হঠাৎ অসুস্থতা
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে।
আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। সুস্থতা যে আল্লাহর কত বড় নেয়ামত তা শুধুমাত্র অসুস্থ হলে বোঝা যায়। সুস্থ থাকলে এই বিষয়টি আমরা উপলব্ধি করতে পারি না। ছোটখাটো অসুস্থ হলে আমরা অস্থির হয়ে যাই। যখন বড় কোন ধরনের অসুস্থতার শরীরে বাসা বাঁধে তখন বোঝা যায় যে সেই অসুখগুলো কত ছোট ছিল। সর্দি কাশি লাগলে মনে হয় যে এর থেকে খারাপ অসুখ আর নেই। কিন্তু বড় কোন বিপদে পড়লে বুঝতে পারা যায় যে সর্দি কাশিতো খুবই নরমাল একটি অসুখ। তারপরও শরীরের কোন ধরনের অসুস্থতাই আসলেই ভালো লাগেনা। পুরোপুরি সুস্থ থাকলে যে কোন ধরনের কাজ করেও আরাম পাওয়া যায়।
আমি যেদিন থেকে ড্রাইভিং শেখা শুরু করেছি তার কয়েকদিন পর থেকে কোমরে ব্যথা শুরু হয়েছে। এর আগে কখনো কোনদিন কোমরে ব্যথা হয়নি। টুকটাক হয়েছে যা ধরার মতো না। অনেককেই দেখেছি সিজার করার পর কোমরে খুব ব্যথা হয়। আল্লাহর রহমতে সেই সমস্যা ছিল না। কয়েকদিন ধরে কোমরে ব্যথা শুরু হওয়ার কারণে ভেবেছি হয়ত সিজারের ওই সমস্যার জন্য কোমরে ব্যথা হচ্ছে। পেইন কিলার খেয়ে ব্যথা সারিয়ে নিয়েছি। তারপরও পুরোপুরি ব্যথা সেরে যায়নি। অল্প ছিল। কিন্তু সেই ব্যথাটা তেমন গায়ে লাগায়নি। বিপত্তি ঘটে পরশুদিন রাতের বেলায়।
ওযু করতে যাওয়ার সময় জোরে করে একটা হাঁচি দিয়েছি আর সঙ্গে সঙ্গে কোমরের রগে এমন টান লাগলো যে কি আর বলবো। তারপর অজু করতে ঢোকার পর মনে হচ্ছে যে নিচের দিকে হতে পারছি না কোমরের ব্যথার জন্য। ভাবলাম যে হাঁচি দেওয়ার কারণে রগে টান লেগেছে। তেমন একটা পাত্তা না দিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে গেলাম। কিন্তু নামাজে দাঁড়ানোর পর মনে হল যে আর রুকু সিজদা দিতে পারছিনা। এত ব্যথা করছে যে বলে বোঝাতে পারবো না। তারপর পরের নামাজগুলো সব বসে বসে পড়লাম। এর আগেও কোমরে আমি হালকা ব্যথা হয়েছে। তখন নরমাল নাপা এক্সটেন্ড খেয়ে সেরে গিয়েছিল। তাই এবারও একটি নাপা এক্সটেন্ড খেয়ে শুয়ে পড়লাম। কিন্তু যখন উঠতে গিয়েছি তখন দেখি যে আর নড়তে পারছি না। কোন দিকে হওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। ব্যাথায় ছিড়ে যাচ্ছে কোমর।
হাজবেন্ড কে ডাক দিয়ে তাকে ধরে তারপর উঠে দাঁড়িয়েছে। ভাবলাম যে হয়তো কিছু সময় গেলে ঠিক হয়ে যাবে। সেহরিতে উঠে দেখি যে একই অবস্থা নড়াচড়া করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তারপর আবার একটি ব্যথার ওষুধ খেয়ে সেহরি খেলাম। কিন্তু সকালবেলায় ঘুম থেকে ওঠার পর মনে হল যে আমি সোজা হয়ে বসতেও পারছি না, বিছানা থেকে নামাতো দূরের কথা। কাজের খালাকে ডাক দিয়ে ধরে তারপর উঠে বসলাম। কিন্তু খুব কষ্ট হয়েছে বসতে। বসা থেকে দাঁড়াতে গেলে আরো বেশি ব্যথা লাগছিল। শুক্রবারের দিন হওয়ায় ডাক্তারের চেম্বার গুলো বেশিরভাগই বন্ধ থাকে। তাই আমার হাজবেন্ড এর বন্ধুকে ফোন দিলাম। উনি হাড়ের ডাক্তার। ওনার সঙ্গে পরামর্শ করলাম। উনি বলল যে ড্রাইভিং এর কারনে ব্যথা হয়েছে এবং হাঁচি দেয়ার কারণে কোমরের হাড় সরে গিয়েছে। তিন দিন ফুল বেড রেস্ট দিয়েছে। কোন কাজ করতে নিষেধ করেছে। একে তো রোজার মাস এমনিতে কাজ বেশি থাকে। তার উপরে যদি আমি এরকম বিছানায় পড়ে থাকি তাহলে তো আরো বিপদ। ভাগ্য ভালো যে হাজবেন্ডের দুদিন অফিস ছুটি ছিল। হাসবেন্ড বারবার রোজা ভেঙে ঔষুধ খাওয়ার কথা বলছিল। তখন অলরেডি বারোটা বেজে গিয়েছে। অর্ধেকবেলার জন্য আর রোজা ভাঙতে ইচ্ছে করল না। সারাটা দিন খুব কষ্ট করে পার করলাম।
সন্ধ্যার পরে ইফতারি শেষ করে আগে ঔষুধ খেয়ে নিয়েছি। একবার ঔষুধ খাওয়ার পরে ব্যথা অনেক কম মনে হচ্ছে। আশা করি আর দুই দিন খেলে ঠিক হয়ে যাবে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। খুব কষ্ট পেয়েছি এই ব্যথায়।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজন। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরবর্তীতে দেখা হবে আবার নতুন কিছু নিয়ে।
ধন্যবাদ
@tania
আমি তানিয়া তমা। আমি বাংলাদেশে থাকি। ঢাকায় বসবাস করি। আমি অর্থনীতিতে অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। আমি বিবাহিত। আমার দুটি ছেলে আছে। আমার শখ রান্না করা, শপিং করা,আর্ট করা, ঘুরে বেড়ানো। আমি বাংলায় কথা বলতে এবং ব্লগিং করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলাদেশকে ভালবাসি। |
---|
VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
খুব কষ্টে আছেন আপু।আসলে শরীর খারাপ হলে কিছুই ভালো লাগে না।আপনি আপাতত রেস্টেই থাকেন।ড্রাইভিং শেখাটা আপাতত বাদ দিয়ে দিন।দোয়া করি আল্লাহ সুস্থতা দান করবেন।
ড্রাইভিং শেখা আপাতত বাদ রেখেছি আপু। আর রেস্ট চাইলে কি সব সময় নেওয়া যায় রোজার ভেতরে। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
প্রথমেই আপনার জন্য সুস্থতা কামনা করছি আপু। ডাক্তার যেহেতু বেড রেস্ট দিয়েছে তাই তিন দিন একটু কষ্ট করে বেড রেস্ট নিন যদিও রমজান মাসে কাজের চাপে টুকটাক কাজ করতেই হয় তারপরেও প্রথমে নিজের সুস্থতা তারপরে কাজ।
তিন দিন পর ব্যথা ঠিকই সেরে গিয়েছিল। গতকাল আবারও ব্যথা পেয়ে বিছানায় পড়ে গিয়েছি।
আপু প্রথমেই আপনার জন্য সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আসলে ড্রাইভিং শুরু করার পর থেকেই আপনার ব্যথা একটু একটু করে বেড়েছিল এবং সেটি হাচি দেওয়ার পর থেকেই আরো বেশি আকার ধারণ করে। আমার মনে হয় আপু সে সময় থেকেই আপনার হাজবেন্ডের বন্ধুকে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জেনে নিয়ে তারপর ওষুধ খাওয়া উচিত ছিল আপু। যাই হোক সারাদিনে অনেক কষ্ট পেয়েছিলেন ব্যথার কারণে, ইফতারিতে ওষুধ খাওয়ার পর ব্যথা অনেকটা কমে গিয়েছে, অবশ্যই আপনার জন্য দোয়া রইল আপু আপনি যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া শুরুতেই ডাক্তারের সঙ্গে আলাপ করার দরকার ছিল। যাই হোক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আসলে কোমরে ব্যথা হলে বলার মতো নয়। সত্যি যার যখন যেটা হয় সেটাই বড়। আসলে অসুস্থ হলে বুঝা যায় সুস্থতা কাকে বলে। যাইহোক ডাক্তার যেহেতু বেড রেস্ট দিয়েছে তিন দিন। কষ্ট হলেও ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী থাকতে হবে। দোয়াকরি তারাতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
যারা এই কোমরের ব্যাথায় পড়েছে তারাই বুঝতে পারে এর কষ্ট। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
প্রথমে আপনার সুস্থতা কামনা করি৷ আসলে অসুস্থতা না থাকলে আমার কখনোই বুঝতাম না যে সুস্থতা কি জিনিস৷ তার জন্য সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে সুস্থতা এবং অসুস্থতা উভয় দিয়েছেন যা থেকে আমরা প্রতিনিয়তই শিক্ষা গ্রহণ করছি৷ ডাক্তার আপনাকে তিন দিন বেড রেস্ট এ থাকতে বলেছেন৷ আশাকরি যত কষ্টই হোক না কেন আপনি বেড রেস্ট এ থাকবেন৷ কারণ এই অসুস্থতা বেড রেস্ট ছাড়া তাড়াতাড়ি সমাধান হবে বলে আমার মনে হয় না৷ দোয়া করি আপনার জন্য, অতি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ভালোভাবে কাজ করার করতে পারেন।
বেড রেস্টে চাইলেও সব সময় থাকা যায় না ছোট বাচ্চা থাকলে। তারপরও যথেষ্ট রেস্ট নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
একদম ঠিক বলেছেন৷ আসলে বেড রেস্ট এ থাকা খুবই কষ্টসাধ্য৷ যাদের বাচ্চা রয়েছে তাদের কোনভাবেই এরকম রেস্টে থাকা যায় না৷ যা আপনার ক্ষেত্রেও ঘটেছে৷ তবে কষ্ট করে থাকার চেষ্টা করবেন৷ তাহলে অতি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবেন বলে আশা করি৷
প্রথমে আপু আপনার সুস্থতা কামনা করি। সুস্থতা হচ্ছে আল্লাহর বড় নেয়ামত। আসলে কোমরের ব্যথা অনেক বড় একটি ব্যথা। যাদের কোমরে ব্যথা করে তারা বুঝে ব্যাথাটি কি। তবে অনেক সময় অতিরিক্ত কাশির কারণেও কোমরে এবং গায়ে ব্যথা করে। যদি আপনি ওযু করতে গিয়ে জোরে কাশি দেওয়ার সাথে সাথে আপনার ব্যথা অনুভব করতে পারতেছেন কোমরের। আশা করি আপু ঠিকমতো ওষুধ খেলে আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে যাবে। সত্যি আপু আপনার পোষ্টটি পড়ে খারাপ লাগলো। আপনার জন্য দোয়া রইল আপু।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া এই ব্যথা যাদের হয়েছে তারাই বুঝতে পারে এর কষ্ট। ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
প্রথমেই আপনার জন্য সুস্থতা কামনা করছি আপু। সুস্থতা মহান আল্লাহ তায়ালার অনেক বড় নেয়ামত। সেটা আমরা অসুস্থ হলেই কেবলমাত্র বুঝতে পারি। আপাতত বেড রেস্টে থাকেন। আশা করি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন আপু।
অসুস্থ হলেই আসলে বোঝা যায় সুস্থতা কি জিনিস। তারপরও সব সময় তো সুস্থ থাকা সম্ভব হয় না। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আপু আপনি অসুস্থ শুনে খুব খারাপ লাগলো। আপনার সুস্থতা কামনা করি। আসলে মানুষ অসুস্থ হলে বুঝে সুস্থতা কি জিনিস। কিছুদিন আগে আমার নিজেরও কাশি ছিল এ কারণে শরীরে ব্যথা করত। যদিও আপনার কোমরে একটু ব্যথা। আশা করি আপু রেস্ট করেন আল্লাহর রহমতে ঠিক হয়ে যাবে। আপনার জন্য দোয়া রইল।
সর্দি কাশি কিছুদিন আগে আমারও হয়েছিল। তখন এত কষ্ট হয়নি এখন যত কষ্ট হচ্ছে। ধন্যবাদ আপু আপনাকে।
আমারও প্রথম থেকে সেটাই মনে হচ্ছিল আপু। কারণ ড্রাইভিং শেখার সময় অনেকেরই কোমরে ব্যথা হয়। তবে হাঁচি দেওয়ার কারনে যে কোমরের হাড় সরে যেতে পারে, এটা আমি এক্সপেক্ট করিনি। যাইহোক, ডাক্তার যেহেতু আপনাকে তিন দিনের বেড রেস্টে থাকতে বলেছে, তাহলে আপনি রেস্ট করেন আপু। আর আপনার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো , আপনি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন।
ভাইয়া তিন দিন তো অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। সুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম। গতকালকে আবারও রগে টান খেয়ে বিছানায়। আজকে কিছুটা কমেছে।
রগে টান খাওয়ার ব্যাপারটা আমার সাথেও মাঝে মাঝে হয় আপু। যদিও কিছু সময় পর গিয়ে সেটা আবার ঠিক হয়ে যায়।