিছুদিন পর আবারো এই ছেলেকেও ডিভোর্স দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে কি হবে তা কেউ জানে না।
যেসব এতিম সন্তানদেরকে অন্য লোকজন মানুষ করে সেসব এতিম সন্তানদের উচিত বাবা-মার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। কারণ তারা তাদেরকে ছোটবেলায় এনে এভাবে মানুষ না করলে তারা হয়তো খুবই কষ্ট করে জীবন যাপন করতো কিন্তু আশার মত মেয়েরা এই বিষয়টিকে কখনোই ভালো হিসেবে নেয়না। এজন্যই দিন শেষে এসব মেয়েদের কষ্টের শেষ থাকে না। আশা এখন হয়তো এরকম করছে কিন্তু একটা সময় গিয়ে ছেলেরাও তার সঙ্গে আর মিশবে না। তখন তার কি হবে সেই কথা সে একবারও চিন্তা করে না। যাই হোক এইবার তার সংসার যেন টিকে থাকে।
আশা করি গল্পটি আপনাদের ভালো লেগেছে। সময় নিয়ে আমার গল্পটি পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
অবশেষে অনাথ মেয়ে গল্পের আমরা শেষ পর্বে চলে আসলাম।আমাদের সমাজে যেমন ভালো মানুষ আছে তেমনি খারাপ মানুষ ও আছে।যেমন আশার জীবন গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিল তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো।আর কিছু লোক আছেন যারা অনেকেই মের বা মেয়ের বাবার সম্পত্তি দেখে বিয়ে করেন এটা একেবারেই কাম্য নয়।আমিও এটাই আশা করছি অন্তত এইবার যেনো আশার সংসার টি টিকে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া সমাজে ভালো মানুষ যেমন রয়েছে খারাপ মানুষেরও অভাব নেই। যাই হোক গল্পটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
অনাথ মেয়ে গল্পটার প্রত্যেকটা পর্ব আমার পড়া হয়েছে। আর আজকে এই গল্পের শেষ পর্বটা পড়ে ভালো লাগলো, আবার খারাপও লাগলো কিছুটা। আশা তো দেখছি তার বাবা মারা যাওয়ার পর আরো অনেক বেশি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আমি তো ভেবেছিলাম বাবা মারা যাওয়ার পর মেয়েটা কিছুটা হলেও ভালো হবে। কিন্তু তার নিজের সম্পত্তি হওয়াতে আরও দেখছি খারাপ হয়ে গিয়েছে। আবার নিজের থেকেই কিছুদিন পর একটা ছেলেকে বিয়ে করে নিলো। অনেক সুন্দর করে আপনি এই গল্পটা শুরু থেকে লিখলেন, ভালো লাগলো পুরোটা।
আমার লেখা গল্পের প্রত্যেকটি পর্ব আপনি পড়েছেন জেনে ভালো লাগলো আপু। এভাবেই উৎসাহ দিয়ে পাশে থাকবেন আশা করি।
মেয়েটার তো সত্য কথাগুলো জানার পর তার বাবা-মায়ের প্রতি সম্মান আরো বেশি বেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেয়েটা তো দেখছি একেবারেই উল্টো। আর নিজের মতো করেই মেয়েটা থাকতো। বাবা-মাকে তো মূল্য দিতোই না, আবার স্বামীর কাছ থেকেও চলে এসেছে। এখন তো সম্পত্তি পাওয়ার পর আরো বেশি খারাপ হয়েছে। শেষ পর্যন্ত নিজেই আবার বিয়ে করলো। তবুও তাদেরকে আবার ফ্যামিলি বিয়ে দিয়ে ভালো করেছে। অনেক সুন্দর হয়েছে গল্পটা। তবে এইটাই কামনা করি যেন তার সংসারটা টিকে থাকে।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া মেয়েটির উচিত ছিল বাবা মাকে আরো বেশি শ্রদ্ধা করা। কিন্তু সে উল্টো করেছে। যাই হোক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।