হাজির বিরিয়ানি খাওয়া

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।



আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।


আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। কিছুদিন আগে ওয়াহিদা আপু এসেছিল সেই ঘোরাঘুরি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছি। তখনই একদিন গিয়েছিলাম নাজিরাবাদ হাজীর বিরিয়ানি খেতে। এই হাজীর বিরানির নামে সারা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে অসংখ্য রেস্টুরেন্ট রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ রেস্টুরেন্ট শুধু নাম নকল করেছে। অরিজিনাল হাজীর বিরিয়ানি খেতে হলে অবশ্যই আপনাকে নাজিরাবাদ যেতে হবে। ১৯৩৯ সালে হাজী মোহাম্মদ হোসেন নামে একজন ব্যক্তি রাস্তার ধারে দোকান চালু করেছিল। তারপর অবিশ্বাস্য রকম ভাবে এটি জনপ্রিয়তা লাভ করে।
তাই আমরাও সেদিন আমাদের টিএসসির ঘোরাফেরা শেষ করে হাজীর বিরিয়ানি খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। মূলত রূপক ভাইয়ারই ইচ্ছা ছিল সেখানে যাওয়ার। আমাদেরও ইচ্ছার কমতি ছিলো না। তাইতো বলার সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। তার আগে অবশ্য মেট্রোলের উঠেছিলাম। সেখান থেকে মতিঝিল নেমে আমরা রিক্সা নিয়ে সোজা চলে গেলাম পুরান ঢাকায়।


IMG20240130205701.jpg


রিক্সা দিয়ে যেতে যেতে ছোট ছেলে ঘুমিয়ে গিয়েছিল। নামার পর তো অবস্থা খারাপ। দোকানে পা রাখার জায়গা নেই। তাই দোকানের সামনে আমরা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম। তারপর ভাইয়ারা খোঁজ নিয়ে দেখল যে এখানে খেতে হলে দাঁড়িয়ে থেকে জায়গা নিতে হবে। বিয়ে বাড়ির মত অবস্থা। টেবিল ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। একজনের খাওয়া শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বসে যেতে হবে। আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম। আর ভাইয়ারা ভেতরে চেয়ার ধরে দাঁড়িয়ে ছিল। কিছুক্ষণ পর কিছুটা ফাঁকা হলে আমরা গিয়ে দাঁড়ালাম। তারপর দুই টেবিলের লোকজনের খাওয়া হলে আমরা সেখানে বসে পরলাম।


IMG20240130205740.jpg


সবার জন্য এক প্লেট করে বিরিয়ানি এবং এক গ্লাস করে বোরহানি অর্ডার দিয়েছিলো। বিরিয়ানি খেতে বেশ ভালোই ছিল। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে এত কষ্ট করে এই বিরিয়ানি খাওয়ার কোন মানেই হয় না। এর আগে হাজীর বিরিয়ানির নাম শুনেছি। কখনো খাওয়া হয়নি জন্য এত কষ্ট করে এবার খেলাম। আমার মনে হয় না এরপরে এত কষ্ট করে দ্বিতীয়বার আর সেখানে খাওয়া সম্ভব। যদিও বাচ্চারা না থাকলে সুযোগ নেওয়া যেতে পারে। বাচ্চাদেরকে নিয়ে তো সম্ভব না। নিচের পাতিল দেখতে পারছেন তারা এত বড় বড় পাতিলে রান্না করে। আমরা যখন গিয়েছি তখন এক পাতিল শেষ হয়ে দ্বিতীয় পাতিল শুরু করেছে।


IMG20240130211054.jpg


এই যে দেখুন বাইরে থেকে দোকানের অবস্থা। ছোট ছেলের ঘুমন্ত অবস্থায় কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো। তাই পাশে একটি মোটরসাইকেলের উপর বসিয়ে দিয়েছিলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা আবারো তৌহিদা আপুর বাসায় চলে গিয়েছিলাম। কষ্ট হলেও সবাই মিলে গিয়ে বেশ মজা হয়েছিল।


IMG20240130211154.jpg


এই ছিলো আমার আজকের আয়োজন। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।


ধন্যবাদ

@tania

Photographer@tania
Phoneoppo reno5
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি অর্থনীতিতে অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা,আর্ট করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে এবং ব্লগিং করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি।

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

IMG_20220106_113311.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png


VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 4 months ago 

আপনারা নাজিরাবাদ হাজির বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য গিয়েছিলেন জেনে অনেক বেশি ভালো লাগলো। রুপক ভাইয়ার অনেক বেশি ইচ্ছা ছিল, আর আপনাদেরও খাওয়ার ইচ্ছে ছিল বুঝতেই পারতেছি দেখে। ওয়াহিদা আপুরা সেখানে যাওয়ার পর আপনারা ভালো সময় কাটিয়েছিলেন বুঝতে পারতেছি দেখে। তবে বসার জন্য দেখছি চেয়ার ধরে রাখা হয়েছিল। আসলে বুঝতে পারতেছেন নামকরা খাবার প্রত্যেকে খেতে আসবে। আর এই জন্যই তো অনেক বেশি ভিড় ছিল। যাইহোক নিশ্চয়ই হাজির বিরিয়ানি খেতে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল। হাজির বিরিয়ানি দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু।

 4 months ago 

চেয়ার ধরে দাঁড়িয়ে থাকার কারণেই খেতে পেরেছি। তা না হলে ওইখানে খাওয়া সম্ভব ছিল না।

 5 months ago 

বিরিয়ানি খেতে গিয়ে আপনাদের বিয়ে বাড়ির মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল জেনে খারাপ লাগলো আবার মজা লাগলো।মানে বোঝা যাচ্ছে এই
বিরিয়ানির চাহিদা রয়েছে ভালোই।আবার বাচ্চাদের সামলে এইভাবে ভিড়ে খাওয়াটা মুশকিল ও কষ্টকর।তারপরও রূপক ভাইয়া ও আপনারা খাওয়া শেষ করতে পেরেছেন এই মুহূর্তটা ভালো ছিল আশা করি।ধন্যবাদ আপু।

 4 months ago 

আসলেই আপু চেয়ার ধরে দাঁড়িয়ে থাকার সময় বিয়ে বাড়ির কথা মনে হচ্ছিলো। যাই হোক ধন্যবাদ গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।

 5 months ago 

নাজিরা বাজারের হাজীর বিরিয়ানি এবং বিউটি লাচ্ছি খাওয়ার মজাই আলাদা। তবে যে পরিমাণে ভিড় থাকে, এতে করে খাওয়ার স্বাদ এমনিতেই মিটে যায়। বাচ্চাদের নিয়ে এমন জায়গায় খেতে গেলে আসলেই ঝামেলা লাগবে। যাইহোক এতো ঝামেলার পর শেষ পর্যন্ত আপনারা হাজীর বিরিয়ানি খেতে পেরেছেন, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো আপু। সবাই মিলে একসাথে ঘুরাঘুরি করতে আসলেই খুব ভালো লাগে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 4 months ago 

কিন্তু ভাইয়া এত কষ্ট করে খাওয়ার কোন মানেই হয় না। খুব সহজে খাওয়া গেলে হয়তো দ্বিতীয়বার খাওয়ার কথা চিন্তা করতাম।

 4 months ago 

হ্যাঁ আপু এতো কষ্ট করে খাওয়ার কোনো মানেই হয় না। টাকা দিয়ে খেতে হয়,ফ্রি তো আর না। সুতরাং এতো ঝামেলা করার দরকার নেই। সেখানে আসলেই অতিরিক্ত ভিড় থাকে, যেটা একেবারেই অসহ্যকর।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

আপু আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন হাজি বিরিয়ানি খাওয়ার অনুভূতি। আসলে এখনকার সময়ে যে কোন দোকানে অনেক ভিড় দেখা যায়। আপনারা ছেলেকে নিয়ে রিকশা চড়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন তারপরে বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য হাজির হয়েছিলেন জানতে পারলাম। বিরানি খাওয়ার সময় আপনারা বোরহানি অর্ডার দিয়েছিলো সেটিও পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

ছোট বাচ্চা ঘুমিয়ে পড়ার কারণে আরো বেশি কষ্ট হয়েছিল। যাক তারপরে খেতে পেরেছিলাম তাই অনেক। ধন্যবাদ মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 4 months ago 

সবাই মিলে একসঙ্গে কোথাও গেলে আসলেই ভালো লাগে এবং প্রচুর আনন্দ হয়। হাজীর বিরিয়ানি নাম শুনেছি তবে সেখানে গিয়ে খাওয়া হয়নি। আর আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম প্রচন্ড ভিড়। আসলে বাচ্চাদের নিয়ে এরকম ভিরে জায়গায় খাওয়া-দাওয়া করা অনেক কষ্টের। বাচ্চাকাচ্চা না থাকলে কোন কথাই ছিল না। তারপরও অনেক আনন্দ করেছেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

ঠিক বলেছেন আপু সবাই মিলে একসঙ্গে কোথাও গেলে কষ্ট হলেও ভালো লাগে। বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।

 5 months ago 

ঢাকাতে থাকে কিন্তু হাজীর বিরিয়ানি খাইনি এমন মানুষ এখনো খুঁজে পাওয়া যায় না। অনেকেই রয়েছে যারা বিরিয়ানি খেতে পছন্দ করে না কিন্তু শখ করে হলেও একদিন এইখান থেকে বিরিয়ানি খেয়েছে। কিছুদিন আগে আমিও এখানে হাজীর বিরিয়ানি খেতে গিয়েছিলাম।

 4 months ago 

আমি তো এর আগে কোনদিন খাইনি। সেদিনই প্রথম খেয়েছিলাম। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

 4 months ago 

হাজির বিরায়ানি আমিও খেয়েছি খেতে বেশ ভালই লাগে তবে বিরক্তিকর বিষয় হলো খাওয়ার আগে দাঁড়িয়ে থেকে জায়গা ধরা। রাতের বেলা অনেক বেশি ভিড় হয় সারারাত চলে খাওয়া দাওয়া।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া ঐদিন খাওয়ার পর মাফ চেয়েছি। আর এভাবে খাওয়া সম্ভব নয়।

 4 months ago 

আপনাদের সবার হাজীর বিরিয়ানি খাওয়ার মুহূর্তটা বেশ ভালোই উপভোগ করলাম, আপনার পুরো পোস্ট সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ে। হাজীর বিরিয়ানি আমাদের এদিকে পাওয়া যায়। আর আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে হাজীর বিরিয়ানি খেতে। যদিও এটা বুঝতে পারতেছি যে ঢাকার হাজির বিরিয়ানির কাছে এগুলো কোন কিছুই না। কারণ ঢাকার হাজি বিরিয়ানি গুলোই হচ্ছে রিয়েল। যদিও শখ করে খেতে গিয়েছিলেন, তবে ভিড় থাকার কারণে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল। এরকম একটা ঐতিহ্যবাহী খাবার, সবাই মজা করেই খেয়েছিল নিশ্চয়ই।

 4 months ago 

অরজিনাল হাজির বিরিয়ানি খেতে হলে নাজিরাবাদেই যেতেই হবে। অন্যান্য জায়গায় সব নকল হাজির বিরিয়ানি। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

 4 months ago 

আজকাল আপু নকল হাজিতে চারিদিক ভরে গেছে। আপনাদের শুধু বাংলাদেশ না, আমাদের এই কলকাতাতেও শত শত হাজী বিরিয়ানির দোকান রয়েছে। যাইহোক, আপনি অরজিনালের সন্ধান দিলেন, জেনে বেশ খুশি হলাম। বিরিয়ানি খেতে গিয়ে কষ্ট হলেও বেশ মজা হয়েছিল আপনাদের, জেনে ভালো লাগলো আপু। বাংলাদেশে বিরিয়ানির সাথে বোরহানি জিনিসটা বেশ ভালোই চলে। এবার বাংলাদেশে ঘুরতে গিয়ে আমি এই বোরহানি খেয়েছিলাম।

 4 months ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া আশেপাশে যেইদিকেই তাকানো হয় সেদিকেই হাজির বিরিয়ানি লেখা থাকে। কিন্তু কোনটাই অরজিনাল না। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58833.91
ETH 3155.94
USDT 1.00
SBD 2.44