গল্প-- "অনাথ মেয়ে" পর্ব --৩
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম "অনাথ মেয়ে" গল্পটির তৃতীয় পর্ব নিয়ে। গত পর্বে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম যে আশা মোবাইল পেয়ে উসশৃংখল হয়ে যায় এবং কোনরকমে টেনেটুনে মেট্রিক পাশ করে। এখন আশা কি পরবর্তীতে পড়ালেখা আরো চালিয়ে যেতে পেরেছিল কিনা দেখা যাক। আশা করি আজকের পর্বটিও আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
অনাথ মেয়ে
মোবাইল ব্যবহার করে ইন্টারনেটে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন ধরনের ছেলেদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে আশা। তার বাবা মা অল্প শাসন করলেও খুব কঠিন ভাবে তাকে শাসন করেনি কখনো। তাই আশা দিনকে দিন আরো বেশি উৎশৃংখল হতে থাকে। অনেক সময় রাগ করে মোবাইল ভেঙ্গে ফেলে। আবার নতুন নতুন মোবাইল কিনে। তার জেদের কাছে তার বাবা-মা অসহায় হয়ে যায়। এভাবে কোনরকমে মেট্রিক পাশ করে আশা। তার বাবা মা টাকা দিতে না চাইলে সে বাড়ি থেকে চলে যেতে চায়। আবার ঘুমের ঔষুধ খেতে আত্মহত্যা করতে যায়।
আশা বিভিন্ন ছেলেদের সঙ্গে বাইরে মেলামেশা করে।যতদিন আশা ভালো ছিলো ততদিন গ্রামের কেউ আশার কথা কিছু বলেনি। যখনই আশা এমন খারাপ হয়ে যায় তখনই গ্রামের লোকজন আলোচনা করতে থাকে যে রহিম এত ভালো মানুষ আর মেয়েটা কেমন হয়েছে। আসল মেয়ে নয় জন্যই এমন। এভাবে এক সময় আশাও জেনে ফেলে সে তার বাবা-মার আসল সন্তান নয়। এর ফলে আশা আরো বেশি উৎসৃংখল হয়ে ওঠে। কিন্তু এ কথা জানার পর আশার তার বাবা মার প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত ছিলো। কিন্তু হয় উল্টা।
আশা এই জিনিসটি কখনো চিন্তা করে না যে তার বাবা-মা এবং পরিবারের লোকজন কখনো তাকে বুঝতেই দেয়নি যে সে তাদের আসল মেয়ে নয়। এত আদর যত্নে মানুষ করেছে। সে বাইরের লোকজনের কথা শুনে তার বাবা মার সঙ্গে আরও বেশি খারাপ ব্যবহার করতে থাকে। বাবা মা যে ছোটবেলায় তাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে এত আদর যত্ন করে মানুষ করেছে তার কোন দামই আশা দেয় না। দিন দিন আরো বেশি খারাপ হতে থাকে।
তখন দুলালী ভাবে তাকে বিয়ে দিলে হয়তো ভালো হতে পারে। আশাকে বললে সেও রাজি হয় বিয়ে করতে। তারা এমন একটি ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেবে যাতে ছেলেটিও তাদের বাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে থাকে। যেহেতু আশার বাবা-মায়ের সম্পত্তির কোন অভাব নেই। তারা এমন একটি ছেলের জন্য ঘটককে বলে। খুঁজতে খুঁজতে পাশের গ্রামে একটি ছেলে পেয়েও যায়।
ছেলেটির পরিবারের অবস্থা ভালো না। কিন্তু ছেলেটির বাবা-মা তার প্রত্যেকটি সন্তানকে পড়ালেখা করিয়ে শিক্ষিত করেছে। ছেলেটি ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করে। যেহেতু আশার বাবা-মায়ের অনেক সম্পত্তি সেই লোভে পড়ে ছেলেটি আশাকে বিয়ে করে। বিয়ের সময় আসার বাবা-মা আশার নামেও বেশ কিছু সম্পত্তি লিখে দেয়। আশা তাদের বাড়িতেই থাকে এবং কিছুটা ভালো হয়ে যায়।
আশা কি ভালো হয়ে তার স্বামীর সঙ্গে সুখের সংসার করতে পারবে? জানতে হলে পরবর্তী পর্ব পড়তে হবে সময় নিয়ে আমার গল্পটি পড়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
অনাথ মেয়ে গল্পটার প্রথম ২ পর্ব যদিও আমার পড়া হয়নি। তবে তৃতীয় পর্ব পড়ে খুব ভালো লেগেছে। আবার বাবা মায়ের কথা চিন্তা করে অনেক খারাপ লাগতেছে। মেয়েটা যেহেতু জেনেছে ওনারা তার আসল বাবা-মা না, তখন তার উচিত ছিল তাদেরকে মন থেকে শ্রদ্ধা করা সম্মান করা। আর তাদের সাথে ভালোভাবে থাকা। কারণ অনেক খারাপ একটা পর্যায় থেকে হয়তো মেয়েটাকে তারা নিয়ে এসেছে, এই পর্বটা পড়ে যতটুকু বুঝতে পারলাম। মেয়েটা দেখছি অনেক বেশি খারাপ হয়ে গিয়েছে মোবাইল পাওয়ার পর। এই বয়সে মোবাইল দিলে প্রত্যেকটা ছেলে মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যায়। যাইহোক এখন যেহেতু বিয়ে দিয়েছে, দেখা যাক সে সুখে থাকতে পারে কিনা স্বামীর সাথে।
ঠিক বলেছেন আপু মোবাইল দিলে অনেক ছেলেমেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যায়। তারপরও এখনকার যুগে মোবাইল ছাড়াতো চলেই না। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আপনি খুব সুন্দর একটা গল্প পর্বের মাধ্যমে আমাদের মাঝে শেয়ার করতেছেন। মেয়েটা অনাথ ছিল আর মৃত্যুর মুখ থেকেই এই মানুষগুলো তাকে নিয়ে এসেছে। কিন্তু মেয়েটা তো দেখছি তার বাবা মায়ের সাথে অনেক বেশি খারাপ ব্যবহার করে। শেষ পর্যন্ত যেহেতু এখন তাকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে দেখা যাক সে ভালো হয় কিনা। আর নিজের হাজবেন্ডের সাথে ভালো থাকতে পারে কিনা। আমি কিন্তু এই গল্পের পরবর্তী পর্বটা পড়ার অপেক্ষায় আছি এখন।
ঠিক বলেছেন আপু মৃত্যুর মুখ থেকে মেয়েটিকে বাঁচিয়েছে কিন্তু মেয়েটির বাবা-মায়ের প্রতি কোনো কৃতজ্ঞতা বোধ নেই। যাই হোক ধন্যবাদ।
সব সময় এমনটাই হতে দেখা যায় অনাথ কাউকে মানুষ করলে তারা পরবর্তীতে যখন তাদের আসল পরিচয় জানে তখন এই বাবা মাকে ছেড়ে যেতে চায় । আশার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে । আর ছেলে মেয়ে উশৃঙ্খল হলে আপন বাবা মাকে মানুষজন ছাড় দেয় না আর তো পালক বাবা-মা । মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে কি ভালো করল না খারাপ করল সেটা পরবর্তী পর্বে জানা যাবে ।
অনাথ বাচ্চারা কেন বুঝতে চায় না যে তাদেরকে এনে মানুষ না করলে তাদের কি অবস্থা হত। যাই হোক ধন্যবাদ আপু।